দাবি আদায়ে রাঙামাটিতে ৫ বাঙালী সংগঠনের ডাকে চলছে সকাল-সন্ধ্যা অবরোধ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইনের সংশোধনী ও পার্বত্য ভূমি কমিশন বিরোধ নিস্পত্তি কমিশনের রবিবারের বৈঠক বাতিলের দাবিতে রাঙামাটিতে বাঙালীদের ৫টি সংগঠনের ডাকে সড়ক অবরোধ চলছে।
রবিবার ভোর থেকে অবরোধের সমর্থনে মাঠে নামে পার্বত্য নাগরিক পরিষদ, পার্বত্য বাঙালী ছাত্র পরিষদ, পার্বত্য গণপরিষদ, পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র ঐক্য পরিষদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম সম-অধিকার আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। রাঙামাটি শহরের একমাত্র বাহন অটোরিক্সা চলাচল বন্ধ থাকায় অবরোধ কার্যত হরতালে পরিনত হয়েছে। এ কারণে জনদূর্ভোগ বেড়েছে। এছাড়াও অবরোধের কারনে শহর থেকে ছেড়ে যায়নি অভ্যন্তরীন ও দুরপাল্লার কোন যানবাহন। শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে অবরোধ কর্মসূচী পালন করছে ওই সংগঠনের নেতাকর্মী ও সর্মথকরা। তবে যে কোন নাশকতা এড়াতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা। মোতায়ন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।
বাঙ্গালী সংগঠনগুলোর দাবি, সরকার পার্বত্য বাঙ্গালীদের দাবি উপেক্ষা করে একতরফাভাবে পার্বত্য ভূমি কমিশন আইন পাশ করেছে। এ আইনের মাধ্যমে পার্বত্য বাঙ্গালীরা তাদের ভূমির অধিকার হারাবে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের সার্বেভৌমত্ব হরাবে বলে তরা দাবি করেন। এমনতর আশঙ্কার পরও রবিবার রাঙ্গামাটিতে ভূমি কমিশনের ডাকা দ্বিতীয় বৈঠকের প্রতিবাদে গত বৃহষ্পতিবার পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত বাঙ্গালীদের আঞ্চলিক সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম সম-অধিকার আন্দোলন, পার্বত্য নাগরিক পরিষদ, পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ, পার্বত্য গণ পরিষদ ও পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র ঐক্য পরিষদ এ হরতালের ডাক দেয়।
এদিকে, কড়া অবরোধের মধ্যেও রাঙামাটি সার্কিট হাউজে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে ভূমি কমিশনের দ্বিতীয় বৈঠক। বৈঠকে কমিশন চেয়ারম্যান সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. আনোয়ারুল হক, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা, রাঙামাটির চাকমা সার্কেল চিফ রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের প্রতিনিধি অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মবিনুর রশিদ আমিন এবং কমিশনের সচিব রেজাউল করিম প্রমূখ উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১ আগষ্ট পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন (সংশোধন) আইনের খসড়া মন্ত্রীসভা নীতিগত অনুমোদন দেয়। এরপর ৬ অক্টোবর জাতীয় সংসদে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভুমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন-২০১৬ এর বিল পাস করা হয়। কোন পার্বত্য বাঙ্গালীকে কমিটিতে না রাখায় এবং নতুন করা কিছু সংশোধনীকে দেশের সংবিধান এবং স্বার্বভৌমত্ব বিরোধী আখ্যায়িত করে তা বাতিলের দাবিতে তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে হরতাল, বিক্ষোভ-মিছিল মানববন্ধনসহ তীব্র আন্দোলন আসছিল বাঙালীদের ৫টি সংগঠন। দাবি আদায়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে কয়েক দফা হরতাল-অবরোধ কর্মসূচীও পালন করে বাঙ্গালী সংগঠনগুলো।