জাতীয় সংহতি চুক্তি পর্যালোচনাকে স্বাগত জানিয়েছে ফিলিস্তিনের দলগুলো
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ফিলিস্তিনের ফাতাহ আন্দোলন গাজায় জাতীয় সংহতি চুক্তি খতিয়ে দেখতে প্রতিনিধি পাঠিয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। হামাস এই চুক্তি বাস্তবায়নকে ফিলিস্তিনের সকল দল ও জনগণের প্রাণের দাবি বলে মনে করে। হামাসের উচ্চ পদস্থ সদস্য ইসমায়িল রেদোয়ান তাই গাজায় ফাতাহ’র প্রতিনিধি দলের সফরকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, এই সফরের উদ্দেশ্য হলো অবরুদ্ধ গাজায় অবস্থানরত ফিলিস্তিনী দলগুলোর সাথে সংহতি চুক্তি বাস্তবায়নের ব্যাপারে আলাপ আলোচনা করা। ইসমায়িল রেদোয়ান আরও বলেন, হামাস ফিলিস্তিনের অন্যান্য দলের মতোই জাতীয় সংহতি ও ঐক্য প্রতিষ্ঠার যে-কোনো পদক্ষেপকে স্বাগত জানায়।
জেহাদে ইসলামি ফিলিস্তিনও এক বিবৃতিতে বলেছে, এই প্রতিনিধি দল জাতীয় সংহতির ব্যাপারে নতুন করে আলোচনা সম্পর্কে ফিলিস্তিনী দলগুলোর প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলবে। বিবৃতিতে ওই আলোচনার মূল বিষয়বস্তু হিসেবে বলা হয়েছে: স্বশাসন কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট ও সংসদ নির্বাচন, গাজায় সরকারি কমকর্তা কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা, গাজায় আট বছরের অবরোধের ইতি টানতে ইহুদিবাদী ইসরাইলের সাথে দীর্ঘ মেয়াদি যুদ্ধবিরতিতে যাওয়ার উপায় খুঁজে বের করা ইত্যাদি।
সাত বছর ধরে অভ্যন্তরিণ বিরোধের পর ফাতাহ আন্দোলন এবং হামাস ২৩ এপ্রিল ২০১৪তে জাতীয় সংহতি চুক্তি স্বাক্ষর করে। চুক্তি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত হয় জাতীয় ঐক্যের সরকার ৬মাসের জন্য সরকার চালাবে এবং তারপর স্বশাসন কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন, সংসদ নির্বাচন এবং জাতীয় পরিষদ নির্বাচন একইসাথে অনুষ্ঠিত হবে। যেহেতু ফাতাহ আন্দোলনের সাথে জাতীয় ঐক্য সরকারের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে সে কারণে ওই অঙ্গীকারগুলো খুব বেশি বাস্তবায়িত হয় নি। বরং স্বশাসন কর্তৃপক্ষ পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনের বিভিন্ন দলের কর্মীদের গ্রেফতার করে যা ছিল ফিলিস্তিনী দলগুলোর উদ্বেগের কারণ। ফিলিস্তিনের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মীদের গ্রেফতারের ঘটনা জাতীয় সংহতি চুক্তি বাস্তবায়নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
হামাসসহ অন্যান্য প্রতিরোধ আন্দোলন বহুবার স্বশাসন কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করেছে। তারা বলেছে ইসরাইলি সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে যোগসাজশে স্বশাসন কর্তৃপক্ষ ফিলিস্তিনী আন্দোলনগুলোর কর্মীদের গ্রেফতার করছে। তাদের এই ভূমিকা ইসরাইলের স্বার্থই রক্ষা করছে যা জাতীয় সংহতি চুক্তির সম্পূর্ণ পরিপন্থী। বিভিন্ন রিপোর্ট অনুযায়ী বর্তমানে জর্দান নদীর পশ্চিম তীরে স্বশাসন কর্তৃপক্ষের কারাগারে বিশ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনী বন্দি রয়েছে।
ফিলিস্তিনের দলগুলো স্বশাসন কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা বাহিনীর এই ইসরাইলি স্বার্থ রক্ষাকারী অপকর্মকে ইসরাইলের সেবা বলে উল্লেখ করে বলেছে, এই সেবা ফিলিস্তিনী জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার সাথে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল। ফিলিস্তিনী দলগুলোর কর্মকর্তারা বলছেন, ইসরাইলের সাথে নিরাপত্তা বিষয়ে বোঝাপড়া ফিলিস্তিনীদের জন্য বিপজ্জনক। এভাবে ইসরাইলের সাথে স্বশাসন কর্তৃপক্ষের বোঝাপড়া চলতে থাকলে ফিলিস্তিন প্রসঙ্গ এক সময় হারিয়ে যাবার আশঙ্কা রয়েছে।-আইআরআইবি।