বাল্যবিবাহ ও মাদক যুব সমাজ ধ্বংসের একটি উন্নয়নশীল দেশের বড় অশনি সংকেত

চকরিয়া প্রতিনিধি:

সরকার দেশকে বাল্য বিবাহ ও মাদকমুক্ত করতে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বর্তমান সরকার ইতিমধ্যে বাল্য বিবাহ নিরোধ আইন সংসদে পাশ করেছে। শুধু সরকারই নয়, মাদককে সমাজ থেকে মূল উৎপাটন করতে দল-মত নির্বিশেষে সকলকে এর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে হবে। বাল্যবিবাহ এবং মাদক যুব সমাজ ধ্বংসের প্রধানতম অন্তরায়। কারণ যুব সমাজের পাশাপাশি মাদকের দিকে স্কুল, কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও শিশুরাও ঝুঁকে পড়ছে। এটা যে কোন উন্নয়নশীল দেশের জন্য বড় অশনি সংকেত।

বৃহস্পতিবার(২৬ এপ্রিল) দুপুরে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী রশিদ আহমদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় মিলনায়তনে থানা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত মাদক, জঙ্গীবাদ, ইভটিজিং ও বাল্যবিবাহ নিরোধ সংক্রান্ত সচেতনতামূলক এক আলোচনা সভায় কক্সবাজার সহকারী পুলিশ সুপার(চকরিয়া সার্কেল) কাজী মো. মতিউল ইসলাম প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, দেশে চলমান পরিস্থিতিতে মাদক নামক জিনিষটা সমাজের প্রতিটি রন্ধে রন্ধে অনুপ্রবেশ করে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে। এটার জন্য মূলত আমরা সকলই দায়ী। এ ভয়াবহ মাদকের গ্রাস থেকে স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের প্রথমে জনমত গড়ে তুলতে হবে। এছাড়াও যারা জঙ্গিবাদ ও নাশকতা চালিয়ে অস্থিতিশীল একটি ভয়ানক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে মানুষ হত্যাযজ্ঞে লিপ্ত রয়েছে তারা কখনও ইসলাম ধর্মের লোক হতে পারে না। মূলত এক শ্রেণীর লোক ধর্মকে অপব্যবহার করে স্কুল ও কলেজ লেভেলের শিক্ষির্থীদের টার্গেট করে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে পথভ্রষ্ট করে জঙ্গীবাদের দিকে আকৃষ্ট করে। এর বিরুদ্ধে সবাইকে সজাগ থাকার জন্য আহ্বান জানান। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে ও থানা কমিউনিটি পুলিশিং অফিসার এসআই এনামুল হকের সঞ্চলনায় অনুষ্ঠিত হয় মাদক, ইভটিজিং ও বাল্যবিবাহ নিরোধে সচেতনতামূলক সভা।

ওই অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক ছিলেন চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী। তিনি বলেন, একজন শিক্ষার্থী তার মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে পুরো সমাজের চিত্র পাল্টে দিতে পারে। সমাজের মাদক, বাল্যবিবাহ ও ইভটিজিংয়ের মতো যে সমস্ত নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড ও অসঙ্গতি দেখা দেয় তা প্রতিরোধ করতে একজন শিক্ষার্থীর ভুমিকা অপরিসীম।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান স্কুল, কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা বন্ধুদের আড্ডায় পড়ে দিনদিন অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছে। এ ব্যাপারে শিক্ষকদের ভুমিকার পাশাপাশি অভিভাবকদের কঠোর পর্যায়ে তাদের ছেলে-মেয়ে ও সন্তানদের কর্মকাণ্ডের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। আর স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় ছাত্রীদের যাওয়া-আসার পথে যে সব বখাটে যুবকরা মেয়েদের দেখলে বিরূপ ধরণের মুখে শিশ দিয়ে বাচনভঙ্গি মাধ্যমে ইভটিজিং করে তাদের চিহ্নিত করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং আইনের হাতে তুলে দেয়ার জন্য আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, দেশকে উন্নয়ন ও আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে বিশ্বেরবুকে পরিচিতি লাভ করতে সমাজকে পরিবর্তন করতে হবে। এখনও এমন কিছু সমাজ রয়েছে যে সমাজে তাদের পিতা-মাতা কমবয়সী মেয়েদের বাল্যবিবাহ পিড়িঁতে বসায়। ১৮বছরের নিচে অপ্রাপ্ত বয়স্ক কোন মেয়েকে বিবাহ না দেয়ার জন্য এলাকার জনপ্রতিনিধি, শিক্ষকও ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ, অভিভাবকসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন