রাজাকার ত্রিদিব রায়ের নামের সকল স্থাপনা অপসারণের দাবী জানালো পার্বত্য গণপরিষদ

press conf.1........

রাঙামাটি প্রতিনিধি:

পার্বত্যাঞ্চলের জনগণের কল্যাণের জন্য ২০ দফা বাস্তবায়ন দাবিতে সাংবাদিক সম্মেলন করেছে পার্বত্য গণপরিষদ ও এর সহযোগী ছাত্র সংগঠন। শনিবার দুপুর ১২টায় ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউট সম্মেলন কক্ষে এ সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এসময় সাংবাদিক সম্মেলনে পার্বত্য গণপরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট পারভেজ তালুকদার, জেলা শ্রমিক পরিষদ সভাপতি মো রাসেল, পার্বত্য গণপরিষদ  জেলা সহ-সভাপতি মাওলানা সামসুল আলম এবং নাগরিক পরিষদের সভানেত্রী বেগম নুরজাহান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

দু’সংগঠনের ২০ দফা সমূহ, ১. রাজাকার চাকমারাজা ত্রিদিব রায়ের নামে করা সকল স্থাপনার নাম পরিবর্তন করতে হবে। যেমন ত্রিদিবনগর, বলপিয়া আদম ত্রিদিবনগর সর: প্রা: বিদ্যালয়। ত্রিদিব নগরের নাম পরিবর্তন করে পার্বত্য চট্টগ্রামে শহীদ লে. মুশফিক বীরউত্তম এর নামে শহীদ লে. মুশফিক বীরউত্তম নগর করা হোক।

২. রাজাকার চাকমারাজ ত্রিদিব রায়ের সকল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে সরকারী নিয়ন্ত্রণ নিতে হবে, ৩. পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মোহসিনা ইয়াছমিন স্বাক্ষরিত ০৩/১০/২০০১ তারিখের আদেশমূলে ভূমি বন্দোবস্তী প্রদান কার্যক্রম  বন্ধের আদেশ প্রত্যাহার করে পার্বত্য ভূমি বন্দোবস্তী চালু করতে হবে। ৪. পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ২৪জুলাই ২০১১ সালের আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে আদিবাসী শব্দের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রচার প্রচারনা ও আদিবাসী শব্দ ব্যবহার বন্ধে তিন পার্বত্য জেলা প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে হবে। ৫. দেশের সকল প্রচলিত আইন পার্বত্য চট্টগ্রামে চালু করতে হবে। ৬. হিলট্রাক্টস ম্যানুয়েল ১৯০০ আইন বাতিল করে প্রণীত পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন- ১৯৮৯ প্রচলনের গেজেট প্রকাশ করতে হবে। ৭.  দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্রছাত্রীদের জন্য কোটার ব্যবস্থা চালু করতে হবে। ৮. পার্বত্য বাঙ্গালীদের জনসংখ্যা অনুপাতে তিন পার্বত্য জেলায় সকল নিয়োগে নিয়োগ দিতে হবে। ৯. পার্বত্য বাঙ্গালীদের সকল ট্যাক্স ভ্যাট মওকুপ করতে হবে। ১০. পার্বত্য বাঙ্গালীদের  বন্দোবস্তীকৃত ভূমির দখল প্রদানসহ সকল অধিকার তাদের ফিরিয়ে দিতে হবে। ১১. পার্বত্য বাঙ্গালীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে যেমন বাঘাইহাট হত্যা মামলা। ১২. পার্বত্য চট্টগ্রামে সংসদীয় আসন ৭টিতে বৃদ্ধি করতে হবে। ১৩.উন্নয়ন বোর্ডে বাঙ্গালী চেয়ারম্যান নিয়োগ দিতে হবে।  ১৪. ভূমি কমিশনে বাঙ্গালী ৩জন প্রতিনিধি নিয়োগ দিতে হবে। ১৫. উপজাতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্তৃক সংঘঠিত পাকুয়াখালী, ভূষণছড়াসহ সকল মানবতাবিরোধী হত্যাকাণ্ড ও অপকর্মের বিচার করতে হবে। ১৬. সন্ত্রাস চাঁদাবাজি বন্ধ করে তিন পার্বত্য জেলায় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে অভিযান চালাতে হবে। ১৭. তিন পার্বত্য জেলার সীমান্তে কাঁটা তারের বেড়া দিয়ে সীমান্ত ঘেঁষে সীমান্ত সড়ক নির্মাণ করতে হবে। ১৮. দ্রুত রাঙ্গামাটি প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাস নির্মাণ করতে হবে এবং ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবজেক্ট সংখ্যা বাড়াতে হবে। ১৯. পার্বত্য চট্টগ্রামকে পর্যটন শিল্প এলাকা ঘোষণা করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে সকল উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের যে কোন স্থানে পর্যটকদের অবাধ বিচরনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ২০. রাঙ্গামাটি প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ আন্দোলনে উপজাতীয় সন্ত্রাসী কর্তৃক নিহত পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র ঐক্য পরিষদের নেতা নানিয়ারচরের শহীদ মনির হত্যার বিচার করতে হবে। শহীদ মনিরের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। শহীদ মনিরের নামে রাঙ্গামাটি প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হলের নামকরণ করতে হবে।

এসময় সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তারা বলেন, বিশ দফা দাবি আগামী দুই মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন না করলে পার্বত্য গণপরিষদ ও পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র ঐক্য পরিষদ পার্বত্য জনগণকে সাথে নিয়ে হরতাল অবরোধসহ কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন