রোহিঙ্গাদের বিপন্নতায় ভেঙে পড়েছেন সু চি

 

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

রোহিঙ্গাদের বিপন্নতায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি ‘ভেঙে পড়েছেন’ বলে খবর প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স। সু চি’র একজন উপদেষ্টাকে উদ্ধৃত করে তারা এই খবর জানিয়েছে। তবে সেই উপদেষ্টা নিজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছেন। 

বৃহস্পতিবার রাতে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে সু চি বলেন, রাখাইন থেকে পালিয়ে যাওয়া ‘মানুষদের’ প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এ ভাষণেও সু চি বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের রোহিঙ্গা বলে আখ্যায়িত করেননি। এ জনগোষ্ঠীর মানুষদের ওপর মিয়ানমার সরকার ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞ’ চালাচ্ছে বলে জাতিসংঘ যে অভিযোগ করেছে সে বিষয়েও তিনি কিছু উল্লেখ করেননি। এমনকি রাখাইনে সেনাবাহিনীর ক্লিয়ারেন্স অপারেশনে খুন, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের ব্যাপারেও তিনি কোনও কথা বলেননি।

তবে এর একদিনের মাথায় শুক্রবার রয়টার্সকে সু চির ওই উপদেষ্টা জানিয়েছেন, এই সংকট উত্তোরণে রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা যথেষ্ট পরিামাণে প্রত্যয়ী। তবে তিনি চান না পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হোক। সতর্কতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে চান। তিনি বলেছেন, ‘পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে, তা দেখে তিনি ভেঙে পড়েছেন। তিনি এ নিয়ে ভীষণ উদ্বিগ্ন। আমি জানি, তার এই উদ্বেগের কথা প্রকাশ্যে আসেনি। তবে আমি জানি, তিনি নিশ্চয় পরিস্থিতির উত্তোরণ ঘটাবেন।’

বৃহস্পতিবারের ভাষণে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে রাখাইনের প্রধান তিন করণীয়’র কথা বলেন সু চি। এর প্রথমটি হলো, বাংলাদেশে পালিয়ে আসা মানুষদের প্রত্যাবাসন ও কার্যকরভাবে তাদের মানবিক সহায়তা দেওয়া। দ্বিতীয়ত, তাদের পুনঃস্থানান্তর ও পুনর্বাসন এবং সবশেষে অঞ্চলটির উন্নয়ন ও স্থিতিশীল শান্তি প্রতিষ্ঠা করা।’

এর আগে ২৫ আগস্ট থেকে রাখাইনে সেনা অভিযানের মুখে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের পালিয়ে আসার বিষয়ে দীর্ঘদিন নীরব থাকার পর ১৯ সেপ্টেম্বর ভাষণ দিয়েছিলেন সু চি। ওই ভাষণে ৩০টি পুলিশ চেকপোস্ট আর একটি রেজিমেন্টাল হেড কোয়ার্টারে সন্ত্রাসী হামলার জন্য রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি এবং এর সমর্থকদের দায়ী করে আইনের আওতায় নেওয়ার হুমকি দেন। সেই বক্তব্যের সমালোচনায় অ্যামনেস্টি বলেছিল, বালুতে মুখ গুঁজে আছেন তিনি। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তার বিরুদ্ধে এনেছিল সেনাবাহিনীর দমনপীড়ন আড়ালের অভিযোগ।

১৯ সেপ্টেম্বর দেওয়া ভাষণে সু চি দাবি করেছিলেন, রাখাইনে সেনা অভিযান শেষ হয়ে গেছে। সহিংসতায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও রোহিঙ্গাদের নিয়ে কিছু বলেননি। শুধু জানিয়েছিলেন, কেন বাংলাদেশে মুসলমানরা পালিয়ে যাচ্ছে তা অনুসন্ধান করতে হবে।

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন