রাঙামাটিতে জমজমাট মৌসুমী ফলের বাজার

নিজস্ব প্রতিনিধি, রাঙামাটি:

রাঙামাটিতে মৌসুমী ফলের বাজার জমে উঠেছে। বাজারে পাওয়া যাচ্ছে হরেক রকমের ফল। আম, আনারস, জাম, কাঠাল, লিচু, কলা, পেয়ারা, লটকন, পাকা পেঁপে, বাঙ্গি প্রভৃতি। এবারের ফলন বেশি হওয়ায় স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে জেলার বাইরে রপ্তানী করা হচ্ছে।

শহরের ফুটপাত দখল করে মৌসুমী ফল বিক্রি করার জন্য পসরা সাজিয়ে বসে আছেন বিক্রেতারা। মৌসুম শুরু হওয়ায় অনেক মানুষ অন্য পেশার পাশাপাশি মৌসুমী ফল ব্যবসার দিকে ঝুঁকে পড়ছেন। চাহিদার পাশাপাশি লাভ হওয়ায় বিক্রেতা, পাইকারী ব্যবসায়ী এবং স্থানীয় কৃষকরাও বেজায় খুশি।

সরেজমিনে শহরের কয়েকটি ফলের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ভরা মৌসুমে কম দামে হাতের নাগালে ভালমানের মৌসুমী ফল পাওয়া যাচ্ছে। লিচু প্রতিশত ২৫০ টাকা, আম (আ¤্রপালি) কেজি ৩৪-৪০ টাকা, কলা (বাংলা কলা) ডজন প্রতি ১৩০-১৫০টাকা, কাঁঠাল (দেশি) প্রতি পিস বড় ২০০-২৫০ টাকা এবং ছোট ১০০-১৫০টাকা এবং আনারস প্রতি জোড়া বড় ২০-৩০টাকা এবং ছোট ২০-১০ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে।

এবারের মৌসুমে চড়া দামে ফল বিক্রি হলেও সঠিক সময়ে বাজারে ফল আসায় দাম কমে এসেছে।

শহরের বনরূপা বাজারে ফল কিনতে আসা নাজিম উদ্দীন জানান, যে কোন ফল কেনার আগে যাচাই-বাছাই করার চেষ্টা করি তাতে কোন রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রণ করা হয়েছে কিনা। নিশ্চিত হলে ফল ক্রয় করি। ভাল ফল দাম দিয়ে নিলেও ভাল।

পাশ্ববর্তী আরেক ক্রেতা শারমিন জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর ফলের দাম একটু বেশি। কিন্তু কি করার, ফলের মৌসুম চলছে তাই কিনতে তো হবে।

ফল বিক্রেতা কাসেম জানান, মৌসুমে দেশি ফলের চাহিদা একটু বেশি থাকে। দেশি ফলের দাম হাতের নাগালে রয়েছে এবং বিকিকিনি ভাল চলছে বলে এ ব্যবসায়ী জানান।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাঙামাটি শাখা সূত্রে জানা গেছে, আম উৎপাদন হয়েছে- গত ২০১৬ সালে ৩৩৫০ হেক্টর জমিতে ৩০ হাজার ১৮৪ মে.টন এবং ২০১৭ সালে ৩৩৭০ হেক্টর জমিতে ৩৩ হাজার ৩৭০ মে.টন।

লিচু উৎপাদন হয়েছে- ২০১৬ সালে ১৭৩০ হেক্টর জমিতে ১১হাজার মে.টন এবং ২০১৭ সালে ১৭৪২ হেক্টর জমিতে ১৩ হাজার ২৮৬ মে.টন।

আনারস উৎপাদন হয়েছে-২০১৬ সালে ১৯৯২ হেক্টর জমিতে ৫৪ হাজার ২০৮ মে.টন এবং ২০১৭ সালে ১৭৯৭ হেক্টর জমিতে ৫০৩৫০ মে.টন।

কাঁঠাল উৎপাদন হয়েছে- ২০১৬ সালে ৩৮৭৬ হেক্টর জমিতে এক লাখ এক হাজার ৩৭০ মে.টন এবং ২০১৭ সালে ৪১৮২ হেক্টর জমিতে এক লাখ পাঁচ হাজার ৫৪৮০ মে.টন।

তরমুজ উৎপাদন হয়েছে- ২০১৬ সালে ২৬৫ হেক্টর জমিতে ১০ হাজার ৮৬৫ মে.টন এবং ২০১৭ সালে ১৯৯ হেক্টর জমিতে ৭ হাজার৬৬০ মে.টন।

কলা উৎপাদন হয়েছে- ২০১৬ সালে ১৪০৫০ হেক্টর জমিতে ৩ লাখ২৬ হাজার ৫৫ মে.টন এবং ২০১৭ সালে ১৪০৭০ হেক্টর জমিতে ৩ লাখ২৭ হাজার ১৩০ মে.টন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাঙামাটি শাখার উপ-পরিচালক পবন কুমার চাকমা বলেন, জেলায় আম, কাঁঠাল, লিচু কলা, আনারস এবং তরমুজের ব্যাপক ফলন হয়েছে।

এ কৃষি কর্মকর্তা আরও বলেন, কৃষকরা যদি বৃষ্টি হওয়ার পর বালাইনাশক কিটনাশক ব্যবহার করেন তাহলে ফলের অনেক ক্ষতি কম হবে। কিন্তু কৃষকরা এ ব্যাপারে সচেতন না হওয়ায় ফলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন