পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি বিরোধ: প্রেক্ষাপট ও শান্তির সম্ভাবনা

PP

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সরোয়ার হোসেন, এইচডিএমসি, পিএসসি

জনসংখ্যার ক্রমবর্ধমান চাপ ও বিগত বছরগুলোর অর্থনৈতিক মন্দাসত্ত্বেও প্রবাসীদের অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা ও গার্মেন্টশিল্পে নিয়োজিত লাখ লাখ শ্রমিকের অক্লান্ত পরিশ্রম বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। এই বিপুল জনসংখ্যার মৌলিক চাহিদা পূরণ করা রাষ্ট্রের একটি অন্যতম দায়িত্ব। এটা অনস্বীকার্য যে, এই বিশাল জনসংখ্যার খাদ্য ও আবাসনসহ অন্যসব প্রয়োজনীয়তা মেটাতে প্রতিনিয়তই আমাদের আবাদি জমির পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে। তাই সার্বিক কল্যাণের জন্য আমাদের প্রতি ইঞ্চি জমির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা একান্ত প্রয়োজন। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অবস্থিত পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ এক অপার সম্ভাবনাময় অঞ্চল। দুর্ভাগ্যবশত, ভাতৃঘাতী সশস্ত্র সংঘাত আর বিরাজমান ভূমি সমস্যার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রাম জাতীয় অর্থনীতিতে আশানুরূপ অবদান রাখতে পারছে না। ভূমি সমস্যার সমাধান বিলম্বিত হওয়ার কারণে প্রত্যাশিত উন্নয়নও ব্যাহত হচ্ছে। এমনকি ভূমি সমস্যা সমাধানে দীর্ঘসূত্রতা শান্তিচুক্তির মতো ঐতিহাসিক অর্জনকে খানিকটা ম্লান করেছে। গত কয়েক শ বছর ধরে বিভিন্ন উপজাতি ও তাদের পূর্বপুরুষরা সীমান্ত অতিক্রম করে পার্বত্য এলাকায় প্রবেশ করে এবং বিশেষ বিধানের আওতায় এই অঞ্চলে বসবাস শুরু করে। ‘The Chittagong Hill Tracts Regulation-1900’ অনুযায়ী অত্র এলাকার জমির প্রকৃত মালিক জেলা প্রশাসক তথা সরকার। জমির ওপর উপজাতীয় জনগণের অধিকারের ভিত্তি বা যুক্তি যাই হোক না কেন, এটা সন্দেহাতীতভাবে বলা যায়, উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর এই সনাতনী চিন্তা-ভাবনা অত্র অঞ্চলের স্থিতিশীলতা রক্ষায় প্রভাব বিস্তার করবে। পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয়রা আজ থেকে কয়েক শ বছর আগে মূলত তৎকালীন বার্মা ও আরাকান বাহিনীর মধ্যে সংঘটিত যুদ্ধ-বিগ্রহের কারণে সীমান্ত অতিক্রম করে এই অঞ্চলে আগমন করে। একই সময়ে অর্থাৎ ১৬৬০ দশকের দিকে মোগলরাও অত্র এলাকায় আগমন করে এবং বাণিজ্যিক প্রয়োজনে চট্টগ্রামের সমতল ভূমি থেকে বাঙালিদের এনে বসবাসের সুযোগ করে দেয়। মোগল ও ব্রিটিশের পর পাকিস্তান সরকার পাহাড়িদের জমি এবং আবাসস্থল থেকে উচ্ছেদ করে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করে। উচ্ছেদ-পরবর্তী সময়ে প্রদত্ত ক্ষতিপূরণের টাকা না পেলে উপজাতীয় জনগোষ্ঠী প্রচণ্ডভাবে সংক্ষুব্ধ হয়। এরই ধারাবাহিকতায় স্বাধীনতা-পরবর্তী পার্বত্য এলাকায় সশস্ত্র বিদ্রোহের কারণে বাংলাদেশ সবচেয়ে দীর্ঘ অভ্যন্তরীণ সমস্যায় জড়িয়ে পড়ে। যাই হোক, সার্বিক প্রেক্ষাপটে বিরাজমান ভূমি সমস্যাই এখন গুরুত্বপূর্ণ সংকট হিসেবে দেখা দিয়েছে। ভূমি ব্যবস্থাপনার সঠিক নিয়মনীতির অভাব, এ বিষয়ে সনাতনী চিন্তা-চেতনা, একাধিক নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ও সবশেষে সমতল ভূমি থেকে বাঙালিদের এনে পাহাড়ে পুনর্বাসনের সিদ্ধান্ত এই সমস্যাকে আরও প্রকট করে তোলে।

ভূমি সমস্যা নিরসনকল্পে, বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে একটি আইন পাস করেছে এবং একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে প্রধান করে ভূমি কমিশন গঠন করেছে। পর পর চারটি কমিশন গঠিত হলেও অদ্যাবধি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়নি। সম্প্রতি জনসংহতি সমিতি ‘CHT Land Dispute Settlement Commission Act 2001’ সংশোধনের কিছু প্রস্তাবনা দিয়েছে, যা সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। অতি সম্প্রতি সরকার কিছু প্রস্তাবনা মন্ত্রিপরিষদে অনুমোদনের মাধ্যমে ভূমি সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপৃর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তদুপরি, ভূমি সমস্যা সংশ্লিষ্ট অন্তরায়সমূহ সবার প্রজ্ঞা, সহনশীলতা ও সর্বোপরি দেশপ্রেম ছাড়া সমাধান করা কঠিন হতে পারে। পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশের এক অনন্য সাধারণ ভূ-প্রাকৃতিক অঞ্চল। যেখানে ভিন্ন ধর্মাবলম্বী ও বিভিন্ন শ্রেণী-গোত্রের মানুষের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য আর পাহাড়-লেক বেষ্টিত বৈচিত্র্যময় ভূমির অভূতপূর্ব মেলবন্ধন ঘটেছে। জনসংখ্যার জীবনযাত্রার মান পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, গত কয়েক বছর অত্র অঞ্চল আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করেছে। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী পার্বত্য এলাকার মোট জনসংখ্যা ১৫,৯৮,২৯১ জন। বাঙালি ছাড়াও এখানে ভিন্ন ভিন্ন ১৩টি উপজাতি বসবাস করে। এরা হচ্ছে_ চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, মুরং, তঞ্চঙ্গ্যা, বোম, পাংখোয়া, খুমি, চাক, লুসাই, উসাই এবং রিয়াং। মোট জনসংখ্যার ৪৭% বাঙালি, ২৬% চাকমা, ১২% মারমা এবং ১৫% অন্যান্য উপজাতি। সব উপজাতীয়র মধ্যে চাকমা উপজাতি শিক্ষা, সংস্কৃতি, ধন-সম্পদে যথেষ্ট এগিয়ে আছে। ভূমি সমস্যা সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা লাভের জন্য অত্র অঞ্চলে উপজাতীয় জনগণের আগমন, ধারাবাহিক প্রসার আর ঐতিহাসিক বিবর্তন সম্মন্ধে জানা প্রয়োজন। যার কিছুটা এখানে তুলে ধরা হয়েছে।

ষোড়শ শতাব্দীতে পর্তুগিজরা যখন বঙ্গোপসাগর এলাকায় আগমন করে, তখন আরাকান সাম্রাজ্য তাদের সহজ শর্তে চট্টগ্রাম অঞ্চলে অবস্থান করে ব্যবসা পরিচালনার অনুমতি দেয়। এর মাধ্যমে রেভিনিউ সংগ্রহ ছাড়াও আরাকান রাজ্য-পরবর্তী সময়ে শক্তিশালী মোগলদের বিরুদ্ধে সমরবিদ্যায় পারদর্শী পর্তুগিজ বাহিনীকে কাজে লাগায়। ১৬০০ সালের শুরুর দিকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে কিছু ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী খাগড়াছড়ি এলাকায় আগমন করে এবং সেখানে জুম চাষের মাধ্যমে জীবনযাপন শুরু করে। চাকমাদের আগমনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য না থাকলেও কিছু কল্পকথা প্রচলিত রয়েছে। যার ব্যাপারে অনেক গবেষক একমত পোষণ করেন। ধারণা করা হয়, চাকমারা আরাকানের চম্পকনগর এলাকা থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে আগমন করে। কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে, ভারতবর্ষের বিহার থেকে আরাকান পর্যন্ত বেশ কয়েকটি চম্পকনগর রয়েছে। এমনকি রাঙামাটিতেও চম্পকনগর নামক একটি জায়গা রয়েছে। মোগলদের আগমনের পূর্ব-অবধি চাকমা জাতির ইতিহাস কল্পনাপ্রসূত হলেও তা যুগ যুগ ধরে প্রচলিত। পৌরাণিক সূত্র মোতাবেক, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী রাজপুত্র বিজয়গিড়ী রাজ্য জয়ের জন্য একদা বিশাল সেনাবাহিনী নিয়ে হিমালয়ের পাদদেশ থেকে পূর্ব দিকে রওনা দেন। তিনি মেঘনা নদী অতিক্রম করে আরাকান রাজ্য জয় করে সেখানে চাকমা বসতি গড়ে তোলেন। তখন এ অঞ্চলটি ভারতের উত্তর ও পূর্বাঞ্চল থেকে প্রভাবশালী হিন্দু ও শক্তিশালী মুসলিম সভ্যতার প্রভাবে নিষ্পেষিত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের আশ্রয়স্থল হিসেবেই ব্যবহৃত হতো। এ ছাড়া বিভিন্ন পর্তুগিজ কলোনি যেমন : গোয়া, সেলন, কোচিন, মালাক্কা ও অন্যান্য জায়গার ফেরারি আসামিদের জন্যও এটি ছিল স্বর্গরাজ্য। যাই হোক, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আগমনের পর বিভিন্ন রেকর্ড, দলিল-দস্তাবেজ, মুদ্রা, ছবি ও কাগজপত্র থেকে এ জাতির ইতিহাস আরও গ্রহণযোগ্যতা ও স্বাতন্ত্র্য লাভ করে। অত্র এলাকার প্রথম ব্রিটিশ জেলা প্রশাসক Captain T.H. Lewin রচিত ‘The Hill Tracts of Chittagong and the Dwellers Therein’ এ লিপিবদ্ধ তথ্যাদি সে অর্থে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য। ১৬৬০ সালের শুরুর দিকে বার্মা ও আরাকান বাহিনীর মধ্যে সংঘটিত যুদ্ধ-বিগ্রহের জন্য চাকমারা নাফ নদীর অপর পাড়ে চট্টগ্রামের দক্ষিণে অবস্থিত রামু পুলিশ স্টেশনের কাছে আশ্রয় গ্রহণ করে। ১৬৫৭ সালে যখন ভারতবর্ষের সম্রাট শাহজাহান অসুস্থ হয়ে পড়েন, তখন সিংহাসন দখলের জন্য তার চার পুত্র ভাতৃঘাতী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৬৫৮ সালে শাহজাহানপুত্র বাংলার সুবেদার শাহ সুজা তার বড় ভাই আওরঙ্গজেবের কাছে ভারতের উত্তর প্রদেশের ‘খাওজা যুদ্ধে’ পরাজিত হয়ে চট্টগ্রামে পালিয়ে আসেন। তখনো চট্টগ্রাম তৎকালীন আরাকান রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ বন্দরনগরী হিসেবে পরিচিত ছিল। আওরঙ্গজেবের প্রধান সেনাপতি মীর জুমলা সুজাকে হত্যার জন্য পিছু নেন। সুজার সঙ্গে তার অনুসারী সেনাবাহিনীর ১৮ জন সেনাপতি এবং লক্ষাধিক সৈন্য আনোয়ারাতে অবস্থান নেয়। মীর জুমলা ঢাকা পৌঁছার পর সুজাকে আত্দসমর্পণের জন্য সংবাদ পাঠান। শাহ সুজা তার পরিবার ও অল্প কয়েকজন সৈন্য-সামন্ত নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে আরাকানের মোরোহং-এ আশ্রয় গ্রহণ করাকেই বেশি নিরাপদ মনে করেন। মোগল বাহিনীর অন্য সহযোগীরা তখন রামুতে অবস্থান নিয়ে দিনাতিপাত শুরু করে। রমণী বিবর্জিত মোগল সৈন্য বাহিনীর সদস্যরা ধীরে ধীরে চাকমা রমণীদের সঙ্গে মিলেমিশে সংসার জীবন শুরু করে। তখন থেকে চাকমারা মোগল সেনাপতিদের রাজা হিসেবে গ্রহণ করে।

এদিকে আরাকানের বৌদ্ধ রাজা সান্ডা থুডাম্মা, সুজার সুন্দরী মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে সুজা ভীষণভাবে ক্ষুব্ধ হন। এ নিয়ে আরাকান সীমান্তে পরিস্থিতির যথেষ্ট অবনতি ঘটে। বিয়ে নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার কারণে বৌদ্ধ রাজা, সুজাকে সপরিবারে হত্যা করে। ফলে মোগল সৈন্য এবং আরাকান সৈন্যদের মধ্যে বহু খণ্ড যুদ্ধ সংঘটিত হয়। মোগল সৈন্যরা তখন কৌশলগত কারণে রামু ছেড়ে আলীকদমের গহিন অরণ্যে আবাসস্থল গড়ে তোলে এবং চাকমারাও তাদের সঙ্গে এ এলাকায় এসে বসবাস শুরু করে। মোগল সৈন্যরা হজরত আলীর (রা.) অনুসারী ছিল, তারই নামানুসারে এ জায়গার নাম রাখা হয় আলীকদম, যা এখনো প্রচলিত।

সুজার সামরিক প্রধান ফতেহ খান, সপরিবারে সুজা হত্যার দুঃসংবাদ নিয়ে আলীকদম থেকে দিলি্ল গমন করেন। এ খবর শুনে আওরঙ্গজেব ভীষণ ক্ষীপ্ত হন এবং সুবেদার শায়েস্তা খানকে আরাকান রাজ্য আক্রমণের জন্য প্রেরণ করেন। শায়েস্তা খানের পুত্র উমেদ খানও আরাকান জয়ে তার সঙ্গী হন। মোগল গভর্নর শায়েস্তা খান বাংলায় আগমনের পর উপজাতি বিদ্রোহীদের পরাস্ত করার জন্য আত্দনিয়োগ করেন। তিনি আরাকান বাহিনীর হুমকি পর্যালোচনা করে শক্তিশালী সামরিক বাহিনী গড়ে তোলার ওপর মনোনিবেশ করেন। ধীরে ধীরে তিনি জাহাজের সংখ্যা বাড়িয়ে নৌবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি করেন।

অন্যদিকে তিনি সৈন্য ও রশদ দিয়ে আরাকান বাহিনীকে সাহায্য প্রদানকারী ডাচ ও পর্তুগিজ বাহিনীর সমর্থন লাভের জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখেন। আরাকান এবং পর্তুগিজদের মধ্যে সম্পর্কের ফাটল ধরলে শায়েস্তা খান বেশ লাভবান হন। ওই বাহিনীর সমর্থনপুষ্ট হয়ে শায়েস্তা খানের নেতৃত্বাধীন মোগলবাহিনী আরাকানের দখল থেকে প্রথমে সন্দ্বীপ মুক্ত করে। ১৬৬৫ সালের ডিসেম্বরে শায়েস্তা খান আরাকান বাহিনীর প্রধান ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রামে সামরিক অভিযান শুরু করে। এ সময় তিনি সীমান্তে নিরাপত্তার জন্য রাঙামাটি শহরসহ পুরানঘর (রাঙামাটির প্রাণকেন্দ্র) এবং কাঠঘর (দোহাজারীর সন্নিকটে) এলাকায় সেনাছাউনি স্থাপন করেন। এ সেনা ছাউনির আশপাশে প্রচুর বাঙালি বসতি স্থাপন করে ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু করে, যাদের স্থানীয় উপজাতিরা আদিবাসী বাঙালি বলে জানে। তখন এ অঞ্চল ছিল হিংস্র জীবজন্তুর অভয়ারণ্য, যেখানে সুদূর চীনের পার্বত্য এলাকা থেকে কুকিরা আগমন করত। কুকিরা ছিল বন্যপ্রাণীদের মতোই ভবঘুরে প্রকৃতির এবং ফলমূল সংগ্রহ ও পশু শিকার করে জীবনধারণ করত। পরবর্তীতে আরাকান, মগ এবং পর্তুগিজ দস্যুরা চট্টগ্রাম বন্দরের আশপাশে আস্তানা গেড়ে সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় লুটতরাজ শুরু করে। শায়েস্তা খানের ঐকান্তিক চেষ্টায় এ দস্যুদের নিমর্ূল করা হয়। চট্টগ্রাম বিজয়ের পর উমেদ খান চট্টগ্রামের নবাব হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন। সেই সময়ে আলীকদমে অবস্থিত মোগল সৈন্যরা উমেদ খানের প্রতি বিশ্বস্ত থেকে নিয়মিত তুলা কর প্রদান করত। যদিও ১৬৬৬ থেকে ১৭২৪ সাল পর্যন্ত মোগল সেনাপতিরা জমিদারি পরিচালনা করেছে কিন্তু এদের মধ্যে জালাল খান চট্টগ্রামের নওয়াবের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে কর দিতে অস্বীকৃতি জানান। তাই চট্টগ্রামের নওয়াব দ্রুত জালাল খানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেন। ফলে জালাল খান আরাকানে আশ্রয় গ্রহণ করেন এবং মগদের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে একপর্যায়ে মৃত্যুবরণ করেন। যুদ্ধের ১৩ বছর পর ১৭৩৭ সালে জালাল খানের সহযোদ্ধা শের মস্ত খান চট্টগ্রামের নবাবের সঙ্গে দেখা করে সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করেন এবং পদুয়া কোদালা এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকেন। তিনি সেখানে একটি খামারবাড়ি স্থাপন করলে অনেক মগ ও চাকমা জনগোষ্ঠী এসে বসবাস শুরু করে। সেই সময়ে বিশ্বস্ততা এবং দক্ষতার ভিত্তিতে মোগলরা উপজাতীয়দের ‘দেওয়ান’ ‘তালুকদার’ ইত্যাদি খেতাবে ভূষিত করেন- যা তাদের বংশধররা এখনো ব্যবহার করে থাকে।

চট্টগ্রাম অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারের জন্য ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অনেক দিনের দুরভিসন্ধিমূলক পরিকল্পনা ছিল। সেই লক্ষ্যে কোম্পানি চট্টগ্রামে দুই-দুইবার যুদ্ধজাহাজ প্রেরণ করে কারখানা স্থাপনের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। ১৭১০ সালে বাংলার নবাব অন্যান্য এলাকার মতো চট্টগ্রাম জেলাকেও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাতে ছেড়ে দেয়। যদিও কোম্পানি দিলি্লর বাদশা শাহ আলমের কাছ থেকে ১৭৬৫ সালের পর রাজস্ব আদায়ের অধিকার লাভ করে। অতঃপর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি রাজস্ব আদায়ের জন্য দুজন রাজা নিয়োগ দেন। তারা হলেন চাকমা রাজা শের দৌলত খান এবং আরাকান বংশোদ্ভূত বোমাং রাজা পোয়াং। মগ এবং খুমি উপজাতিরা বোমাং রাজার অধীনে থাকে। এ রাজারা রাজস্ব আদায়ের জন্য নিজস্ব পদ্ধতি চালু করেন। যতই দিন যাচ্ছিল জনগণের ওপর কোম্পানির করের বোঝা ততই বেড়ে যাচ্ছিল, যা পরে জনগণের অসন্তোষের কারণ হয়। মোগল বাহিনীর চট্টগ্রাম জয়ের পর সীমান্তের ওপারে অস্থিতিশীলতা ও পুনঃপুনঃ সিংহাসন পরিবর্তনের কারণে আরাকানের শাসনব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে। এই সুযোগে ১৭৮৪ সালে বার্মার রাজা বোধপায়া আরাকান জয় করেন। ঠিক এ সময় অনেক মারমা নাফ নদী পাড়ি দিয়ে কক্সবাজার এলাকায় এসে বসবাস শুরু করে। এদের বসবাসের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য ক্যাপ্টেন কক্সকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, যার নামানুসারে কক্সবাজারের নামকরণ করা হয়। বোধপায়া কর্তৃক ঐতিহাসিক আরাকান রাজ্য দখলের পর পৃথিবীর মানচিত্র থেকে এই রাজ্যটি একেবারে হারিয়ে যায়। অতঃপর বার্মার সৈন্যরা ব্যাপক গণহত্যা শুরু করে, যা ১৭৮৫ সাল থেকে ১৮০০ সাল পর্যন্ত বলবৎ ছিল। পরিণামে অনেক চাকমা আরাকান ত্যাগ করে পার্বত্য চট্টগ্রামে এসে আশ্রয় নেয়।

১৮৫৯ থেকে ১৮৯৯ সাল পর্যন্ত কুকি উপজাতি সম্প্রদায় বহিরাগতদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করলে বিপুল লোক হতাহত হয়। ১৮৬০ সালে প্রশাসনিক সুবিধাসহ সফলভাবে উপজাতি আন্দোলন দমনের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলকে বৃহত্তর চট্টগ্রাম থেকে পৃথক করা হয়। ১৮৮১ সালের শেষের দিকে রাঙামাটি শহরের ১৬৫৮ বর্গমাইল এলাকা নিয়ে চাকমা সার্কেল, বান্দরবানের ১৪৪৪ বর্গমাইল নিয়ে বোমাং সার্কেল এবং ৬৫৩ বর্গমাইল নিয়ে রামগড়ে মং সার্কেল গঠিত হয়। চাকমা সম্প্রদায়ের ক্ষমতা খর্ব করার উদ্দেশ্যে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মং সার্কেল গঠন করে বলে জানা যায়। উপজাতি জনগোষ্ঠীকে বিশেষ সুবিধা প্রদানের জন্য ১৯০০ সালের মে মাসে CHT Regulation 1 of 1900 কার্যকর করার মাধ্যমে তিন পার্বত্য জেলার সার্কেল প্রধানদের রাজস্ব আদায়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু এই রেগুলেশনের ৩৪ নম্বর ধারা অনুযায়ী যে কোনো ধরনের জমি বন্ধক, বিক্রি, পরিবর্তন এবং অধিগ্রহণ জেলা প্রশাসকের এখতিয়ারভুক্ত। যার অর্থ হচ্ছে জেলা প্রশাসকই হচ্ছে জমির প্রকৃত মালিক। ম্যানুয়েল অনুযায়ী সার্কেল প্রধান এর অধীনস্থ হেডম্যান এবং কারবারিরা মৌজা এবং পাড়ায় রাজস্ব আদায়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত, যা সংগ্রহের পর সার্কেলপ্রধান কর্তৃক জেলা প্রশাসকের কাছে হস্তান্তর করা হয়। প্রকৃতপক্ষে তিন সার্কেল প্রধান এবং তাদের অধীনস্থ হেডম্যান এবং কারবারিরা হচ্ছে রাজস্ব আদায়ের জন্য সরকারের নির্দিষ্ট প্রতিনিধি। ভূমি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক সার্কেল প্রধানদের ওপর কর্তৃত্ব করে থাকেন। আরও পরে, ১৯৪৭ সালে যখন ব্রিটিশরা অত্র উপ-মহাদেশকে ধর্মের ভিত্তিতে বিভক্ত করে, তখন চাকমারা নিজেদের পাকিস্তানি মুসলমানদের চেয়ে ভারতীয় হিন্দুদের নৈকট্য প্রত্যাশা করে এবং উপজাতি অধ্যুষিত এলাকা নিয়ে একটি স্বাতন্ত্র্য ভূমির স্বপ্ন দেখে। কিন্তু সীমানা নির্ধারণী কমিশন চাকমাদের এই সুপ্ত বাসনার মূল্যায়ন করেনি। যাই হোক, ১৯৫৬ সালে কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণের জন্য তদানীন্তন পাকিস্তান সরকার কর্ণফুলী লেকের জমি অধিগ্রহণ করে। যার ফলে প্রায় ৫৪ হাজার একর ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে যায়। এ ছাড়াও সংরক্ষিত বনাঞ্চল বিস্তারের জন্য পূর্ব পাকিস্তান রাইফেল থেগামুখ, সুবলং এবং রাইংখিয়াং এলাকা থেকে ক্ষতিপূরণ ব্যতিরেকে উল্লিখিত এলাকার অধিবাসীদের উচ্ছেদ করে, যা এই এলাকার জনগোষ্ঠীকে বিক্ষুব্ধ করে তোলে। ওই সব এলাকার জনগণ এখনো বিশ্বাস করে যে, তাদের নিজস্ব ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে।

১৯৭০-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করলেও ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে সৃষ্ট রাজনৈতিক জটিলতার চূড়ান্ত পর্যায়ে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান মার্চ-১৯৭১ সালে এক রক্তাক্ত স্বাধীনতা যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। চাকমা রাজা ত্রিদিব রায়সহ কতিপয় চাকমা এ মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরুদ্ধাচরণ করে। পরবর্তীতে রাজা ত্রিদিব রায় পাকিস্তানের প্রতি সংহতি ও একাত্মতা প্রকাশ করে আমৃত্যু পাকিস্তানে বসবাস করেন। তাই ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পর, ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে অনেক উপজাতি ভারতে পালিয়ে যায়। আর সে সুযোগে দেশে থেকে যাওয়া উপজাতিরা অত্র অঞ্চলের জমির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে তরুণ প্রতিবাদী পাহাড়ি নেতা এম এন লারমা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পার্বত্য চট্টগ্রামের স্বায়ত্তশাসনের দাবি উত্থাপন করে, যা জাতীয় বৃহত্তর স্বার্থে গৃহীত হয়নি। অতঃপর ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা সপরিবারে নিহত হলে, সাংবিধানিক উপায়ে স্বায়ত্তশাসনের দাবি আদায়ের সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে আসে। তাই ১৯৭৬ সাল থেকে স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি সশস্ত্র বিদ্রোহের পথ বেছে নেয়। ওই সময় স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশ নানা সমস্যায় জর্জরিত ছিল। তখন সরকার কিছু ভূমিহীন বাঙালি পরিবারকে পার্বত্য এলাকায় বসবাসের সুযোগ করে দেয়। পুনর্বাসিত প্রতিটি বাঙালি পরিবারকে পাঁচ একর করে খাসজমি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়, যা উপজাতিরা আজো নিজেদের বলে দাবি করে আসছে। যাই হোক, সশস্ত্র আন্দোলনের তীব্রতা বৃদ্ধি পেলে বাঙালি পরিবারগুলোকে নিরাপত্তাবলয়ের মধ্যে এনে বসবাস করতে দেওয়া হয়। এই সুযোগে উপজাতি জনগণ বাঙালিদের ছেড়ে যাওয়া জায়গা-জমি দখল করে বসবাস শুরু করে। এভাবেই পার্বত্য এলাকার ভূমি সমস্যা জটিল থেকে জটিলতর হতে থাকে।

“Hill District Council Act-1989” কার্যকর হওয়ার পর পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে ভূমি সংক্রান্ত যে কোনো ক্রয়, বিক্রয় পরিবর্তন বা অধিগ্রহণের পূর্ণ ক্ষমতা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ‘হিলট্রাক্টস ম্যানুয়েল-১৯০০’ কার্যকর থাকায় ভূমি সমস্যা আরও জটিল আকার ধারণ করে। ২ ডিসেম্বর-১৯৯৭ সালে পার্বত্য শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে অত্র এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয় এবং ভূমি সমস্যাটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নের জন্য সবাই নিজ জমির ওপর নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করতে আগ্রহী হলে বিভিন্ন জায়গায় জাতিগত সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।

ইতোমধ্যে সরকার শান্তিচুক্তির আওতায় বেশির ভাগ দাবি-দাওয়া বাস্তবায়ন নিশ্চিত করেছে। ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে লক্ষণীয় যে, শান্তিচুক্তির পর পৃথিবীর অনেক দেশেই যুদ্ধ-বিগ্রহ বন্ধ হয়নি। যেমন সুদান (১৯৭২), সোমালিয়া (১৯৯০), এঙ্গোলা ১ ও ২ ( ১৯৯১ ও ১৯৯৪) এবং রুয়ান্ডা (১৯৯৩)। এমনকি পার্বত্য চুক্তির বহু বছর আগে স্বাক্ষরিত অ্যাংলো-আইরিশ চুক্তি বাস্তবায়নের দিক থেকে এখনো অনেক পিছিয়ে আছে। পার্বত্য শান্তিচুক্তি অনুযায়ী সব ধরনের মামলা প্রত্যাহারসহ বিদ্রোহীদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয়। সর্বমোট ১৯৮৯ জনকে আর্থিক অনুদান প্রদানসহ ৭০৫ জনকে পুলিশ বিভাগে চাকরি দেওয়া হয়েছে। ১২,২২২টি উপজাতি পরিবারকে ত্রিপুরা থেকে দেশে এনে পুনর্বাসিত করা হয়। ১৯৯৮ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠিত হয় এবং বর্তমানে দীপঙ্কর তালুকদার এ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সন্তু লারমার নেতৃত্বে ১৯৯৮ সালে আঞ্চলিক পরিষদ গঠিত হলেও হাইকোর্টে এতদসংক্রান্ত বিষয়ে একটি মামলা চলমান থাকায় পরিষদ কার্যত স্থবির। হাইকোর্টে পার্বত্য শান্তিচুক্তির যৌক্তিকতা নিয়ে মামলা হয়েছে এবং এ জন্য হাইকোর্ট সরকারের কাছে প্রয়োজনীয় ব্যাখ্যা চেয়েছেন। অবশ্য হাইকোর্ট আঞ্চলিক পরিষদ এবং সার্কেল প্রধানদের কতিপয় ক্ষমতা অবৈধ ঘোষণা করেছেন। সরকার হাইকোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করলে আপীল বিভাগ হাইকোর্টে তা স্টে করেছেন। এই বিষয়টির স্থায়ী সুরাহা হলেই চেয়ারম্যান এবং মেম্বারদের নির্বাচনসহ সবার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র ইস্যুর ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব হবে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ৩২টি বিষয়ের মধ্যে ২২টি বিষয় পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের অধীনে ন্যস্ত করা হয়েছে। পার্বত্য এলাকায় উপজাতি পুলিশদের বদলির বিষয়টি যখন প্রক্রিয়াধীন ছিল, ঠিক তখনই ঢাকায় কতিপয় উপজাতি পুলিশ সদস্যের গোলাবারুদ চুরির ঘটনা ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। যার ফলে বিষয়টি আর এগোয়নি। ভূমি সমস্যা সমাধানের জন্য ১৯৯৯ সালে ভূমি কমিশন গঠন করা হয় এবং “CHT Land Dispute Settlement Act- 2001’ প্রণয়ন করা হয়। ইতোমধ্যে পার্বত্য এলাকা থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর ২৩৮টি ক্যাম্প প্রত্যাহার করা হয়েছে। তিন পার্বত্য জেলায় জেলা বিচারিক আদালত স্থাপিত হয়েছে। বেগম সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীকে প্রধান করে তিন সদস্যের পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন এবং পর্যালোচনা কমিটি গঠন করা হয়। সরকার ১৯৯৭-এর শান্তিচুক্তির মাধ্যমে উপজাতি সম্প্রদায়ের অধিকার সংরক্ষণসহ সংবিধানের ১৫তম সংশোধনীর মাধ্যমে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর স্বীকৃতি প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

উপজাতি সম্প্রদায় বিশ্বাস করে জমি, বন এবং পাহাড় হচ্ছে যৌথ সম্পত্তি। তাই সরকারিভাবে প্রচলিত ভূমি রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি আর উপজাতিদের বংশানুক্রমিকভাবে প্রচলিত ব্যবস্থাপনার মধ্যে তফাৎ রয়েছে। চাকমারা মনে করে এ অঞ্চলের ভূমি তাদের নিজস্ব সম্পত্তি। তাদের আবাসভূমি ছাড়া বাকি সব জমির ওপর যৌথ মালিকানা বহাল। চাকমা সম্প্রদায় মনে করে, যে কেউ যে কোনো জমিতে আবাস করতে পারবে এবং এর জন্য কোনো চুক্তি বা কাগজপত্রের প্রয়োজন নেই। ভূমির মালিকানা এবং ব্যবহার সম্পর্কে বিভিন্ন উপজাতি বিভিন্ন ধারণা পোষণ করে থাকে। চাক উপজাতি মনে করে অন্য কেউ আগে ব্যবহার না করলে, যে কোনো জমি চাষাবাদের জন্য ব্যবহার করা যাবে। কিয়াং জনগোষ্ঠী মনে করে সন্তান ও জমি হচ্ছে প্রকৃতির দান এবং প্রত্যেকের জমির ওপর সমান অধিকার রয়েছে। সামাজিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির উন্মেষ ঘটলেও উপজাতি সম্প্রদায় এখনো জমির ব্যাপারে তাদের সনাতনী চিন্তাভাবনা আঁকড়ে ধরে আছে। এ ছাড়া CHT Regulation এর ৪২ ধারা অনুযায়ী জুম চাষের জন্য মালিকানার দরকার হয় না। ফলে উপজাতিরা নিবন্ধন ছাড়াই জমিতে বসবাস এবং চাষাবাদ করতে পারে এবং সার্কেল প্রধানকে খাজনা দিয়ে তারা নতুন জমির মালিকানা লাভ করে। বাস্তবতার নিরিখে উপজাতি সম্প্রদায়ের এই উপলব্ধি আধুনিক সময়োপযোগী মাত্রা পাবে এটাই কাম্য।

যেহেতু সাম্প্রতিককালে পার্বত্য চট্টগ্রামে কোনো ভূমি জরিপ হয়নি, তাই এ অঞ্চলের মোট ভূমির পরিমাণ নিরূপণ কষ্টসাধ্য ব্যাপার। বিভিন্ন তথ্যসূত্রে জানা যায়, পার্বত্য এলাকার মোট জমির পরিমাণ ৫০৯৩ বর্গমাইল, যার মধ্যে সংরক্ষিত বনাঞ্চল ৭৭৫.৬৩ বর্গমাইল, ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি ১৪২৩ বর্গমাইল এবং অশ্রেণীভুক্ত রাষ্ট্রীয় বন ২৮৯৪.৩৭ বর্গমাইল। উল্লেখ্য, সংরক্ষিত বনাঞ্চল, কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, বেতবুনিয়া ভূউপগ্রহ কেন্দ্র, কর্ণফুলী পেপার মিল এবং সরকারি অধিভুক্ত জমি শান্তিচুক্তির আওতাধীন নয়। তিন জেলার ব্যক্তি মালিকানাধীন সর্বমোট জমির পরিমাণ হচ্ছে ১৪২৩ বর্গমাইল। বাকি ৩৬৭০ বর্গমাইল এলাকা সরকার নিয়ন্ত্রিত সম্পত্তি। শান্তিচুক্তির ৬৪ ধারা অনুযায়ী আঞ্চলিক পরিষদকে ভূমি লিজ, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবর্তনের জন্য ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যা মহামান্য হাইকোর্টের আপিল বিভাগে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। এ ছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের কার্যবিধি চূড়ান্তকরণে বিলম্ব এবং চেয়ারম্যানের অনাগ্রহের কারণে এই অঞ্চলের উন্নয়ন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বর্তমানে একসঙ্গে জেলা প্রশাসন, পার্বত্য জেলা পরিষদ এবং সার্কেলপ্রধান নিয়ন্ত্রিত প্রচলিত পদ্ধতি দ্বারা ভূমি ব্যবস্থাপনা চলছে। জেলা প্রশাসক সার্কেলপ্রধানের পরামর্শক্রমে হেডম্যান নিয়োগ দেন। সার্কেলপ্রধানের অধীনে থেকে হেডম্যান তার মৌজার ভূমি এবং জুমচাষ থেকে রাজস্ব আদায় করে। ভূমি প্রশাসন বিশেষত ভূমি হস্তান্তর প্রক্রিয়া যথেষ্ট সময়সাপেক্ষে ব্যাপার, যার ফলে দেখা যায় সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগে অনেকে মৃত্যুবরণ করে বা ক্ষেত্রবিশেষে আবেদনপত্র প্রত্যাহার করে নেন। ফলে অনেকেই অবৈধভাবে ক্রয়, বিক্রয়সহ অননুমোদিতভাবে ভূমির মালিক হয়ে থাকে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে কিছু স্বার্থান্বেষী ও প্রতারক নিজ নামে ভূমি নিবন্ধন করে নিরীহ জনগোষ্ঠীকে প্রতারিত করছে, যা পার্বত্য চট্টগ্রামে জাতিগত দাঙ্গার জন্ম দিচ্ছে। অবৈধভাবে জমি দখল না করলে জমির মালিক হওয়া কঠিন- এমন বাস্তবতা পার্বত্যাঞ্চলে বিতর্ক এবং সংঘর্ষের জন্ম দিচ্ছে। এ ধরনের জটিল প্রক্রিয়ার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি জটিলতা দীর্ঘসূত্রতা লাভ করছে।

অত্র অঞ্চলে টেকসই শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার স্বার্থে ভূমি সমস্যা সমাধান অতীব জরুরি। ভূমি কমিশনকে অবৈধভাবে দখলকৃত জমি এবং পাহাড়ের মালিকানা বাতিল করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন বাস্তবিক সমস্যার কারণে কমিশন আশানুরূপভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেনি। ২৭ জানুয়ারি ২০১০ সালে খাগড়াছড়িতে অনুষ্ঠিত প্রথম ভূমি কমিশনের সভায় ভূমি সমস্যা সমাধানের আগে ভূমি জরিপের প্রয়োজনীয়তার কথা আলোচিত হয়। কিন্তু কমিশনের উপজাতীয় সদস্যরা সর্ব প্রথমে “CHT Land Dispute Settlement Commission Act-2001” সংশোধনের দাবি জানান। সে মোতাবেক আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান ১৯টি ধারা সংশোধনের দাবি করেন। অপরদিকে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি প্রথমে ২৩টি ধারা সংশোধন করার কথা বললেও পরে ১৩টি ধারা সংশোধনের দাবি জানান। শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন এবং পর্যালোচনা কমিটি ২২ জানুয়ারি ২০১২ তারিখ ১২টি সংশোধনী করার পরামর্শ প্রদান করে। ২৮ মার্চ ২০১২ সালে ভূমি মন্ত্রণালয় উল্লিখিত আইন সংশোধনের জন্য আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার আহ্বান করে। ভূমি মন্ত্রণালয় ছয়টি সংশোধনের জন্য সর্বসম্মতভাবে একমত হয় এবং বাকি সাতটি সংবিধানের পরিপন্থী বলে অনুমোদন পায়নি।

এ সংশোধনসমূহের কিছু পদ্ধতিগতভাবে বেশ জটিল, কিছু অত্র অঞ্চলে অবস্থিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার ভবিষ্যতের জন্য হুমকিস্বরূপ, কিছু সংশোধন কমিশনের স্বাধীনভাবে কাজ করার পথে অন্তরায় ও কয়েকটি নীতিগতভাবে কার্যপ্রণালীর পরিপন্থী। এটা ধরে নেওয়া যায় যে, শান্তিচুক্তির আগে উভয়পক্ষই স্ব-স্ব অবস্থানে অনড় না থেকে পারস্পরিক সম্মান ও বোঝাপড়ার ভিত্তিতে একটি সর্বজনীন কর্মপন্থা নির্ধারণের ব্যাপারে একমত হয়েছে। আনীত সংশোধনীসমূহ সেই দৃষ্টিকোণ থেকে কতটা সংগত ও শান্তিচুক্তির মূল্যবোধের সঙ্গে কতটা যুৎসই তা যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে ভেবে দেখা প্রয়োজন।

দীর্ঘ সময় ধরে কমিশনের স্থবিরতার জন্য মূলত কমিশনের উপজাতীয় সদস্যবর্গের কমিশনকে তার কাজকর্মে সমর্থন ও সহযোগিতা প্রদানের ব্যাপারে অনাগ্রহই দায়ী। এ ছাড়া কিছু গণমাধ্যম ও বুদ্ধিজীবীদের উপস্থাপনায় বস্তুনিষ্ঠতার অভাব মৌলিক বিষয়গুলোকে আড়াল করে রেখেছে। এটা খুবই দুঃখজনক যে শান্তিচুক্তির পর থেকে এপ্রিল ২০১২ পর্যন্ত সর্বমোট ৫১৭ জন নিহত, ৮৭৭ জন আহত আর ৯৫৯ জন অপহৃত হয়েছেন। অথচ আঞ্চলিক নেতারা বিরাজমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যথাযথ মূল্যায়ন ব্যতিরেকেই পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সব সামরিক ক্যাম্প প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছেন। এমনকি সিএইচটি কমিশন, United Nations Permanent Forum For Indigenous Issues (UNPFII), ইউরোপীয় ইউনিয়ন উপজাতিদের প্রতি অযৌক্তিকভাবে সমর্থন ব্যক্ত করে বিষয়টিকে আরও জটিল করে তুলছে। বিভিন্ন বিদেশি ব্যক্তিবর্গ ও সংস্থা পার্বত্য চট্টগ্রাম ইস্যুর সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার কারণে উপজাতি ইস্যুতে আন্তর্জাতিক মাত্রা যুক্ত হয়েছে, যা পার্বত্য অঞ্চলকে একটি আলাদা রাষ্ট্র তৈরির বুনিয়াদ সৃষ্টিতে সহায়ক হতে পারে। পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক কমিশনের চেয়ারম্যান Lord Eric Ava bury একজন অভিজ্ঞ ব্রিটিশ সংসদ সদস্য। বৈশ্বিক নানা বিষয়ে তার প্রচুর অভিজ্ঞতা আছে; যেমন জনগণের অধিকার আদায়ে ইতিপূর্বে তিনি পেরু, ক্যামেরুন এবং ইরানে কাজ করেছেন। তিনি সুদান এবং পূর্ব তিমুরে আলাদা খ্রিস্টান রাষ্ট্র গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য বেশ পরিচিত। পার্বত্য চট্টগ্রামে ইতোমধ্যে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা কর্তৃক উপজাতিদের খ্রিস্টান ধর্মে দীক্ষিত করার তথ্য রয়েছে, যা অত্র এলাকার উন্নয়ন ও নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। কমিশনের অপর সদস্য সুইডেন নাগরিক Mr. Lars Anders Bear বিভিন্ন দেশের আদিবাসী ইস্যু নিয়ে কাজ করেন। তিনি UNFPII-এ স্পেশাল রেপোর্টিয়ার হিসেবে নিয়োজিত। UNFPII এর দশম অধিবেশনে Mr. Lars Anders Bear কর্তৃক উপস্থাপিত ‘Status of the  implementation of CHT Peace Accord of 1997’ যথেষ্ট বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক কমিশনের সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ সফর করেন এবং তার সংগৃহীত তথ্য-উপাত্ত UNFPII এর স্বার্থে ব্যবহার করে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন। শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অসামান্য অবদানের পরও তিনি অপ্রয়োজনীয়ভাবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সমালোচনা করেছেন। সার্বিক বিবেচনায় বলা যায় যে, দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থা, ব্যক্তিবর্গ পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতি ইস্যুটি বহির্বিশ্বে আমাদের সুনাম ক্ষুণ্ন করতে ব্যবহার করছেন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আদিবাসী জনগণের নিরাপত্তার জন্য জাতিসংঘ ১৯৫৭ সালে আইএলও ১০৭ প্রণয়ন করে। এটি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয় এবং কোনো দেশের সার্বভৌমত্বকে খাটো করেনি, তাই বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে আইএলও ১০৭ চুক্তিটি স্বাক্ষর করে। কিন্তু বাংলাদেশ ১৯৮৯ সালে প্রণীত উপজাতিদের নিরাপত্তাবিষয়ক আইএলও ১৬৯ সনদ স্বাক্ষর করা থেকে বিরত রয়েছে। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ২২টি দেশ এই সনদে স্বাক্ষর করলেও এশিয়ার নেপাল ছাড়া বাকি কোনো দেশ স্বাক্ষর করেনি। আইএলও ১৬৯ এর সনদ অনুযায়ী ঐতিহ্যগত, ব্যক্তিগত এবং সাম্প্রদায়িক মালিকানা ছাড়াও, রাষ্ট্র ভূমি রক্ষণাবেক্ষণ এবং ব্যবহারের ক্ষমতা রাখে। আশ্চর্যজনকভাবে এই সনদে সরকারি খাসজমির ব্যাপারে কিছু উল্লেখ নেই। অথচ এই খাসজমিতে বাঙালিদের অভিবাসনের মাধ্যমে অত্র অঞ্চলের ভূমি সমস্যার জটিলতা বৃদ্ধিসহ নানা বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। সনদ মোতাবেক স্থানীয় আধিবাসীদের অনুমতিক্রমে সামরিক অভিযানসহ অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। রাষ্ট্রকে নিশ্চিত করতে হবে যেন বহিরাগত কেউ জমির মালিক হতে না পারে। সার্বিক প্রেক্ষাপটে ‘আদিবাসী’ ইস্যুটি আজ আর কোনো আলাদা বিষয় নয়। জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা ছাড়াও উপজাতি সম্প্রদায়গুলো ‘আদিবাসী’ শব্দটি ভূমি অধিকার সংরক্ষণের স্বার্থে ব্যবহার করতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। মরহুম বোমাং সার্কেলপ্রধান অং সাং প্রু পরিষ্কারভাবে বলে গেছেন পার্বত্য চট্টগ্রামে কোনো আদিবাসীর অস্তিত্ব নেই। ২০০৮ সালে চাকমা রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় যখন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে অধিষ্ঠিত ছিলেন, তখন তিনিও এমন দাবির সপক্ষে অবস্থান নেননি। এমনকি আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও আদিবাসী শব্দটির ব্যবহার নেই। ভারতীয় সংবিধানের ৩৪১ এবং ৩৪২ নম্বর ধারা অনুযায়ী ভারতে scheduled cast I scheduled cast tribes রয়েছে। ভারতের বিশাল জনগোষ্ঠীর শতকরা ২৪ ভাগ লোক বিভিন্ন গোত্রের হলেও তারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে একসঙ্গে বসবাস করছেন। মন্ত্রিপরিষদে অনুমোদিত ভূমিবিরোধ সংশোধন আইন এ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় গৃহীত বিশেষ পদক্ষেপ হিসেবেই বিবেচিত হবে, তবে এতদসঙ্গে বাঙালিদের স্বার্থ রক্ষার বিষয়টি বিবেচনা ব্যতিরেকে এই সিদ্ধান্ত দীর্ঘমেয়াদি শান্তি প্রতিষ্ঠায় কতটা সহায়ক হবে তা সময়ই বলে দেবে। অন্তত পার্বত্যাঞ্চলের বিভিন্ন বাঙালি সংগঠনের সাম্প্রতিক প্রতিক্রিয়া থেকে এমনটিই লক্ষণীয়।

স্বাধীনতার ৪২ বছর পর জাতি সফলভাবে সামাজিক অর্থনৈতিক বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করে অর্থনীতির চাকা সচল রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে। প্রতিদিনই জমি এবং সম্পদ সংকুচিত হয়ে আসছে এবং পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। তাই পার্বত্যাঞ্চলে বিরাজমান পরিস্থিতির সমাধানে কালক্ষেপণ বৈশ্বিক বাস্তবতায় কাম্য নয়। উপজাতি বিষয়ে আমাদের সুষমভাবে তাদের অধিকার এবং উত্তরাধিকার নিশ্চিতকরণসহ বাঙালিদের মৌলিক অধিকার রক্ষা করা জরুরি। সরকার পুনর্বাসিত বাঙালিদের অধিকার সংরক্ষণের দায়িত্বটি সরকারকেই পালন করতে হবে। পার্বত্য এলাকার মোট জনসংখ্যার মোটামুটি অর্ধেক বাঙালি। সময়ের পরিক্রমায় পার্বত্য এলাকায় বাঙালিদের আগমন একটি ঐতিহাসিক ঘটনা, যার সুষ্ঠু সমাধান- বাঙালিদের ফিরিয়ে নেওয়ার মধ্যে নয়, বরং উভয় সম্প্রদায়ের স্বার্থ নিশ্চিতকরণসহ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার মাধ্যমেই সম্ভব। এখনই সময় যেন সরকার গণমাধ্যম, বুদ্ধিজীবী, রাজনীতিবিদ এবং সর্বস্তরের মানুষকে এ বিষয়ে সম্পৃক্ত করে চুক্তি বাস্তবায়নের বাকি কাজ সম্পন্নের জন্য এগিয়ে যায়। অত্র অঞ্চলে ব্যাপক উন্নয়নের মাধ্যমে এখানকার অধিবাসীদের দেশের মূল স্রোতধারার সঙ্গে যুক্ত করা জরুরি। জাতীয় সার্বভৌমত্ব এবং অখণ্ডতা অক্ষুণ্ন রেখে সরকারের পাশাপাশি উপজাতীয় নেতাদের এ ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। সামনের দিনগুলোতে এই অঞ্চলের শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একযোগে কাজ করতে পারলেই দীর্ঘস্থায়ী শান্তির পথ সুগম হবে।

লেখক : কমান্ডার, ৩০৫ পদাতিক ব্রিগেড(ব্রিগেড কমান্ডার, রাঙামাটি) বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

 

পার্বত্য চট্টগ্রাম ও বাংলাদেশে আদিবাসী বিষয়ে আরো পড়ুন:

পার্বত্য চট্টগ্রাম জাতীয় দৃষ্টির মধ্যে রাখতে হবে

একটি স্থায়ী পার্বত্যনীতি সময়ের দাবী

বাংলাদেশে আদিবাসী বিতর্ক

আদিবাসী বিষয়ে আন্তর্জাতিক আইনের ভুল ব্যাখ্যা ও অপপ্রয়োগ

পার্বত্য চট্টগ্রাম কি বাংলাদেশ নয়, বাঙালীরা কি মানুষ নন- ১

পার্বত্য চট্টগ্রাম কি বাংলাদেশ নয়, বাঙালীরা কি মানুষ নন- ২

পার্বত্য চট্টগ্রাম কি বাংলাদেশ নয়, বাঙালীরা কি মানুষ নন- ৩

চাকমা রাজপরিবারের গোপন ইতিহাস

পার্বত্য চট্টগ্রাম, খ্রিস্টান মিশনারি ও বৌদ্ধধর্মের ভবিষ্যৎ-১

পার্বত্য চট্টগ্রাম, খ্রিস্টান মিশনারি ও বৌদ্ধধর্মের ভবিষ্যৎ-২

পার্বত্য চট্টগ্রাম, খ্রিস্টান মিশনারি ও বৌদ্ধধর্মের ভবিষ্যৎ-৩

বাংলাদেশে তথাকথিত ‘আদিবাসী’ প্রচারণা রাষ্ট্রীয় স্বার্থ প্রশ্নসাপেক্ষ

উপজাতীয় নওমুসলিমদের ওপর খ্রিস্টান মিশনারিদের দৌরাত্ম্য

পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনা-বাঙ্গালী প্রত্যাহার ও খ্রিস্টান অঞ্চল প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন

 

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: জেএসএস, পার্বত্য চট্টগ্রাম, পাহাড়ী
Facebook Comment

106 Replies to “পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি বিরোধ: প্রেক্ষাপট ও শান্তির সম্ভাবনা”

  1. লেখককে অনেক ধন্যবাদ। বিশেষ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যে এত পড়াশোনা করা তা জানতাম না। তবে কিছু কিছু তথ্য আরেকটু পরিস্খার হওয়া দরকার ছিল। পাকিস্তান সরকার কাপ্তাই বাঁধের কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের যথেস্ট পরিমাণ ক্ষতিপুরণ দিয়েছে। পাহাড়ীদের অনেক বইয়ে এটা উল্লেখ আছে। তবে জমির মালিকানা বা কাগজ না থাকায় কাকে ক্ষতিপুরণ দেয়া হবে এমন প্রেক্ষাপটে অনেকে ক্ষতিপুরণ পায়নি। কাজেই এক কথায় ‘পায়নি’ বলা যায়না। এছাড়া পাকিস্তান সরকার যদি চাকমাদের এতো ক্ষতিই করে থাকে তবে চাকমারা ১৯৭১ সালে কেন পাকিস্তানের পতাকা উড়ালো, পাকিস্তানের পক্ষ নিলো। বিশেষ করে চাকমা রাজা। এর উত্তর কি?
    লেখকের আছে এ বিষয়ে আরো দুএকটি লেখা দেখতে চাই। এ ধরণের লেখার মাধ্যমে তিনি জাতীয় দায়িত্ব পালন করেছেন। বিশেষ করে মিশনারী ও এনজিও তৎপরতা নিয়ে তার কাছ থেকে লেখা আশা করছি।

    1. পার্বত্য চট্টগ্রামে আর্মি শাসন চলছে বিগত প্রায় চার দশক ধরে ! শাসন শোষণ বিভাজন কিংবা আইনি সংক্রান্ত টুকটাক ছোটখাটো প্রবন্ধ ছাড়া কোনো সেনা কর্মকর্তা অদ্যাবধি কোনো জাতি গোষ্টির উত্পত্তির ইতিহাস নিয়ে গভেষনা করার আগ্রহ দেখান নি ! ইদানিং জাতিসংঘের আদিবাসী সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে একশ্রেনীর ভুইফোর ইতিহাসবিদ জন্ম নিচ্ছে ,মরিচা বা জাং ধরা সেনাকর্মকর্তাগণ সেই সুযোগ হাতছাড়া করবে কেন ! ইতিহাস ইতিহাসই ,সেই ইতিহাসকে জোর করে বি এন পি ,আওয়ামেলিগ ধাঁচে বাংলার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বানালে চলবেনা ! ব্রিগেডিয়ার সাহেব কিন্তু চাকমাদের রাজানগর ,রাঙ্গুনিয়া ,শিলক ,সুখবিলাস প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সুচতুরভাবে এড়িয়ে গেছেন !

      1. Army na thak le tu Paharider nijeder moddhe maramaritei shesh hoye jabe. India´r motoi CHT-e army thakbe, dorkar. Na hole sekhankar Bangali ba songkha loghura protidin mar khabe. Er tulonai Bangali rai khub beshi kharab noi.Burmar´r tulonai Bangladesh onek beshi bhalo.

    2. চাকমা রাজার স্ব:ইচ্ছায় পাকিস্তানকে সাপোর্ট করেছিল, কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনতা পার্বত্য চট্টগ্রামকে ভারতের সাথে অন্তর্ভুক্ত করার পক্ষে ছিল। তাই আপনার ভ্রান্ত ধারণা সংশোধনের জন্য চাকমাদের অবস্থান সম্পর্কে আপনাকে জানালাম। রাঙামাটিতে যে ভারতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিল সেই সব ইতিহাসের কথা তো উল্লেখ করা হয় না।

      1. এটা অবসস লেখক মিস করেছেন। ১৯৪৭ সালে আপনারা দেশ বিভাগের সময় ইন্ডিয়ার পতাকা উঠাএছিলেন কারন তখন ইন্ডিয়া পাকিস্তান বিভগত হয়। যখন পাকিস্তান -বাংলাদেশ বিভগত হয় তখন পাকিস্তানের পতাকা উড়ান।

  2. প্রবন্ধটি পড়ে মনে হচ্ছে, অভিজ্ঞতা এবং যথেষ্ট গবেষণার ফসল এটি। বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত জনগোষ্ঠীগুলোর ইতিহাস, মোগলদের সাথে চাকমাদের সম্পৃক্ততা চমৎকারভাবে ফুটে ওঠেছে। তবে প্রবন্ধটির দৃষ্টিকোণ বিবেচনায় বলা যায়, এর মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের আর্থসামাজিক সমস্যাকে চিহ্নিত করে তা সমাধানের পথ ইঙ্গিত করা হয়েছে। যেমন উপসংহারে লেখক লিখেছেন-
    ‍’পার্বত্য এলাকার মোট জনসংখ্যার মোটামুটি অর্ধেক বাঙালি। সময়ের পরিক্রমায় পার্বত্য এলাকায় বাঙালিদের আগমন একটি ঐতিহাসিক ঘটনা, যার সুষ্ঠু সমাধান- বাঙালিদের ফিরিয়ে নেওয়ার মধ্যে নয়, বরং উভয় সম্প্রদায়ের স্বার্থ নিশ্চিতকরণসহ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার মাধ্যমেই সম্ভব।’

    বিষয়টি আসলে তাই। এই মুহুর্তে এক শ্রেণীর পাহাড়ি তথা উপজাতীয় নেতৃবৃন্দ মনে-প্রাণে বিশ্বাস করেন যে, পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে বাঙালিদের সরিয়ে নিলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। তাই তারা তাদের সকল প্রকার দাবি-দাওয়া স্থির করেন এই একটা উদ্দেশ্যকে প্রাধান্য দিয়েই। কিন্তু প্রশ্ন হলো, তাদের এই দাবিটি সরকার মেনে নিলেই কি পার্বত্য সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে? মোটেই না। ১৯৭১ এবং ১৯৪৭ সালে উপজাতীয় নেতাদের ভূমিকা বিচার করলে এটা সহজেই বুঝা যায় যে, তারা আসলে কি চায়! কেননা সে সময় তো বাঙালি সমস্যা ছিল না। তাছাড়া উপজাতীয় নেতারা জেএসএস এবং শান্তিবাহিনী প্রতিষ্ঠা করে নিরাপত্ত্বাবাহিনী এবং বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিদের ওপর চোরা-গুপ্তা হামলা শুরু করেছিল পার্বত্যাঞ্চলে বাঙালিদের পুনর্বাসন শুরু হওয়ার আগেই। ফলে তাদের চোরা-গুপ্তা হামলাকে অকার্যকর করার প্রয়োজনীয়তা থেকেই বাঙালিদের পার্বত্যাঞ্চলে পুনর্বাসন শুরু হয়েছিল।
    যাইহোক, আসলে বিচ্ছিন্নবাদিতাই তাদের লক্ষ্য, আর এই মুহুর্তে পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকারের প্রশাসন কিংবা সেনাবাহিনীর উপস্থিতির চেয়ে তাদের বিচ্ছিন্নতার পথে প্রধান অন্তরায় হচ্ছে বাঙালি সম্প্রদায়। বিষয়টি লেখক সরাসরি না বললেও তিনি যে এ বিষয়ে ওয়াকিবহাল তা এ লেখায় ফুটে ওঠেছে। তাছাড়া তিনি সরকারের একজন কর্মকর্তা হওয়ায় ধারণা করি যে, সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোও এ ব্যাপারে সচেতন আছে। যদিও আমরা অত্যন্ত দুঃখের সাথে লক্ষ করি যে, বিভিন্ন সমায় পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পর্কিত সরকার নির্ধারিত পলিসিতে এর তেমন কোন প্রতিফলন থাকে না।

    1. বিচ্ছিন্নতাবাদী বললে কিন্তু ইতিহাস লব্দ জ্ঞান সংকীর্ণ বলে যদি কেউ মন্তব্য করে তাহলে কোনো ভুল হবে না। কারণ জনসংহতি সমিতির সশস্ত্র শাখা শান্তিবাহিনীর কর্য্যক্রম কোনমতে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন ছিলনা। শান্তিবাহিনী তার সশস্ত্র জীবনে ও তাদের পৃষ্টপোষকতায় পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিভিন্ন প্রান্তে শিক্ষার কার্য্যক্রম চালিয়েছিল স্কুল প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে। সেখানে দলীয় সঙ্গীত পরিবেশনের আগে কিন্তু বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হত। তাই সাহেব আপনার বিচ্ছিন্নতাবাদী যুক্তির কোনো অস্তিত্ব নেই।

      1. Desher biruddhey osto niye koto hanahani,maramari, rahajani kore sokol somproday mile soto soto lok mara gelo. ar koto lok morle bicchinnyotabadi bolben. Bicchinnyotabadi na hole shanti chukto hoto kokhono.vogoban doya korchen je santi chukti hoiche.

  3. এই প্রথম রাঙামাটিতে কর্মরত একজন সেনা কর্মকর্তা তার জ্ঞানের ভান্ডার উম্মোচন করলেন। আমি মনেকরি পার্বত্যবাসি (যারা আসলেই পার্বত্য চট্টগ্রামকে ভালোবাসেন এবং এই অঞ্চলকে দেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ মনে করেন) এই লেখা থেকে অনেক কিছু শেখার ও বুঝার আছে….

    লেখকের কাছে এ বিষয়ে আরো দুএকটি লেখা দেখতে চাই। এ ধরণের লেখার মাধ্যমে তিনি জাতীয় দায়িত্ব পালন করেছেন। বিশেষ করে মিশনারী ও এনজিও তৎপরতা নিয়ে তার কাছ থেকে লেখা আশা করছি। অনেক ধন্যবাদ………….লেখককে।

    1. পার্বত্য চট্টগ্রামে আর্মি শাসন চলছে বিগত প্রায় চার দশক ধরে ! শাসন শোষণ বিভাজন কিংবা আইনি সংক্রান্ত টুকটাক ছোটখাটো প্রবন্ধ ছাড়া কোনো সেনা কর্মকর্তা অদ্যাবধি কোনো জাতি গোষ্টির উত্পত্তির ইতিহাস নিয়ে গভেষনা করার আগ্রহ দেখান নি ! ইদানিং জাতিসংঘের আদিবাসী সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে একশ্রেনীর ভুইফোর ইতিহাসবিদ জন্ম নিচ্ছে ,মরিচা বা জাং ধরা সেনাকর্মকর্তাগণ সেই সুযোগ হাতছাড়া করবে কেন ! ইতিহাস ইতিহাসই ,সেই ইতিহাসকে জোর করে বি এন পি ,আওয়ামেলিগ ধাঁচে বাংলার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বানালে চলবেনা ! ব্রিগেডিয়ার সাহেব কিন্তু চাকমাদের রাজানগর ,রাঙ্গুনিয়া ,শিলক ,সুখবিলাস প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সুচতুরভাবে এড়িয়ে গেছেন !

      1. Ei kothaty prai e bolte suni, sena sason cholche. Ekhon e amader jomi, nouka,dokan, chgol,goru,kath, bash, kolar chori, anarosher nouka emon kichu nai jekhan theke apnara chanda na tulen. ar nirapotta bahini na thakle amader obostha kemon hoto apni e bolen. Borong senarai jai pare amader k sikkha, medical soho bivinnyo proyojone agiye ase.

  4. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সরোয়ার হোসেনের এই লেখার মাধ্যমে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে, সেনাবাহিনী আমাদের প্রতি কি ধরনের বিদ্রুপাক্তক মনোভাব পোষণ করেন।

    1. The entire article is just a clear picture of CHT, I don’t think in any where Brig. Gen. Sarwar made any fun of anyone.

    2. বন্ধুগণ…………..আমার মনে হচ্ছে ব্রি: সাহেবকে ভূল না বুঝে সঠিক তথ্য উপাত্ত আপনারাও তুলে ধরেন……………………..

    3. একজন সেনা কর্মকর্তা ইতিহাস তুলে ধরেছেন,তাঁর মানে এইনা উক্ত লেখা সবার জন্য গ্রহণযোগ্য হতে হবে কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত কয়েকজন উগ্রপন্হী আদিবাসী নামের কলংক ইতিহাসের বিপরীতে নতুন কোন ইতিহােসর কমেন্ট করতে না পারলেও কিছু কথাবার্তা পড়ে মনে হচ্ছিল,

      “তিন পার্বত্য জেলা আদিবাসী পাহাড়ী গুলোর পৈত্রিক সম্পত্তি,বাংগালী সেনা কর্মকর্তা কেন যুগের পর যুগ ধরে পার্বত্য এলাকায় বসবাসরত বাঙ্গালী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি গন কিছুই বলতে পারবেনা+পার্বত্য বাঙালী জনগণের কিছুই করার অধিকার নাই পার্বত্য ভূমিতে-!!!

      আর সুমন বড়ুয়া নামের একজন তো কমেন্ট করছে-“সমাজের *** সন্তানের মতো করে,জন্ম পরিচয়হীন *** বাচ্চাদের কাছ থেকে ভালো কিছু আশা করাটাও একটা অপরাধ-!!!

      আমি লেখা টা পড়ার জন্য ঢুকেই, “কয়েকজন বেয়াদব জ** পরিচয়হীন কুশিক্ষিত জা** কমেন্ট পড়ে মূল লেখাটাই পড়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছি,ওদের কমেন্ট পড়লে যত যাই বলেন না কেন সম্প্রীতি আশা করা কঠিন।এতো বিকৃত রুচিবোধ হীন লোকজন যে ফেইসবুকে আছে আজকেই প্রথম জানলাম”!!!

      উপসংহারে এটুকুই বলবো, “লেখক কে আন্তরিক ধন্যবাদ,বস্তুনিষ্ঠ সঠিক সময়োপযোগী আদি ইতিহাস সুন্দর লেখনী দিয়ে আমাদের নতুন প্রজন্মের সামনে উপস্থাপন করেছেন।পাশাপাশি যেসব নির্বোধরা লেখা নিয়ে বাজে কমেন্ট করছে তাদের আচরণ দিয়েই তারা বুঝিয়ে দিচ্ছেকেন আজকে পাহাড়ে এতো অশান্তির আগুন ধাওয়া ধাও করে জ্বলছে প্রতিটি ঘরে-ঘরে, এমনকি পাহাড়ে অশান্তির জন্য মুলত কমেন্ট করা উগ্রপন্হী চিন্তা চেতনার ওইসব আদিবাসী কলংক গুলো অনেকাংশেই দায়ী”!!!

      1. Dada,
        Eta comment hoynai, ekta essay likhe upload kore din na please.Somoy nosto kore copy paste jinispotro keu pore? Apni porten. Sudhu sudhu site clittered kore dicchen. Asa kori bujben. Onek dhonnyobad.

  5. এই লেখাটির জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। লেখাটি অনেক ভাল লেগেছে। ভবিষ্যতে আরো লেখার অনুরোধ জানাচ্ছি।

  6. প্রথমে ধন্যবাদ জানাচ্ছি বির্গেডিয়ার সাহেবকে। তিনি অনেক ইতিহাস তুলে ধরেছেন। ইতিহাস সর্মপকে আমার এত ধারণা নেই, তাই তার তথ্য-উপাত্ত ভুল/শুদ্ধ ধরার আমার ক্ষমতা নেই। তবে বর্তমান রাজনৈতিক পেক্ষাপটে অনেক কিছু বলার অভিযোগ-অনুযোগ তো আছেই বা থাকে, কিন্তু আমরা যারা সাধারণ নিরিহ জনগন আমাদের বক্তব্য মূল্যহীন। বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর অদ্যাবধি পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি মূল্যায়ণ সাধারণ জনগণের বোবার (বাকশক্তিহীন) স্বপ্নের ন্যায়। কাজেই আমি মনে করি, জাতিগত সমস্যাগুলো সমাধানের প্রথম শর্ত হচ্ছে মানবিক দৃষ্টিকোণে আন্তরিক বিবেচনা অত্যন্ত জরুরী।

  7. Bangladesh Army (sena Bahini) Chittagong Hill tracts er Odhibasider je rup Aacharon kore,tar e bebohar tar lekhai tule dhoreche.atai sposto tini Hill tracts er land ke Bangalider mone koren…Aadibasi ra bohiragoto……tai Communal conflict e Armir protthokkyo support Dekha jai. (Sheyaler kache Murgi rakha…)

  8. Sarwar,
    Impressed with your consolidating and analytically presented article!
    It is surely an article of very tenacious study and committed perseverance.
    Regards and sincere respect for you dear friend. Proud of you!
    Shakil

  9. British bolon r bangali so ek typer mal, tara to egili bolbe ! Karon tader maje je pakistani r british der mal pore ase !so sala samrajjobadi , british ra tobuo ektu ektu kore bujte perese, r bangalir kotha r ki bolbo

    1. Danguru Chakma apni je koto boro mal ta apnar comment e bojhai jai. Try to learn history and behavior also. Tate apnar e somman bachbe. Truth is always sour. Sotto k accept korte shikhun……..

  10. পেশাদারী অভিজ্ঞতার ফসল এই লেখাটি। নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গীতে সমস্যার অন্তর্ভেদী কারনগুলো লেখাটিতে উঠে এসেছে। ষড়যন্ত্রের মূল হোতাদের পেশাদারী ও কূটনৈতিক বক্তব্যে চিহ্নিত করা হয়েছে। আমরা ষড়যন্ত্রকারীদের সম্পর্কে আরও বেশি সেনাবাহিনী কতৃক প্রাপ্ত গোয়েন্দা তথ্যের প্রকাশ চাই। আমরা চাই খুলে দেয়া হোক খলনায়কদের মুখোশ। ধন্যবাদ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সরোয়ার হোসেন, এইচডিএমসি, পিএসসি স্যারকে। আমরা আশাবাদ ব্যক্ত করি সেনাবাহিনীতে কর্মরত উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে আরও স্পষ্ট মনোভাব প্রকাশ করবেন ভবিষ্যতে।

  11. পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পর্কে একটি পূর্ণাঙ্গ লেখা। একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে অনেক কিছু না লেখে কিছু কিছু করে সকল বিষয় এ লেখায় উঠে এসেছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পর্কে অনেক অজানা কথা জানলাম। বিশেষ করে আমরা যারা পার্বত্য এরাকার বাইরে থাকি তারা অনেক সময় সঠিক তথ্য পাইনা এই অন্ঞল সম্পর্কে। বরং উল্টা তথ্য্য পাই। লেখককে অনুরোধ করবো লেখাটা ইংলিশ ট্রান্সলেশন করে বিদেশী কোনো পত্রিকায় প্রকাশের ব্যবস্থা করার জন্য। পার্বত্য নিউজের কাছেও অনুরোধ এই সাইটের একটি ইংলিশ ভার্সন করার জন্য। আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় এটা খুবই জরুরী।

  12. জিয়াইর রহমান সরকার প্রচুর পরিমানে দুস্ট ও ফেরোশাস বাঙালি পরিবারকে পার্বত্য এলাকায় বসবাসের সুযোগ করে দেয়। পুনর্বাসিত প্রতিটি বাঙালি পরিবারকে পাঁচ একর করে খাসজমি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়, সাথে সাথে ওরা রাস্ট্রীয় সহঝোগিতায় আশেপাশের উপজাতীয়দের ভোগদখলীয় ভুমি প্রচুর পরিমানে দখল করে নেয় যা ছেড়ে দেওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই, এটিই হলো ভুমি বিরোধের মুল কারন।

    1. বন্ধুগণ…………..আমার মনে হচ্ছে ব্রি: সাহেবকে ভূল না বুঝে সঠিক তথ্য উপাত্ত আপনারাও তুলে ধরেন……………………..

  13. লেখা এবং কমেন্টের বহর দেখে বেশ মজা পাচ্ছি! একজন ব্রিগেডিয়ার যে কিনা সরকারবর্গের আদেশধারনে চিরআজ্ঞাবহ কেবল তাঁর পক্ষেই এমন একটি পাচমিশালি মুড়ির ঠোঙা অনলাইন পত্রিকায় ছাপা সম্ভব যেহেতু পার্বত্য ইস্যুতে সরকার এবং সেনাবাহিনীর অনুমতি ছাড়া হাইকমান্ডের পক্ষেও লেখা সম্ভব নয় ! আমাদের পাহাড়িদের পূর্ব অভিজ্ঞতার আলোকে আমরা জানি যে কারা ‘উপজাতি’ শব্দটি কেন ব্যবহার করে। এক কর্নেল ইব্রাহীম গেলেও যে হাজার নয়া শিয়াল আসবে আর সরকারের কাঁচুমাচু সুশীল চেহারার আড়ালে যে পশুত্বের লালন চলছে এই লেখা লিখন এবং প্রকাশই তাঁর প্রমাণ। এমন অনলাইনি জলপাই ফতোয়ায় আমার কোটি কোটি থুঃ থুঃ নিক্ষেপ করলাম!

    1. I thought the chakmas are introvert but reading their comment, now I feel they are as primitive as australian aborigins.

      Eder maje samanooyo srijonshilotar chap nei.

      Shamsul, DU

      1. চাকমা দের ** ভিতর ১২ হাত লম্বা ** দুকিয়ে তারপর বলেন,কেমন লাগছে ??

    2. thutu dye lav nei. Chakma ra oikoboddho na. Tara lekhapora ar chakori chhara kichchui bujehna. Rajniti korar motu jati noi. Dekho….Chakma der ekmatro sokti Rangamati shohor Bangali rai purupuri dokhol kore rekheche. Ekhon Parbatta chottogramer rajdhani ekhon tripura rajjer Agortala´r motui dekhte.Tobu Chakma der jonno ami chintitto!

  14. Thanks a lot for wrong information. Finally BDs arms force top officer prove that he got a head totally full of cowdang.

    1. Amra sottyo tai jante chai vhaiya. Totthoyo vittik kichu likhun. Se dure thakuk ekta useful comment o post korenny. apnader moto orbachin ra site nosto korte asen keno janina ?

  15. দারুন সুন্দর একটি কলাম পড়লাম। প্রকৃত সত্য জানার জন্য এই ধরনের লেখা সবার পড়া উচিত বিশেষ করে পার্বত্য বিষয়ে চিন্তাশীল সুশীলদের। লেখককে অসংখ্য ধন্যবাদ।

  16. এই লেখাটে পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যার আদি হতে অন্ত পর্যন্ত তুলে ধরা হয়েছে । সমস্যা কারা তৈরি করেছে, কারা জিইয়ে রেখেছে, পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথম আদি সন্তান কারা এইসব বিষয় তুলে আনা হয়েছে । পড়ে দেখুন আশা করি আপনাদের ভুল ভেঙে যাবে ।

    পার্বত্য চট্টগ্রামে সাম্প্রদায়িকতার উৎসমূখ

    লিখেছেন: ADISON CHAKMA
    এপ্রিল ২৫, ২০১৩

    এই লেখাটি এর আগে আমাদের লিটল ম্যাগাজিন “হুচ”-এর বিঝু সংখ্যাটে প্রকাশিত হয়েছে । “হুচ”-এর প্রকাশনার সাথে জড়িত সবার অনুমতিক্রমে লেখাটি প্রকাশ করার জন্য জমা দিলাম ।

    আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রায়শই দেখা যায় বিভিন্ন ইস্যুতে সাম্প্রদায়িক মনোভাব এবং তার ভিতরকার রুপ ছেড়ে বাইরে এসে সৃষ্টি করছে মারামারি, খুনোখুনির মত অস্বাভাবিক পরিষ্টিতি, যাকে সোজা কথায় আমরা দাঙ্গা বলে চিহ্নিত করে থাকি এবং এটি স্বাভাবিকভাবেই পার্বত্য চট্টগ্রামে অবস্থানরত দুই জাতির জাতিগত দ্বন্ধ । একদিকে পাহাড়ি আর অন্যদিকে সরকার কর্তৃক পুনর্বাসিত বাঙালি । পার্বত্য চট্টগ্রামের এই পাহাড়ি আর বাঙালি সাম্প্রদায়িক মনোভাব সৃষ্টি একদিনে হয় নি; পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি আর বাঙালিদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক মনোভাব সৃষ্টির ইতিহাস বেশি দীর্ঘ নয়, আবার একেবারে ইদানিং কালেরও নয় । পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি আর বাঙালিদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক চেতনা সৃষ্টি, একে অপরের প্রতি অবিশ্বাস, ঘৃনা সৃষ্টির ব্যাপারে বুঝতে হলে ইতিহাসের পাতায় কিছুটা চোখ ভুলাতে হবে-

    * আনুমানিক ৫৯০ সালে চাকমা যুবরাজ বিজয়গিরি ও সেনাপতি রাধামন খীসা কর্তৃক রোয়াং রাজ্য(বর্তমান রামু),অক্সাদেশ(আরাকান সীমান্ত),খারং দেশ,কাঞ্চন নগর(কাঞ্চন্দেশ) ও কালজয়(কুকি রাজ্য) প্রভৃতি রাজ্য বিজিত হলে বিশাল পার্বত্য রাজ্য চাকোমাস এর পত্তন ঘটে ।

    * চাকমা রাজা জনুর সময় রাজ্যসীমা ছিল পূর্বে নাম্রে(বর্তমান নাফ নদী),পশ্চিমে সীতাকুন্ড পাহাড় দক্ষিনে সমুদ্র ও উত্তরে চাইচাল পর্বতশ্রেণী ।

    * ১৫৫০ সালে JOAO DE BARROS নামে জনৈক পর্তুগিজের আঁকা মানচিত্রে কর্ণফুলী নদীর পূর্বতীরে দুই নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চলে চাকোমাস(CHACOMAS) নামে একটি রাজ্যের সন্ধান পান।এর অবস্থান শ্রীহট্ট ও ত্রিপুরা রাজ্যের দক্ষিন পূর্বে এবং আরাকানের উত্তরে অর্থাৎ বর্তমান পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা পর্যন্ত ।

    উপর্যুক্ত ইতিহাস থেকে এটাই প্রতিয়মান হয় যে, পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগোষ্ঠি তথা চাকমা জনগোষ্ঠী কোন ভিনদেশ থেকে এই বঙ্গে উড়ে এসে জুড়ে বসে নি । চাকমারা প্রথমে বর্তমান পার্বত্য চট্টগ্রামে এসে চাকোমাস রাজ্যের পত্তন ঘটায় । তারপর একে একে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর লোকজন পার্শবর্তী দেশ ভারত ও মায়ানমার থেকে চাকোমাস রাজ্যে এসে বসবাস শুরু করে । ১৯০৮ সালে শ্রীসতিশচন্দ্র ঘোষ “চাকমা জাতি (জাতিয় চিত্র ও ইতিবৃত্ত)” গ্রন্থে এই বিষয়ের বিশদ বিবরন তুলে ধরেছেন । ইংরেজরা এদেশে আসার অনেক আগে “চাকমা রাজা আর বাঙালি রাজারা একসাথে আরাকানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করত” । এই থেকে প্রমানিত হয় তখন চাকমা রাজা আর বাঙালি রাজাদের মধ্যে বেশ ভাল একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল ।

    * ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ-উ-দৌল্লাকে পরাজিত করে ইংরেজদের শাসন প্রতিষ্টা । বাংলা বিজয়ের পর ইংরেজরা চোখ রাখল পার্বত্য চট্টগ্রাম তথা চাকোমাস রাজ্যের দিকে । সে সময় বর্তমান পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রচুর পরিমাণে কার্পাস তুলা জন্মাত এই কারনে এই রাজ্যের আরেক নাম ছিল “কার্পাস মহল” ।পরে অবশ্য নামকরন করা হয় CHITTAGONG HILL TRACTS

    * ১৭৭০ ও ১৭৮১ সালে চাকমা রাজা দৌলত খাঁর সাথে ইংরেজদের যুদ্ধ ও চাকমা রাজার জয়লাভ ।

    * চাকমা রাজা জান বক্স খাঁর সাথে ইংরেজদের পর পর তিন বছর(১৭৮৩,১৭৮৪,১৭৮৫) যুদ্ধ ।

    * ১৭৮৭ সালে চাকমা রাজা জান বক্স খাঁর কলকাটায় বড়লাটের কাছে গিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা এবং বাৎসরিক ৫০০ মন কার্পাস তুলা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে শান্তি প্রতিষ্টা । ইংরেজদের সাথে চাকমা রাজার শান্তি প্রতিষ্টার ফলে চাকমা রাজা বাৎসরিক ৫০০ মন তুলা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে ইংরেজদের বশ্যতা স্বীকার করল । অন্যদিকে নিজ রাজ্য শাসনের ক্ষমতা নিজের হাতেই থেকে গেল । ফলে ব্রিটিশ শাসিত এত বৃহৎ পাক-ভারত উপমহাদেশের মধ্যে চোট্ট এক টুকরো পার্বত্য চট্টগ্রাম, চাকমা রাজার দ্বারা পরিচালিত শায়ত্বশাসিত অঞ্চল হিসেবে থেকে গেল ।

    * ১৭৯৩ সালে ব্রিটিশ প্রতিনিধি লর্ড কর্ণওয়ালিশ কর্তৃক চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রথা প্রবর্তন ।

    সারা পাক-ভারত জুড়ে এই চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রথা কার্যকরী হলেও পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম নির্ভর চাকমা রাজ্যে কার্যকরি হল না । এর কারন (১) রাজতন্ত্র, (২) জুমিয়াদের এক পাহাড় থেকে আরেক পাহাড়ে জুম চাষের উদ্বাস্তু জীবন ।

    * ১৯০০ সালে জারি হল CHT REGULATION ,1900 Act ১৯০০ সালের ১ মে জারি হওয়া এই আইনের মাধ্যমে বাইরের কেউ যাতে পার্বত্যবাসীর সহজ-সরল জীবন যাত্রায় ব্যাঘাত ঘটাতে না পারে তার জন্য পার্বত্যবাসীর জন্য এক প্রকার শাসনবিধি চালু করা হল ।

    * ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ অধীনতা থেকে মুক্ত হয়ে জন্ম নিল পাকিস্তান রাষ্ট্রের । দ্বিজাতি তত্বের ভিত্তিতে জন্ম নিল পাকিস্তান আর ভারত নামে দুটি রাষ্ট্রের । চাকমা রাজার দ্বারা স্বায়ত্বশাসিত পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলকে পাকিস্তান অংশের সাথে যোগ করা হল । সেই থেকে শুরু হল পার্বত্যবাসীর ক্ষমতার বিকেন্দ্রিকরন আর বাঙালিদের অবাধ অনুপ্রবেশ । ১৯৪৭ সালের আগে যে সব বাঙালি পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাস করত তাদের সবাই বিভিন্ন ব্যাবসার কাজে নয়তো চাকরির কারনে বসবাস করত ।

    * পাকিস্তান সরকার কর্তৃক ১৯৪৮ সালে “পার্বত্য চট্টগ্রাম ফ্রন্টিয়ার পুলিশ রেগুলেশন ১৮৮১” বাতিলকরন ।

    * পাকিস্তান আর পাকিস্তান পূর্ব পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন আদমশুমারিঃ

    ১৯৪১ সাল-পাহাড়ি ৯৭.০৬% বাঙালি ০২.৯৪%

    ১৯৫১ সাল-পাহাড়ি ৯৩.৭১% বাঙালি ০৬.২৯%

    ১৯৬১ সাল-পাহাড়ি ৮৮.২৩% বাঙালি ১১.৭৭%

    পার্বত্য চট্টগ্রামে এভাবে দ্রুত বাড়তে লাগল বাঙালি জনসংখ্যা । তবুও তখনো পাহাড়ি-বাঙালি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বা মারামারির মত ঘটনা ঘটেনি । কারন সে সময় যে সব বাঙালি পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসের জন্য গিয়েছিল তাদের সবাই নিয়মতান্ত্রিকভাবেই গিয়েছিল আর এরা কেউ পাহাড়িদের জমি কেড়ে নিয়ে বসবাস শুরু করে নি, ফলে মারামারিও হয়নি ।

    * ১৯৬০ সালে কাপ্তাই বাঁধের ফলে ৯৯ হাজার ৯ শ ৭৭ জন লোক জমি হারা ও বাস্তুহারা হয়ে পড়ে । এতে মোট চাষ যোগ্য জমির ৫৪.০৬% অর্থাৎ ৫৪ হাজার একর আবাদি জমি প্লাবিত হয় ।

    * ১৯৬৪ সালে পাকিস্তান সরকারের পুনর্বাসনে অবহেলা ও অগনতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ৫০ হাজার নর-নারী উদ্ভাস্তু হয়ে ভারতে আর ৩০ হাজার নর-নারী উদ্ভাস্তু হয়ে বার্মায় গমন । এর ফলে পার্বত্য এলাকার মধ্যে পরিবেশগত ভারসাম্যের বিরাট একটা পরিবর্তন হল । সাথে সাথে পাহাড়ি-বাঙালি জনসংখ্যার মধ্যেও বিরাট একটা পরিবর্তন হল । এম.এন. লারমা চট্টগ্রাম কলেজে পড়ার সময় বাম রাজনীতির সাথে জরিত হয়ে পরেন । তিনি পার্বত্য এলাকার জনগনকে জানিয়েছিলেন যে কাপ্তাই বাঁধের সুফল পাহাড়িদের জন্য নয়, এটি পাকিস্তান সরকারের একটি ষড়যন্ত্র । ফলে ১৯৬৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারী রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেফতার হন এবং ১৯৬৫ সালের ৮ মার্চ শর্তসাপেক্ষে মুক্তি পান । এম.এন. লারমার নেতৃত্বে তৎকালিন সচেতন পাহাড়ি জনগণ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে চাইলে তদানীন্তন পার্বত্য চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ প্রধান সাইদুর রহমান তার পাহাড়ি-বিরোধী মনোভাবের কারনে তাদেরকে সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহনে বাধা দেন ।

    * ১৯৭১ সালে পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পরে সৃষ্টি হল স্বাধীন বাংলাদেশের ।

    * ১৯৭২ সালে রচিত হল স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান যার চারটি মূলনীতি হল জাতীয়তা, ধর্মনিরপেক্ষতা ,সমাজতন্ত্র , গনতন্ত্র ।

    * ১৯৭২ সালের সংবিধানে সন্নিবেশিত হল “বাংলাদেশের নাগরিকত্ব আইনের দ্বারা নির্ধারিত ও নিয়ন্ত্রিত হইবে; বাংলাদেশের নাগরিকগন বাঙালি বলিয়া পরিচিত হইবেন” । তৎকালিন পার্বত্য চট্টগ্রামের সাংসদ মানবেন্দ্র নারায়ন লারমা (এম.এন.লারমা) এর প্রতিবাদে সংসদে দাঁড়িয়ে বললেন, “আমি একজন চাকমা । আমার বাপ-দাদা চৌদ্ধ পুরুষ কেউ বলে নাই আমি বাঙালি । একজন চাকমা কখনো বাঙালি হতে পারে না তেমনি একজন বাঙালি কখনো চাকমা হতে পারে না । এই সংবিধানে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারী চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, লুসাই, বোম, পাংখো, খুমি, খিয়াং, মুরুং, চাক এদের কথা বলা হয় নি । এই মানুষদের কথা আমি বলতে চাই ।পৃথীবির একটি গনতান্ত্রিক রাষ্ট্র ভারত, আমাদের প্রতিবেশি বন্ধু রাষ্ট্র, সেখানে আমরা দেখি তাদের সংবিধানে বিভিন্ন জাতিকে অধিকার দেওয়া হয়েছে । জানিনা, আমরা কি আপরাধ করেছি! আমরা আমাদেরকে বাংলাদেশি বলে মনে করি এবং বিশ্বাস করি । কিন্তু বাঙালি বলে নয় । এর পর এম.এন. লারমা প্রতিবাদ স্বরুপ সংসদ কক্ষ ত্যাগ করলেন । ১৯৭২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারী তৎকালিন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবর রহমানের নিকট ৪ দফা দাবী সম্বলিত আঞ্চলিক শায়ত্বশাসনের দাবীনামা পেশ করা হলে শেখ মুজিব এম.এন. লারমাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, “লারমা তুমি যদি বেশি বাড়াবাড়ি কর তাহলে এক লাখ, দুই লাখ, তিন লাখ, দশ লাখ বাঙালি পার্বত্য চট্টগ্রামে ঢুকিয়ে দেব । পার্বত্য চট্টগ্রামে আমি তোমাদের সংখ্যালগু করে ছাড়ব” । এর পর থেকে শুরু হল আন্দোলন, সংগ্রাম ।

    * ১৯৭২ সালে বিভিন্ন গনদাবী ও ছাত্রদাবীর প্রেক্ষিতে রাঙ্গামাতির দেয়ালে দেয়ালে লিফলেট ও পোষ্টার শোভা পায় এবং ৯ জুন জেলা প্রশাসকের কাছে পাহাড়ি ছাত্র সমিতির স্মারকলিপি পেশ ।

    * ১৯৭৩ সালে রাঙ্গামাতির স্টেডিয়ামে এক নির্বাচনী জনসভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান কর্তৃক পাহাড়িদেরকে বাঙালিতে পরিণত করার ঘোষনা ।

    * পাহাড়িদের উপর নির্যাতন,জুলুম ও ধর্ষনের প্রতিবাদে এবং শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্টার প্রত্যয়ে ১৯৭৩ সালের জানুয়ারী গঠিত হয় “শান্তি বাহিনী” বা ‘‘PEACE FORCE’’ ।

    ১৯৭২ থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত চলল রাজপথে আন্দোলন, সংগ্রাম ।দীর্ঘ এই চার বছরে কোন ফল পাওয়া গেল না, উপর্যুপরি বেড়ে চলল নির্যাতন, জুলুম । ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানি এম.এন. লারমাকে অস্ত্র ধরার পরামর্শ দিলেন । এর পর ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এক সামরিক অভ্যুত্থানে শেখ মুজিবর রহমানের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক পথ পরিবর্তনের ফলে গনতান্ত্রিক আন্দোলনের পথ রুদ্ধ হয়ে গেলে ১৯৭৬ সাল থেকে শুরু হয় শান্তিবাহিনীর সশস্ত্র সংগ্রাম ।

    * ১৯৭৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে বিলাইছড়ি আর্মড পুলিশ ক্যাম্প এবং খাগড়াছড়ির বেতছড়িতে পুলিশ নৌকায় সফল হামলার মধ্য দিয়ে শান্তিবাহিনীর সশস্ত্র কার্যকলাপের সূচনা ।

    * ১৯৭৯ সালে ৩০ হাজার বাঙালি পরিবারকে পার্বত্য চট্টগ্রামে পুনর্বাসনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং এর জন্য ৬৫ কোটি টাকাও বরাদ্ধ করা হয় । এই ৩০ হাজার বাঙালি পরিবারকে পুনর্বাসনের পর থেকেই মূলত পাহাড়ি-বাঙ্গালি সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতি বিনষ্ট হওয়ার পথচলা শুরু । অনেকেই মনে করেন বাংলাদেশের ১০ ভাগের এক ভাগ পার্বত্য চট্টগ্রাম একটি বিশাল এলাকা । এখানে জায়গা-জমির কোন অভাব নেই, অনেক জমি পতিত রয়েছে । জমি আছে, কিন্তু চাষ করে খাওয়ার মানুষের অভাব । যারা এই ধরনের মানষিকতা নিয়ে চলেন তারা আসলে পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাস কিছুই জানেন না, তাই এই ধরনের মানষিকতা নিয়ে চলেন । যেখানে জমির অভাবে ১৯৬০ সালের কাপ্তাই বাঁধের ফলে ৮০ হাজার মানুষ পার্শবর্তী দেশ ভারত ও মায়ানমারে চলে যেতে বাধ্য হয় সেখানে জমি কোথায় ? তার উপর বনবিভাগের সংরক্ষিত বনাঞ্চল, কাপ্তাই বাঁধের নিচে তলিয়ে যাওয়া ৫৪ হাজার একর চাষ যোগ্য জমি, সরকারি অফিস-স্থাপনা, আর্মি-পুলিশ-বিজিবির জন্য বিশাল বিশাল সংরক্ষিত এলাকা তাহলে জমি কোথায় ? বিশেষ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি বিশাল অংশ (বাংলাদেশের মোট সেনাবাহিনীর ৩ ভাগের ১ ভাগ) রয়েছে, তাদের ক্যাম্পের জন্য দখল করে রেখেছে একটি বিশাল পরিমান জমির অংশ । তাহলে জমি কোথায় ? এত বড় সংখ্যক বাঙালি পুনর্বাসন করবে কোথায় ? তাহলে উপায় ? হ্যা জমি আছে, উপায় আছে । পাহাড়িরা যে জমিতে বসবাস করছে সেই জমি । পাহাড়িরা ১৯৪৭ সালের আগে পাকিস্তান বা বাংলাদেশ অংশের সাথে সম্পৃক্ত ছিল না ফলে ১৭৯৩ সালে লর্ড কর্ণওয়ালিশ কর্তৃক চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রথা পার্বত্য চট্টগ্রামে কার্যকরী না হওয়ায় আর পাকিস্তান বা বাংলাদেশ সরকার এই ব্যাপারে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীকে সচেতন না করায় কেউই জমি-জমার দলিলপত্র বা বন্দোবস্ত প্রথার দিকে হাঁটল না । তাছাড়া পাহাড়ি জনগোষ্ঠীদের অধিকাংশ অশিক্ষিত হওয়ায় এবং রাজতন্ত্রের মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী নিজস্ব ভুমি ব্যাবস্থা চালু থাকায় যে জমিতে পাহাড়িরা বসবাস করছে সেই জমি সরকারের কাছে খাস জমি । যেই জমিটি পাহাড়িরা চৌদ্ধ পুরুষ ধরে ভোগ করে আসছে, রাজাকে খাজনা দিয়ে যাচ্ছে সেই জমিটি এক চুটকিতে কোন এক বাঙালির হয়ে গেল । সামরিক সরকার সেই জমির দলিলপত্র বাঙালি পরিবারটির নামে করে দিল, যেই জমিতে চৌদ্ধ পুরুষ ধরে বসবাস করছে কোন পাহাড়ি পরিবার । সামরিক সরকার “মানুষ নয়,জমি চাই” নীতি অনুসরন করল । তাছাড়া অধিকাংশ বাঙালিদের মধ্যে উগ্র জাতিয়তাবাধী চেতনা বিধ্যমান থাকায় পাহাড়িদেরকে এরা সাপ-ব্যাঙ খাওয়া নিচু জাত বলে মনে করত এবং নাক সিটকিয়ে এড়িয়ে চলত । ফলশ্রুতিতে পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাসের প্রথম গনহত্যা সংগঠিত হয় ১৯৮০ সালে ।

    * পার্বত্য ইতিহাসে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আর সেটেলার দ্বারা সর্ব প্রথম গনহত্যা হয়েছিলো কাউখালী বাজার কলমপতিতে (রাঙামাটি) ২৫/৩/১৯৮০ সালে, পাহাড়ি ভাই-বোনদের মিটিং এর মধ্যে ডেকে গুলি করা হয়েছিলো । হত্যা করা হয়েছিল ৩০০ জন এবং ১০০০ এর বেশি পাহাড়ী মানুষ রিফিউজি হিসেবে ভারতের ত্রিপুরায় পালিয়ে যায় । ঐ জায়গা গুলো আজ বাঙালিদের দখলে । পরিকল্পনাকারী সেনা কর্মকর্তারা প্রমোশন পেয়েছিলো ।

    * ১৯৮০ সালের ২১ এপ্রিল ঢাকা প্রেস ক্লাবে তিনজন সংসদ সদস্য (যারা উক্ত ঘটনার অনুসন্ধানে গিয়েছিলেন) শাহজাহান সিরাজ, রাশেদ খান মেনন ও উপেন্দ্রলাল চাকমা ঘটনার বর্ননা করেন ।

    * ১৯৮১ সালে এক লক্ষ বাঙালি পরিবারকে ৫ একর জমি ও নগদ ৩ হাজার ৬ শ টাকা দিয়ে পুনর্বাসনের ব্যাবস্থা ।

    * ২৬/৬/১৯৮১ সালে বানরাইপাড়া, বেলতলী ও বেলছড়িতে সেটেলার বাঙালিরা প্রত্যক্ষ সেনা মদদে ৫০০ পাহাড়ি হত্যা ও গুম করে ছিলো এবং সাড়ে চার হাজার পাহাড়ি ভারতে শরনার্থী হিসেবে চলে যেতে বাধ্য হয়েছিলো ।

    * ১৯/৯/১৯৮১ সালে ৫০০ জুম্ম ভাই বোনের রক্তের দাগ শুকানোর আগেই পৈশাচিক হিংস্রতায় সেনা এবং সেটেলার মিলিত বাহীনি তেলাফং, আসালং, গৌরাঙ্গপাড়া, তবলছড়ি, বরনালাসহ মোট ৩৫ টি পাহাড়ি গ্রাম আগুনে জ্বালিয়ে দিয়েছিলো যার ফলে ১০০০ জুম্ম নিহত হয়েছিলো, অগনিত পাহাড়ি ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলো আর বাংলাদেশ সরকার আজো এই ঘটনার কথা অস্বীকার করে এবং পরবর্তিতে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ দেয়া হয়েছিলো মাত্র ১৮ ডলার করে ।

    *১৯৮৩ সালের ২৬ জুন; ১১, ২৬ ও ২৭ জুলাই এবং ৯, ১০, ১১ আগস্ট বাংলাদেশ সেনাবাহিণী ও সেটেলার মিলিত বাহিণী গোলাকপতিমাছড়া, মাইচ্ছাছড়া, তারাবনছড়ি, লোগাং, তারাবুনিয়া, মারমাছড়া, জেদেমাছড়া ইত্যাদিতে হামলা চালায় । এতে ৮০০ জন মানুষ হত্যা করা হয় এবং হাজারের উপর বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয় । পাহাড়িদের পুড়ে যাওয়া এই সব জায়গা পরিষ্কার করে বাঙালি বসতি স্থাপন করা হয় ।

    * ৩১/৫/১৯৮৪ সালের ভোরবেলা শান্তিবাহীনি গোরস্থান, ভুষণছড়া ও ছোটহরিনার তিন বিডিআর ক্যাম্প আর ক্যাম্পের কাছের সেটেলারদের গুচ্ছগ্রামে আক্রমণ করে । এতে সরকারি হিসেবে ৩২ জন এবং বেসরকারি হিসেবে ১০০ জনের মত সেটেলার বাঙালি নিহত হয় । এর প্রতিশোধ হিসেবে সেনা-সেটেলার মিলিত বাহিনী, ৩০৫ নং সেনা ব্রিগেড, ২৬নং বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও বিডিআরের (বর্তমান বিজিবি) ১৭ নং ব্যাটালিয়ন মিলে নিরস্ত্র পাহাড়ি গ্রাম (হাটবাড়িয়া, সুগুরী পাড়া, তেরেঙ্গা ঘাট, ভূষণছড়া, গোরস্তান, ভূষণবাঘ ইত্যাদি) আগুনে জালিয়ে দিয়েছিলো । সরকারি মতে ৫২ জন আর বেসরকারি মতে ৪০০ পাহাড়ি নিহত হয়েছিলো । এই নিহতদের মাঝে উল্লেখ যোগ্য সংখ্যক ছিলো শিশু ও নারী । অনেক পাহাড়ি নারীকে সেনা দ্বারা গনধর্ষনের পর হত্যা করা হয়েছিলো । আর ৭০০০ পাহাড়ি রিফিউজি হতে বাধ্য হয়েছিলো ভারতে । প্রেসিডেন্ট এরশাদ ১৯৮৪ সালের ৫ জুন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন।

    * ১৯৮৪ সালের ২৮ নবেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থ বিষয়ক সচিব জনাব সুলতান মাহমুদ ও তার তিন সঙ্গিকে বান্দরবানের চিম্বুক রেস্ট হাউস থেকে শান্তিবাহিনী কর্তৃক অপহরন ।

    * ১৯৮৫ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর শান্তিবাহিনীর হামলায় দুইজন সেনাবাহিনী অফিসার নিহত।

    * ১৯৮৬ সালের ২৯ এপ্রিল পানছড়িতে শান্তিবাহীনি বিডিআর ক্যাম্প আক্রমণ করেছিলো । তার ফলশ্রুতিতে সেনা আর সেটেলাররা সেখানকার গোলাকপতিমাছড়া, কালানাল, ছোট কর্মপাড়া, কেদেরাছড়া, পুজগাং, লোগাং, হাতিমুক্তিপাড়া, নাপিতপাড়া, দেওয়ানপাড়া প্রভৃতি পাহাড়ি গ্রাম গুলোর মানুষজনকে একটা মাঠে ডেকে জড়ো করে তাদের উপর নির্বিচারে গুলি করেছিল । লাশ হয়েছিলো ১০০ পাহাড়ি, এমনকি মিরিজবিল এলাকার এক ৭০ বছরের পাহাড়ি বৃদ্ধা পর্যন্ত রেহাই পায় নি ।

    * পানছড়ির ঠিক একদিন পর ২/৫/ ১৯৮৬ সালে মাটিরাঙাতে যেই পাহাড়িরা ভারতে পালাচ্ছিলো, সেই নিরস্ত্র দেশত্যাগী মানুষের উপর সেনারা এলোপাথারি গুলি চালিয়ে ৭০ জন পাহাড়িকে হত্যা করে ।

    * এই হত্যা যজ্ঞের দুই সপ্তাহ পার হতে না হতেই ১৮ ও ১৯/০৫/১৯৮৬ তাং মাটিরাঙা থেকে প্রায় ২০০ জন ত্রিপুরা নারী পুরুষের দল যারা বাঁচার আশায় শিলছড়ি থেকে ভারতীয় সীমান্তের দিকে পার হচ্ছিলো । তারা তাইদং, কুমিল্লাটিলা গ্রামের মাঝামাঝি এক সরু পাহাড়ি পথ পাড়িদেবার সময় বাংলাদেশ বিডিআর এর ৩১ ব্যাটালিয়নের জোয়ানরা তাদের উপর হামলা চালায় । যার ফলে প্রায় ১৬০ জন পাহাড়ি নিহত হয়, এমনকি গুলির হাত থেকে বেচে যাওয়া আহতদেরকে বেয়নেট দিয়ে খুচিয়ে ও দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় । ঐ ঘটনার বেঁচে যাওয়া অল্প কিছু সাক্ষী আজো বেঁচে আছে ।

    * ৮, ৯, ১০ আগস্ট ১৯৮৮ সালে হিরাচর, শ্রাবটতলী, খাগড়াছড়ি, পাবলাখালীতে আনুমানিক ১০০ পাহাড়ি জুম্ম কে নির্মম ভাবে হত্যা ও গুম করা হয় । সেনে ও সেটেলার দ্বারা গণধর্ষনের শিকার হয় অনেক পাহাড়ি নারী ।

    * ৮/৫/১৯৮৯ সালে লংগদুতে তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রশিদ অজ্ঞাত নামা লোকের হাতে খুন হন । এর দায় চাপানো হয় শান্তিবাহীনির কাঁধে । এর জের ধরে সেনা সৃষ্ট ভিলেজ ডিফেন্স পার্টি নামক সশস্ত্র সেটেলারদের দল সেনা মদদে অমানুষিক হত্যা যজ্ঞ চালায় । এতে নিহত হয় ৪০ জন পাহাড়ি । পুড়িয়ে দেয়া হয় বৌদ্ধ মন্দির । এমন কি তৎকালীন সাবেক চেয়ারম্যান অনিল বিকাশ চাকমার স্ত্রী, সন্তান ও নাতিকে পর্যন্ত নির্মম হত্যা যজ্ঞের শিকার হতে হয় । সেটেলাররা আজো অনিল বিকাশ বাবুর সমস্ত জমি দখল করে রেখেছে ।

    * ১৯৮৯ সালের ৯ মে খাগড়াছড়ির পানছড়িতে শান্তিবাহিনীর হামলায় ৫ জন বিডিআর সদস্য নিহত ।

    * ১৯৮৯ সালের ৩১ মে সাবেক সংসদ সদস্য উপেন্দ্রলাল চাকমার ভারতের ত্রিপুরার শরনার্থী শিবিরে আশ্রয় পার্থনা ।

    * ১৯৯০ সালের ২৫ জুলাই শান্তিবাহিনী রাঙ্গামাতিতে রেডিও রিলে স্টেশনে হামলা চালিয়ে কিছুক্ষন তা দখল করে রাখে ।

    * ১৯৯০ সালের ১৪ অক্টোবর রাঙ্গামাতিতে সেটেলার বাঙালি কর্তৃক ১৪ জন পাহাড়ি নারী ধর্ষিত ।

    * ১৯৯০ সালের ২৭ ডিসেম্বর পুনর্বাসিত বাঙালি কর্তৃক ৪ পাহাড়ি হত্যা ।

    * ১৯৯১ সালের ২৪ মার্চ বরকল থেকে ছোটহরিণাগামী যাত্রীবাহী লঞ্চে শান্তিবাহিনীর হামলায় ২ জন পুলিশসহ চারজন নিহত ।

    * ১৯৯২ সালের ২ ফেব্রুয়ারী মারিশ্যা থেকে রাঙ্গামাতিগামী বোটে দুইটি বোমা বিষ্পোরিত হলে এতে একজন বাঙালি যাত্রী নিহত ও বোটের ড্রাইভার গুরুতর আহত হয় । এই ঘটনার জের ধরে সেটেলার বাঙালিরা পাহাড়ি যাত্রীবাহী বোটে হামলা চালায় । এতে ৩০ জনকে হত্যা করা হয় । ১৪ জনের লাশ পাওয়া যায় এবং বাকিগুলো পানিতে হারিয়ে যায় । দুইজন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য সেই বোটে করে দুইটি কেরোসিনের টিন বহন করে নিয়ে যাচ্ছিলেন । এই থেকে বিষ্পোরণ হলেও বাংলাদেশের মিডিয়াগুলোতে প্রচার করা হয় শান্তিবাহিণী এই বিষ্পোরণ ঘটিয়েছে ।

    * ১০ এপ্রিল ১৯৯২ সালে লোগাঙে পাহাড়িদের বিরুদ্ধে হত্যা যজ্ঞ চালানো হয় । ঘটনার সুত্র পাত: এক পাহাড়ি মহিলা তার গাবাদি পশু চড়াতে গ্রামের অদূরে গিয়েছিলো । সেখানে দুই জন সেটেলার বাঙালি তাকে ধর্ষন চেষ্টা চালালে এক পাহাড়ি যুবক বাধা দেয় এবং তাকে সেখানেই হত্যা করা হয় । এতে সেই দুই সেটেলার বাঙালিও আহত হয় । আহত সেটেলাররা প্বার্শবর্তি ক্যাম্পে অভিযোগ করে যে শান্তিবাহীনিরা তাদের হত্যা চেষ্টা করেছে । এর জের ধরে সেনা-সেটেলার দল মিলে প্রায় ১৫০০ পাহাড়ি জনসংখ্যা অধ্যুষিত গুচ্ছ গ্রাম গুলোতে হামলা চালায়, এতে করে প্রায় ৪০০ পাহাড়ি নিহত হয় । প্রায় ৮০০ পাহাড়ি বাড়ি-ঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয় । আশে পাশের গ্রামগুলো থেকে প্রায় ২০০০ হাজার পাহাড়িকে শরনার্থী হতে হয় প্বার্শবর্তী দেশ ভারতে ।

    * ২০ এপ্রিল ১৯৯২ খাগড়াছড়ি থেকে ঢাকায় ফিরে ২১ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি (রাজনীতিবিদ, আইনজীবী, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মি ও ছাত্রনেতৃবৃন্দ) কর্তৃক লোগাং হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন ও বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবী করে বিবৃতি প্রদান ।

    * ২৭ এপ্রিল ১৯৯২ বিরোধীদলীয় নেতৃ শেখ হাসিনার লোগাং হত্যাকান্ডের স্থান পরিদর্শন করে তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন ও বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবী ।

    * ১৭/১১/১৯৯৩ সালে নানিয়াচর বাজারে পাহাড়িদের শান্তিপুর্ন র‍্যালিতে অতর্কিতে হামলা চালায় সেটেলার বাহিণী । এর নেতৃত্বে ছিলো সেটেলারদের সংগঠন পার্বত্য গন পরিষদের নেতা মোঃ আইয়ুব হোসাইন এবং তৎকালীন বুড়িঘাট ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ । পাহাড়ি ছাত্ররা প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করলে পার্শবর্তী সেনা ক্যাম্প থেকে পাহাড়ি ছাত্রদের উপর এলোপাথারি গুলি চালানো হয় । এতে নিহত হয় ২৯ জন পাহাড়ি আর আহত হয় শতাধিক ।

    * ১৯৯৫ সালের ১৫ মার্চ পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ বান্দরবান জেলা সন্মেলনকে কেন্দ্র করে পুনর্বাসিত বাঙালিদের সংগঠন পার্বত্য গনপরিষদের হরতাল আহব্বান ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের মিছিলে হামলা । ৪ জন পাহাড়ি ছাত্রের মৃত্যু, ২৮ জন পাহাড়ি আহত এবং ২৪৭ টি বাড়িতে অগ্নিসংযোক করা হয় ।

    * ১৯৯৬ সালের ১১ জুলাই রাঙ্গামাতির বাঘাইছড়ি থানার লাইল্যেঘোনা থেকে হিলউইমেন্স ফেডারেশন নেত্রী কল্পনা চাকমা অপহরণ ।

    * ১৯৯৬ সালের ২৬ জুলাই ৯ বাঙালি অপহৃত ।

    * ১৯৯৬ সালের ৭ অগাস্ট রাঙ্গামতির কাউখালি থানার ওসিসহ ৬০ জন বাসযাত্রী অপহৃত ।

    * ১৯৯৭ সালের ২-রা ডিসেম্বর শান্তিচুক্তি সাক্ষর ।

    ১৯৮১ সালে এক লক্ষ বাঙালি পরিবারকে ৫ একর জমি ও মাসিক রেশনের প্রতিশ্রুতিতে পার্বত্য চট্টগ্রামে পুনর্বাসন করা হয়, জমির দলিলও সেভাবেই দেওয়া হয় । কিন্তু আদৈ কি পাহাড়িদের বসবাসের জমি বাদেও এই পুনর্বাসন করা বাঙালিদের জন্য ৫ একর জমি ছিল ? না, ছিল না । পুনর্বাসিত সেই বাঙালিটি গিয়ে দেখে তার দলিলের নির্দেশিত জায়গায় বসবাস করছে কোন এক নাক চেপ্টা পাহাড়ি । আর দলিল দেওয়ার সময় বাঙালিটিকে বুঝিয়ে দেওয়া হল “দেশ আমার, মাটি আমার” । তাছাড়া বাঙালিদের মধ্যে বিশেষ করে মুসলিম বাঙালিদের অনেকের মধ্যে পাহাড়ি বিদ্বেষী মনোভাব আগে থেকেই বিদ্যমান ছিল যার প্রমাণ পাওয়া যায় এম.এন. লারমার মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহনে বাধা প্রধানের মাধ্যমে । আগেকার দিনে হিন্দু-মুসলিম একে অপরকে যেভাবে নাক ছিটকে চলত তখনকার মুসলিম বাঙালিরাও পাহাড়িদেরকে নিম্ন শ্রেনীর জাত মনে করে নাক ছিটকে চলত । কারন এরা সাপ খায়, ব্যাঙ খায় । এদের সাথে চলা মানে জাত খোয়ানো । পাহাড়িরা অন্য দেশ থেকে এই দেশে এসে বসবাস শুরু করেছে । এই দেশ বাঙালির, নয় কোন অন্য দেশ থেকে উড়ে এসে জুড়ে বসা নাক চেপ্টা পাহাড়ির । যার প্রমান আমরা পায় শ্রদ্ধেয় পরিচালক তানবির মোকাম্মেল কর্তৃক তৈরিকৃত ডকুমেন্টারি “কর্ণফুলির কান্না”-তে । এখানে আশির দশকে কুমিল্লা থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে পুনর্বাসিত জনৈক বাঙালি বলেন, “পাহাড়িরা আমাদের সাথে গেঞ্জাম করে, বলে এখান থেকে চলে যেথে হবে । এই দেশ আমার, আর ওরা বিদেশ থেইকা আইসা বলে এই জমি তাদের । সরকার কি এগুলো দেখে না ?” তারপর পরিচালক প্রশ্ন করেন তাহলে পাহাড়িদের দেশ কোথায় ? জনৈক বাঙালির ক্রুদ্ধ উত্তরঃ থাইলন,থাইলন । তাদের দেশ হল থাইলন (থাইল্যান্ড) । এই হল ব্রেইন ওয়াশ আর উগ্র বাঙালি জাতিয়তাবাদী মানষিকতা । ফলে শুরু হল পাহাড়ি আর সেটেলার বাঙালি দন্ধ । সেটেলার বা পুনর্বাসিত বাঙালিটি সরকারের দেওয়া জমির দলিল দেখিয়ে পাহাড়িটিকে উদ্দেশ্য করে বলছে এই জমি আমার । আর পাহাড়িটি তার ভোগ-দখলি স্বত্বের দলিল দেখিয়ে বলছে চৌদ্দ পুরুষ ধরে বসবাস করছি, এই জমি আমার । ফলে অনিবার্যভাবে পাহাড়ি আর সেটেলার বাঙালি মারামারি বেঁধে গেল । কিন্তু পাহাড়িটির জোর কম, রাষ্ট্র নেই পাশে । কিন্তু অন্য দিকে বাঙালিটির সব আছে । আইন আছে, রাষ্ট্র আছে, আর্মি আছে, পুলিশ আছে, দলিল আছে । ফলে অবধারিতভাবে পাহাড়ি পরিবারটি উচ্ছেদ হয়ে গেল । বাঁচার প্রয়োজনে পাহাড়ি পরিবারটি আরো বেশি করে জঙ্গলমুখী হল । এখানেও বাঁধা আসল । বন বিভাগ বলছে এই জমি আমার, তুমি এখানে বসবাস করতে পারবে না । সেটেলার বাঙালিরা সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ মদদে শুরু করল পাহাড়িদের উপর হত্যা, লুটপাট, ধর্ষন । ফলে এইসব কারনে পাহাড়িদের মনেও ক্ষোভ দানা বাঁধতে থাকল আর সৃষ্টি হল সেটেলার বাঙালি বিদ্ধেষি মনোভাব । পাহাড়িদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক মনোভাব সৃষ্টিতে সবচেয়ে বড় ভুমিকা উপরে উল্ল্যেখিত এই সব গনহত্যা, বাস্তুভিটা থেকে উচ্ছেদ, পাহাড়ি নারীদের ধর্ষন, বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া ইত্যাদি । অন্যদিকে বাঙালিদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক চেতনা সৃষ্টিতে প্রত্যক্ষ মদদ দিয়েছে বিভিন্ন সরকার ও উগ্র ধর্মান্ধ বিদেশি শক্তি । এভাবেই পাহাড়ি আর বাঙালিদের মধ্যেকার সাম্প্রদায়িক মনোভাবের সুত্রপাঠ । পাহাড়িরা দিন দিন নিজ ভুমিতে হয়েছে পরবাসী, আর বাঙালি জনসংখ্যা বেড়েছে হু হু করে জ্যামেটিক হারে । সেই ১৯৪১ সালে পাহাড়ি-বাঙালি জনসংখ্যার অনুপাত কত ছিল আর বর্তমানে কোন পর্যায়ে এসে ঠেকেছে তা সর্বশেষ আদমশুমারি ফলাফলের দিকে তাকালেই ব্যাপারটা আরো বেশি পরিষ্কার হবে ।

    পার্বত্য চট্টগ্রামের জনসংখ্যা(আদমশুমারি ২০১১)

    মোট: ১৬ লাখ ৬৩ হাজার ২১৪ জন
    আদিবাসি/পাহাড়ি/জুম্ম জনসংখ্যা: ৮ লাখ ৫৬ হাজার ৫৪১ জন
    বাঙালি জনসংখ্যা: ৮ লাখ ০৬ হাজার ৬৭৩ জন

    রাঙামাটি
    মোট: ৬ লাখ ২০ হাজার ২১৪ জন
    আদিবাসী/পাহাড়ি/জুম্ম: ৩ লাখ ৬৫ হাজার ১৫৩ জন
    বাঙালি: ২ লাখ ৫৫ হাজার ৬১ জন

    বান্দরবান
    মোট: ৪ লাখ ৪ হাজার ৩৩ জন
    আদিবাসী/পাহাড়ি/জুম্ম: ১ লাখ ৭২ হাজার ৪০১ জন
    বাঙালি: ২ লাখ ৩১ হাজার ৬৩২ জন

    খাগড়াছড়ি

    মোট: ৬ লাখ ৩৮ হাজার ৯৬৭ জন
    আদিবাসী/পাহাড়ি/জুম্ম: ৩ লাখ ১৬ হাজার ৯৮৭ জন
    বাঙালি: ৩ লাখ ২১ হাজার ৯৮০ জন

    জাতিগত নির্মূলিকরন তত্বের এই কূটকৌশলের ক্ষেত্রে ধর্মিয় উগ্রতা একটি বড় ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করছে । ইসলামী সাম্রাজ্যবাদ মানষিকতা এই ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক সহিংসতাকে আগুনে ঘি ঢালার মত উসকে দিচ্ছে । পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারী মুসলিম বাঙালিরা চাই পার্বত্য চট্টগ্রামে অন্য ধর্মের কোন লোক থাকবে না । মুখে সরাসরি এই কথাগুলো উচ্চারন না করলেও ফেসবুকে সমঅধিকার আন্দোলন, পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদ সহ উগ্র বাঙালিদের বিভিন্ন পেইজ ও গ্রুপে এদের মানষিকতার যতার্থ প্রতিফলন দেখতে পাওয়া যায় । এরা ছোটকাল থেকেই বড় হয় ভুল ইতিহাস জেনে, পাহাড়ি বিদ্বেষী মনোভাব নিয়ে । ২০১৩ সালের বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির এই সময়ে এসেও পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারী শিক্ষিত বাঙালি শ্রেনী মনে করে পাহাড়িরা পার্বত্য চট্টগ্রামে অন্য দেশ থেকে উড়ে এসে জুড়ে বসেছে । যেখানে শিক্ষিত বাঙালি শ্রেনীর একটি অংশ এই ধরনের ইতিহাস শিখে সেখানে অশিক্ষিত বাঙালিরা হুজুগে মাতাল হবে এই ব্যাপারে কোন দ্বিমত নেই । পার্বত্য এলাকার বাঙালিদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক মানষিকতা সৃষ্টিতে সামরিক বাহিনী সবচেয়ে বেশি কার্যকরি ভুমিকা রেখেছে । সামরিক বাহিনী শুধু পার্বত্য চট্টগ্রাম নয়, সারা বাংলাদেশের বাঙালিদের মধ্যেই পাহাড়ি বিদ্বেষী সাম্প্রদায়িক মানষিকতা সৃষ্টিতে কার্যকর ভুমিকা রেখেছে । ১৯৭৫ সালের পর থেকে সেনাবাহিনী প্রত্যক্ষভাবে পার্বত্য এলাকার সংবাদ মাধ্যম নিয়ন্ত্রন করেছে । কোন সংবাদ প্রকাশের আগে সেনাবাহিনীর গ্রিন সিগনেল পেলেই তারপর সেই সংবাদ প্রকাশ করা যেত । এর সাথে সাথে সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে গড়ে তুলেছিল পদলেহনকারী পেটুয়া সাংবাদিক বাহিনী । যেই সব সাংবাদিক সেনাবাহিনীর সহায়তায় আজ পার্বত্য চট্টগ্রামের বিশাল জায়গা, বাগান ও অট্টালিকার মালিক । পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পর্কে ১৯৯৭ সালের আগ পর্যন্ত দেশের মানুষ কোন সময় সঠিক তথ্য পায়নি । যে তথ্য জেনেছে তা সাম্প্রদায়িকতায় দুষ্ট সেনাবাহিনীর মদদপুষ্ট একমুখী সংবাদ । ফলে আজ দেশের বেশিরভাগ মানুষ মনে করে পাহাড়িরা সংগ্রাম করেছিল স্বাধিনতার জন্য, কোন বাঙালি পার্বত্য চট্টগ্রামে যেতে পারে না আর গেলে চাকমারা ধরে ধরে মারে, পাহাড়িরা খুব হিংস্র, পাহাড়িরা বাঙালিদের দেখতে পারে না, পার্বত্য চট্টগ্রামে অঢেল ভুমি পতিত রয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি । এইসব কথা শুধুমাত্র ধারনার উপর ভিত্তি করে নয়, গত ৭ বছরের অধিক সময় ধরে সমতলের বাঙালিদের সাথে মিশে মিশে এই অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি । বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রাম ইসলামি জঙ্গিদের প্রশিক্ষনের আস্তানা হিসেবে ব্যাবহৃত হচ্ছে । এরা পার্বত্য এলাকার মুসলিমদের মধ্যে প্রচার করছে উগ্র ধর্মান্ধতা । পাহাড়িরা হল বেধর্মী আর বেধর্মীর সাথে বন্ধুত্ব করা পাপ । এরা সাপ, ব্যাঙ, শুয়োর ইত্যাদি হারাম খাবার খায় । তাই এদেরকে এখন মুসলমান বানানো ফরজ কাজ হয়ে গেছে । তার জন্য এরা শক্তিশালি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে । শুধুমাত্র পার্বত্য এলাকার আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল গুলোর বাধার মুখে পেরে উঠছেনা । তা নাহলে এত দিনে জোরজবরদস্তি করে কতজন পাহাড়িকেই যে ইসলাম ধর্ম গ্রহনে বাধ্য করতো তার হিসেব নেই । জোর করে পেরে উঠবেনা জেনে এরা এখন লোভের ফাঁদে ফেলে মুসলিম বানানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে । যার ফলে আমরা দেখি বান্দরবানে অবস্থিত “উপজাতিয় মুসলিম উন্নয়ন সংষ্টা” কিংবা কিছুদিন আগে ঢাকার সবুজবাগ থানার একটি মাদ্রাসা থেকে উদ্দারকৃত ১৬ জন ত্রিপুরা শিশু । যাদের পরিবারকে লোভের ফাঁদে ফেলে বাধ্য করা হয় ইসলাম ধর্ম গ্রহনে । বর্তমানে ইসলামী সাম্রাজ্যবাদের কালো থাবা কিভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামকে গ্রাস করছে সেই ব্যাপারে নিচের এই তথ্য থেকে পরিষ্কার ধারনা পাওয়া যাবে ।

    ২০১১ সালের বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর রিপোর্ট অনুযায়ী পার্বত্য চট্টগ্রামে মজজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডা/বিহার

    1. Emon cut paste upatter asole kono reading value nai. Ami borong apnader ke aro Buddhibrittir chorcha kore bastobotar aloke rochona likhte onurodh korbo. Tahole amader moto bairer pathokera kichu jante parbo.

      1. Vul vengece, dada. Kothaw to eta likhen nai je apnara kivabe onnyo sob trib der ke sikkha,chakuri,quota, subidha, NGO donation theke amader ke bonchito kore rekhechen. Sei kotha amader to bolar kono jaiga nei.

        1. পার্বত্য নিউজে লিখুন। আমরা সবার কথা ছাপবো। যেমন এখন ছাপছি। ৥ দীপেন মারমা

    2. প্রিয় জুমিয়া,
      আপনি অনেক কিছু লিখেছেন। এ জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। কিন্তু আপনি যে ইতিহাস লিখেছেন তার উৎপত্তি কোথা থেকে জানালে খুশি হব। কিভাবে বুঝতে পারবো যে আপনি যা লিখেছেন তা সত্যি? আপনার ইতিহাস যে কোন বিকৃত কোন উৎস থেকে সংগ্রহ করেননি? আপনি ‘হুচ’ এর বিজু সংখ্যা থেকে এ লেখা সংগ্রহ করেছেন। যতদূর বুঝি এটা আপনাদের দ্বারা প্রকাশিত একটা পত্রিকা। এ জন্য আপনার হিস্ট্রি সত্য বলে মেনে নিতে পারছিনা। আপনার দেয়া হিস্ট্রি যে বিকৃত নয় তার প্রমান পেলে মনে হয় উপকৃত হতাম।

    3. Joaoda Barros-er sei puranu map, itihas dye lav nei. dokhol sottoi asol. CHT-e Peguda sobcheye besi. tarpore monehoi Mosjit, tarpore Hindu Mondir ar sobcheye kom hochche Girja…resaerch kore dekho….

    4. Joaoda Barros-er sei puranu map, itihas dye lav nei. dokhol sottoi asol. CHT-e Peguda sobcheye besi. tarpore monehoi Mosjit, tarpore Hindu Mondir ar sobcheye kom hochche Girja…resaerch kore dekho….

  17. ব্রিগেডিয়ার সাহেব,
    আপনার লেখাটি পড়লাম। সুন্দরভাবে আপনার ভাষায় CHT র ইতিহাস তুলে ধরেছেন। যদিও আপনার মত ইতিহাস নিয়ে এত ঘাটাঘাটি করিনা তারপরও সামান্য হলেও CHT র ইতিহাস সম্বন্ধে অল্পকিছু জ্ঞ্যান আছে, তাই আপনার লেখার উত্তর দিতে বসলাম। চাকমাদের ইতিহাস আপনাদের ইতিহাস থেকে কোন অংশেই কম গৌরবময় নয়। ১৩৩৩ সাল পর্যন্ত তৎকালীন উত্তর আসাম, পশ্চিমে ত্রিপুরা রাজ্যের কিছু অংশ, দক্ষিণে বাংলাদেশের টেকনাফ, পূৃবে আরাকান রাজ্যের কিছু অংশ, ব্রম্মদেশ মিলে এক বিশাল রাজ্যের অধিপতি ছিল চাকমারা। তখন রাজধানী ছিল মনিজগিরিতে। সেইসময় চাকমাদের প্রতাপ ছিল গৌরবউজ্বল। একমাত্র আরাকান রাজা ছাড়া আশেপাশের রাজাগুলো চাকমা রাজার বশ্যতা স্বীকার কেরছিলেন। আর আরাকান রাজার সাথে সবসময় যুদ্ধ লেগেই থাকতো। তারই পথ ধরে ১৩৩৩ সালে দশ লক্ষ সৈন্য সামন্ত নিয়ে তৎকালীন আরাকান রাজা তার মন্ত্রী কেরেগ্রীকে প্রেরন করে চাকমা রাজার রাজধানী মনিজগিরিতে আক্রমণ করার জন্য। কিন্তু চাকমা রাজার দক্ষ সেনাপতি ও সৈন্য সামন্তের জন্য সে সরাসরি আক্রমণ করতে পারেনা। তখন সে এক কুবুদ্ধির আশ্রয় নেয়। সে চাকমা রাজার কাছে প্রস্তাব পাঠায় যে আরাকান রাজা চাকমা রাজার সাথে আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ হতে চান। এজন্য তার বোনকে বিয়ে করার জন্য প্রস্তাব দেন। চাকমা রাজা প্রফুল্ল মনে প্রস্তাব গ্রহণ করে। নতুন বৌকে( এখানে এক সুন্দরী রমণীকে আরাকান রাজার নকল বোন বানানো হয়) নিয়ে সেই রাতে পুরো রাজ্য যখন উৎসবে মেতে থাকে তখন মন্ত্রী কেরেগ্রী রাজধানী আক্রমণ করেন। আর সেই পরাজয়ের মধ্য দিয়ে চাকমা রাজার ৫০০ বছরের গৌরবউজ্বল শাসনের ইতি ঘটে। তারপর চাকমা রাজা তার দলবল সহকারে বার্মায় চলে যেতে বাধ্য হন। সেখানে আরাকান রাজা তাকে বিভিন্ন ছোট ছোট রাজ্যের দায়িত্ব দেন যেহেতু তাদের পরাজয়কে তিনি উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন। তারপর আনুমানিক ১৩৫০ সালের দিকে চাকমা রাজা CHT র দিকে চলে আসেন। আর এখানে এসে রাজধানী স্হাপন করেন। তারপর মোঘলদের সাথে চাকমা রাজার যুদ্ধ হয়, বর্তমান রাজবাড়ীর কালু খা এবং জব্বর খা নামক দুটি কামান মোঘলদের সাথে চাকমা রাজার জয়ের দিককে নির্দেশ করে।। তারপর মোঘলদের সাথে চাকমা রাজার সন্ধি হয় আর তারা” খা” উপাধি গ্রহণ করে যার জন্য মোঘল আমলে চাকমাদের ইতিহাস চাপা পড়ে যায়। এরপরে আসে ব্রিটিশ আমল।

    * ১৭৭০ ও ১৭৮১ সালে চাকমা রাজা দৌলত খাঁর সাথে ইংরেজদের যুদ্ধ ও চাকমা রাজার জয়লাভ ।* চাকমা রাজা জান বক্স খাঁর সাথে ইংরেজদের পর পর তিন বছর(১৭৮৩,১৭৮৪,১৭৮৫) যুদ্ধ ।* ১৭৮৭ সালে চাকমা রাজা জান বক্স খাঁর কলকাটায় বড়লাটের কাছে গিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা এবং বাৎসরিক ৫০০ মন কার্পাস তুলা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে শান্তি প্রতিষ্টা । ইংরেজদের সাথে চাকমা রাজার শান্তি প্রতিষ্টার ফলে চাকমা রাজা বাৎসরিক ৫০০ মন তুলা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে ইংরেজদের বশ্যতা স্বীকার করল । অন্যদিকে নিজ রাজ্য শাসনের ক্ষমতা নিজের হাতেই থেকে গেল । ফলে ব্রিটিশ শাসিত এত বৃহৎ পাক-ভারত উপমহাদেশের মধ্যে চোট্ট এক টুকরো পার্বত্য চট্টগ্রাম, চাকমা রাজার দ্বারা পরিচালিত শায়ত্বশাসিত অঞ্চল হিসেবে থেকে গেল ।যার জন্য CHT কখনো বাংলার অধীনে ছিলনা। এটি সেই ব্রিটিশ আমল থেকে স্বায়ীত্ব শাসিত ছিল। আর এখন আপনারা বলছেন এখানকার বাঙালীরাই নাকি এখানকার আদিবাসী? lol. আচ্ছা এখানকার আদি পুরুষ যদি বাঙালীরাঈ হয় তাহলে রাজারা কেন চাকমা, মারমা আর বোমাং? তার মানে এটাই তখন বাঙালীরা ছিল চাকমা রাজার চাকর। কথাটি পড়তে খারাপ লাগলেও কিছু করার নেই। ইতিহাসই এর সাক্ষী। আপনি lt col thomas lewin এর a fly on the wheel বইটি পড়লেই বুঝতে পারবেন। আর আপনারা আদিবাসীর যে নতুন সংজ্ঞা প্রনয়ন করেছেন son of the soil তা একটু reviiew করবেন। কারণ:

    After long consideration of the issues involved, the Special Rapporteur who prepared the above-mentioned study offered a working definition of “indigenous communities, peoples and nations”. In doing so he expressed a number of basic ideas to provide the intellectual framework for this effort, which included the right of indigenous peoples themselves to define what and who is indigenous. The working definition reads as follows: “Indigenous communities, peoples and nations are those which, having a historical continuity with pre-invasion and pre-colonial societies that developed on their territories, consider themselves distinct from other sectors of the societies now prevailing on those territories, or parts of them. They form at present non-dominant sectors of society and are determined to preserve, develop and transmit to future generations their ancestral territories, and their ethnic identity, as the basis of their continued existence as peoples, in accordance with their own cultural patterns, social institutions and legal system.” This historical continuity may consist of the continuation, for an extended period reaching into the present of one or more of the following factors: *Occupation of ancestral lands, or at least of part of them; *Common ancestry with the original occupants of these lands; *Culture in general, or in specific manifestations (such as religion, living under a tribal system, membership of an indigenous community, dress, means of livelihood, lifestyle, etc.); *Language (whether used as the only language, as mother-tongue, as the habitual means of communication at home or in the family, or as the main, preferred, habitual, general or normal language); *Residence on certain parts of the country, or in certain regions of the world; Other relevant factors. “On an individual basis, an indigenous person is one who belongs to these indigenous populations through self-identification as indigenous (group consciousness) and is recognized and accepted by these populations as one of its members (acceptance by the group). “This preserves for these communities the sovereign right and power to decide who belongs to them, without external interference”.

    আপনি এখন শান্তি সম্বৃদ্ধির কথা বলছেন যা কিনা ত্রিশ বছর আগেই আপনারা আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছেন। হ্যা এখনো অনেক শান্তি দেন বিশেষ করে আমাদের গ্রামের পর গ্রাম যখন পুড়ে ছাই হয়ে যায় তখ
    আপনি এখন শান্তি সম্বৃদ্ধির কথা বলছেন যা কিনা ত্রিশ বছর আগেই আপনারা আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছেন। হ্যা এখনো অনেক শান্তি দেন বিশেষ করে আমাদের গ্রামের পর গ্রাম যখন পুড়ে ছাই হয়ে যায় তখন লাখ টাকা খরচ করে কনসার্ট এর ড্রামের বিটে বিটে আমাদেরকে নাচিয়ে, যাতে আমাদের রাগ, দু:খ পানি হয়ে যায়। এক কথায় যাতে ১৯৭১ সালে আপনাদের মত আমাদের মাথার তার ছিড়ে না যায়। বা: কি সুন্দর সিস্টেম করে ফেলেছেন! আপনারা মাথায় এত বুদ্ধি নিয়ে ঘুমান কেমনে? যেখানে আর্মি ক্যাম্প সেখানেই বাজার সেখানেই সেটেলার আপনারাই হচ্ছেন তাদের সাহসের যোগানদার। CHT এ আপনাদের সবচেয়ে বড় কাজ হচ্ছে বাজার চালু রাখা। কারণ বাজার চললেইতো সেটেলাররা থাকবে, তারা বাচতে পারবে, আর তারা থাকলে আপনারা নিরাপদে থাকেন। আর এই জন্যই আপনারা সেটেলারদের পুনর্বাসন করান। আপনি খুব ভালো করেই জানেন সর্বপ্রথম যখন সেটেলারদের এখানে পুনর্বাসন করান তাদের মধ্যে maximum ছিল সন্ত্রাসী, ফাসীর আসামি, যাবজ্জীবন সাজা প্রাপ্ত আসামী। তাদেরকে সুকৌশলে আপনারা এখানে পুনর্বাসিত করেন যাতে আমাদেরকে ধংস করতে আপনাদের বেশি কষ্ট না হয়। moreover আমরা বিচ্ছিন্নতাবাদী নয়। আমরাতো কখনো আলাদা রাষ্ট্র দাবী করিনি, হ্যা আমরা আমাদের অধিকার দাবী করেছি। মানুষের মত বাচতে চেয়েছি। কোন চিড়িয়াখানার জন্তুর মত নয়। আপনাদের জেনারেল সামাদ বলেছিলেন “উপজাতিকে আমি যাদুঘরে রাখবো, ভবিষ্যতে উপজাতি দেখতে আসলে ইন্ডিয়া থেকে ধার করে নিয়ে আসতে হবে”। জেনারেল ইব্রাহীম আশির দশকের দিকে খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের মাঠে বিশাল অনুষ্ঠান করে, নানা প্রতিযোগিতার আয়োজন করে talent hunt করে ভালো ভালো মেধাকে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন, যাতে ভবিষ্যতে আমরা যোগ্য নেতৃত্ব না পায়। we want the land not the tribal people of CHT. এই হচ্ছে আপনাদের মুল মন্ত্র। পাকিস্তানিরা যেভাবে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল, যেভাবে গণহত্যা করেছিল, যেভাবে আপনাদের ভাষা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল, যেভাবে বাংগালী নারীদের গর্ভে পাকিস্তানীদের বীজ বপন করে আপনাদের ধ্বংস করতে চেয়েছিল, ঠিক সেভাবেই আপনারা আমাদেরকে ধ্বংস করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন। তবে তাদের মত চরম অত্যাচার করে নয়, AIDS এর মত আস্তে আস্তে আমাদেরকে মেরে ফেলার নীল নকশা বানিয়ে তার proper implementation এর মাধ্যমে। আপনারা যদি আপনাদের অধিকারের জন্য ১৯৭১ সালে সংগ্রাম করতে পারেন, তাহলে আমরাও পারবোনা কেন? হ্যা আপনারাও জানেন আমরাও পারবো। তাইতো চোরের মন পুলিশ পুলিশ ।তাইতো আপনাদের মনে এত ভয়। এইজন্যই আপনারা media কে ভয় পান। যদি কোন ভাবে আপনাদের কীর্তিকলাপ সারা বিশ্ব জেনে যায়। তখন কি হবে তা আপনারা খুব ভালোভাবেই জানেন। শান্তি চুক্তির মাধ্যমে শান্তি ফিরে আসার কথা আপনি ব্যক্ত করেছেন, আমরা যতই চিল্লাচেল্লি করি না কেন আপনারা এটা কখনো বাস্তবায়িত হতে দিবেন না। হ্যা মাঝে মঝে সেনা ক্যাম্প withdraw করে শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের নাটক করেছেন, এখন ভুমি কমিশন গঠন করে নাটক করছেন। এগুলো আপনারা করতেই থাকবেন, করতেই থাকবেন যতদিন না আমরা minority না হয়ে যায়, এই ধরনের নাটক চলতেই থাকবে সেইদিন পর্য্যেন্ত যেই দিন না CHT তে সেটেলাররা হবে ৭০% আর আমরা হবো ৩০%। আসলে তখন সন্তু বাবুর চুক্তি করাটাই উচিত হয়নি। কারণ আপনারা কথা দিয়ে কথা রাখেন না। ১৮৬০ সালে পরিব্রাজক Jhon Macaule আপনাদের সম্বন্ধে একটি উক্তি করেছিলেন, আর সেটি হচ্ছে
    ” What horns to the buffelo, sting to the bee, heart of the greek song is beauty of the woman, just like that deceit is to the bengali, large promises smooth excuses, elaborate issue of circumstancial falsehood, forgery, perjury, chickenary, crowary(I add) is the defensive and offensive weapon of the people of lower ganges.”

    আমরা আপনাদেরকে চিনতে মস্ত বড় ভুল করেছি। CHT এর বর্তমান পরিস্হিতি আপনাদেরই সৃষ্টি।কারন আপনারা জানেন যেদিন আমরা ঐক্যবদ্ধ হবো, সেদিন আপনাদের বুলেটের আমাদেরকে আটকানোর ক্ষমতা থাকবেনা। মনে রাখবেন আপনারা আমাদেরকে যতই অসহায়, পংগু বানাবেন ততই আমরা শক্তিশালী হবো। A man is never too weak or too wounded to fight, if the cause is greater than of his own life. শেষ কথা আপনি যার লেখা বই পড়ে এসব দাদাগিরি করছেন, সে কিন্তু আপনারাও বড় দাদা। ভেবে দেখুন আপনাকে আপনার নাতি যদি এসে বলে “দাদু দাদু জানো কিভাবে produce করতে হয়?” তখন আপনার কেমন লাগবে? ভেবে দেখুন যখন আপনি আমাদের ইতিহাসকে বিকৃত করছেন, আমাদের ইতিহাসকে আপনার মনের মত করে সাজিয়ে নিচ্ছেন তখন আমাদের, আমাদের বড় দাদাদের, যে কিনা আপনারাও দাদার দাদা তার কেমন লাগবে? দয়া করে এই ধরনের fake লেখা থেকে বিরত থাকবেন। ধন্যবাদ।

    1. আসলেই আপনি একটা বেয়াদব……..আমার মনে হচ্ছে আপনার শরীরে মানুষের রক্ত নাই…..

    2. েয অপেরর মােক সম্মান করেত জােন না,েস েয িনেজর মােক কতটুকু সম্মান কের তা আপনার েশষ দুইটা শব‍দই ্বেল েদয়…

  18. It is a very comprehensive account on the land issue. People who are unable to learn from it making senseless comments. If they would have knowledge, possibly they could make better comment.

  19. thanks to the writer for his writing who took lot of initiative to help us. this is a venture for discovering the history. i think…ummmmm……ya…. i must say there is something new here. he tried to high light the truth.definitely up to some extent he is successful. Now am really confused and giving a second thought about what i used to heard from my grandpa and my father. But i must say that this is not the end. there is something more……. This indigenous and the land issue needs more study and information with references so that we can prove ourselves as we claimed to be ourselves as The Indigenous People and the righteous owner of this area.

  20. লেখাটা পড়লাম। লেখার নীচের সবগুলো মন্তব্য আরো যত্ন সহকারে পড়লাম। মন্তব্যের আকারে অন্যের লেখার কপি পেস্টও পড়লাম। কর্তৃপক্ষ সবার কথা ও কমেন্ট প্রকাশ করে প্রমাণ করেছে তারা নিরোপেক্ষ। তারা সবার কথা বলার অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এ সুযোগ উপজাতিগুলো নিতে পারতো। তা না করে চাকমারা ব্যাক্তিগত আক্রমণ করে বসলেঅ। এর মধ্যদিয়ে তারা তাদের নিজেদের চরিত্র উন্মোচনকরে ফেলেছে। বিশেষ করে চাকমারা প্রমাণ করলো কেন বাঙালীরা চাকমা বিরোধী হয়। কারা পার্বত্য সমস্যার জন্য দায়ী তাও চাকমাদের মন্তব্য থেকে পরিস্কার।
    লেখকে ধন্যবাদ। আশা করছি তার কাছ তেকে আরো লেকা পাব।

  21. মন্তব্যে চাকমারা দাবী করেছে তারা নাকি একদা উন্নত সভ্য জাতি ছিল। তাদের উন্নত সংস্কৃতি ছিল। এই কি তার প্রমাণ? িএই কি তাদের সভ্যতা ও সংস্কৃতির পরিচয় বহন করে। যারা একেটা লেখা সহ্য করতে পারে না তারা একটা জনগোষ্ঠীকে সহ্য করবে কি করে?

    1. Apnar boktobbyo khub e nirosh dhoroner.Moja pelum na pore. Amra jara porasuna kori, tader pokkhey sohojei boja somvob, srijonsil medhachorcha ki r birodhita ki! Monolshilota eto sohoje asena. Eta dirghyo onushiloner bisoy.

  22. এত কমেন্ট দেখে তার মাঝে একটি কমেন্ট না করেই পারছিনা, প্রথমেই অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই আমি লেখককে, পার্বত্য বিষয়ক বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করে তুলে ধরার জন্য। তবে একটি বিষয় খুব খারাপ লাগে যে কোন এক ভাই এসে কমেন্টকে বুলি মনে করে তার ইচ্ছা মত বলে যায়, আসলে লেখক এখানে একটি কথা উল্লেখ করেছে আদিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে, আমি এই লেখাটির নিচেও কিছু কমেন্টে ঠিক একই গন্ধ পাচ্ছি, আসলে আদিপত্য বিস্তার হল এমন একটি উল্লেখ যে যাকে এক কথায় বলা যায় হানাহানি। যাই হোক অল্প কথাই ভালো, কথা বাড়াতে চাইনা আমি শুধু বলবো ব্যবহারে যেমন বংসের পরিচয় তেমনি আপনার লিখার উপর নির্ভর করে আপনার জাতিয়তার পরিচয়। ভুমি বিরোধের কোন আলোচনা হলে আমার কিছু প্রশ্নই মাথায় চেপে বসে , ধরুন বাংলাদেশ স্বাধীন নাই হলো ১৯৭১ এ, তখন কোথায় যেতো এই পার্বত্য অঞ্চল, কোথায় যেতো এই আদিপত্য বিস্তার আর কোথায় যেতো বাঙালি কিংবা উপজাতি। আসলে সত্য কথা বলতে গেলে উপজাতি নামক কিছু বহিরাগত আছে তাদের ঘৃনার চোখে দেখি আমি, যাই হোক মুল কথায় আসি, বর্তমান কাশ্মীর নিয়ে যে কাহীনি হচ্ছে ঠিক একই দিকটা হতো ভারত পাকিস্তানের সাথে এই পার্বত্য অঞ্চল নিয়ে। তখন কি এই পার্বত্য অঞ্চল পুরোপুরিভাবে নিষিদ্ধ করতো না ? করতো, কারন পাকিস্তান তখন থেকেই তাদের ধর্মীয় দিক ছাড়া অন্য কোন ধর্মকে প্রাধান্য দিতোনা এবং অন্য জাতির সরাসরি বিদ্ধেসী ছিলো। এবার আসি আমাদের প্রশঙ্গে, ১৯৭১ এর স্বাধীন চেতনা মানুষ আমরা, আমরা কখনো চাইনা কোন বাংলাদেশীকে অস্বাধীনতায় ভুক্তভুগী হোক। ‘”তাই বলে এই নয় যে আমি স্বাধীনতার সময় বাংলাদেশ থেকে চলে গিয়ে বাইরের দেশে নাগরিত্ব নিয়ে আবার যখন স্বাধীন হলো তখন আমি আরাকান মিজোরাম থেকে এসে আবার বসবাস করবো, সাথে আমার ভাই বন্ধুরা এসে এখানে স্বাধীনচেতনা মানুষদের সাথে পাঙ্গা নেবো “” এটা আবার কোন নিয়ম। এটা কোন দেশের সংবিধান?? বর্তমান কিছু নেতাকেতাদের মুখ থেকে কিছু কথা শুনে আশ্চার্য লাগে , তাদের কথা অনুষারে পার্বত্য বুঝা যায় পার্বত্য এলাকায় তারা আদি থেকে বসবাস করে আসছে, হাসি পায় এসব কথা শুনলে, কারন, যেই পার্বত্য অঞ্চল বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তিতারা সেই পার্বত্য অঞ্চলের নয়, তারা হলো ভারতের পার্বত্য অঞ্চলের। যেই পার্বত্য এলাকা নিয়ে গঠিত বাংলাদেশ মানচিত্র ,উপজাতীয় কিছু মানুষ এখনো বিরোধিতা করে আসছে তা বাংলাদেশ নয়। তাই আমি মনে করে এই ভুমি কমিশন টমিশন বাদ দিয়ে আগে বাংলাদেশ মানচিত্র ঠিকভাবে চিহ্নিত করে বহিরাগত ভারতের নাগরিকদের উচিৎ শিক্ষা দেওয়া। আজ পার্বত্য এলাকায় ভুমি নিয়ে ইউপিডিএফ এবং জেএসএস নামক সংগঠনগুলো আদিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে জোরজবস্তভাবে দখল করছে তার একটা বিহিদ করা দরকার, আর এই সব ভুমি নিয়ে সেনাবহিনীর আলোচনা আমি মনে করি অপরিসীম। তারাই একমাত্র এদেশ রক্ষা করতে পারবে বহিরাগত উপজাতিদের হাত থেকে। তাই আমি বলবো সরকারকে, যারা বাংলাদেশে থেকে বাংলাদেশের স্বাধীন বাঙালিদের সাথে এইসব টালবাহানা বাদ দিয়ে পার্বত্য অঞ্চলে আরোও অধিক পরিমান বাংলাদেশের নাগরিকদের পুনর্বাসন করুন, এতে অন্তত পার্বত্য এলাকার সীমান্ত এবং বাংলাদেশের গরিব দুখি মানুষদের উপকার হবে এবং বাংলাদেশ এক ধাপ সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সাহায্য হবে। আসুন আমরা বাংলাদেশীরা এক হয়ে সবাই এই ষড়যন্ত্রের হাত থেকে পার্বত্য অঞ্চলের মাটি বাঁচাই।

    1. চাকমা জাতির স্রিজনশীলাতার কিছুটা অভাব তাদের প্রকাশ থেকেই বেড়িয়ে আসে। আগেতো অস্ত্র নিয়ে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। এখনো অস্ত্র নিয়ে নিজেদেরকে তুলে নেয়, আর চাদাঁ উঠায় ( এইতো ৫ মাস আগে লংগদু হতে ৪০ জন পাহাড়ী কে ইউপিডিএফ অপহ্রন করে নিয়ে যায়)। এরা যদি আরো সভ্য হলে জাতীর জন্য ভালো হতো।
      রফিক, এনএসইউ

  23. পার্বত্য সমস্যা নিয়ে এক ব্রিগেডিয়ারের লেখার পর্যালোচনা

    পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রেক্ষাপটে এই লেখা এবং লেখার বিষয়বস্তুর গুরুত্ব রয়েছে

    একজন সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা কী চোখে বা কী দৃষ্টিভঙ্গিতে পার্বত্য ইতিহাসকে তুলে ধরেন বা কী দৃষ্টিভঙ্গিতে পার্বত্য সমস্যাকে বর্ণনা করেন তা এই লেখায় সুচারুভাবে ফুটে উঠেছে। এবং সেনাবাহিনীর কী অবস্থান বা দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে, তা নিয়ে এখনো পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পর্কিত নীতি বা কৌশল ঠিক করে বাংলাদেশের সকল শাসকশ্রেনী। লেখাটি সরোয়ার হোসেন নামে ব্রিগেড কমান্ডার পদমর্যাদার একজন ব্যক্তি লিখে থাকলেও এই লেখায় আদতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীরই অবস্থান স্পষ্ট হয়ে উঠে। সুতরাং, লেখাটি পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রেক্ষাপটে অবশ্যই অবশ্যই তাৎপর্যপূর্ণ।

    লেখায় বিভিন্ন বিতর্কিত বক্তব্য ও তথ্য প্রদান করা হয়েছে, বিকৃত করা হয়েছে অনেক বিষয়

    ১. সরোয়ার হোসেনের লেখাটির সারকথা যা তা হচ্ছে-

    সময়ের পরিক্রমায় পার্বত্য এলাকায় বাঙালিদের আগমন একটি ঐতিহাসিক ঘটনা, যার সুষ্ঠু সমাধান বাঙালিদের ফিরিয়ে নেওয়ার মধ্যে নয়, বরং উভয় সম্প্রদায়ের স্বার্থ নিশ্চিতকরণসহ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার মাধ্যমেই সম্ভব।

    কিন্তু পার্বত্য আন্দোলনকামী সংগঠনসমূহের অবস্থান বা উক্ত সংগঠনসমূহের দাবিনামা হচ্ছে, পার্বত্য চট্টগ্রামে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পুনর্বাসিত সেটলারদের পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে দেশের অন্যত্র সমতলে সম্মানজনক পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।

    ২. লেখায় পার্বত্য জনগণের চোখে হেয়সূচক শব্দ বা পরিভাষা সচেতনভাবেই ব্যবহার করা হয়েছে

    ক) সরোয়ার হোসেন তার লেখায় সচেতনভাবেই পার্বত্য জনগণের উদ্দেশ্যে অবমাননামূলক বা হেয়সূচক অনেক শব্দ ব্যবহার করেছেন। তারমধ্যে প্রথম শব্দটি হচ্ছে- পার্বত্য জনগণকে বোঝাতে তিনি উপজাতি অভিধাটি ব্যবহার করেছেন।

    খ) ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধে ত্রিদিব রায়ের পাকিস্তানের পক্ষ অবলম্বন বিষয়ে তিনি লিখেছেন- চাকমা রাজা ত্রিদিব রায়সহ কতিপয় চাকমা এ মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরুদ্ধাচরণ করে। এই বাক্যে যে “কতিপয়” শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে তার ব্যবহার বাংলা ভাষায় তুচ্ছার্থে করা হয়ে থাকে। এবং এছাড়া তিনি লিখেছেন, কতিপয় চাকমা। কতিপয় চাকমা বলার মাধ্যমে তিনি এক অর্থে শুধুমাত্র এবং একমাত্র “চাকমারাই” যেন স্বাধীনতাযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে, এমন বক্তব্য বা মত সৃষ্টি করতে চেষ্টা করছেন। এছাড়া এই শব্দবন্ধ ব্যবহার করে তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রেক্ষাপটে ভাগ করো, শাসন করো নীতিকে ব্যবহার করছেন, খুব সুক্ষভাবে! এর ব্যবহার তিনি বিভিন্নস্থানে করেছেন।

    অন্যস্থানে তিনি লিখেছেন, চাকমারা মনেকরে এ অঞ্চলের ভূমি তাদের নিজস্ব সম্পত্তি।তা এই কথার মাধ্যমে যেন মনেহয়, অন্য জাতিসত্তার জনগণ পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমির উপর তাদের জাতিসত্তাগত মালিকানা দাবি করেন না, শুধু চাকমা জাতিসত্তার জনগণই দাবি করেন! অথচ, বাস্তবতা হচ্ছে, পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন জাতিসত্তার জনগণ সবাই ভূমির উপর তাদের মালিকানা দাবি করে থাকেন।

    গ) মারমা জাতিসত্তা বোঝাতে তিনি “মগ” শব্দটি ব্যবহার করেছেন, এবং সচেতনভাবেই তিনি তা ব্যবহার করেছেন।

    ঘ) কুকি জাতিসত্তার জনগণ বিষয়ে লিখেছেন- কুকিরা ছিল বন্যপ্রাণীদের মতোই ভবঘুরে প্রকৃতির এবং ফলমূল সংগ্রহ ও পশু শিকার করে জীবন ধারণ করত।

    ৩. ইতিহাসের বিকৃতি ঘটিয়েছেন অহরহ

    ব্রিগেডিয়ার মি. সরোয়ার হোসেন খুব সচেতন এবং পরিকল্পিতভাবেই পার্বত্য ইতিহাসের বিকৃতি ঘটিয়েছেন। এ বিষয়ে পার্বত্য ইতিহাসবেত্তাগণ কলম ধরবেন বলে আমরা আশাকরি।

    তবে সংক্ষেপে দুয়েকটি বিষয়ে আমরা এখানে আলোকপাত করতে চাই।

    ক) একস্থানে তিনি লিখেছেন, রমণী বিবর্জিত মোগল সৈন্যবাহিনীর সদস্যরা ধীরে ধীরে চাকমা রমণীদের সঙ্গে মিলেমিশে সংসার জীবন শুরু করে। তখন থেকে চাকমারা মোগল সেনাপতিদের রাজা হিসেবে গ্রহণ করে।

    উপরের এই বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে তিনি চাকমা জাতিসত্তার ইতিহাসকে যেমন বিকৃত করেছেন, তেমনি চাকমা জাতিসত্তার উদ্দেশ্যে যে বার্তা দিতে চাচ্ছেন তা হচ্ছে বলা বাহুল্য, একটি জাতিসত্তার জন্য খুবই অবমাননাকর!

    খ) একস্থানে তিনি লিখেছেন, এবং দক্ষতার ভিত্তিতে মোগলরা উপজাতীয়দের ‘দেওয়ান’ ‘তালুকদার’ ইত্যাদি খেতাবে ভূষিত করেন- যা তাদের বংশধররা এখনো ব্যবহার করে থাকে।

    অথচ, বাস্তব ইতিহাস হচ্ছে, এই সকল অভিধা তৎকালীন পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থানীয় নৃপতিগণই তাদের অধস্তন সামন্ত অধিপতিদের প্রদান করতেন।

    নানাভাবে সরোয়ার হোসেন ইতিহাসে তথ্যগত বিকৃতি ঘটিয়েছেন। এ বিষয়ে আরো বস্তুনিষ্ঠ ও কড়া সমালোচনামূলক বক্তব্য পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক ইতিহাসবেত্তাগণ প্রদান করবেন এ প্রত্যাশা আমাদের সবার।

    গ) স্থাননাম সংক্রান্ত তথ্যের বিষম বিকট বিকৃতি!

    সরোয়ার হোসেন বান্দরবানের একটি অঞ্চলের উপজেলার স্থাননামের উৎপত্তিগত ইতিহাসের চরম বিষম বিকট বিকৃতি ঘটিয়েছেন।

    তিনি লিখেছেন- মোগল সৈন্যরা তখন কৌশলগত কারণে রামু ছেড়ে আলীকদমের গহীন অরন্যে আবাসস্থল গড়ে তোলে এবং চাকমারাও তাদের সঙ্গে এ এলাকায় এসে বসবাস শুরু করে। মোগল সৈন্যরা হজরত আলীর(রা.) অনুসারী ছিল, তারই নামানুসারে এ জায়গার নাম রাখা হয় আলীকদম, যা এখনো প্রচলিত।

    কিন্তু আদতে আহলেই বা আহলিই ক্য দং যা বর্তমানে বাংলা উচ্চারণে বদলে গিয়ে হয়েছে আলীকদম, এই শব্দটির উৎপত্তি মারমা ভাষা থেকে । এখানে তিনটি শব্দ রয়েছে।

    ১. আহলিই/আহলেই/আলিহ এই শব্দটির মানে হচ্ছে মাঝখানে বা মধ্যখানে।

    ২. ক্য এই শব্দটির মানে হচ্ছে পাড় হওয়া বা ডিঙানো বা পেরোনো।

    ৩. দং বা তং এর মানে হচ্ছে পাহাড়।

    অর্থাৎ আহলিক্যদং এর মানে হচ্ছে, মাঝখান দিয়ে পাড় হয়ে যাওয়া।
    মাঝখান দিয়ে যে উপত্যকা অংশ রয়েছে তা বোঝাতে হয়তো এই শব্দটির ব্যবহার করা হয়েছে।

    অথচ, ব্রিগেডিয়ার সরোয়ার হোসেন তার চরম বিকৃতি ঘটিয়ে লিখেছেন, একজন বুজুর্গ ব্যক্তির নামে উক্ত স্থানের নামকরণ করা হয়েছে। এই ধরণের বিকৃতিকে চরম-বিকট-বিষম বিকৃতিই বলা যায়!
    তিনি একই সাথে ঘটাতে চেয়েছে স্থাননামের ইতিহাসের বিকৃতি এবং একই সাথে আনতে চেয়েছেন সাম্প্রদায়িকতাকে।

    ৪. পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমির উপর জুম্ম জনগণের মালিকানা খারিজ করে দিয়েছেন সরোয়ার হোসেন

    ব্রিগেডিয়ার সরোয়ার হোসেন পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমির উপর জুম্ম জনগণের মালিকানা খারিজ করে দিয়েছেন কলমের খোচায়! তিনি লিখেছেন, ‘The Chittagong Hill Tracts Regulation-1900′ অনুযায়ী অত্র এলাকার জমির প্রকৃত মালিক জেলা প্রশাসক তথা সরকার।

    অন্যত্র তিনি জুম্ম জনগণের পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমির উপর তাদের ঐতিহাসিক মালিকানার দাবি বিষয়ে লিখেছেন, জমির ওপর উপজাতীয় জনগণের অধিকারের ভিত্তি বা যুক্তি যাই হোক না কেন, এটা সন্দেহাতীতভাবে বলা যায়, উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর এই সনাতনী চিন্তা-ভাবনা অত্র অঞ্চলের স্থিতিশীলতা রক্ষায় প্রভাব বিস্তার করবে।

    অর্থাৎ, জুম্ম জনগণের ভূমি অধিকারের দাবিকে তিনি “সনাতনী চিন্তাভাবনা” বলে এক অর্থে পার্বত্য জুম্ম জনগণ যে পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমির উপর মালিকানা দাবি করতে পারে না তা-ই বললেন।

    সরোয়ার হোসেনের এই বক্তব্য যদি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মধ্যে আলাদাভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামকে শাসনকারী সেনাবাহিনীর বক্তব্য হয়ে থাকে তবে, পার্বত্য সমস্যা কিভাবে সমাধান করার জন্য তারা চেষ্টা করবে তা সহজেই বলে দেয়া যায়!

    আমরা এ বিষয়ে মন্তব্য না করে সার্বিক বিবেচনা ও পর্যালোচনার ভার পাঠকদের হাতেই ছেড়ে দিলাম।

    এছাড়া আমরা আশা করছি পার্বত্য চট্টগ্রামের সঠিক ইতিহাস নিয়ে এবং একজন সেনা কমান্ডারের পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে এই ভ্রান্তিমূলক অবস্থান বা চিন্তার বিপরীতে যৌক্তিক আলোচনা করতে অনেকেই এগিয়ে আসবেন।

    সবাইকে ধন্যবাদ

    সিএইচটি২৪.কম সম্পাদক ডেস্ক

    1. Etihas kom jani tobe etutuku buji je pahari SONTUS r GONDUS er chadabajir jonnyo amra nissyo hoye jacchi. Amra ek somoy osro dhorechi, sorkarke chukti korte table enechi, onekdur bastobayito hoiche. ekhon apnader jonnyo r kiccchu agacche na. Bandorboner dike dekhen, marma ra onek unnoti korche. ar amader ekhane medical college, university kicchu hoite den na. amader sontaner vobissoyt ki vogoban e jane

  24. I congratulate Jummo Halabaghafor your painstaking and fitting response to the article written by the Bangladesh military officer. You may remember in the recent past, the Bangladesh delegation at the UN was rebuked and digressed for making a shameful attempt to come up with a unilateral definition of “indigenous peoples”. Bengali Muslim writers have been trying to distort the history of CHT. While doing so, they identify Bengali Muslim settlers to be “son of soil” or “indigenous people” and the Jumma indigenous people to be migrants from Arakan, Myanmar in the region. They do not know Chittagong too, historically, belongs to the Jumma people or to the kings of Arakan, Myanmar. What they say “history” (of CHT) is not at all history in the true sense of the term but raping of the history. It is an academic conspiracy to indoctrinate and legitimize Bangladeshi brutal colonial regime and jehad against the Jumma indigenous people.
    Muslim Bengalis should know that before the 12th century CE there was not even a single Muslim in the Indian Sub-continent. The ancestors Bengali Muslims were either Buddhists or lower caste Hindus during the Buddhist period (6 century BCE – 12th century CE) in the Sun-continent. They were forcefully converted to Islam by the jehadis of Muhammad of Arab in the 13th century when they arrived here.
    The total population of Bangladesh were about 7 crore, including 30% non-Muslims, in 1971; now the figure has gone up 18 crore within 41 years—an increase of 11 crore in 41 years! With polygamy and illiteracy, they turned to out to be a man-producing a factory! In the light of this fact, I assume, as there is no demographic data, the total population of Bengali Muslims of what was then called “Bengal”, including parts of what is now called West Bengal, would have not been more than 50-60 lakh in 1860—153 years ago from today. They were basically concentrated in Dhaka, Murshibadbad and its peripheries. Control of Buddhist Chittagong went from the kings of Arakan to the Nawab of Bengal in 1666. It was only from that time Bengali Muslims started moving towards Chittagong hitherto populated by mostly the Chakmas and the Maramas. That is why historically, Chittagong belongs to the Jummas or to the kings of Arakan. So I will not wonder if Myanmar reclaims Chittagong from Bangladesh.

    1. I congratulate all of you and thank the writer for which you all did some brainstorming over your history. Its very positive and better than “COLLECTING TOLL & CARRYING OUT ABDUCTION”. My parents back home are handicapped. Also noted other tribal brothers expressed their grievances which they are otherwise unable to.
      Mohadeb,Finland

  25. History of Chittagong

    Historically, Chittagong and Cox’s Bazaar belong to the Jumma people. Places like Chakmakul, Rajanagar, Ranirhat etc and ruins of Buddhist temples, like Pandit Vihara still witness to this fact. Pandit Vihara of Chittagong flourished in the 10th century AD was a great seat of Tantrik Buddhist learning. Many Chakma Raulis or Luris (tantrik priests) are believed to have lived in this temple.

    Chittagong was conquered by an Indian origin Buddhist king of Arakan (Myanmar), Sola Sinha Chandra, in 953 AD [Ahidul Alam, 1982, p.2]. In order to commemorate his victory over the region, he erected a pillar inscribed with these words: “chit-tou-goung”, i.e. a place gained by war [Natun Chandra Barua, 1986, p. 29], the name that has given birth to what is now called “Chittagong”. According to Mahbabul Ul-Alam, “chit-tou-goung” means “it is unfair to fight”. Chittagong went to the control of the king of Tripura, Dhanya Manikya, in the 15th century AD (Kaliprasanna Sen, 1336 Tripura Era, P. 32). The Arakanese king again took over the region from the Tripura king in the same century. The Portuguese’s control over the region in the 16th century was short-lived. Chittagong became a part of the Mughal Empire in 1666 when the Nawab of Bengal, Shaista Khan, invaded it. This was the very period when Jummas of Chittagong started moving towards Chittagong Hill Tracts to avoid the atrocities of the Mughal ruler and the famous Chakma ballad “Chadigang Chhara Pala” [Migration (of Jummas) from Chittagong] was composed. Chittagong Hill Tracts was never a part of the Mughal Empire for its geographical and strategic advantages. The British colonized Chittagong and Chittagong Hill Tracts respectively in 1760 and 1860 following the defeat of Nawab Sirajuddaula of Bengal at the Palasi Battle in 1757.

    1. “ঐতিহাসিকভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামকে চাকমারা বিলোং করে”- আপনার এই কথাটি যথেষ্ট হাসির উদ্রেক করে। কীভাবে সেটা? আপনাদের তথাকথিত ‘রাজা’রা তো ছিলেন মোঘলদের খাজনা আদায়কারী, তাঁরা ‘শাসক’ হন কী করে?

      সবচেয়ে বড় কথা, ‘বুড্ডিস্ট’ রাজা দখল করলেই তো হবে না, তিনি তো চাকমা ছিলেন না। চাকমা ‘রাজা’রা তো একসময় মুসলিম নাম ও পদবী ধারন করা শুরু করে। আপনারা কিছুদিন আগে কালিন্দী রানীর নির্দেশে বুদ্ধ ধর্মে দিক্ষীত হন। এর আগে তো আপনারা ‘বুড্ডিস্ট’ ছিলেন না।

      আর যে ‘বুড্ডিস্ট’ রাজা জয় করেছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম তিনি তো চাকমা ছিলেন না। এসব ননসেন্স ইতিহাস দিয়ে আপনি কী বোঝাতে চাচ্ছেন?

    2. আমাদের দেশ আমরা যেখানে খুশি সেখানে যাবো থাকবো। তোমাদের চুলকানি কোথায় দাদারা? সেনাবাহিনীর বিপক্ষে কথা বললে কি সাহায্য একটু বেশি আসে??
      “তোমরাও বাঙ্গালী হয়ে যাও।”

  26. I am really shocked to see some hostile comment. A writer has written some information on a current issue, instead of appreciation he was highly criticised especially by some of our old Chakma friends….who enjoys the maximum preveleges from Bangladesh Govt. Yes there may be some mistake in history or in other facts and figures. But this is not the way to express bad feelings. Many people of Bangladesh still donot know that CHT is not still open for the other citizens of plain districts. If a tribal person can buy a piece of land or flat in any other place of Bangladesh, why it is not allowed in Hill Tracts. Is it the land of some body else? By seeing the offensive comment especially from some Chakma brother/sisters I am highly shocked. Why you are so offensive on Army,s involvement in CHT? I think it is the army who saved this part of land from the insurgents. Army carry out the order of govt, they are our brother. The hostile commentators has the correct list that how many security forces they killed during crisis. The brave soldiers who sacrificed their life for the cause of mother land received nothing but Santu Larma,s were highly benefited and enjoying privileges like a minister. The common tribals equally enjoying in Medical, Engineering and other govt services even if their quality is very poor. They get it through tribal quota. Their are thousends like this that Tribals are enjoying. The poor Bangalees though lives in hill are not given any such type facilities. Tribals could never tolerate them and accept as their neighbours. They are always busy to spread anti govt propaganda even with the help of Foreign countries. In 2003 I was planning to buy 5 acres of land in Rangamati, But due to very non cooperation and direct threat of Shantu Larma Bahini that poor Chakma returned my initial payment. This is the real picture of CHT now.
    Friends let us not fight but develop this part and explore the resource and prosper together.

  27. ধর্ম ও সভ্যতা

    ব্রাহ্মনধর্ম (আজকাল যাকে ‘হিন্দুধর্ম’ বলা হয়) হোল ভারতবর্ষে প্রথম প্রতিষ্ঠিত প্রাতিস্থানিক ধর্ম। ভারতবর্ষে এই ধর্মের প্রভাব খ্রিস্টপূর্ব প্রায় ১৫০০ বছর থেকে খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ বছর পয্যন্ত লক্ষ্য করা যায়। বুদ্ধ (৫৬৩-৪৮৩ খ্রিস্ট পূর্ব) তাঁর ধর্ম প্রচারের ফলে এই ধর্মের প্রভাব সমাজে অনেকটা নিস্প্রভ হয়ে পড়ে। শুরু হয় ভারতবর্ষে সামাজিক বিপ্লব ও বৌদ্ধ সভ্যতা।

    বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তক গৌতম বুদ্ধের জন্ম (নেপালের লুম্বিনি উদ্যান) যীশু খ্রিস্টের জন্মের প্রায় ৫০০ বছর আগে, অর্থাৎ আজ থেকে (২০১৩ + ৫০০=) ২৫১৩ বছর আগে বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তন হয়।

    খ্রিস্টানধর্মের প্রবর্তক যীশু খ্রিস্টের জন্ম (বর্তমান ইসরাইলের বেথ্যালহেম শহর) হয়েছিল আজ থেকে ২০১৩ বছর আগে, অর্থাৎ আজ থেকে ২০১৩ বছর আগে খ্রিস্টানধর্মের প্রবর্তন হয়।

    ইসলামধর্মের প্রবর্তক হজরত মুহম্মদের জন্ম (বর্তমান আরবের মক্কা শহর) যীশু খ্রিস্টের জন্মের প্রায় ৬০০ বছর পরে, অর্থাৎ আজ থেকে (২০১৩–৬০০=) ১৪১৩ বছর আগে ইসলামধর্মের প্রবর্তন হয়। অর্থাৎ বৌদ্ধধর্মের (২৫১৩–১৪১৩=) ১১০০বছর পরে ইসলামধর্মের আবির্ভাব হয়।

    যীশু খ্রিস্টের জুন্মের ৫০০ বছর আগ থেকে ১২০০ শতাব্দী পয্যন্ত অর্থাৎ প্রায় ১৭০০ বছর (কম সময় নয়) ছিল ভারতবর্ষে বৌদ্ধ সভ্যতার ইতিহাস। এই সময় ভারতবর্ষের (বর্তমান ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ) সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ছিল বৌদ্ধ। হিন্দু ও জৈনরা ছিলেন ধর্মীয় সংখ্যালগু। এখানে একজন মুসলিমও ছিলনা। ভারতবর্ষ থেকে বৌদ্ধধর্ম মধ্য এশিয়া (বর্তমান আফগানিস্থান, উজবেকস্থান, কাজাকস্থান, দক্ষিন রাশিয়া, মধ্য প্রাচ্যের কিছু দেশ–যেমন ইরাক, ইরান, সিরিয়া ইত্যাদি), পূর্ব ইউরোপ, তিব্বত, চীন, জাপান, কোরিয়া, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, যাবা, সুমাত্রা ও বর্ণীয়ও দ্বীপপুঞ্জ (বর্তমানে ইন্দোনেশিয়া ও মালএশিয়া), বার্মা ও শ্রীলঙ্কায় বিস্তার লাভ করে। এর পেছনে সবচেয়ে বেশী কাজ করেছিলেন সম্রাট অশোক (খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দী) এবং অগণিত শান্ত ও সোম্য বৌদ্ধভিক্ষু ও পণ্ডিত। এই ধর্ম প্যৃথিবীর যেদিকে গেছে সেদিকে মানুষকে সভ্য করে তুলেছে, দিয়েছে শান্তি, মৈত্রী, করুণা, প্রেম ও প্রজ্ঞার আশ্বাস এবং সঠিক জীবনের অর্থ।

    ১২০০ সালে বখতিয়ার খিলজি বর্তমান বিহার ও পশ্চিমবঙ্গ আক্রমণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ভারতবর্ষে প্রকৃত মুসলিম সাম্রাজ্য। আরব দুনিয়া থেকে মুহম্মদের আর্মি “এক হাতে তলোয়ার এক হাতে কোরান” নিয়ে এসে জেহাদ (অমুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ) করতে করতে বর্তমান আফগান্তিস্থান, পাকিস্তান, ভারত, বাংলাদেশ আক্রমণ করে বেদখল করে নেয়। বৌদ্ধ, হিন্দু ও জৈন ধর্মাবলম্বীদের গণহত্যা করে। কেও মারা গেল, কেও পালিয়ে গেল আর যারা বাকী ছিল তাদেরকে জোরপূর্বক ইসলামধর্মে ধর্মান্তরিত করল। নয়তলা এবং ৩০০০ বৌদ্ধ শিক্ষক ও ছাত্র বিশিষ্ট বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয় নালন্দাসহ, বিক্রমশীলা, তক্ষশীলা এবং ভারতবর্ষের সমস্ত বৌদ্ধ মন্দির, শিক্ষা প্রতিস্থান, শিল্পকলা, কারুকায্য ও সভ্যতা ধ্বংস করে দিল। কথিত আছে তাদের আক্রমনে বৌদ্ধধর্মের এত ক্ষতি হয়েছিল যে ভারতবর্ষের মাটীতে বৌদ্ধধর্মের একটা পুস্তকও পাওয়া যায়নি; আজকাল আমরা বৌদ্ধধর্মের যে বই পড়ছি সেগুলো সব তিব্বতী, চীনী, সিংহলী ভাষা থেকে প্রথমে ইংরেজি ও পরে অন্যান্য ভাষায় অনুবাদ করা গ্রন্থ থেকে পড়ছি। আজকাল আফগানিস্থান, পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশে যারা নিজেদেরকে ‘মুসলিম’ বলে পরিচয় দিচ্ছে তাদের পূর্বসুরীরা সবাই বৌদ্ধ বা হিন্দু বা জৈন ছিলেন। আজকাল বাংলাদেশের মুসলিমরা যে ভাষায় কথা বলছেন ও যে লিপিতে লেখা লেখছেন তার উৎস হোল তান্ত্রিক বৌদ্ধ ধর্মীয়গুরু দ্বারা লিখিত ও ভাষিত চর্যাপদ (১০ম শতাব্দী)…পাহাড়পুর, পণ্ডিত বিহার, ময়নামতি সব বৌদ্ধ সভ্যতার নিদর্শন। আজ তারা ইসলামের কুপ্রভাবে—ধর্মীয় গোঁড়ামির কারনে–তাদের জাতি, ধর্ম, ভাষা, সংস্কৃতি ও সভ্যতার উৎস ভুলে গেছেন—জানেন না বা জানলেও তা অস্বীকার করেন! বর্তমান যুগে ধর্মীয় নিয়ম দিয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রনীতি পরিচালনা করা হয়না। কিন্তু তারা এখনও তাই করছেন! এখনও সেই মধ্যযুগীয় জেহাদ ও বর্বরতা!এটাই তাদের সঙ্গে অন্যান্য সভ্য সমাজের সমস্যার মূল কারণ। তারা পৃথিবীতে একটা অদ্ভুত স্পেসিস! অন্যান্য সমাজ ও সভ্যতা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা!

    ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে মুসলিম সাম্রাজ্যবাদ খ্রিস্টান (ব্রিটিশ) সাম্রাজ্যবাদের কাছে পরাজিত হয়। অর্থাৎ প্রায় ৫০০ বছর পর ভারতবর্ষে মুসলিম সাম্রাজ্যবাদের অবসান হয়। ভালই হয়েছে। কারণ খ্রিস্টান সাম্রাজ্যবাদ ভারতবর্ষে না আসলে আজ সেখানে কোন বৌদ্ধ, হিন্দু ও জৈন সভ্যতার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যেতনা; খ্রিস্টান সাম্রাজ্যবাদের কারনে বৌদ্ধ, হিন্দু ও জৈন ধর্মাবলম্বী জনতা ও তাদের সভ্যতা মুসলিম সাম্রাজ্যবাদের জেহাদ থেকে রক্ষা পেল, যেমনটি খ্রিস্টান সাম্রাজ্যবাদের মানবতা বা মানবাধিকার আইনের কারনে জুম্মরা পার্বত্য চট্টগ্রামে মুসলিম সাম্রাজ্যবাদের কড়াল গ্রাস বা জেহাদ থেকে রক্ষা পেয়ে আসছে।

    খ্রিস্টান (ব্রিটিশ) সাম্রাজ্যবাদের সময় (১৭৫৭-১৯৪৭) মোটামুটি ১৮৮০–১৯৪০ সালের মধ্যে পুরাতত্ত্ব ও ভারততত্ত্ববিদ আলেকজান্ডার ক্যানিংহাম, জেমস প্রিঞ্চেপ, রিডস ডেভিড (স্বামী-স্রী যারা লন্ডনে “পালি টেক্সট সোসাইটি” স্থাপনা করে পুরো ত্রিপক ইংরেজী ভাষায় অনুবাদ করেন),এডউইন আরলন্ড (‘The Light of Asia’-র লেখক যার কাব্যগ্রন্থ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে “গীতাঞ্জলী লেখতে অনুপ্রেরণা যোগায়), ওলডেনবাগ, মাক্সমুলার, উইন্টারননিজ, লা ভিলা পুসিন, সেল্ভিন লেল্ভি, এইচ কার্ন, স্পেঞ্চ হার্ডি, পল চারুস (খ্রিস্টান ফাডার), ফাসবল, শ্রীলঙ্কার অনাগারিক ধর্মপাল, বাংলার রাজেন্দ্রালাল মিত্র, হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও মহারাষ্ট্রের আম্বেদকর প্রমুখ মনিষীগণ না হলে আজও বুদ্ধধর্ম তার জন্ম ও কর্মভুমি ভারতবর্ষের ধ্বংসস্তূপে শায়িত থাকতো–পুনরাবির্ভাব হতে পারত না। তারা না হলে আজ আমরা লুম্বিনি, বুদ্ধগয়া, সারনাথ, কুশিনগর, সাচিস্তূপ, অজন্তা-এলোরা ইত্যাদি কি এবং কোথায় কিছুই জানতাম না। হলিউড ও অনেক হলিউড তারকারা না হলে আজ বৌদ্ধধর্ম এত পশ্চিমাদেশে জনপ্রিয় হতো না। আজ পশ্চিমে যারা খ্রিস্টান তারা নতুন করে বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করছেন।

    বস্তুতঃ খ্রিস্টান হৃদয় খুব উন্মুক্ত, উদার ও মানবিক। এই হৃদয় শুধু শাসন-শোষণ করেনা–কিভাবে সভ্য হতে হয় ও সভ্য শাসন কায়েম করতে হয় তাও শেখায়। তারা পৃথিবীর যেদিকে গেছে মানুষকে শিক্ষা দিয়েছে এবং মানুষের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়েছে–যেমন হংকং (প্রাক্তন ব্রিটিশ কলোনি), মেকাউ (প্রাক্তন পরতুগিস কলোনি), প্রেসিডেঞ্চি কলেজ (কলকাতা), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বর্তমান ভারত-বাংলাদেশ রেল যোগাযোগ ব্যাবস্থা, আইন-ব্যাবস্থা ইত্যাদি। তাই তারা আজ পৃথিবীতে সবচেয়ে উন্নত, উদার, মুক্ত, গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ ও বহুজাতিক সমাজ। মুসলিম সমাজ আমাদেরকে কি শিখাচ্ছে আর কি দিচ্ছে? শুধু গনহত্যা, নারীধর্ষণ, ভূমি-বেদখল ও জেহাদি শিক্ষা।

    1. nikhil, tumi dhormo niye tana tani koro keno? CHT history liktegelei dhormo nye udahoron dite suru koro. tumi ki jano, aj Muslim ebong christian rai sobcheye soktishali, tarai bishsow dokhol kore rekheche. Tara oikoboddho. Kintu Buddistra oikobaddho noi, soktisali noi. Arakan chhara onno kuthau etobeshi shoktishali noi.Tumi ki jano Muslim ebong Christian dhorma prai ek.Khub beshi parthokko noi.Tader itihas Babylon sobbhotatheke suru hoyeche.Ajke Israel ebong Philistine tu dui bhai. Eki poribarer. Tader maramari ucchit chilo na. Tader juddho tu CHT er motu noi, eti onek onek itihas royeche. Philistine-Israel juddho mane Muslim-Christian juddho noi. Tader juddo itihas nye.

      1. এই বেকুবের কথা বাদ দেন ভাই। কিছু টেনে আসছে মনে হয়। আমরা তো পাহাড়ী বাঙ্গালী ভেদাভেদ করিনি বলেই এত চাপের মধ্যেও পাহাড়ী কোটার বিরোধীতা করিনা। কিংবা আমাদের ট্যাক্সের টাকায় পাহাড়ী জনপদে রাস্তাঘাট এর বিরোধীতা করিনা। যখন যুক্তিতে পারছে না তখন ধর্ম নিয়ে খেপিয়ে তুলছে। এইসব ইগ্নোরেন্ট বিচ গুলোর জন্য আর কিছু না করার অনুরোধ রইলো সরকারের কাছে। দেখি বিপদে পড়লে তাদের কোন মিশনারী বাপ সাহায্য করে। শালারা টাকার বিনিময়ে চাকরীর বিনিময়ে ধর্ম বেঁচে আসছে অন্যের ধর্ম নিয়ে টানাটানি করতে।

  28. পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন কেন জরুরী?

    বর্তমানে আমরা বাংলাদেশের নাগরিক–আগে কি ছিলাম সেটা অন্যকথা। জীবন ও সম্পত্তি নাগরিকের মৌলিক অধিকার। এই অধিকার রক্ষা করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের–বাংলাদেশের। বাংলাদেশের অপরাপর এলাকা থেকে লক্ষ লক্ষ বাঙ্গালী মুসলিম পার্বত্য চট্টগ্রামে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ ও বসতিস্থাপন করিয়ে বাংলাদেশ লক্ষ লক্ষ জুম্মদের পৈত্রিক ভূমি ও ঘরভিটা থেকে উৎখাত করেছে এবং করছে। আজ তারা অর্থনৈতিক, সামাজিকভাবে ও সংস্কৃতিকভাবে বিপর্যস্ত –- একেবারেই প্রান্তিকীকরণের শেষ পর্যায়ে। তাদের জীবন, সংস্কৃতি ও অস্তিত্ব বিপন্ন। বাংলাদেশ কি আমাদের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষা করছে? না। তাহলে বাংলাদেশ আমাদেরকে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে গণ্য করে? না। বাংলাদেশ আমাদের মৌলিক অধিকার রক্ষায় ব্যর্থ। কেন? উত্তর হোল — আমরা মুসলিমদের থেকে আলাদা বলে।

    আমরা বাংলাদেশের কাছে আমাদের মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্য গনতান্ত্রিকভাবে সংগ্রাম করি–আবেদন-নিবেদন করি। কিন্তু বাংলাদেশ আমাদের আদেবন-নিবেদনে সাড়া দেয়না। আমাদের প্রাণের দাবী ও অনুভূতির প্রতি তার কোন সংবেদনশীলতা নেই। আমাদের সমস্যার সমাধান হয়না। তাই আমরা বিদ্রোহ করার চেষ্টা করি –- বাংলাদেশের বিরুদ্ধে লড়াই করি। বাংলাদেশ আমাদের বিদ্রোহকে “রাষ্ট্র বিরোধী” কর্মকাণ্ড বলে আখ্যায়িত করে—আমাদেরকের “সন্ত্রাসী” ও “বিচ্ছিন্নতাবাদী” বলে অপপ্রচার করে এবং বাংলাদেশর আর্মিরা আমাদেরকে দমন করে। “রাষ্ট্র বিরোধী”, “সন্ত্রাসী” ও “বিচ্ছিন্নবাদী” কর্মকাণ্ড দমনের নামে আর্মিরা আমাদের বিরুদ্ধে গনহত্যা চালায়, নির্যাতন- নিপীড়ন চালায়, আমাদের মা–বোনদের নির্বিচারে ধর্ষণ করে ইত্যাদি। তাই আমরা বাংলাদেশকে আমাদের বন্ধু মনে করতে পারিনা -– আমাদের বাংলাদেশের উপর আস্থা ও শ্রদ্ধাবোধ নেই — আমরা বাংলাদেশের উপর নির্ভর করতে পারিনা –- আমারা বাংলাদেশে নিরাপত্তাহীনতায় থাকি। তাই আমরা জাতিসঙ্ঘ সহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক মঞ্চে যাই আর বাংলাদেশ আমাদের বিরুদ্ধে যে ধরনের ব্যাবহার করে সেকথাগুলো সেখানে তুলে ধরি। আশা তারা আমাদের বন্ধু হয়ে আমাদের পক্ষে কথা বলবে -– আমাদের সাহায্যে এগিয়ে আসবে। আমারাও তো মানুষ – আমরাও মুসলিম বাঙ্গালীদের মতো সুখে ও শান্তিতে থাকতে চাই -– বাঁচতে চাই। তাই সংগ্রাম করি -– বিদ্রোহ করি। আর বিদ্রোহ মানে অশান্তি, অস্থিতি ও সামগ্রিক উন্নয়নে বাধা। বস্তুতঃ আমাদেরকে বিদ্রোহ করতে বাধ্য করা হয়।

    তাই এই পরিস্থিতিতে আমারা যদি আমাদের দুঃখের কথা অন্যান্য মানুষ ও দেশের সঙ্গে শেয়ার করি, তাহলে বাংলাদেশ আমাদের দোষ দিতে পারবেনা।

    মূলকথা হোল — বাংলাদেশকে আমাদের আস্থা ও শ্রদ্ধা অর্জন করতে হবে — আমাদেরকে নিরাপত্তার আশ্বাস দিতে হবে। সেইজন্য পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন অত্যন্ত জরুরী। এটা একেবারেই মিনিমাম। আর চক্তি বাস্তবায়ন না হলে আরও জোরদার বিদ্রোহ হবে। এটা ধ্রুব সত্য। কারণ আমদের বাঁচার জন্য সংগ্রাম করতেই হবে। কোন বিকল্প নেই।

    1. শান্তি চুক্তির পর চাকমাদের জন্য অন্য সম্প্রদায়এর জনগন কোন সুবিধা পায়নি। এমনকি শিক্ষা কোঠায় সুবিধা নিয়ে চাকমারা অনেক এগিয়ে গেল। তাও এদের মানশিকতায় পরিবর্তন এলো না। কথাবার্তা ভাব প্রকাশে এরা সেই শান্তিবাহিনী। দাদারা সহনশীল হলে অঞ্চলে শান্তি হতো।

      1. মিঃ Robi Mong শান্তি চুক্তির পর খাগড়াছড়িতে ত্রিপুরা আর মারমাদের জ্বালাই আর পারি না,চাকুরী থেকে শুরু করে সব যেন ওদের।

        1. hahahahaaa….. Mr খোকন চাকমা আপান্র কথা সুনে খুবই মজা পেলাম। দাদা রাঙামাটি ও বান্দারবন এর কথাতো আপনি কিছু বললেন না। রাঙামাটিতে তো আপনাদের জালাই আমরা কলেজে পর্যন্ত যেতে ভই পাই। কখন না আবার আমাকে গায়েব করে দেন। চাকরি বাক্রির কথা না হই বাদই দিলাম। দাদা অন্তরটাকে বড় করেন, গোয়ারতুমি ছাড়েন। সন্তু দাদার লুঙ্গির তলা থেকে বের হইয়ে আসেন। জনতার কাতারে আসেন। দুনিয়াটা অনেক বড়। বুঝলেন দাদা।

          1. Chakmara 20 bosor dhorei army´r sathe, bangali´r sathe juddho korla. chukti korla. kichsui pela na. UNDP´r chakri prai shesh, ekhon sorkari chakri niyei abar tanatanichakma, marma o tripura upojatir moddhe. tumider rajnoitik odokkhotar karonei, Pahari sobaike durbhuk puhate hochche.ekhontu tinti sohoryi Bangalira dokhol korenyeche. amader soronkalei onek Bangali dhukei poreche. esober jonno dayi UPDF ebong JSS rasnitir. Parbattya chattagramer Bangalira onek oikoboddho u susongothito. Ar Chakma ra nijeder nye maramari. Dader shohor Chompoknagar-Rangamati tu bangalider shohorei porinoto hoyeche. Tobu tader mukhe boro boro buli, ohommika.

        2. Robi mong ebong khukon chakma, tumra nijerai bitorke joriye napore Nikhil chakma ke help koro, o eka bitorko, itihas nye ar parche na. Banglai Porishider boktobbo onek shokto. Tumraitu boro buka. Chakma marma rai parbatta chattagramer rajnitite onobhiggo. aj dekho…UPDF ar JSS maramari. Ajke Bangalider jonno Parbatto chottagramer jongol unmokto,obhoyaronno. ar paharider jonno bhoyaronno. Dhakai o chittagonge thakte hocche onek chakma ke. orthat Bangalider bosotite. ei jonno bolchi tumrai boro buka!

    2. বিদ্রোহ হবে- এসব হুমকি পুরোনো। পার্বত্য চুক্তিই তো সরকার বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। সবসময় ‘তালগাছ আমার’ নীতিতে থাকলে তো আর শান্তি আসবে না। চুক্তিতে আছে ‘একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত ভূমি কমিশন ভূমি সমস্যার সমাধান করবে’। আপনারা সেটাতে ন্যুনতম সহযোগীতা করেননি। বরং সেটা আরেক বিষফোঁড়ার জন্ম দিয়েছে।

      শান্তিচুক্তিতে তো ঠিকই নিজেদেরকে ‘উপজাতি’ হিসেবে মেনে নিয়েছিলেন। এখন তবে ‘আদিবাসী’ না হলে ‘অপমানিত’ বোধ করেন কী করে? আগে যদি নিজেদেরকে উপজাতি হিসেবে মেনে নিতেই পারেন, তাহলে এখন ‘আদিবাসী স্বীকৃতি’ আবার তথাকথিত ‘প্রাণের দাবী’তে পরিনত হল কী করে? সব কথা তো আপনারাই বলেন। শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের কথা বলেন, আবার নিজেরাই সবার আগে তা ভঙ্গ করেন।

  29. Sundor article ta porlam aro porlam Pahar oncholer onek gulu bhaider comment. Er konotar moddhey somporko sthapon korte parlam na. Pahari vhaider bolchi, sudhu date r incident jure dile jodi rochona hoto tahole sobai apnara jatiyo maddhome frontline contributor hoten. Comments gulo valo lageni. Bujai jai……… Laizu,Aus

  30. লেখককে অনেক ধন্যবাদ জানাই পার্বত্য বিষয়ক বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা তুলে ধরার জন্য। আমি বেশি কথা বলতে চাই না। আমার ILO Convention গুলো নিয়ে study করার সুযোগ হয়েছিলো। ILO-169 থেকে Clause গুলো উঠিয়ে দিয়ে পাহাড়ীদের আদিবাসী বললে সমস্যা কি? আসলে ILO এর Clause গুলোই আজকে ওদেরকে আদিবাসী নিয়ে মাতামাই করতে বাধ্য করেছে।
    Barrister Saleh,UK

  31. মজার সাথে লক্ষ করলাম পার্বত্যআঞ্চলের পঠাকের মন্তব্য বিভ্রান্তিররই ঠেকেছে। এদের বোধ শক্তির অভাব অথবা এরা জাতিগত ভাবেই অবুঝ। রচনাটির কোথাও এমন কিছু পাইনি, যার প্রতিক্রিয়া এমন communal হতে পারে। লেখক্কে অনেক ধন্ন্যবাদ প্রিছছন্ন presentation এর জন্ন্

    শিশির,রাজশাহী

  32. amar ek bondhu article ta amader ekta group e share korese.sekhan theki article ti pora. article er sathe sob koiti comments o ami porlam. ami bujlam na ato somossa kothai..pahari …bangalee..land issue…indigenous issue….ato issue…. but ami to ar amon kisu dakhi nai….eito goto BIJU te ghure elam Rangamati theke,amar ek Chakma friend er invitation e. Ja deklam ta ektu share kori apnader sathe….akhon asole pahar ar pahar nai.Khabar dabar,dress, gaan bajnay mul dharar sathe mile mishe eka kar……i was felling that am not in bangladesh somewhere in Thailand. Civilization er top e reach koreo ora( not all some of them) আদিবাসী(sry word ta copy korlam) word ta khub e like kore. তাও যতদিন ধরে ILO-169 হয়েছে। আসল কারন আসলে আদিবাসী নামে ডাকা হলে রাষ্ট্রকে আরো কিছু ensure করতে হবে যেটা সার্বভৌমত্ব এর সাথে সাঘ্রসিক। সেখানেই সব জট।
    জুয়েল, জাহঙ্গীর নগর

  33. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সরোয়ার হোসেন, এইচডিএমসি, পিএসসি এর মত সন্মানিত ব্যক্তিদের লেখা এই সব নাম না জানা পত্রিকা্য কেন ? উনারাতো লিখবেন বড় বড় সব জাতীয় পত্রিকায়। আমি মনে করি এই সব নাম না জানা পত্রিকায় লেখা আর না লেখা একই সমান ।

    1. খোকন দাদা আপনাকে নিচের link গুলো দেখার জন্য অনুরোধ করলাম। আশা করি আপনার প্রশ্নের উত্তারটা পেয়ে যাবেন। ধন্ন্যবাদ।
      1. http://www.einqilab.com/2013/08/24/index.php
      2. http://www.bd-pratidin.com/2013/08/17/11097
      3. http://www.ittefaq.com.bd/epaperDemo/?archiev=yes&arch_date=22-08-2013#

      1. ৥ খোকন চাকমা- আরো জানতে পারবেন এই সাইটে লেখাটা প্রকাশিত হওয়ার পর কতটা প্রচার পেয়েছে, জনপ্রিয় হয়েছে, মন্তব্য এসেছে। উপরের লিংকগুলো আপনার চোখে পড়েছিল কি খোকন বাবু? কোনো মন্তব্য কি করেছিলেন সেখানে? আর এখানে মন্তব্যের ঝড়, বুদ্ধিবৃত্তিক প্রবল বিতর্ক দেখে তো আপনার উপিলদ্ধি হওয়ার কথা যে, নামে নয় গুণে পরিচয়। নাকি ‘আপনা মাংসে হরিণা বৈরী।’

  34. পার্বত্য চট্টগ্রামে মুলনিবাসী বা আদিবাসী কারা?

    পার্বত্য চট্টগ্রামে মূলনিবাসী বা আদিবাসী কারা–এই প্রশ্নের উত্তরের জন্য কাওকে বড় মাফের ঐতিহাসিক বা বুদ্ধিজীবি হওয়ার দরকার নেই। এই অঞ্চলের জনসংখ্যাগত পরিসংখ্যান হোল এই প্রশ্নের সবচেয়ে সহজ ও বিজ্ঞানসম্মত উত্তর। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের সময় এই অঞ্চলে জুম্ম ছিল শতকরা ৯৮.৫ জন আর অজুম্ম (মুসলিম বাঙ্গালী ও অন্যান্য) ১.৫ জন। ব্রিটিশরা যখন ১৮৬০ সালে এই অঞ্চল অধিকার করেছিলেন তখন এই অঞ্চলে একজনও স্থায়ী বাসিন্দা অজুম্ম ছিলনা। ১৭৫০ সালের আগে এই অঞ্চলে কোন অজুম্মের অস্তিত্ব পাওয়া যায়না। অন্যদিকে জুম্মরা সপ্তম শতাব্দী থেকে চট্টগ্রাম, কক্স বাজার ও পার্বত্য চট্টগ্রামের কিছু কিছু এলাকায় বসবাস করে আসছিলেন। চাকমা ও মারমারা মুলত তাদের রাজাদের অধীনে চট্টগ্রাম ও কক্স বাজার এলাকায় বসবাস করছিলেন। চট্টগ্রাম ও কক্স বাজার আরাকান সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল। তখন পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত অনেক এলাকা সম্ভতঃ ” no man’s land’ ছিল। ১৬৬৬ সালে বাংলার নবাব আরাকানের রাজাদের কাছ থেকে চট্টগ্রাম দখল করেন। তখন থেকে মুলতঃ মুসলিম বাঙ্গালীরা ঢাকা ও অন্যান্য অঞ্চল থেকে চট্টগ্রামের দিকে আসতে থাকেন। তাদের জেহাদ থেকে বাঁচার জন্য এবং ভ্রাম্যমান জুম্মচাষের কারনে চাকমা ও মারমারা ধীরে ধীরে পার্বত্য চট্টগ্রামের দিকে অগ্রসর হয়। এই সময় চাকমাদের ‘চাদিগাং ছাড়া পালা’ রচিত হয়।

    মুসলিম বাঙ্গালীদের সঙ্গে মুঘলদের কোন রক্তের বা ইতিহাসের সম্পর্ক নেই। মুসলিম বাঙ্গালীদের পূর্বপুরুষরা হলেন বৌদ্ধ ও হিন্দু। ১২০০-১৩০০ শতাব্দীতে তাদেরকে জোরপূর্বক ইসলামধর্মে ধর্মান্তরিত করা হয় যখন মুহম্মদের জেহাদীরা আরব থেকে ‘এক হাতে কোরান আর এক হাতে তলোয়ার’ নিয়ে এসে ভারতবর্ষ অধিকার করে নেয়।

    1. আপনারা নিজেরাই তো সেই ধর্মের অনুসারী ছিলেন একদা। কালিন্দী রানী আপনাদের প্রথম বৌদ্ধ হবার নির্দেশ দেন, আপনারা হয়ে যান। এর আগে কী ছিলেন আপনার? সেই জবাবটা একটু দিয়ে যাবেন।

      আর এখানে তো ধর্ম নিয়ে আলোচনাটা হচ্ছে না। আমাদের পূর্বপুরুষরা বৌদ্ধ ছিল, কিন্তু জাতিতে তো ঠিকই বাঙালি ছিল। বৌদ্ধ আর চাকমা তো সমার্থক শব্দ নয়। এই দুটোকে এরকম তালগোল পেঁচিয়ে উপস্থাপন করছেন কেন?

    2. Changma Bhaider bolchi, apnara ki sorasori Chad theke pahare obotoron korechen? Nischoi bolben na hey !! Kotha theke esechen abong tothyo upatter vittite bola jai Arakan thekei. Temni kore amra sobai kothao na kothao theke esechi. Prothom manob Adam(AS) er nam o mone hoy sunechen. Tini Srilankay pa rekhechilen. Prothome ei prithiby te eto lok chilo? Tahole etto lok elo kottheke?? Ke kottheke elo bisoy na. Apni oparer chap soite na pere, jibikar khoje border cross kore chole esechen r settler bangalira Sorkar Kotrik ades prapto hoye ekhane eseche. Oderkei besi authentic bolte hoy…apnara khub e okritogghyo. Cheyei dekhen Indian Chakma der nagorikottyo nei. Rohingader kono right nei…..apnara to rohingader motoi opar theke ekhene esechen…ki ache eto bitorker

  35. যদি মুসলিম বাঙ্গালীরা তাদের ইতিহাসকে ভারতের বৃহত্তর বৌদ্ধ ও হিন্দু জনগোষ্ঠীর সঙ্গে মিলিয়ে দেখেন তাহলে তারা বাংলাদেশে ‘আদিবাসী’ (indigenous people)। আর যদি তারা তাদের ইতিহাসকে মুঘলদের সঙ্গে মিলিয়ে দেখেন তাহলে তারা কেওই বাংলাদেশে আদিবাসী নয়–সেটলার বা কোলোনাইযার। কারণ মুঘলরা বিদেশী আক্রমণকারী। প্রকৃত ইতিহাস হোল– মুসলিম বাঙ্গালীরা একটা শঙ্কর বা মিশ্র জাতি। তাদের পূর্বপুরুষরা সবাই বৌদ্ধ বা হিন্দু ছিল। ১২০০-১৩০০ শতাব্দীতে তাদেরকে মুসলিমরা জোরপূর্বক ইসলামধর্মে ধর্মান্তরিত করেছিল। তারা মুঘলদের প্রজা মাত্র।

  36. আসলে মূল সমস্যাটা হচ্ছে–জেহাদীরা পৃথিবীর যেদিকে গেছেন সেইদিকে রক্তপাত ঘটেছে। তারা অন্যান্য অমুসলিম সমাজের ইতিহাস, ধর্ম, সংস্কৃতি ও সভ্যতা বিকৃত ও ধ্বংস করে দিয়েছেন।

    1. Now changing from Adibashi to Jehadi. What is next? LOL. Most probably you people don’t have anything to say except diverting issues.

    2. বুঝলাম তো বাংলাদেশে জেহাদিদের দোষ। তোমাদের জাত ভাই এরা যে নাগাল্যান্ড এ জেহাদ এ ব্যস্ত আছে তার কি খবর? যে দেশে বাস করছে যেই দেশে খাচ্ছে সেই দেশেরই পেছন মারছে এই সো কলড উপজাতিরা।
      এদের জন্য সরকার কাজ করে?? এদের উন্নয়নের জন্য আমাদের ট্যাক্স এর টাকা খরচ করা হয় ভাবতেও অবাক লাগে।

  37. Bengali Muslim Settlers: A Political Instrument of Bangladesh to Sabotage Jumma Indigenous People’s Right to Self-determination

    Historically, CHT is not part of Bangladesh. Bangladesh was born in 1971. CHT had existed from 6th century CE. It was illegally made part of East Pakistan (now Bangladesh) in 1947. That means Bangladesh got CHT as an illegal legacy from Pakistan.

    Who are the “indigenous peoples” (the first peoples) of CHT — Jummas or non-Jummas (Bengali Muslims and others)? The easiest and the most scientific answer to this question is found in the census report/demographic statistics of this region. During the partition of the Indian Sub-continent in 1947, the ratio of Jumma and non-Jumma population of CHT was 98:2, that is, out of every 100 persons 98 were Jummas and 2 were non-Jummas. There was not even a single non-Jumma (permanent resident) in CHT when the region was brought under the British colonial rule in 1860. Therefore, who are the indigenous peoples of CHT? The answer is the Jummas. For this very reason, Bengali Muslims of CHT are called “settlers”.

    Some Bengali Muslim writers identify Bengali Muslim settlers to be “indigenous people” in CHT and the Jumma indigenous people as “tribe” with reference to “research” done by anthropologists on CHT, as they say. Such research is not research at all in the true sense of the term, but an academic conspiracy to indoctrinate and legitimize the Bengali Muslim colonial rule in CHT or over the Jumma indigenous people.

    No national and international “conspiracy” is required for CHT to gain its independence. CHT will emerge an independent state, like Bangladesh — not to mention of South Sudan or East Timor — as per international law mentioned below:

    United Nations Declaration on the Rights of Indigenous Peoples: Article 3 — Right to Self-determination: Indigenous peoples have the right of self determination. By virtue of that right they freely determine their political status and freely pursue their economic, social and cultural development.

    The Govt. of Bangladesh brought over a half million Bengali Muslim settlers from Bangladesh into the land of the Jumma indigenous people, CHT in the 1980s and 1990s and thus deprived them (Bengali Muslim settlers) of their due rights in their country. They cannot claim any right to land in CHT. In fact, they have, as per CHT law, no political and economic right in CHT, as they are “settlers’, “illegal infiltrators” in the region. Jummas should, however, consider the educational rights of their children until they are repatriated to their previous places in Bangladesh.

    Settlers are creating a lot of political, economic, social and environmental problems in CHT because of their poor educational, social and economic background. They are not getting proper education except radical Islamic education imparted for political purpose. They basically live on ration supplied by the Govt. of Bangladesh. So they are unproductive in CHT. They commit crimes like arson attack, murder, rape, illegal land encroachment, religious violence etc against peace-loving and simple local indigenous people. They are getting involved in arms training with Rohingiyas linked with Al-Qaeda, Taleban and other jehadi groups and fomenting terrors in CHT and its neighbourhood.

    The Govt. of Bangladesh should take immediate steps to repatriate settlers from CHT and rehabilitate them in their previous places in Bangladesh for their peace, security and development and for restoration of the Jumma indigenous people’s right to self-determination and peace and development in CHT.

    1. পুরো কমেন্ট পড়ে বুঝতে পারলাম পাহাড়ে এখনও কিছু ঘিলু ছাড়া বাদর বসবাস করে। ৭১ সালের পরে পার্বত্য এলাকা বাংলাদেশ দখল নিছিল? যতটুকু এলাকা নিয়ে পাকিস্তান ছিল ততটুকু এলাকায় অধীকার প্রতিষ্ঠা হয় যুদ্ধের পরে। নাইলে এতদিনে ভারত লাইথ্যাইয়া তোমাগো তাদের পেটের ভিত্রে নিয়ে নিত।

  38. নিখিল দাদা আপনি একাই তো দাখি গায়ের জোরে পাহাড় সরাচ্চেন। পাহাড়ের মানুষ হইয়া আপনি পাহাড় এ ঠেলবেন এইটাই তো সাভাবিক। আপনার কাছ থেকে এর বেশি কি ইই বা আশা করা যায়। আসলে খালি কলসি নাকি বাজে বেশি এই প্রবাদটার সত্তটা আপনার দীঘ্র কথাগুলো পড়ে বুঝলাম। আপনি যতই চিল্লান না কেন সত্য তো সত্য ই, এইটাকে তো আর আপনি বদলাতে পারবেন না। Asian হইয়ে আমি যদি America যাই আর ৩০০ বছর থাকার পর আমার উত্ত্রাধিকারীরা যদি দাবী করে তারা America-র আদিবাসী তাহলে ব্যাপারটা কেমন হবে বলেন তো। যাই হোক আপনার মোটা মাথাই তো আর এটা ডুকবে না তাই সহজ করে বলি ব্যাপার হবে ঠিক আপনারএ যেভাবে নিজেদেরকে আদিবাসী বলে দাবী করছেন অনেকটা সেরকম। আপনার বক্তবা অনেকটা না না…….থুক্কু, পুরোটাই এমন। যাই হোক আপনার পাতলুন ঠিক আছে তো নাকি খুলে গেল। খুলে গেলে দুক্ষিত। আমার উদ্দেশ্য আসলে কাউকে অপমান করা নয, অন্ধের হাত ধ্রে তাকে আমরা যেভাবে চলতে সাহায্য করি ঠিক একইভাবে আপনাকে সাহায্য করা।
    বিদ্রোহী,

    1. nikhil, itihas buhjiye lav nei. ekhon ar somoi nei. CHT tu ekhon Bharoter Tripura Rajjo ar Rangamati tu Agortola. Bangalider ar para jabe na. ekhon itihas ultanur somoi na. age UPDF ar JSS maramari bondho koro. tarpor, sudhu chakma politics bad dau, tarpor…kichsu lav hobe.

    2. কি আর বলবেন ভাই?? ওদের জন্য সরকার রাস্তা ঘাট বানায়া দেয় যাতে ওরাও এগিয়ে যাক সমান তালে। অথচ দেখেন কি রকম নিমক হারাম। এডিরে সহজে কিছু বুঝানো যাবে না। হাজার হোক বংশ পরম্পরায় মাল খাওয়া ব্রেন তো! একটু সময় লাগবে।
      দেশের অখন্ডতা রক্ষায় কেউই ছাড় দেবো না আমরা।

  39. Brigdier shaheber article khubi ojuktik noi. Abar sobi sotto u na. Tar bortoman obosthan thekei tini lekhechen. Tar gobesonar jonno dhonnobad. Parbattya chattagramer Chakmader doratter upor tar lekha. He, ajke Chakma ra tu Bangalider chaite onek onek shikkhito. Gyane-gune onek onek upore tara. Tader onek bangalider fondo khatye sorkar theke boro boro poste chakri nyeche. Nijerdeshei Bangalira nissho. Nimno shrenir.Eti bola chole, chakmader onek koster fosol. tader sofolotar jonno dhonnobad janai!

  40. Parbatta chottogramer rajniti te Christian dhormo somprikto kora mutei thik noi. Karon, CHT-e Christian songkha onek onek kom. 10 lakh-eru beshi Buddists. UNDP taka khauar agetu eto beshi kotha utheni, ekhon UNDP taka khaua shesh Christian nye aluchona. Boledichchi…CHT-e Christian missionary´r ba UNO-er hostokkhep ar hobena. Ar Christiander ichcha nei. Buddists rai tader Burmar sohaiotai CHT-e Buddists rastro protistha korbe. Na hoi Abar Arakane paliye jete hobe. tai Christian missionary nye bara bari bondho korun!

  41. A Dog is always called Dog. See this dog is barking from the Hill of the Chittagong Hill Tracts to make happy his ower, Shaikh Hasina. On the other, Shaikh Hasina is providing good pet food to this dog, that’s why he bites the innocent Pahari people whenever he wants to.

  42. History writes by the winner, and in Bangladesh context and CHT context, the army is the winner. Technically, many important things the officer avoided in his writing. He is trying to validate that they are right. When he talks about the Christianity in CHT, why he does not talk about the islamization? When you talk about the Adivasi in Bangladesh, what about the history of Bengali people in CHT and Bangladesh? When Bangladesh born as Bangladesh? He did not say anything. When he talks about against the christian religion, why they are so greedy going to western country for a better life! Is not that non-sense? Yes, he writes and express his opinion as because Bengali people (majority) are very communal and they will accept it. However, by laws, an government officer particularly who works in defense they cannot write article in the newspaper because their responsibility to serve the state and nation NOT for against the people. This is shame that our army officers do not care and in Bangladesh case they think they are “king of King”.

    1. Of course you are right. History is written by the victors and that’s how it’s done. We just cannot sit and watch the utter destruction of Bangalis there. Santu Larmas idea about an independent Jhum Land has made them carnivorous enough and when are protecting our motherland, is that a sin to you guys??

  43. উপজাতিদের চাদাবাজীতে উপজাতীরাই রাতে ঘুমাতে পারেনা। সেখানে বাঙ্গালিদের স্বাভাবিক জীবন জাপন কেমন হবে বুজতেই পারছেন। ১০০% গ্যরান্টি দিয়ে বলতে পারি বাংলাদেশ সেনাবাহিনিই একমাএ এসব উপজাতীদের চাদাবাজী কর্মকান্ড বন্ধ করতে সক্ষম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন