লোকবল সংকটে অরক্ষিত কাপ্তাই কর্ণফুলী বন রেঞ্জ: বাড়ছে বনদস্যুদের হামলা

karnapfuli-copy

কাপ্তাই প্রতিনিধি:

পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের আওতাধীন কাপ্তাই কর্ণফুলী রেঞ্জের বিভিন্ন বন বিট লোকবল সংকটের ফলে অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। সংকটের সুযোগ নিয়ে চলতি মাসে বিভিন্ন বিটে বনদস্যুরা হামলা চালিয়ে বনরক্ষীদের আহত করারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। দক্ষিণ বন বিভাগের বিশাল বনসম্পদ অন্যান্য স্থানের তুলনায়  কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী সদর রেঞ্জসহ বিভিন্ন বিটে রক্ষীত রয়েছে। এ বিশাল সম্পদ রক্ষা করার জন্য নেই প্রয়োজনীয় জনবল। জনবল সংকটের ফলে বনদস্যুরা সুযোগ বুঝে বনরক্ষীদের ওপর একের পর এক হামলা চালাচ্ছে। বনদস্যু ছাড়াও দূর্গম পাহাড়ে এবং কর্ণফুলী নদীর মধ্যে দিয়ে পাহাড়া দিতে গিয়ে বনরক্ষীরা বিভিন্ন সময় বনের হিংস্র জীব-জন্তুর হামলারও স্বীকার হতে হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিটি বিটে রাত কিংবা দিনে পালাক্রমে পাহাড়া দিতে গিয়ে ৬-৮ জন করে বনরক্ষী প্রয়োজন। অথচ সেখানে  রয়েছে বিট কর্মকতাসহ মাত্র একজন কিবা দু’জন। ২-১ জন দিয়ে বন রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। বন পাহাড়া দিতে গিয়ে বেশীরভাগ বনরক্ষী ম্যালেরিয়া, টাইফয়েডসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে বিছানায় কাঁতরাতে হচ্ছে। এ অল্পসংখ্যাক লোক দিয়ে বনরক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। যার ফলে অরক্ষীত হয়ে পড়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের এ বিশাল সম্পদ।

সম্প্রতি বর্তমান বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু কর্ণফুলী রেঞ্জের খালের মুখবন বিট  এলাকায় এক সফরে এসে বনজ সম্পদ এবং সবুজের সমারোহ দেখে মুগ্ধ হয়ে ছিলেন বলেও জানা যায়। শুধু মুগ্ধই নন, পরিদর্শন খাতায় এর ভূয়সী প্রসংসা করেন তিনি। অথচ আজ সে বনজ সম্পদ লোকবল সংকটের ফলে ধীরে ধীরে বিলিন হতে চলছে।

এদিকে কর্ণফুলী সদর বিট এলাকার ১২ শত একরের  বিশাল বন পাহাড়া দিতে যেখানে লোকবল প্রয়োজন ৮-১০ জন, সেখানে দেখা যায় আছে  মাত্র দুজন । আর এসব কারনেই কর্তৃপক্ষ লোকবল নিয়োগ না দেয়ার ফলে বনদস্যুদের আক্রমন দিনদিন উৎপাত বেড়েই চলছে।

অভিযোগ পাওয়া যায়, কর্ণফুলী রেঞ্জের ফ্রিংখ্রিং বনবিট ও খালের মুখ  বিট পাহাড়া দিতে গিয়ে বনদস্যুদের অস্ত্রের মুখে কর্তব্যরত বনরক্ষীরা হামলার স্বীকার হয় বারবার।  গুরুত্বরভাবে আহত হয়ে  অদ্যাবধি চিৎকিসার পাশাপাশি বনজ সম্পদ রক্ষা করে চলছেন আহতদের অনেকেই।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কর্ণফুলী সদর বিট কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ জনবল সংকটের বিষয়টি অকপটে স্বীকার করে বলেন, এমতাবস্থায় আল্লাহ ছাড়া আমাদের রক্ষা করার আর কেউ নেই।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন