নৃশংসতার চিহ্ন মুছতে রোহিঙ্গাদের লাশ গুম করছে মিয়ানমার বাহিনী

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

আন্তর্জাতিক চাপের মুখে এবার রোহিঙ্গাদের ওপর নিজেদের নৃশংসতার চিত্র মুছে ফেলতে নিহত রোহিঙ্গাদের লাশ গুম করছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।

তারা রোহিঙ্গাদের লাশ আগুনে পুড়িয়ে, মাটিতে পুঁতে ও নদীতে ভাসিয়ে দিয়ে গুম করছে, যাতে পরবর্তীতে বিশ্বের কেউ এসে এর প্রমাণ না পায়। কক্সবাজার সীমান্তের উখিয়ায় অনুপ্রবেশকারী অনেক রোহিঙ্গা এমনটাই দাবি করেছেন।

এ পর্যন্ত ৩ হাজার নিরীহ রোহিঙ্গা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যাকান্ডের শিকার েেহয়ছেন বলে দাবি করেছে একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থা।

যদিও মৃতের সংখ্যা আরো বেশি হবে বলে দাবি করেছেন আরাকান থেকে প্রাণে বেঁচে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা । তারা বলছে, মিয়ানমারের সৈন্যরা নৃশংসতার চিত্র মুছে ফেলছে। তারা রোহিঙ্গাদের গুলি করে হত্যার পর লাশ এক জায়গায় জড়ো করে আগুনে পুড়িয়ে ফেলছে। অনেক বাড়িতে গিয়ে সবাইকে ঘরের ভেতরে ঢুকিয়ে দরজা আটকে দিয়ে আগুন দিচ্ছে।

ফলে সবাই ঘরের ভেতরে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া অনেককে ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে ধরে নিয়ে জ্যান্ত আগুন দিয়ে মারছে। অনেক গ্রামে বড় গর্ত করে গণহারে পুঁতে পেলা হচ্ছে। যারা বিজিপির হাতে খুন হচ্ছে তাদের লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সীমান্তে নদী ও স্থলভাগে অনেক লাশ উদ্ধারও হয়েছে।
রাথিডং এলাকা থেকে মা, স্ত্রী, তিন সন্তান ও আরো দুইভাইকে নিয়ে কুতুপালং এসেছেন কলিমুল্লাহ। তিনি জানান, ৩০ তারিখের আগে অনেক এলাকায় লাশ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। লাশের পরিচয় চিনতে পেরে কেউ কেউ স্বজনদের দাফন করেছেন। একই দাবি করেছেন বুচিদং থেকে আসা আব্দুর রব।

তিনি বলছিলেন, গত ৩১ আগস্ট তার ভাই আব্দুর মতিন, চাচাতো ভাই খশরু মিয়াজীকে ধরে নিয়ে গেলেও তাদের লাশ খুঁজে পাওয়া যায়নি। ওদের সাথে গ্রামের আরো কয়েকজনকেও ক্যান্টনমেন্টে গিয়ে হত্যা করা হয়। শুনেছি সবার লাশ একসাথে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। রোহিঙ্গা এক্টিভিস্ট রো ন্যা সান লুইন মংডুর এক রোহিঙ্গা থেকে একটি ভিডিও সংগ্রহ করেছেন। সেখানে দেখা গেছে, এক জায়গায় মাটি খুঁড়ে বেশ কয়েকটি লাশ বস্তায় ভরে পুঁতে ফেলা হয়েছে। স্বজনরা মাটি খুঁড়ে বস্তাগুলো দেখতে পেয়েছেন। সান লুইন বলেছেন, অনেক এলাকায় সৈন্যরা বেসামরিক লোকদের হত্যার পর লাশ লুকিয়ে ফেলছে।

অনেকেই তাদের স্বজনদের লাশ খুঁজে পাচ্ছেন না। এসবের সাথে স্থানীয় রাখাইন যুবকরা জড়িত। রোহিঙ্গাদের একটি অনলাইন টিভি, একটি নিউজ নেটওয়ার্কেও এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

অন্যদিকে, ব্রিটেনের ১৭৫ জন এমপি সেদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসনকে যে চিঠি দিয়েছেন সেখানে তারা মিয়ানমার সৈন্যদের এমন নৃশংসতা ও নিপীড়ন বন্ধে উদ্যোগ নিতে যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি জোর আহ্বান জানিয়ে মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া বন্ধেরও আহ্বান জানিয়েছেন।

আর পরিসংখ্যান বলছে, স¤প্রতি ৩ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। তাঁদের ফিরিয়ে নিতে কিছুতেই রাজি নয় মিয়ানমার।

সূত্র : ওয়েবসাইট।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন