বিশ্বকাপ মাতানো মুসলিম ফুটবলাররা
স্পোটর্স ডেস্ক:
বিশ্বকাপে কাঁপছে বিশ্ব। কোটি কোটি ফুটবলপ্রেমীর চোখ এখন ‘দ্য গ্রেটেস্ট ফুটবল শো অন আর্থ’-এ নিবদ্ধ। কারও মুখে উপচে পড়ছে আনন্দের উচ্ছ্বাস, কারও চোখে বেদনার জল। ঘটে গেছে বহু অঘটন। প্রথমপর্বেই বিদায় নিয়েছে রানিং চ্যাম্পিয়ন স্পেন। অপমৃত্যুর মুখোমুখি টিকিটাকা স্টাইল।
শুভ সূচনা করেও দেশে ফিরতে হয়েছে চারবারের চ্যাম্পিয়ন ইতালিকে। ফুটবলের আঁতুড়ঘর খ্যাত ইংল্যান্ডও ধরেছে ফিরতি প্লেন। দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখিয়ে নকআউটপর্বে পা রেখেছে কোস্টারিকার মতো দল। ইতিহাস সৃষ্টি করে প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় পর্বে উঠেছে আফ্রিকান মুসলিম দেশ আলজেরিয়া। অঘটনের এ বিশ্বকাপে সৃষ্টি হচ্ছে আরেক রেকর্ড, ইতিহাসে যা আগে কখনও ঘটেনি। নকআউট পর্বের স্পটলাইটে থাকছেন একদল মুসলিম ফুটবলার। বড় অঘটন না ঘটলে ফাইনাল পর্যন্ত তাদের নৈপুণ্যে ভাস্বর হবে ব্রাজিল বিশ্বকাপ।
চ্যাম্পিয়ন ও বিশ্বকাপ প্রত্যাশী দলগুলোর অপরিহার্য খেলোয়াড় তারা। ইতিমধ্যেই কয়েকজন কেড়ে নিয়েছেন ফুটবলপ্রেমীদের মনোযোগ। চলতি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক এসেছে তেমন একজনের পা থেকে। তিনি সুইজারল্যান্ডের মিডফিল্ডার জারদান শাকিরি। দু’টি করে ম্যাচে ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হয়েছেন ফ্রান্সের স্ট্রাইকার করিম বেনজেমা, আলজেরিয়ার স্ট্রাইকার ইসলাম স্লিমানি ও সুইজারল্যান্ডের মিডফিল্ডার জারদান শাকিরি। গোল্ডেন বুটের দাবিদারের তালিকায় আছেন তারাও। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে লিওনেল মেসির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অসাধারণ শুটে জোড়া গোল পরিশোধ করেছেন নাইজেরিয়ার আহমেদ মূসা।
চলতি বিশ্বকাপে জার্মানি ও ফ্রান্স দু’দেশই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার প্রত্যাশী। অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার নির্ভর জার্মানির ত্রিরত্ন মেসুত ওজিল, সামি খেদিরা ও শেকুদরান মোস্তাফি। ফ্রান্সের প্রাণভোমরা করিম বেনজেমা ছাড়াও আছেন মিডফিল্ডার মূসা সিসোকো, ডিফেন্ডার বাকারি সাগনা ও মামাদু সাখো। আন্ডারডগ বেলজিয়ামে স্ট্রাইকার আদনান ইয়ানুজাই, মিডফিল্ডার মারুয়ানে ফেলাইনি, মূসা দেম্বেলে ও নেসার চাদলি, সুইজারল্যান্ডের মিডফিল্ডার জারদান শাকিরি, স্ট্রাইকার আমির মেহমেদি ও হারিস সেফেরোভিচ এবং নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার আহমেদ মূসা সবাই মুসলমান। আর পুরো মুসলিম স্কোয়াড নিয়ে বিশ্বকাপ মিশনে এসেছে আলজেরিয়া। বিশ্বকাপে পুরো মুসলিম স্কোয়াড নিয়ে এসেছিল প্রথম পর্বে বাদপড়া বসনিয়া ও ইরান।
এদিকে নকআউট পর্বের সঙ্গে শুরু হচ্ছে রমজান মাস। তিন দশক পরে রমজানে মাসে পড়েছে বিশ্বকাপ। রমজান মাসে বিশ্বকাপে অংশ নিতে মুসলিম ফুটবলাররা শারীরিক সমস্যার মধ্যে পড়বে কিনা- এ নিয়ে সমীক্ষা চালিয়েছে ফিফা। কিন্তু বিশ্বাসের শক্তিতে বলিয়ান মুসলিম খেলোয়াড়রা উড়িয়ে দিয়েছেন যাবতীয় শঙ্কা। প্রথম পর্বের ম্যাচে প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগকে গতি ও কৌশলের নৈপূন্যে যেভাবে নাকানি-চুবানি খাইয়েছেন নিশ্চিত বলা যায় নকআউট পর্বে পায়ের শৈল্পিক জাদু ও গোলের ফুলঝুরি ছড়াবেন মুসলিম ফুটবলাররা।