রমজানেও তীব্র যানজট, নাকাল জনজীবন


কক্সবাজার প্রতিনিধি:
কক্সবাজার শহরসহ জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে তীব্র যানজটে নাকাল হয়ে পড়েছে জনজীবন। ১০ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে সময় গুণতে হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট। একদিকে রমজান অন্যদিকে তীব্র যানজটে চরম দুর্ভোগের সম্মুুখীন হচ্ছে সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে কক্সবাজার শহর ও বৃহত্তম বাণিজ্যিক এলাকা ঈদগাঁও ও টেকনাফ বাজার যানজটে কাহিল।

প্রতিদিন বাজারের প্রধান সড়ক থেকে অলিগলি পর্যন্ত সকাল-সন্ধ্যা যানজট, টমটম, ট্র্যাক জট ও রিক্সাজট লেগে থাকার ফলে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। ফলে সারা বছরের মতো রমজান মাসেও যানজটে পড়ে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন রোজাদাররা।

সরেজমিনে বুধবার (২৩ মে) দেখা যায়, কক্সবাজার শহরের ভোলাবাবুর পেট্টোল পাম্প, বার্মিজ মার্কেট, কালুরদোকান, বাজারঘাটা, লালদিঘীরপাড়া, এন্ডারসন রোড, বড়বাজার, স্বর্ণ মার্কেট, ঈদগাঁও ও টেকনাফের প্রধান সড়ক যানজটে অস্থির হয়ে উঠেছে। আবার সড়কে দখল করে পণ্যভর্তি বিশালাকার ট্রাক পার্ক করে আনলোড করা হচ্ছে মালামাল। এই অবস্থা চলছে দীর্ঘদিন ধরে। এসব সড়ক দিয়ে রিকশা তো দূরের কথা, পায়ে হেঁটে পর্যন্ত চলাচল করা যায় না। প্রত্যেক বাজারব্যাপী প্রধান সড়ক ও অলিগলিতে এসব কারণে সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘ স্থায়ী যানজট।

রোজাদারগণ বলেন, যানজট নিয়ে কক্সবাজারবাসীর দুর্ভোগের শেষ নেই। এখন চলছে সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র রমজান। রোজাদাররা যাতে সময়মত অফিসে পৌঁছতে এবং বাড়ি ফিরে ইফতার করতে পারেন সেটি নিশ্চিত করা জরুরি।

বাস্তবতা হচ্ছে গত ২/৩ দিনে তীব্র যানজটের কবলে পড়তে হয়েছে কক্সবাজার শহরবাসীকে। অবস্থা আগে যা ছিল তাই আছে। বলা যায় ইফতার সামগ্রী বিক্রিসহ রোজাকেন্দ্রিক ব্যস্ততায় যানজট আরো প্রকট আকার ধারণ করেছে। কিন্তু এ থেকে নিষ্কৃতির কি কোনো উপায় নেই।

দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে, রমজানে যানজট নিরসনে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার উন্নতিতে নানা কৌশল নির্ধারণের কথা থাকলেও তা টিকছে না। রমজানের প্রথম দিনেই তীব্র যানজটে পড়তে হয়েছে শহরবাসীকে। স্থবির রাস্তায় অস্বস্তি আর ভোগান্তি নিয়ে যানবাহনে দীর্ঘ সময় বসে থাকতে হয়েছে অফিসগামী মানুষদের। একই অবস্থা ছিল দ্বিতীয় ও ৩য় দিনেও। আগের ধারাবাহিকতায় যানজট রমজানেও তার প্রভাব পড়েছে।

কক্সবাজার শহরের বাসিন্দা শওকত আলম আক্ষেপ করে বলেন, রোজাদাররা যাতে সময়মত ইফতার করতে পারে বাড়িতে গিয়ে সেজন্য কর্মঘণ্টা কমিয়ে দেয়া হয়েছে। সেই সময় যদি যানজটে পড়ে রাস্তায়ই নষ্ট হয়ে যায় এর চেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে।

তিনি আরো বলেন, প্রতিদিনই রাস্তায় নামছে অসংখ্য গাড়ি। কিন্তু সে অনুযায়ী রাস্তাঘাট কি বাড়ছে? অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা কি নিশ্চিত হচ্ছে? ট্রাফিক ব্যবস্থা কি আধুনিকায়ন হচ্ছে?

কক্সবাজার পৌরসভা ও জেলা প্রশাসনের ফাইলবন্ধি সিদ্ধান্ত কোন কাজেই আসছেনা বলে সচেতন মহল দাবী করেছেন। অথচ রোজার আগেই অবৈধ টমটম ও বাস কাউন্টার সরানোর সিদ্ধান্তও ছিল। কিন্তু কিছুই বাস্তবায়িত হয়নি।

কক্সবাজার শহরে রিক্সা, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, যাত্রীবাহী বাস, মালবাহী ট্রাক, রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি। জ্যামে পড়লে সবারই একই দশা। যদিও গুরুত্বভেদে জরুরি ভিত্তিতে কিছু গাড়ি চলাচলের কথা। কিন্তু রাস্তা তো একই। কিভাবে চলবে?

কক্সবাজার সিভিল সোসাইটির সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী খোকা জানান, এ অচলাবস্থার অবসান হওয়া প্রয়োজন। বিশেষ করে রমজানে যানজট দূর করতে ট্রাফিক বিভাগকে আরো কার্যকরি ভূমিকা নিতে হবে। রমজানে যে কোনোমূল্যে যানজটমুক্ত হোক কক্সবাজার শহরবাসী-এটাই দেখতে চাই।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন