পাহাড়ে উৎসবের আমেজ

IMG_20170411_064418 copy

নিজস্ব প্রতিনিধি:

বাংলা বর্ষ ১৪২৪ বঙ্গাব্দকে বরন ও পুরাতন বর্ষকে বিদায় উপলক্ষে রাঙ্গামাটিসহ তিন পার্বত্য জেলায় অত্যন্ত উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ভিন্ন নামে ভিন্ন আঙ্গিকে বৈসাবি নামে আনন্দ মূখর পরিবেশে বৈসাবি উৎসব শুরু হয়েছে।

গত ৪ এপ্রিল হতে এ উৎসব আনুষ্ঠানিক ভাবে নানা সামাজিক ও স্থানীয় উপজাতীয় সংগঠন গুলো শুরু করেছে। মূলত ১২, ১৩, ১৪ এপ্রিল তথা চৈত্র মাসের শেষ ২ দিন এবং বৈশাখের ১ম দিন এ উৎসব ঘটা করে পালিত হয়। তিন পার্বত্য জেলায় দশ ভাষাভাষি ১৪টি উপজাতীয় সম্প্রদায় এ উৎসবকে পরের এপ্রিল মাসের পৃথক পৃথক ভাবে বিস্তারিত কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে পালন করে এরই প্রস্তুতি হিসেবে পার্বত্য জনপদ এখন উৎসবের আমেজ ভাসছে।

এখানকার মানুষ তথা চাকমা সম্প্রদায় এ উৎসবকে বিজু নামে, মারমা সম্প্রদায় সাংগ্রাই, ত্রিপুরা সম্প্রদায় বৈসুক, অহমিয়া সম্প্রদায় বিহু বাঙ্গালী সম্প্রদায়কে মধ্যে কেউ কেউ বিষু আবার কেউ কেউ চৈত্র সংক্রান্তি নামে পালন করলেও সব মিলিয়ে পাহাড়ি জনপদে এ উৎসব বৈ-সা-বি নামে পরিচিত বেশি। আবার খুমী-মৌ-চাক-চাংক্রান, তঞ্চঙ্গা সম্প্রদায় বলে বিষু চাংক্রান নামে পালন করছে।

এ দিন গুলোকে স্মরণ করে এখন হতে সামাজিক ভাবে ঘর সাজানো থেকে শুরু করে ছেলে মেয়েরা নতুন কাপড় পরিধান করে, গুরুজনদের সেবা শ্রদ্ধা, আশির্বাদ গ্রহণ করে থাকে। বিনোদন হিসেবে পাহাড়ি পল্লিতে বৃদ্ধ, বৃদ্ধা থেকে শুরু করে ছেলে মেয়েরা এ বাড়ি ও বাড়িতে বেড়িয়ে নানান ধরনের হাতের তৈরি নাস্তা, জলপান ও হরেক ধরনের রকম মেশালী তরকারী (পাচঁন) ভোজন করে।

চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, পাঙ্কুয়া, কুকী, লুসাই, খুমী, বেয়াং বম, খেয়াং সম্প্রদায় গণ তাদের এ উৎসবকে ঐতিহ্যবাহী সামাজিক ও ধর্মীয় প্রানের উৎসব আখ্যা দিয়ে তাদের সামাজিক কৃষ্টি, আচার আচরন এবং চাওয়া পাওয়ার প্রতিক হিসেবে নানা ভাবে পালন করে। প্রতি বছর এ তিন দিনে উপজাতীয় ঐতিহ্য সংস্কৃতি বিকাশে ঐক্যবদ্ধ হোন। উপজাতীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও ভূমি অধিকার প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে ৯ এপ্রিল হতে ৪ দিনব্যাপী বিজু, সাংগ্রাইং-বৈজু-বিষু-বিহু চাংক্রান ২০১৭ উদযাপন কমিটি রাঙ্গামাটি বিস্তারিত কর্মসূচি পালন করছে।

এ সকল কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বর্নাঢ্য র‌্যালি, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান জুম নৃত্য ও উপজাতিদের তৈরি নানা পশরায় প্রদশর্নী বলী খেলা, চাকমা নাটক, উপজাতীয় ভাষায় ছড়া পাঠসহ নানা কর্মসূচি। ১২ এপ্রিল নদীতে ফুল ভাসানোর মধ্যে দিয়ে এ কর্মসূচির অবসান ঘটবে।

এ উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহ-সভাপতি ও সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার এ সময় উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার রাজা দেবাশীষ রায়। এতে সভাপতিত্ব করেন আদিবাসী ফোরামের সভাপতি প্রকৃত রঞ্চন চাকমা (অব: সচিব)। গত ৬ এপ্রিল রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে এ উৎসব আনুষ্ঠানিক ভাবে পালন করছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন