পরিবারের দাবি পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে নাইক্ষ্যংছড়ি আওয়ামী লীগ নেতা ডা. ইসমাইলকে

A lig neta copy

বাইশারী প্রতিনিধি:

আত্মহত্যা নয়, পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে ডা. ইসমাইল হোসেনকে। এ কথাগুলো কান্নাজড়িত কণ্ঠে বললেন, কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় উদ্ধার হওয়া নাইক্ষ্যংছড়ি আওয়ামী লীগ নেতা ডা. মো. ইসমাইল হোসেনের মেয়ে জামাই ও আলীকদম উপজেলা যুবলীগ সভাপতি আনোয়ার জিহাদ চৌধুরী।

রাজনৈতিক প্রজ্ঞা বিচক্ষণতার মাধ্যমে যারা ডা. ইসমাইলের কাছ থেকে সেবা পেয়েছেন এবং দলের জন্য তিনি যা করছেন সে কথা বিবেচনা করে অনাকাঙ্কিত ঘটনার দৃষ্টান্ত মূলক বিচার দাবি করেন তিনি। এসময় তিনি বলেন, ডা. ইসমাইলকে হত্যা করে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় রুমের চাবি কেন জব্দ তালিকায় নেই সেই প্রশ্ন তোলেন। সোমবার সকাল ১১টায় উপজেলা সদরের ঈদগাহ ময়দানে নামাজে জানাজায় পরিবারের পক্ষে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

নিহতের শ্যালক ছালামত উল্লাহ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা সন্দেহজনক মনে করে বলেন, পারিবারিক কোন শত্রুতা ছিল ডা. ইসমাইল হোসেনের। ময়নাতদন্ত পরে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এজন্য তিনি জেলার দলীয় নেতাদের সহযোগিতা কামনা করেন।

জানাজা পূর্বে আরও বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য শফিকুর রহমান, বান্দরবান পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ইসলাম বেবী, জেলা পরিষদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগ আহ্বায়ক মাষ্টার ক্যউচিং চাক, থানা অফিসার ইনচার্জ তৌহিদ কবির, এমপি প্রতিনিধি আলহাজ্ব খায়রুল বাশার, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ইকবাল, নুরুল কাশেম।

এদিকে সোমবার সকাল ১১টায় উপজেলা সদরের ঈদগাহ ময়দানে নামাজে জানাজা শেষে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. ইসমাইল হোসেনের লাশ মহাজন এলাকায় সামাজিক গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে। জানাজা মাঠে মেয়ে জামাই ও শ্যালকের বক্তব্যের সূত্র ধরে নতুন করে ধুম্রজাল তৈরি হয়েছে। আত্মহত্যা করার মত কোন কারণ খুঁজে পাচ্ছেনা নিহতের পরিবার। এ ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সর্বক্ষেত্রে বিশেষত রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। তারা তড়িঘরি না করে ময়নাতদন্তের সঠিক প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান।

নিহত ডা. ইসমাইল হোসেনের লাশের প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, এভাবে কেউ আত্মহত্যা করতে পারেনা, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়া হয়েছে। সঠিকভাবে লাশটি ময়নাতদন্ত করলে মৃত্যুর আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে।

সময় যতই ঘনিয়ে যাচ্ছে ডা. ইসমাইল হোসেনের মৃত্যুর পূর্বে পোষ্ট করা ফেইসবুক স্ট্যাটাস এখন চাউর হয়ে সবার মুখে মুখে বিরাজ করছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা জানান ডা. ইসমাইল মৃত্যুর পূর্বে শফি উল্লাহ নামে যে ব্যক্তির বিষয়ে ফেইসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছেন, তার সাথে দীর্ঘদিন ধরে নিরব বিরোধ চলে আসছে। শফি উল্লাহ ইতিপূর্বে চট্টগ্রামের একটি হোটেল থেকে পাকিস্তানী জঙ্গিসহ গ্রেফতার হয়ে কারাভোগ করেন।

পরে বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ক্যশৈহ্লা মার্মার হাত ধরে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগে একক আধিপাত্য বিস্তার করতে থাকেন। এতে দুঃসময়ে সংগঠনের জন্য অবদান রাখা নেতাকর্মীরা কোনঠাসা হয়ে পড়েন। যার কারণে ডা. ইসমাইল হোসেনের মৃত্যু পরবর্তী বার বার সেই শফি উল্লাহর নাম ঘুরে ফিরে আলোচনায় আসছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন