পাহাড়ে প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত চুই যাচ্ছে সারাদেশে, বাণিজ্যিকভাবে চাষের সম্ভাবনা

Dighinala (choi) picture (01) 12-02-2017 copy

দীঘিনালা প্রতিনিধি:

পাহাড়ে প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত হচ্ছে মসলা জাতীয় উদ্ভিদ চুই। একসময়ে এটি বন্যলতা নামে পরিচিতি থাকলেও বর্তমানে এটি সুস্বাধু খাবার হিসেবে বেড়েছে এর চাহিদা ও কদর। যা স্থানীয় জুমচাষীরা জঙ্গল থেকে সংগ্রহ করে নিয়ে আসছেন বাজারে। পাহাড়ের এ সংগৃহিত চুই এখন যাচ্ছে সারাদেশে।

চুই সর্ম্পকে জানাযায়, চুই মসলা জাতীয় অপ্রচলিত উদ্ভিদ। এটি লতা জাতীয় গাছ। এর কাণ্ড ধূসর এবং পাতা পান পাতার মত সবুজ রঙের। এর কাণ্ডটিই মসলা হিসেবে ব্যবহ্নত হয়। চুই সাধারণত দুই প্রকারের হয। একটির কাণ্ড আকারে যা ২০ থেকে ২৫ সেন্টিমিটার এবং অন্যটির আকার ২.৫ সেন্টিমিটার থেকে ৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত মোটা হয়। চুই গাছ সাধারণত ৮ থেকে ১০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।

চুই গাছ জমিতে অথবা গাছের গুড়িতে চাষ করা যায়। এটি চাষের জন্য  দো-আঁশ ও বেলে দো আঁশ মাটিতে পানি নিষ্কাশন সুবিধাজনক স্থানে ভালো জন্মায়। তবে পাহাড়ের মাটিও চুই চাষের জন্য উপযোগী। বৈশাখ  জৈষ্ঠ মাসে এবং আশ্বিন-কার্তিক মাসে কাটিং পদ্ধতিতে কাণ্ড সরাসরি মাটিতে রোপন করা হয়। চুই চাষের জন্য আলাদা মাচা তৈরি করতে হয় না। যেকোন বৃক্ষ জাতীয় গাছ আম, কাঁঠাল, জাম, সুপারি, নারিকেল ও জিয়ল গাছের গোড়ায় রোপন করলে এক বছরের মধ্যেই খাওয়ার উপযোগী হয়।

ঔষধি গুণ সম্পন্ন মুখরোচক এ চুই শ্লেষ্মানাশক, গায়ে ব্যথা উপশমে কার্যকর। এটি হজমিকারক হিসেবে বেশ সহায়ক। সাধারণত মাংসের সাথে এ চুই ব্যবহার করা হয়।

তবে পাহাড়ে বসবাসরত জুম চাষীরা, জুম চাষের সুবাদে প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত এসব চুই সংগ্রহ করে থাকেন। পরে তা আটি বেঁধে নিয়ে আসেন বাজারে।

চুই বিক্রি করতে আসা দীঘিনালা উপজেলার যতিন ত্রিপুরা জানান, প্রতি বছর জুমের জমি তৈরির সময় চুই পাওয়া যায়। এসব চুই প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত।

স্থানীয় পাইকার ব্যবসায়ী মো. জামাল হোসেন জানান, প্রতি বাজার থেকে আমরা ৪০টাকা কেজি দরে ক্রয় করে থাকি। পরে তা আমরা শহরের অভিযাত হোটেলগুলোতে প্রতিকেজি ২০০-৩০০ টাকা কেজি হারে বিক্রি করা হয়। পাহাড়ের চুই ব্যপক চাহিদা রয়েছে।

দীঘিনালা হটিকালচার সেন্টারের উপ-সহকারী উদ্যান তত্ত্ব কর্মকর্তা মো. সেলিম জাবেদ জানান, পাহাড়ের মাটি ও আবহাওয়া চুই চাষের উপযোগী। প্রাকৃতিক ভাবে উৎপাদিত চুই সংগ্রহ করে সারা দেশে নিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। তাই তামাকের বিকল্প হিসেবে এখানে বাণিজ্যিক ভাবে চুই চাষাবাদ করে লাভবান হওয়া সম্ভব।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন