রামুতে বিকেএসপি’র অধিগ্রহণকৃত জমির বাস্তব মূল্যের তিনগুন দাবি

ramu pic BKSP 05.05

রামু প্রতিনিধি:

রামুতে বিকেএসপি’র অধিগ্রহণকৃত জমির বাস্তব মূল্য দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন জমির মালিকরা। ৪ মে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক আলী হোসেনের মাধ্যমে এ আবেদন জানানো হয়।

আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দেশের বিকেএসপি’র দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য কক্সবাজারের রামু উপজেলা জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের নোনাছড়ি মৌজায় প্রায় ২৯ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। ওই মৌজায় আবেদনকারী কৃষকদের তিন ফসলী জমি রয়েছে। বর্তমানে এখানকার ৪০ শতক (১কানি) জমির মৌজা ভিত্তিক মূল্য ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা হলেও বাস্তবে বর্তমান বিক্রয় মূল্য ২০ লাখ টাকার বেশি। যার প্রমাণও আবেদনে সংযুক্ত করা হয়েছে।

আবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, রামুতে বিকেএসপির ক্যাম্পাসের জমি অধিগ্রহণ করায় এলাকাবাসি আনন্দিত ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। এ পদক্ষেপ এলাকার উন্নয়নে অভূতপূর্ব সাফল্য বয়ে আনবে। নেত্রীর নিকট এলাকাবাসীর আবেদন, শেষ সম্বল জমিটুকু অধিগ্রহণ করায় অন্য একটি আয়ের উৎস তাদের সৃষ্টি করতে হবে। সেক্ষেত্রে বাস্তব পেক্ষাপট বিবেচনা করে অধিগ্রহণকৃত জমির মূল্য ক্ষতিপূরণ বাবদ বাস্তব মূল্যের তিনগুন পরিশোধের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সদয় নির্দেশনা কামনা করেছেন অধিগ্রহণের আওতাধিন সাত শতাধিক ভুক্তভোগী মানুষ।

সম্প্রতি বিকেএসপির জন্য অধিগ্রহণের প্রক্রিয়াধিন এ জমি পরিমাপে বাধা দিয়েছেন জমির মালিকরা।  ২০ এপ্রিল সকাল ১১টায় রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পশ্চিম পাশে অধিগ্রহণকৃত জমি পরিমাপ করতে যান, রামু উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নিকারুজ্জামান সহ বিকেএসপির প্রকৌশলী, জেলা প্রশাসন, ভূমি অফিস ও রামু থানার কর্মকর্তারা।

এ সময় পরিমাপ কাজে জমির মালিকসহ শতাধিক জনতা বাধা দিলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। তাদের দাবি বিকেএসপির অধিগ্রহণের জমির ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না। জমির মালিকরা মৌজা দরের তিনগুন মূল্য দাবি জানান। জমির মালিকদের দাবি যৌক্তিক বলে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নিকারুজ্জামান ও জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল শামশুদ্দিন আহমেদ প্রিন্স। এ নিয়ে এখনো উত্তেজনা বিরাজ করছে।

রামু উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নিকারুজ্জামান বলেন, রামুর জোয়ারিয়ানালায় প্রায় ২৯ একর জমিতে ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিকেএসপির ক্যাম্পাস নির্মাণ করা হবে। জমির ন্যায্য মূল্য পাওয়া জনগণের যৌত্তিক দাবি। বাস্তব মূল্যের তিনগুন মূল্য ও পাশাপাশি পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় জনগণ। তাদের দাবি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে জানানো হবে।

অধিগ্রহণকৃত জমির মালিক গোলাম কবির সওদাগর, শফিকুর রহমান, হালিম রায়হান, ছৈয়দ মিয়া জানান, রামুর জোয়ারিয়ানালায় বিকেএসপির ক্যাম্পাস নির্মাণ হচ্ছে, এতে আমরা আনন্দিত। কিন্তু অধিগ্রহণকৃত জমির ন্যায্য মূল্য আমরা পাচ্ছিনা। নোনাছড়ি মৌজার এসব জমির প্রতিএকর মৌজা মূল্য ২০ লাখ টাকা। সম্প্রতি জমির মালিকদের দেয়া ৭ ধারার নোটিশ মতে ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে মৌজা মূল্যের দেড়গুন, যা পাশ্ববর্তী মৌজা উত্তর মিঠাছড়ি ও জোয়ারিয়ানালা মৌজা মূল্যের অর্ধেক। তারা প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী মৌজা মূল্যের তিনগুন টাকা দাবি করেন। একই সাথে অনেক মালিক জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়বে। সেই সব জমির মালিকদের পূর্ণবাসনেরও দাবি করেন তারা।

একই কথা বলেন অধিগ্রহণকৃত জমির মালিক রফিক আহমদ, আবদু শুক্কুর, জাবেরুল কালাম আজাদ সহ অনেকে। তাদের দাবি, সরকারিভাবে যে মূল্য দেয়া হচ্ছে, তা অধিগ্রহণের আওতায় পড়া শত শত জমি মালিকদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। ৩ ফসলা এসব জমির ন্যায্য মূল্য চায় তারা। এসব জমি অধিগ্রহণের পর তাদের মতো অনেক কৃষক পরিবারকে জীবিকার প্রধান উৎস হারাতে হবে।

জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল শামশুদ্দিন আহমেদ প্রিন্স বলেন, দেশের দ্বিতীয় বিকেএসপি ক্যাম্পাস জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নে হচ্ছে, এটা আমাদের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’কে জোয়ারিয়ানালাবাসীর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। একই সাথে স্থানীয় জনগণ ও জমির মালিকদের দাবি বিবেচনার আবেদন জানাচ্ছি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন