পুলিশের অভিযানে রামগড় থেকে আড়াইশ অটো রিকশা উধাও

Ramgarh 12

রামগড় প্রতিনিধি:

খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলা থেকে বিভিন্ন সড়কে নিয়মিত যাত্রীবহনকারী প্রায় ২৫০টি সিএনজি চালিত অটো রিকশা বৃহস্পতিবার ভোর বেলা থেকে উধাও হয়ে যায়। গত বুধবার গভীর রাতে পুলিশ হঠাৎ রেজিস্ট্রেশনবিহীন অটো রিকশা আটকের অভিযান শুরু করার পরই রামগড় থেকে অটো রিকশাগুলো হাওয়া হয়ে যায়। পুলিশের এ অভিযানে ১২টি অটো রিকশা আটক করা হয়েছে।

এদিকে বিভিন্ন রাস্তায় চলাচলকারী অটো রিকশাগুলো না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ যাত্রীরা। অন্যদিকে অটো রিকশা না থাকায় মাইকে পৌরসভার নির্বাচনের প্রচারণা কাজ করতে পারেননি কোন প্রার্থী।
জানা যায়, রামগড় বারৈয়ারহাট সড়ক ও রামগড় জালিয়াপাড়া গুইমারা সড়কসহ বিভিন্ন অভ্যন্তরিন রাস্তায় প্রায় ২৫০টি সিএনজি চালিত অটো রিকশা নিয়মিত যাত্রী পরিবহন করে। অটো রিকশাগুলোর মধ্যে ১০ থেকে ১২টির ছাড়া অন্য সব কয়টির কোন বৈধ কাগজপত্র বা রেজিস্ট্রেশন নেই। থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন ধরে রাস্তায় চলাচল করলেও গত বুধবার রাতে আকস্মিকভাবে রেজিস্ট্রেশনবিহীন অটো রিকশা আটকের অভিযান শুরু করে পুলিশ। বুধবার রাত ১১টা হতে তিনটা পর্যন্ত চলা এ অভিযানে ১২টি অটো রিকশা আটক করা হয়।

অভিযান চলাকালে কয়েকজন চালককে মারধর করারও অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। হাফিজুর রহমান অভিযোগ করেন, বুধবার রাত ১১টার দিকে লামকুপাড়া থেকে একজন রোগীকে নিয়ে রামগড় বাস স্টেশনে আসা মাত্র সাদা পোশাকধারী কয়েকজন পুলিশ তাকে ঘিরে ফেলে। এ সময় তারা আমাকে মারধর করে। আলম নামে অপর একজন চালকও পুলিশের হাতে নির্যাতিত হওয়ার অভিযোগ করেছে।

এদিকে বুধবার গভীর রাতে পুলিশের এ অভিযানের খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে অটো রিকশাগুলো নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যান মালিক ও চালকরা। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে রাস্তায় একটি অটো রিকশাও চলাচল করেনি। হঠাৎ করে রাস্তা থেকে অটো রিকশা উধাও হয়ে যাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। এছাড়া অটো রিকশা না পেয়ে রামগড় পৌরসভার নির্বাচনী প্রচারণাও করতে পারেননি কোন প্রার্থী।

রামগড় সিএনজি চালিত অটো রিকশা চালক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক হৃদয় রহমান রনি বলেন, ‘হঠাৎ করে পুলিশের এমন অভিযানে অটো রিকশার মালিক ও চালকদের মধ্যে আতংক দেখা দিয়েছে। বুধবার রাতে পুলিশ ১২টি অটো রিকশা আটক করে থানায় নিয়ে গেছে। তাই মালিক ও চালকরা সবাই তাদের অটো রিকশাগুলো অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে গেছেন।
তিনি বলেন, রামগড় সমিতির আওতায় প্রায় ২৫০টি অটো রিকশ বিভিন্ন রাস্তায় যাত্রী পরিবহন করে। পুলিশের অভিযানের কারণে রাস্তায় নামতে না পারায় চালকরা বেকার হয়ে পড়েছেন। মালিকরা কিস্তির টাকা পরিশোধ করা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।’

অটো রিকশা চালক সমিতির সভাপতি মফিজুর রহমান বলেন, ‘অনেক মালিক তাদের অটো রিকশার রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদন করেছেন। অনেকের রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়াধীন আছে। তিনি বলেন, রেজিস্ট্রেশন না থাকার দুর্বলতার জন্য মালিক ও চালকরা থানা পুলিশের সাথে বুঝাপড়া করেই রাস্তায় চলাচল করছে। এছাড়া রামগড় থানার পুলিশের ডিউটি পালনের সুবিধার্থে সমিতি থেকে প্রতিদিন একটি অটো রিকশা ফ্রি সার্ভিস দেয়া হয়। এ অবস্থায় পুলিশ হঠাৎ কেন অভিযান শুরু করেছে আমরা জানি না।’

রামগড় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাইন উদ্দিন খান বলেন,‘অটো রিকশাগুলোর কোন বৈধ কাগজপত্র বা রেজিস্ট্রেশন নেই। আমরা মালিক ও চালকদের অনেকদিন থেকে অটো রিকশার লাইসেন্স করতে তাগাদা দিচ্ছি। কিন্তু তারা এতে সাড়া দিচ্ছে না। উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে অভিযান শুরু করতে হয়েছে।’

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন