নাইক্ষ্যংছড়িতে আনন্দ স্কুলের পুল শিক্ষক নবায়নে কালক্ষেপন ও উপকরণের টাকা বিতরণে অনিয়ম

 

বাইশারী প্রতিনিধি:

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় রস্ক প্রকল্পের আনন্দ স্কুলের শিক্ষা উপকরণের টাকা বিতরণে অনিয়ম, উপবৃত্তির টাকা আত্মসাৎ, পোষাক তৈরীতে অনিয়ম ও পুল শিক্ষকদের নবায়নে গড়িমশির অভিযোগ উঠেছে রক্স ট্রেনিয় কো-অর্ডিনেট সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে।

এ ব্যাপারে পুল শিক্ষকবৃন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও রস্ক প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি বরাবর অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগে জানা গেছে, রিচিং আউট অফ স্কুল চিলল্ড্রেন প্রজেক্ট রস্ক ফেইজ-২ এর আওতায়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ৪১টি আনন্দ স্কুলের ২৬ জন শিক্ষার্থী ২০১৭ সালে পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। তারমধ্যে ২৫জন কৃতকার্য হয়েছে। পুল শিক্ষকদের সুষ্ঠু তদারকির ফলে এই ফলাফল অর্জন করা সম্ভব হয়েছে।

পুল শিক্ষক মালেকুজ্জাম, রশিদ আহমদ, নুরুল কবির, মোহাম্মদ কাশেমসহ অন্যান্য পুল শিক্ষকবৃন্দ জানান- চলতি বছরের ১৫জানুয়ারি রস্ক প্রকল্প পলিচালক হতে পুল শিক্ষকদের চুক্তি নবায়নের জন্য নিদের্শনা দেওয়া হলেও ট্রিনিং কো অর্ডিনেটর সাইফুল ইসলাম আগামী মাসে করবে, পরের মাসে করবে এভাবে বলে কালক্ষেপন করে আসছে দীর্ঘদীন যাবৎ।

অভিভাবকদের মতে, পুল শিক্ষকরা না থাকলে টিসি সাইফুল ইসলাম নিজের ইচ্ছেমত দুর্নীতি করতে পারবেন এই আশায় পুল শিক্ষক নবায়নে গড়িমশি হচ্ছে।

এছাড়াও কো অর্ডিনেটর সাইফুল ইসলাম যোগদানের পর থেকে আনন্দ স্কুল সমূহে নাজুক অবস্থা তৈরি হয়েছে। তিনি  আনন্দ স্কুলের কয়েকজন শিক্ষকদের মাধ্যমে শিশু শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ না দিয়ে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন।

করিমাঝিরি আনন্দ স্কুলের শিক্ষক মালেদা বেগম জানান- ২০১৭ সালের জুলাই মাস থেকে ২০১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসের উপবৃত্তির ১৩ হাজার ৩০০টাকা রস্ক কর্মকর্তা আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন।

কয়েকজন স্কুলের শিক্ষক জানান- প্রতিজন শিক্ষার্থীকে ১২০টাকা হারে ৬মাসে ৭২০টাকা উপবৃত্তি দেওয়ার কথা থাকলেও ৫০০টাকা প্রদান করে ২২০টাকা করে কর্তন করেছেন কো অর্ডিনেটর সাইফুল ইসলাম।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন নারী শিক্ষক বলেন, টাকা দিয়ে টিসিকে খুশি করতে হয়। আমরা তার প্রস্তাবে রাজী না হলে আমাদের বেতন, বোনাস, পোশাকের টাকা, শিক্ষা উপকরণ, উপবৃত্তি আটকে দেন।

অভিযোগের বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে আনন্দ স্কুলের কো অর্ডিনেটর সাইফুল ইসলাম বলেন- বিদায়ী ইউএনও মহোদয় অনুমোদন না দেওয়ায় পুল শিক্ষকদের নবায়ন করা যায়নি। তবে বর্তমান ইউএনও মহোদয়ের আন্তরিকতায় খুব শীঘ্রই হয়ে যাবে। আর করিমাঝিরি স্কুলে অভিযোগের কারণে উপবৃত্তির টাকাগুলো ব্যাংকে জমা রাখা হয়েছে। এদিকে যাতায়াত খরচের জন্য মাঝেমধ্যে কিছু টাকা কর্তন করার কথা স্বীকার করেন তিনি।

এই প্রসঙ্গে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাদিয়া আফরিন কচি বলেন, পুল শিক্ষকবৃন্দের নবায়ন না করার বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে রস্ক কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হয়েছে। আগামী মাসের মধ্যে বিষয়টি সমাধান হবে। এদিকে উপবৃত্তি, উপকরণের টাকা বিতরণে অনিয়ম হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন