স্বাধীনতার ৪৫ বছরে প্রথম থানচি সফর করলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার

IMG_6488
থানছি (বান্দরবান) প্রতিনিধি:

স্বাধীনতা ৪৫ বছরের মধ্যে প্রথমবার দুর্গম থানছি উপজেলায় সফর করলেন চট্টগ্রামের কোনো বিভাগীয় কমিশনার। শুক্রবার চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মোঃ রুহুল আমীন ও তার সহধর্মীনী সফরে আসলে থানছিবাসী তার সফরকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, স্বাধীনতা ৪৫ বছর মধ্যে তিনিই প্রথম বিভাগীয় কমিশনার সফর সর্বপ্রথম বলে দাবী করেন সংশ্লিষ্টরা।

পবিত্র ঈদের ২য়দিন শুক্রবার সকাল ১০ ঘটিকায় স্ব-পরিবার নিয়ে বান্দরবানে থানছি উপজেলায় সরকারিভাবে উপজেলা পরিষদে আওতায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বন ও পরিবেশ, যোগাযোগ ও আর্থ-সামাজিক স্থাপনার উপর উন্নয়ন কর্মসূচী প্রকল্প পরিদর্শন এবং উপজেলা সরকারি, বেসরকারিভাবে গড়ে ওঠা পর্যটন স্পট গুলিতে পরিদর্শন ও উপভোগ করেন তিনি।

এ সময় তিনি বলেন, থানচির সাথে জেলা সদরের ভাল সড়ক ব্যবস্থা রয়েছে। তবে অভ্যন্তরীন যোগাযোগ ব্যবস্থা ঠিক করা গেলে এই উপজেলার ব্যাপক উন্নয়ন হবে।

পরিদর্শনের পর ৩৩ ব্যাটালিয়ন কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় পর্যটন অবকাশ রিসোর্স সেন্টারে রাত্রি যাপন করেন। সন্ধ্যা ৬টায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে নৈশভোজন ও মতবিনিময় সভায় আয়োজন করেন।

তিনি থানছি উপজেলা সমগ্র বিষয় নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের নিকট থেকে প্রাকৃতিক পরিবেশ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ,পর্যটন, আর্থসামাজিক ও এলাকার নৃ-গৌষ্ঠিদের জীবন বৈচিত্র বিষয়ের খবরাখবর নেন।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি রেমাক্রী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুইশৈথুই মারমা (রনি) মতামতে বলেন, তার ইউনিয়নের মোট জনসংখ্যা ১০ হাজার, মোট ভোটার সোয়া ৪ হাজার। যোগাযোগ মাধ্যম এক মাত্র নৌপথ আর পায়ে হাঁটার রাস্তায় কারণে ঐসব অঞ্চলের খাদ্য সংকট/ অভাব এখনও রয়েছে।

আগামি নভেম্বর পর্যন্ত ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা জন্য আবেদন জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারি ত্রাণ সামগ্রী ভিজিডি, ভিজিএফ চাউল ১ মেঃটন পরিবহণে খরচ হয় ৬ হাজার ৫শত টাকা, সরকারিভাবে পরিবহন খরচ প্রদানের জন্য আবেদন জানান তিনি।

একই মতামত দেন তিন্দু ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মংপ্রুঅং মারমা। তার ইউনিয়নে মোট জনসংখ্যা ৬ হাজার। মোট ভোটার পৌনে ৩ হাজার রয়েছে । সরকারি ত্রাণ সমাগ্রী ভিজিডি, ভিজিএফ পরিবহন খরচ হয় প্রতি টনের ৩ হাজার ৫শত টাকা ।

অপরদিকে উপজেলা চেয়ারম্যান ক্যহ্লাচিং মারমা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন দাবী করেন, অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থাপনা খুবই নাজুক অবস্থায় রয়েছে। একমাত্র পায়ে হাঁটার রাস্তা আর নৌপথ অবলম্বন। তবে নৌ পথে যাতায়াতে পরিবহন খরচ সমতলের চেয়ে বেশী।

সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা হলে থানচিতে উন্নয়নের জোয়ার বয়ে যাবে বলে জানান ৩৩ ব্যাটালিয়ানের জোনাল কমাল্ডিং অফিসার লেঃ কর্নেল মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম।

মতবিনিময় কালে জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তা সহ উপস্থিত সকলের উপজেলায় বিভিন্ন পাহাড়ী গ্রাম গুলিতে অভ্যন্তরীনভাবে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা গ্রহনে জোর সুপারিশ ও দাবী করেন।

বিভাগীয় কমিশনার উপরোক্ত বিষয়ের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মতামত ও বক্তব্য লিপিবদ্ধ করেন।

তিনি স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, আমি এ সব বিষয়ে সরকারের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের অবহিত করবো এবং উদ্যোগ গ্রহনের জন্য জোর সুপারিশ করা হবে।

মতবিনিময়কালে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মোঃ রুহুল আমীন, সহ-ধর্মীনিসহ, ৩৩ ব্যাটালিয়ানে জোনাল কমাল্ডিং অফিসার মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক, উপজেলা চেয়ারম্যান ক্যহ্লাচিং মারমা, নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন, ভাইস চেয়ারম্যান চসাথোয়াই মারমা, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মটিংঞো, প্রেসক্লাবের সভাপতি মংবোওয়াংচিং মারমা (অনুপম), রেমাক্রী ইউপি চেয়ারম্যান মুইশৈথুই মারমা ( রনি) তিন্দু ইউপি চেয়ারম্যান মংপ্রুঅং মারমা প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন ।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন