রাঙামাটির উলুছড়িমুখ বনবিহারে কঠিন চীবর দানোৎসব সম্পন্ন
স্টাফ রিপোর্টার:
বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও উৎসবমুখর পরিবেশে রাঙামাটি সদর উপজেলার বন্দুকভাঙ্গা ইউনিয়নের উলুছড়িমুখ বন বিহারে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বড় ধর্মীয় উৎসব দানোত্তম কঠিন চীবর দানোৎসব সম্পন্ন হয়েছে।
শনিবার ধর্মীয় ভাবগম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে শুরু দু’দিনব্যাপী সার্বজনিন এ ধর্মীয় উৎসব রোববার শেষ হয়। দু’দিনব্যাপী উৎসবের প্রথম দিন চরকায় সুতা কেটে বেইন বোনা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ২৪ ঘন্টার মধ্যে তৈরি করা চীবরটির (বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ব্যবহার্য গেরুয়া কাপড়) দানকার্য সম্পাদন করতে দ্বিতীয় দিন উৎসর্গ করা হয়।
এছাড়া দু’দিনব্যাপী উৎসবে ব্যাপক কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মসূচির মধ্যে ভিক্ষুসংঘের প্রাত:রাশ, বুদ্ধপূজা, পঞ্চশীল গ্রহণ, সংঘদান, অষ্টপরিস্কার দান, সূত্রপাঠ, ধর্মীয় দেশনা, প্রদীপ প্রজ্জ্বলন উল্লেখযোগ্য। উৎসবে হাজার হাজার পুণ্যার্থী সমবেত হন।
অন্যদিকে রোববার শুরু হওয়া রাঙামাটি সদরের বন্দুকভাঙ্গার যমচুগ বনাশ্রম ভাবনা কেন্দ্রে দু’দিনব্যাপী কঠিন চীবর সোমবার শেষ হয়েছে।
রোববার দুপুরে অনুষ্ঠানের মূলপর্বে ধর্মীয় দেশনা দেন পরিনির্বাণপ্রাপ্ত বৌদ্ধ আর্যপুরুষ মহাসাধক শ্রীমৎ সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভান্তের উত্তরসূরী ও প্রধান শিয্য বৌদ্ধ আর্যপুরুষ শ্রীমৎ নন্দপাল মহাস্থবির ও বুদ্ধবংশ মহাস্থবির। এছাড়া শুভবর্ধন মহাস্থবির, দেবধাম্মা মহাস্থবির, ধ্যানমিত্র স্থবির ও বিহারাধ্যক্ষ ধর্ম রক্ষিত স্থবিরসহ অন্য বৌদ্ধ ভিক্ষুরা উপস্থিত ছিলেন।
বৌদ্ধ আর্যপুরুষ শ্রীমৎ নন্দপাল মহাস্থবির বলেন, জ্ঞান ছাড়া পুণ্যকর্ম সম্পাদন সম্ভব নয়। পুণ্যকর্ম দ্বারা মানুষের সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি লাভ হয়। অজ্ঞানতা দ্বারা মানুষ অকুশল কর্মে লিপ্ত হয়। অকুশল কর্ম দ্বারা মানুষের দুঃখ উৎপত্তি ঘটে। তিনি সব পাপকর্ম থেকে বিরত থেকে সব সময় কুশল কর্ম সম্পাদনের পরামর্শ দেন।
ধর্মীয় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, রাঙামাটি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান অরুণ কান্তি চাকমা, ভাইস চেয়ারম্যান পলাশ কুসুম চাকমা, রীতা চাকমা, বন্দুকভাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বরুণ কান্তি চাকমাসহ অন্যরা। পুণ্যার্থীদের পক্ষে চীবর উৎসর্গ করেন উলুছড়িমুখ বন বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি শ্রীহরি চাকমা এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক চিত্র রঞ্জন চাকমা।