সাগরে মাছের আকাল আর জলদস্যুদের হামলায় বাড়ছে শুঁটকির দাম
কুতুবদিয়া প্রতিনিধি:
সাগরে মাছ না মেলায় চলতি শীত মওসুমে কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে উৎপাদিত শুঁটকি মাছ। গত বছরের চেয়ে এবার বিভিন্ন জাতের শুঁটকি মাছের কেজিতে দাম বেড়েছে এক‘শ থেকে দু‘শ টাকা। উপজেলার প্রধান দু‘টি বাজার বড়ঘোপ ও ধুরুংবাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
ধুরুং বাজারের শুঁটকি মাছ ব্যবসায়ি মৌলানা আমীর হোছাইন বলেন, লবন ও বিষ ছাড়া স্থানীয় ঘরোয়াভাবে উৎপাদিত বিভিন্ন জাতের শুঁটকিতে দাম বেড়েছে অনেক। এক কেজি লইট্টা শুঁটকি ৪২০ টাকা,ছুরি শুঁটকি(ছোট) ৫০০ টাকা, বড়টা ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা, রইস্যা শুঁটকি ৪০০ টাকা, ফাইস্যা শুঁটকি ৪০০ টাকা, ছোট চিংড়ি শুঁটকি ৫০০ টাকা, ওলা শুঁটকি ২২০ টাকা, মাইট্টা শুঁটকি ১৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত মওসুমে এক কেজি লইট্টা শুঁটকি ছিল ৩০০ টাকা। এবার ৪২০ টাকায় বিক্রি শুরু। তেমনি ছুরি মাছেও বেড়েছে দু‘শ টাকা। সাগরে মাছের দেখা কম মেলায় দাম বেশি বলে জানান তিনি।
উপজেলার আলী আকবর ডেইল, বড়ঘোপ, কৈয়ারবিল, দক্ষিণ ধুরুং ও উত্তর ধুরুং ইউনিয়নের পূর্ব-পশ্চিম তীরে সৈকত এলাকায় শুঁটকি উৎপাদনে শুষ্ক মওসুমে বড় আকারে অন্তত ৫টি অস্থায়ী শুঁটকি মহাল গড়ে ওঠে। এ ছাড়া এসব স্থানে ছোট ছোট প্রায় শ‘খানেক শুঁটকি শুকানোর প্রক্রিয়া চলে ঘরোয়া ভাবে। বড় শুঁটকি মহালের উৎপাদিত কোটি টাকার শুঁটকি চট্টগ্রাম, ঢাকা, খুলনাসহ বড় বড় শহরে পাইকারি সরবরাহ দেয়া হয়। বিভিন্ন স্থানের পাইকারি ক্রেতা ঘুরে ঘুরে মহাল থেকে শুঁটকি ক্রয় করে থাকেন। ছোট মহালের শুঁটকিগুলো স্থানীয় বাজারে খুচরা বিক্রি করা হয়। এগুলো দ্বীপের বাসিন্দা ছাড়াও চাকুরীজীবী, পর্যটক সহ নানা শ্রেণির মানুষ স্বাদের শুঁটকি হিসেবে ক্রয় করে থাকেন।
বড়ঘোপ সৈকত এলাকার শুঁটকি উৎপাদনের ব্যবসায়ি সোনা মিয়া বলেন, সাগরে মাছ নেই বললেই চলে। যা পাওয়া যায় তাই কিছু কিছু শুঁটকি করে বিক্রি করছেন। তাই দাম একটু চড়া বলে জানান তিনি।
শুঁটকি উৎপাদনকারী বিশিষ্ট ফিশিং বোট মালিক জয়নাল আবেদীন বলেন, এখন শুঁটকির চাহিদা বেশি। সে তুলনায় সাগরে মাছ মিলছেনা। তদুপরি সাগরে যেখানে মাছ মেলে সেখানে জলদস্যুদের নিত্য দিনের হামলায় ব্যহত হচ্ছে মাছ শিকার। সাগরে ডাকাতদের তাণ্ডব, বোট ঋনের দরুণ অনেকে দেউলিয়া হয়ে পথে বসেছে।
এ ছাড়া উপজেলার বিভিন্ন ঘাটে অন্তত ১০০ ফিশিং বোট এসব কারণে সাগরে মাছ শিকারে যাচ্ছে না। যে কারণে শুঁটকি উৎপাদনও কমে যাচ্ছে বলে তিনি জানান।