শীতে পা ফাটা রোধের ঘরোয়া সমাধান

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

শীতকাল প্রায় এসেই গেছে। শীতকালে অন্যান্য অনেক সমস্যার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে পায়ের গোড়ালি ফাটা সমস্যা। নারী-পুরুষ উভয়েই এই সমস্যায় ভোগেন। অার শহরের রাস্তায় সারাদিনের ধুলো-বালিতে পায়ের উপর যায় মারাত্মক প্রেসার।

পায়ের পাতার গোড়ালির দিকের নিচের অংশ ফেটে চৌচির হয়ে যায়। শুষ্ক আবহাওয়া এবং পায়ের পাতার যে অংশে চাপ বেশী পড়ে সেই অংশ ফেটে যায়। এই পা ফাটার ব্যথা কতটুকু ভয়াবহ ও ভোগান্তিকর হতে পারে, সেটা ভুক্তভোগী ছাড়া বোঝা কঠিন। অনেকেই অনেক ধরনের ক্রিম ব্যবহার করে থাকেন এই পা ফাটা নিরাময় করতে। কিন্তু কেমিক্যাল সমৃদ্ধ ক্রিমে প্রাথমিক ভাবে কিছুটা ঠিক হলেও পরবর্তীতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াসহ নানান সমস্যা শুরু হয়।

তাই পা ফাটা রোধের সহজ কিছু উপায় জেনে নেয়া যাক-

(১) পা নিয়মিত পরিষ্কার করুন।
(২) পা ধোয়ার সময় গরম পানি ব্যবহার করুন।
(৩) খালি পায়ে বাইরে যাবেন না।
(৪) নরম জুতা বা স্যান্ডেল ব্যবহার করুন।
(৫) রাতে পায়ে মোজা পরে শোবেন যাতে পায়ে ঠাণ্ডা না লাগে।

ঘরোয়া পদ্ধতিতে পায়ের গোড়ালি ফাটা দূর করার কিছু উপায় দেওয়া হল:

১. লেবু

পা ভালো রাখতে শুধু ভেসলিন ব্যবহার না করে তার সঙ্গে যোগ করুন একটু লেবুর রস। ব্যাস সারাদিন এই পা নিয়ে আর চিন্তা করতে হবেনা।

উপকরণ ও পদ্ধতি: ৪ থেকে ৫ ফোঁটা লেবুর রস, ১ চামচ ভেসলিন ও একটু গরম পানি । এবার প্রথমে কিছুটা গরম পানি নিয়ে তাতে ১৫ থেকে ২০ মিনিট পা ডুবিয়ে রাখুন। তারপর ১ চামচ ভ্যাজলিন নিয়ে, তাতে ৫ ফোঁটা লেবুর রস দিন। পানি থেকে পা তুলে এই মিশ্রণটা গোড়ালিতে লাগান। এবং সঙ্গে সেখানে পা এর অন্যান্য জায়গায় যেখানে পা ফাটার সম্ভবনা রয়েছে সেখানে লাগান। এটা লাগিয়ে উলের মজা পরে সারারাত রাখুন। পরদিন সকালে ধুয়ে ফেলুন। এটা রোজই করতে পারেন পা নরম রাখার জন্য।

২. মধু

উপকরণ ও পদ্ধতি : ত্বককে নরম কোমল রাখতে মধুর বিকল্প নেই। শুধু কোমল নয়, পায়ের পাতাকে ফর্সা করতেও সাহায্য করবে। আধা কাপ মধু ও একটু গরম পানি মিশিয়ে নিন। তাতে পা ডুবিয়ে রাখুন ১৫ থেকে ২০ মিনিট। কিছুক্ষণ পা ডুবিয়ে রেখে পা হালকা ঘষুন। তারপর পা সরিয়ে নিন। এটিও রোজ রাতে করতে পারেন। এতে করে পা কেমন নরম কোমল থাকবে।

৩. নারকেল তেল

পায়ের যত্নে ব্যবহার করুন নারকেল তেল।

উপকরণ ও পদ্ধতি: ২ চামচ নারকেল তেল ও পাতলা সুতির মোজা। প্রথমে নারকেল তেল হালকাভাবে হাতে পায়ে মালিশ করুন। তারপর পাতলা সুতির মোজা পরে শুয়ে পড়ুন। পরদিন সকালে ধুয়ে ফেলুন। পায়ের অবস্থা খুব খারাপ হলে এটি টানা এক সপ্তাহ করুন। নারকেল তেল পায়ের মরা কোষ সরিয়ে পা’কে আর্দ্র করে তোলে।

৪. অলিভ তেল

পা ফাটা থেকে মুক্ত থাকতে আরেকটি খুব উপকারি উপাদান হল অলিভ তেল।

উপকরণ ও পদ্ধতি : ১ চামচ অলিভ তেল পা ফাটার জায়গাসহ গোটা পায়ে হালকা ম্যাসাজ করুন। তারপর পায়ে পাতলা সুতির মোজা পরে নিন। এক ঘণ্টা পর পা ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে তিন থেকে চারদিন করুন।

৫. গোলাপ জল ও গ্লিসারিন

গ্লিসারিন আমরা জানি স্কিনকে নরম কোমল রাখে। আর গোলাপজলে আছে ভিটামিন এ, বি-৩, ডি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা পায়ের ত্বকে পুষ্টি যোগায়। এবং পায়ের ত্বককে হেলদি ও গ্লোয়িং করে তোলে।

উপকরণ ও পদ্ধতি : ২ চামচ গোলাপজল ও ২ চামচ গ্লিসারিন, এই দুটো উপকরণের মিশ্রণ তৈরি করুন। রাতে শুতে যাবার আগে হালকা হাতে একটু ম্যাসাজ করে নিন। তারপর শুয়ে পড়ুন। সকালে স্নানের সঙ্গেই পা ধুয়ে যাবে। সপ্তাহে তিনদিন করুন।

পা ফাটা রোধে এক এক রাতে এক একটা উপকরণ ব্যবহার করুন। মাঝে মাঝে একদিন ফাঁক দেবেন।

 

তথ্য সংগৃহিত

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন