বৃষকেতু চাকমাকে চেয়ারম্যান করে ১৫ সদস্যের রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ পুনর্গঠন

বৃষকেতু চাকমা

ফাতেমা জান্নাত মুমু,রাঙামাটি:

বৃষকেতু চাকমাকে চেয়ারম্যান করে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে। বুধবার এই নিয়োগ সংক্রান্ত আদেশ পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে রাঙামাটি জেলা পরিষদে পৌছালে রাঙামাটিবাসীর দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটে।

নবগঠিত জেলা পরিষদের অন্যান্য সদস্যরা হলেন, বাঙ্গালী সদস্য হিসেবে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মুছা মাতব্বর, ও জানে আলম।  অপরদিকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি হিসেবে ত্রিদীব কান্তি দাশ। তাছাড়া চাকমা সম্প্রদায় থেকে জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমা, সুবীর কুমার চাকমা, অমিত চাকমা রাজু, সাধন মনি চাকমা। ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের- স্মৃতি বিকাশ ত্রিপুরা। তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের- চান মুণি তঞ্চঙ্গ্যা। মারমা সম্প্রদায়ের- অংসুই প্রু চৌধূরী, ও থোয়াই চিং মারমা। তাছাড়া জেলা পরিষদে তিন নারী সদস্য হিসেবে রাঙামাটি জেলা কৃষকলীগের সভাপতি অপহৃত অনিল চন্দ্র তঞ্চঙ্গ্যার স্ত্রী সান্তনা চাকমা, পৌর কাউন্সিলর জেবুন্নেসা রহিম, ও রেমলিয়ানা পাংখোয়ার নাম সদস্য হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে।

পার্বত্য তিন জেলায় নতুন অন্তর্বর্তী পরিষদ গঠন বিলে সই করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমন খবর মঙ্গলবার রাতেই পৌছায় রাঙামাটি জেলা শহরে। বুধবার সকাল থেকে সমগ্র শহরে এ ছিল টক অভ দ্য টাউন। কে চেয়ারম্যান হচ্ছেন, কে কে সদস্য হচ্ছেন এ আলোচনায় মুখর ছিল চায়ের কেন্টিন থেকে অফিস আদালত সর্বত্র। বুধবার সকাল থেকেই গণমাধ্যম কর্মীরা মন্ত্রণালয়ের ফ্যাক্স বার্তা পেতে জেলা পরিষদে ভীড় জমায়। অবশেষে বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে মন্ত্রণালয় থেকে ফ্যাক্স পাঠানো হলে সব জল্পনা ও উদ্বেগের অবসান ঘটে।

বুধবার বিকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষক মন্ত্রণালয় থেকে সিনিয়র সহকারী সচিব ফারাহানা হায়াত স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, পার্বত্য জেলা পরিষদের আইন-১৯৮৯ ও ১৯৯৭ সালের সংশোধীত ১৬ (ক) (২), (৪) উপধারায় এবং ২০১৪ সালের সংশোধীত (৪), (২) উপধারা প্রদত্ত ক্ষমতা বলে সরকার রাঙামাটি জেলা পরিষদ ও অন্তবর্তীকালীন পরিষদর পূর্ণ গঠন করেন। পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত পুণ গঠিত অন্তবর্তীকালীন পরিষদ রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন ১৯৮৯ এবং এই আইনের সকল সংশোধনীর বিধান অনুযায়ী রাঙামাটি জেলা পরিষদের দায়ীত্ব পালন করবে। তাছাড়া এই প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পূর্বে গঠিত পরিষদ বাতিল করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সংসদের চলতি অধিবেশনে ‘রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ (সংশোধন) আইন ২০১৪’, ‘খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ (সংশোধন) আইন ২০১৪’ এবং ‘বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ (সংশোধন) আইন ২০১৪’ নামে পৃথক তিনটি বিল উত্থাপন করার পর ওই তিনটি সংশোধনী বিল পাস হয়।

এদিকে রাঙামাটির পাশাপাশি অন্য দুই পার্বত্য জেলা পরিষদও পুনর্গঠন করা হয়েছে। বান্দরবানের বর্তমান চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা ও খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের কংজরি চৌধূরী মারমা আবার নতুন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পেয়েছেন বলে জানা গেছে। বুধবার এ সংক্রান্ত নিয়োগ আদেশ তিন পার্বত্য জেলায় পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা।

তথ্য সূত্র জানা গেছে, সংশোধিত আইনে রাঙামাটির মতো খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের প্রত্যেকটিতে চেয়ারম্যানসহ ১৫ সদস্য নিয়োগ পেয়েছে। এর আগে ছিলেন চেয়ারম্যানসহ ৫জন। এবার ৫ থেকে ১৫-তে উন্নীত করে পরিষদ তিনটির আইন সংশোধন করেছে সরকার। সংশোধিত আইনে প্রত্যেক পরিষদে উপজাতিদের মধ্য হতে ১জন চেয়ারম্যান এবং সদস্য পদে ১৪ জনকে মনোনয়ন দিয়েছে সরকার।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন