হাতি চলাচলের পথে এখন রোহিঙ্গার চলাচল, ১ মাসে ৮ জনের মৃত্যু, আহত ২০ জনেরও বেশি

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা উখিয়ার বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় অবস্থান করছে।  যেসব এলাকা দিয়ে পশু-পাখিরা চলাচল করত ওখানে এখন হাজার হাজার রোহিঙ্গার বসবাস।  আর পশু-পাখির আবাসস্থলে রোহিঙ্গাদের বসবাসের কারনে ঘটছে হাতির আক্রমনের ঘটনা।

গত একমাসে একই পরিবারের ৪ জন সহ ৮ রোহিঙ্গা মারা গেছে হাতির আক্রমনে। আর আহত হয়েছে অন্তত ২০ জনেরও বেশি।

পরিবেশবিদরা বলছেন, বন উজাড় করে হাতির আবাসস্থল নষ্ট করায় নিরাপদস্থান খোজে পাচ্ছেনা হাতি। যার ফলে তারা অস্থির হয়ে উঠেছে। আর আক্রমন করছে লোকজনের উপর। তাই দ্রুত রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নেওয়া উচিত হাতির আবাসস্থলের কাছ থেকে।

বনবিভাগের কর্মকর্তা বলছেন, হাতির বাসবাসের ১২ টি করিডোর রয়েছে। এসব করিডোরের কাছাকাছি  মানুষের বিরচণ বাড়ায় এই বিরূপ আচরন করছে হাতি।

এদিকে হাতির আক্রমনের ভয়ে অনেক রোহিঙ্গার নির্ঘুম রাত পার করছে। তারা আতঙ্কিত হয়ে আছে কখন বন্যহাতি তান্ডব চালাবে।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, যেসব বন এক সময় বন্য প্রাণীর আবাসস্থল ছিল তা এখন লোকালয়ে পরিণত হয়েছে। ওখানে অবস্থান করছে হাজার হাজার রোহিঙ্গাদের বসতি। হাতি চলাচলের রাস্তা জনমানব শূন্য হওয়ার কথা থাকলেও এসব স্থানে এখন লাখো মানুষের বিরচন। যার ফলে বিরূপ আচরন করছে বন্য হাতিরা।

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোজিনা আক্তার জানান,  বাংলাদেশে থাকা, খাওয়া ও চিকিৎসাসহ সব সুযোগ সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু ভয়ের মধ্যে থাকতে হচ্ছে হাতির আক্রমনের কারণে।

সুরুত আলম নামে আরেক রোহিঙ্গা জানান, আগের শুক্রবার রাতে তার সামনেই বন্য হাতির আক্রমনে মা-মেয়ে সহ একই পরিবারের ৪ জন মারা গেছে। সেই থেকে খুবই আতঙ্কিত তিনি।

উল্লেখ্য, গত ৬ অক্টোবর শুক্রবার দিনআগত রাত দেরটার দিকে উখিয়ার পালংখালীর বালুখালীতে রোহিঙ্গা বস্থিতের বন্য হাতির আক্রমনে মা-মেয়ে সহ একই পরিবারের ৪ জন নিহত হয়। তারা সবাই রোহিঙ্গা। এর কদিন আগেও বন্য হাতির আক্রমনে ২ জন রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়। আর এক মাসে আহত হয় অন্তত্য ২০ জন।

এ ব্যাপারে পরিবেশবিদরা বলছেন, বন্য প্রাণীর আবাসস্থল নষ্ট হওয়া এই অবস্থা। তাই তাদের আগের পরিবেশ ফিরিয়ে দিতে হবে।

এ ব্যাপারে পরিবেশকর্মী বিশ্বজিৎ সেন বাঞ্চু জানান, রোহিঙ্গাদের অবস্থার কারনে হাতির আবাসস্থল নষ্ট হয়েছে। যার ফলে তরা পাচ্ছেনা খাদ্য। তাই প্রানীদের নিরাপদ আবাসস্থল রক্ষায় রোহিঙ্গাদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া জরুরী হয়ে পড়েছে।

এ ব্যাপারে বন বিভাগ কর্মকর্তা (দক্ষিণ) আলী কবির জানান, বনবিভাগের দেয়া তথ্য মতে কক্সবাজার এবং বান্দরবানে হাতির বাসবাসের ১২ টি করিডোর রয়েছে। এসব করিডোরের কাছাকাছি  মানুষের বিরচন বাড়ায় বিরূপ আচরন করছে হাতি। হাতির বাসস্থানের কাছাকাছি চলে যাওয়ার কারনে এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন