রামগড় সীমান্তে বাংলাদেশ ও ভারতের মানুষের মিলন মেলা

Ramgarh  05.4

রামগড় প্রতিনিধি:

ঐতিহ্যবাহী বারুনী স্নান উৎসবকে ঘিরে মঙ্গলবার খাগড়াছড়ির রামগড় ও ভারতের ত্রিপুরার সাবরুম সীমান্তের ফেনী নদী পরিণত হয় বাংলাদেশ ও ভারত দু’দেশের লাখ মানুষের মিলন মেলায়। উভয় দেশের অগণিত দর্শনার্থীর সমাগমে দিনব্যাপী মুখরিত থাকে ফেনী নদীর এলাকা।

বৃটিশ আমল থেকেই চৈত্রের মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশি তিথিতে প্রতিবছর ফেনী নদীতে বারুনী স্নান মিলিত হন দুই দেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষ। তারা পূর্ব পুরুষদের আত্মার শান্তির জন্য তর্পন করে এখানে।

রামগড় ও সাবরুম অংশে নদীর দুই তীরে দুই দেশের পুরহিতরা সকালেই বসেন পূজা অর্চণার জন্য। পূর্ব পুরুষদের আত্মার শান্তি কামনা ছাড়াও নিজের পুণ্যলাভ ও সকল প্রকার পাপ, পংকিলতা থেকে মুক্ত হওয়ার উদ্দেশ্যে ফেনী নদীর বারুনী স্নান ছুটে আসেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। সকাল ৭টা থেকেই শুরু হয় বারুনী স্নান উৎসব। স্নান কিংবা পুজা আর্চনা ছাড়াও দুই দেশে অবস্থানকারি আত্মীয়স্বজনদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করার জন্যও অনেকে দূর দূরান্ত থেকে এখানে ছুটে আসেন।

ঐতিহ্যবাহী এ বারুনী মেলা উপলক্ষ্যে বহুকাল থেকেই এদিনে দুদেশের সীমান্ত অঘোষিতভাবে কিছু সময়ের জন্য উন্মুক্ত থাকার সুবাদে এপার বাংলার মানুষ ছুটে যায় ওপারের সাবরুম মহকুমা শহরে, আবার ওপারের লোক এসে ঘুরে যান রামগড়। এ মেলাকে ঘিরে দু‘দেশের মানুষের মধ্যে তৈরী হয় ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতির মেল বন্ধন।

বারুনী মেলায় শুধু বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণ নয়, ত্রিপুরা, মারমা, চাকমা, মুসলিম সকল সম্প্রদায়ের মানুষের সমাগম ঘটে এখানে। বারুণী স্নান একটি ধর্মীয় উৎসব হলেও দু‘দেশের বিভিন্ন জাতি, সম্প্রদায় ও ধর্মের মানুষের সমাগমে এটি সার্বজনীন আনন্দ মেলার ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন