পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের  বিকল্প নেই: দীপংকর তালুকদার

Diponkor 14112114_10209332568286488_1697774449_n copy

নিজস্ব প্রতিবেদক:

এই পার্বত্য চট্টগ্রামে আমরা যারা পাহাড়ি-বাঙ্গালী সম্প্রদায়গুলো রয়েছি তারা সকলেই পরস্পর ভাই-বোনের মতো শান্তিতে বসবাস করতে চাই। সম্প্রতি বান্দরবানে যুবলীগ নেতাসহ বেশ কয়েকটি অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। খাগড়াছড়িতেও সংঘঠিত হয়েছে অপহরণ করে নিয়ে জিম্মি করার ঘটনা। কিন্তু আর নয়। এসব থেকে আমরা পরিত্রাণ পেতে চাই। আর পাহাড়ে শান্তি প্রতিস্থাপন করতে হলে পাহাড় থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের কোনো বিকল্প নেই। অবৈধ অস্ত্রের মাধ্যমে যারা আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করে আমাদের ভাষা কেড়ে নিতে চায় আগস্টের পর থেকেই শান্তিকামী পাহাড়ী-বাঙ্গালী জনগণকে সাথে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ডাক দিব। আবারো পার্বত্যাঞ্চল থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবিতে লাগাতার কর্মসূচী শুরু করবো আমরা।

শুক্রবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪১তম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি দীপংকার তালুকদার।

তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস নির্মূলে আমাদের শপথ হোক একটাই। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সন্ত্রাস নির্মূল করবো আমরা।  সেই ৭৫ সালেও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে আমাদের জীবনের কলঙ্কময় অধ্যায়ের সূচনা হয়েছিলো। এই রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস বর্তমানেও বিদ্যমান রয়েছে। স্থানীয় সাধারণ জনগণকে সাথে নিয়ে তাদের বুদ্ধি পরামর্শ মোতাবেক আমাদের সকলকে পাহাড়ের অবৈধ অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে। শোকের মাস আগষ্ট শেষ হওয়ার পরপরই আগামী মাস থেকে আবারো পার্বত্যাঞ্চল থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবিতে আমরা লাগাতার কর্মসূচী শুরু করবো।

তবে নির্দিষ্ট কাউকে দায়ী করছেন না জানিয়ে তিনি বলেন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে আমরা বিশেষ কোনো সম্প্রদায় বা দলের প্রতি আমাদের কোনো অভিযোগ নেই । আমরা শুধুমাত্র সেসব ব্যক্তি ও সংগঠনের রাজনীতির বিরুদ্ধে, অবৈধ অস্ত্রের মাধ্যমে তাদের রাজনীতি করতে চায়।  আমরা চাই তাদেরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হোক।

শোক সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি দীপংকার তালুকদার আরো  বলেন,দেশের ইতিহাসে এই আগষ্ট মাসটি আমাদের সকলের জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক মাস। এই মাসটিতে আমরা অনেক বড় কিছু হারিয়েছি। ১৯৭৫-এর ১৫ আগষ্টে তারা জাতির জনককে হত্যা করেছিলো। তারপর আবার ২১শে আগষ্টে জননেন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করার চেষ্ঠা চালিয়েছিল। তারা ভেবেছিল জাতির জনককে হত্যা করে এই দেশের জনগণের হৃদয় থেকে তার আদর্শকে মুছে দিতে পারবে। কিন্তু তারা যখন দেখলো তাতে হয়েছে তখন আবার ৭৫ এর সেই ঘাতকরাই ২১শে আগষ্টের মতো একটি মর্মান্তিক ঘটনা সৃষ্টি করে ছিল।

তিনি আরো বলেন,বঙ্গবন্ধু যদি ৭১ এর পরাজিত শক্তির সাথে মাথানত করে সমঝোতা করতো তাহলে হয়তো ১৫ আগষ্টের মতো একটি মর্মান্তিক দূর্ঘটনা  নাও ঘটতে পারতো। মূলত: তাদের লক্ষ্য একটাই, আওয়ামীলীগকে বাংলঅদেশ থেকে চিরতরে নিশ্চিহ্ন করে ফেলা। কিন্তু তারা সফল হয় নাই। তাই দীপংকর তালুকদার বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্টের ঘটনার সাথে যেমনি করে জিয়াউর রহমান জড়িত, ঠিক তেমনি ভাবে ২১ আগষ্টের ঘটনার সঙ্গেও বিএনপি সরকার জড়িত ছিলো।

সাম্প্রতিক জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদের বিষয়ে প্রধান অতিথি দীপংকর তালুকদার বলেন, সারাবিশ্বের ন্যায় আমাদের দেশেও জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদের হুমকি চলছে। তবে আমাদের সকলকে সতর্ক থাকতে হবে যাতে করে আমাদের এই শান্ত এলাকায় সাম্প্রদায়িকতার নামে যেকোনো ধরনের ইস্যুতে এখানে একটি বড় ধরনের গোলযোগ সৃষ্টি করার একটি ষড়যন্ত্র থাকতেই পারে। তিনি বলেন, সেই ৭৫ সালেও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে আমাদের জীবনের কলঙ্কময় অধ্যায়ের সূচনা হয়েছিলো। এই রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস বর্তমানেও বিদ্যমান রয়েছে। তাই এই সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় ছাত্রলীগকেই নেতৃত্ব দিযে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।

এদিকে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আব্দুল জব্বার সুজন তার বক্তব্যে বলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ট বাঙালি ‘বঙ্গবন্ধু’র জন্ম না হলে আমরা এই স্বাধীন বাংলাদেশকে পেতাম না। তিনি দেশের জন্য এই অবদানে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। বঙ্গবন্ধু বেঁচে আছেন এ দেশের প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে। তার আদর্শকে বুকে ধারণ করে রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগ এগিয়ে যাচ্ছে।

রাঙ্গামাটি জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ চাকমার সঞ্চালনায় আলোচনা সভার সভাপতি ছিলেন জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আবদুল জব্বার সুজন। এছাড়াও সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামীগের সহ সভাপতি চিংকিউ রোয়াজা, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হাজি মো. মূছা মাতব্বর, জেলা আওয়ামীগের যুগ্মসম্পাদক আবদুল মতিন, রাঙামাটি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ শাখার ছাত্রলীগ সভাপতি সুলতান মাহমুদ বাপ্পা, জেলা ছাত্রলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক সালাউদ্দিন টিপু, পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি আলাউদ্দিন ও সদর ছাত্রলীগ সভাপতি সুজিত চাকমা সুপায়ন প্রমূখ।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন