বান্দরবানে পিণ্ডদান উৎসব সম্পন্ন

bandarban-pic-1-15-11

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বর্ণাঢ্য আয়োজনে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মহা পিণ্ডদান বান্দরবানে মাস ব্যাপী উৎসব সম্পন্ন করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহার থেকে প্রায় দুই শতাধিক বৌদ্ধভিক্ষু শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ ঘুরে ঘুরে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষের কাছ থেকে ছোয়াইং ও দানের টাকা গ্রহণ করেন। বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারগুলোতে পর্যায়ক্রমে মাসব্যাপী চলা এ উৎসব পিণ্ডদানের মাধ্যমে শেষ হয়েছে।

র‌্যালিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি, বান্দরবান জেলা জজ শফিকুর রহমান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নেতারা অংশ নেন।

বৌদ্ধ মন্দিরগুলোতে কঠিন চীবর দানের পর ভিক্ষুদের সম্মানে পিণ্ড দান (রান্না করা খাবার) বিতরন উৎসবের আয়োজন করা হয়। শহরের জাদী পাড়া, উজানী পাড়া, মধ্যমপাড়া, রাজবাড়ি এলাকায় সারিবদ্ধ ভাবে প্রায় চারশ বৌদ্ধ ভিক্ষু, দায়ক-দায়িকা খালি পায়ে পিণ্ডদান অনুষ্ঠানে অংশ নেয়। পূণ্য লাভের আশায় শত শত শিশু-কিশোরী ও নারী-পুরুষ সারিবদ্ধ ভাবে রাস্তায় দাড়িয়ে ভিক্ষুদের পিণ্ডদানের পাশাপাশি নানা প্রকার মিষ্টান্ন খাবার দান করেন। এ সময় বৌদ্ধ মূর্তীকে পূজা শেষে অর্থ দান করে বৌদ্ধলম্বীরা। পিণ্ডদান উৎসব দেখতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি পর্যটক ও দর্শনার্থীরা ভিড় জমায় বান্দরবান শহরে।

আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত বৌদ্ধ মন্দিরগুলোতে ভিক্ষুরা তিন মাস বর্ষাবাস (উপোস) পালন করে। এই উৎসবে পাহাড়িরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নতুন তুলা থেকে চর্কার মাধ্যমে সুতা তুলে বৌদ্ধভিক্ষুদের পরিধানের জন্য কাপড় বুনে। কোনো প্রকার সেলাই ছাড়া তৈরি চীবর কাপড় ক্যায়াংয়ে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বিতরণতে কঠিন চীবর দান বলে। শেষে পিণ্ডদানের মাধ্যমে এ উৎসবের আয়োজন শেষ করা হয়। এ উৎসবকে ঘিরে মন্দির গুলোর পাশাপাশি পাহাড়ী পল্লী গুলোকেও রং বে রং ঙে সাজানো হয়েছে।

প্রচলিত আছে গৌতম বৌদ্ধ দু-হাজার বছর আগে খালি পায়ে হেটে হেটে বিভিন্ন বৌদ্ধ পল্লীতে ছোয়াং (খাদ্য) সংগ্রহ করতেন। এবং গৌতম বুদ্ধের মহা পুণ্যবতী নারী বিশাখা দেবী এই কঠিন ব্রতী পালন করে বুদ্ধকে চীবর দান করেছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় বান্দরবানের বৌদ্ধ ধর্মলম্বীরা যুগযুগ ধরে এই উৎসব পালন করে আসছে।

পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর বলেন, ধর্ম মানুষকে শুধু পরিশুদ্ধি নয়, ন্যায় এবং সত্যের পথে চলার দিকনির্দেশনা দেয়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন