প্রতিরাতে হানা দিচ্ছে বন্য হাতি, আতঙ্কে আছে এলাকাবাসী

unnamed (3) copy

 রাজস্থলী প্রতিনিধি:

রাঙ্গামাটি জেলার রাজস্থলী উপজেলার ৩নং বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়নের ধলিয়া মুসলিম পাড়া ও মারমা পাড়ায় বন্য হাতি তাণ্ডব চালিয়ে তছনছ করে দিয়েছে বিপুল পরিমাণ জমির ধান ও ফলদ বনজ বাগান। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কয়েকদিন ধরে বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়নের ধলিয়া মুসলিম পাড়া ও মারমা পাড়া এলাকায় ৩০-৪০টি বন্য হাতির দল প্রতিরাতে এ তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

হাতিগুলো বর্তমানে পার্শ্ববর্তী রাঙ্গুনীয়া উপজেলার খুরুশিয়া, নারিচ্যা, শিলক ও জঙ্গল সরফভাটার এলাকায় অবস্থান করে স্থানীয়দের মাঝেও আতঙ্ক বিরাজ করছে। হাতির তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো মানবেতর জীবন যাপন করছে। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারদের সাথে কথাবলে জানা যায়, গহীন অরণ্য পাহাড় থেকে বন্য হাতির দলগুলো প্রতিরাতে লোকালয়ে উঠে আসে।

পরে রাতভর হাতিগুলো তাণ্ডব চালিয়ে কৃষকের উৎপাদিত ৩০-৩৫ কানির জমির ধান ফলদ বাগানের কলাগাছ, কাঁঠালগাছ সহ বিভিন্ন প্রজাতির ফসলাদি প্রায় ২০ লক্ষ টাকার সম্পদ নষ্ট করে ফেলেছে বন্য হাতির দল। বিশেষ করে রাতের বেলায় হাতির সঙ্গবদ্ধ দল জমিতে নামলে বিকট শব্দে ডাক শুরু করে। তখন পুরো এলাকা আতঙ্কে ছড়িয়ে পরে। স্থানীয় ইউপি সদস্য জানান, অনেক সময় রাত জেগে আগুন জ্বালিয়ে ও ঢাকঢোল পিটিয়ে চিৎকার করেও বন্য হাতির দলকে তাড়ানো যায় না।

বেশি ভয় দেখালেও হাতির পালগুলো মানুষকে আক্রমণ করার জন্য ছুটে আসে। তবে ফসলাদি ক্ষয়ক্ষতিগুলো একনজরে তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। এ বিষয়ে হাতির আক্রমণের ঘটনা সত্যতার নিশ্চিত করে ৩নং বাঙ্গালহালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ঞোমং মারমা জানান, কয়েকদিন থেকে বন্য হাতিগুলো এলাকায় অবস্থান করায় লোকজন এখন চরম আতঙ্কে রয়েছে। আবার যেকোন মুহুর্তে তাণ্ডব চালিয়ে জানমালের ক্ষতি সাধন করতে পারে।

এখনও সরকারি কিংবা বে-সরকারি কোন সহযোগিতা পায়নি। তিনি বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানাবেন বলে জানান। বাঙ্গালহালিয়া বনবিভাগের স্টেশন কর্মকর্তা কনক বড়ুয়া জানান, বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়নে বন্য হাতি আক্রমণের ঘটনা শুনেছি। এঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থরা আবেদন করলে তদন্তপূর্বক বিধি মোতাবেক সহযোগিতা প্রদান করা হবে। উল্লেখ্য যে, পাহাড়ের আবাসস্থল ও বনজ সম্পদ উজার হওয়াতে হাতির প্রতিনিয়ত খাদ্যের অভাব হওয়ায় খাবার সংগ্রহে লোকালয়ে চলে আসে। ফলে বন্য হাতির তাণ্ডবে প্রতিদিন গ্রামবাসী ভয়ে আতঙ্কে রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন