রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে আমরণ অনশনের ডাক সাধারণ শিক্ষার্থীদের
রাঙামাটি প্রতিনিধি:
রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের ছাত্র শামছুজ্জামান বাপ্পীকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে আমরণ অনশনে নেমেছে রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার বিকেলে তবলছড়ি শাহ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের অস্থায়ী হল থেকে পুলিশ তাকে বের করে দিলে শিক্ষার্থীরা এ অনশনের ডাক দেয়।
১ম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর থেকে ক্লাসের জন্য আমরা শামছুজ্জামান বাপ্পীর নেতৃত্বে রাঙামাটি শহরে বারংবার আন্দোলন শুরু করি। প্রশাসন আমাদের আন্দোলনের মুখে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে ক্লাস করার ব্যবস্থা গ্রহণ করে। তার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে আন্দোলন শুরু করলে আমাদের আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করতে এবং আমাদেরকে দমিয়ে রাখতে রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এ রকম অনৈতিক সিদ্ধান্তে উপনীত হয়।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, শামছুজ্জামান বাপ্পী ভুল না করলেও আমরা প্রশাসনের কথা স্বীকার করে বাপ্পীর হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করে ভাইস চ্যান্সেলরকে আবেদন করলেও কোন সদউত্তর পাওয়া যায়নি।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, শামছুজ্জামান বাপ্পীর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে অভিযোগ এনেছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমরা মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান বিশ্ববিদ্যালয়ে আসলে তার আগমন উপলক্ষে ছাত্রছাত্রীদের পক্ষ থেকে আলাদাভাবে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর প্রস্তুতি নিয়ে ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রভাষক ও চেয়ারম্যান (ইন-চার্জ) সুচনা আখতার’র সাথে ঔদ্ধত্যপূর্ণও শিষ্টাচার বহির্ভুত আচরণের যে অভিযোগ এনেছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তারা মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যানের সাথে আমাদের সাক্ষাত করতে না দেয়াটাই ছিলো তাদের উদ্দেশ্যে।
তারা আমাদের একতায় ইর্শ্বান্বিত হয়ে আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রথম ধাপ হিসাবে শামছুজ্জামান বাপ্পীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাকে হলে পুনর্বহাল না করলে আমরা সকলেই আমরণ অনশনে যেতে বাধ্য থাকবো বলে হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা।
এ ব্যাপারে শামছুজ্জামান বাপ্পী বলেন, আমার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে অভিযোগ এনেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমার নেতৃত্বে ছাত্র ছাত্রীরা আন্দোলন করছে বলেই আন্দোলনকে ধামাচাপা দিতে তারা আমাকে বহিষ্কার করেছে।
তিনি বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে কেক কাটতে চাইলে আমাদের পালন করতে দেয়া হয়নি। আমরা স্বাধীনতা দিবসের শহীদ মিনারে ফুল দেয়ার প্রস্তাব করলে আমাদের ফুল দিতে দেয়া হয়নি। আমরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন দিবসে অনুষ্ঠান করতে চাইলে আমাদেরকে অনুমতি দেয়া হয় না। আমরা এ সকল কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করেছি বলে আজ আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
তিনি এ বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানান। না হলে আমরণ অনশনের ঘোষণা দেন। এছাড়া তার সাথে সাথে হলের অন্যরাও এ অনশনে যোগ দেবেন বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
সজীব ত্রিপুরা প্রক্টোরিয়াল কমিটির সদস্য, ভারপ্রাপ্ত হাউজ টিচার্স’র কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি আমাদের ইন্টানাল ব্যাপার। শামছুজ্জামান বাপ্পীর বিরুদ্ধে এর আগেও বেশ কয়েকবার নোটিশ দেয়া হয়েছে। তার মা বাবারাও জানে এ বিষয়টি। তিনি বলেন, সে বিভিন্ন শিক্ষকদের সাথে অসৌজন্য মূলক আচারণ করেছে। তারা যে অনশন করছে আমরা কেউ কিছু জানি না। আমরা প্রথম আপনার কাছেই শুনেছি। তার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে তার কাছে সমস্ত নোটিশ আছে তার কাছ থেকে আপনারা সংগ্রহ করেন।