জাতিসংঘের মিয়ানমারবিরোধী খসড়া প্রস্তাব প্রস্তুত, উত্থাপনে বাধা দিতে পারে চীন

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়াতে একটি খসড়া প্রস্তাব তৈরি করেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি ওই খসড়া প্রস্তাবের একটি অনুলিপি সংগ্রহে সমর্থ হয়েছে। তারা জানিয়েছে, প্রস্তাবে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার মতো শক্ত কোনও পদক্ষেপের কথা বলা হয়নি। তবে  রাখাইন প্রদেশে অবিলম্বে সেনা অভিযান বন্ধ এবং রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, খসড়া প্রস্তাবটিতে আরাকান স্যালভেশন আর্মি-আরসার সহিংস কর্মকাণ্ডের নিন্দাও জানানো হয়েছে।

এএফপি তাদের বুধবারের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, নিরাপত্তা পরিষদের প্রভাবশালী দুই সদস্য যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স খসড়া প্রস্তাবটি তৈরি করেছে। ছয় পৃষ্ঠার খসড়ায় মিয়ানমারের প্রতি কোনও ধরনের অবরোধ অথবা নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা উল্লেখ করা হয়নি। তবে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনে দেশটির সরকারের প্রতি বেশ কিছু স্পষ্ট দাবি তুলে ধরা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পরিষদের এক কূটনীতিক বলেছেন, চীনের তীব্র বিরোধিতা সত্ত্বেও উদ্ভূত রোহিঙ্গা সংকটে এই খসড়া প্রস্তাবই হবে জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তাদের দেওয়া প্রথম আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া। তারপরও এ বিষয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর ব্যাপারে তারা আশাবাদী।

নিরাপত্তা পরিষদের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কূটনীতিককে উদ্ধৃত করে এএফপি জানিয়েছে চীনের বাধার মুখে পড়ে ওই খসড়া প্রস্তাব। ওই কূটনীতিক এএফপিকে জানিয়েছেন, “চীন যথার্থ অবস্থানে নেই “। “তারা চায় আমরা এই বিষয়ে কিছুই  না বলি, কিছুই না বলি।” কূটনীতিকরা এএফপিকে জানিয়েছেন, চীন নিজেও চায় মিয়ানমার রোহিঙ্গা সংকটকে আমলে নিক। তারা সহিংসতার অবসানও চায়। তবে এই প্রসঙ্গে মিয়ানমারের সঙ্গে তারা দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পক্ষে।

১৩ অক্টোবর (শুক্রবার) নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে ৩টি বিষয়ে ঐকমত্য হলেও মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কোনও প্রস্তাব আনার ব্যাপারে ইতিবাচক আলোচনা হয়নি। কূটনৈতিক সূত্রকে উদ্ধৃত করে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সে সময় জানায়, ভেটো ক্ষমতাসম্পন্ন চীন আর রাশিয়ার বিরোধিতার কারণে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা সংকট নিরসনে কোনও প্রস্তাব আনার ব্যাপারে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়। আগেও দুই দফায় চীন-রাশিয়ার বিরোধিতার কারণে মিয়ানমারবিরোধী প্রস্তাব আনতে ব্যর্থ হয় নিরাপত্তা পরিষদ।

ক’দিন আগে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব ও আনান কমিশনের প্রধান কফি আনান পৃথিবীর সবচেয়ে বিপন্ন জনগোষ্ঠীর ওই শরণার্থীদের প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে নিরাপত্তা পরিষদকে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টির আহ্বান জানান।  চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে তার নেতৃত্বাধীন কমিশন রোহিঙ্গা ইস্যু সমাধানে সদস্য দেশগুলোর কাছে এমন একটি প্রস্তাব আনার আহ্বান জানান, যা মিয়ানমারের ‘সরকারকে সত্যিকার অর্থেই মর্যাদা ও নিরাপত্তার সঙ্গে শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেওয়ার পরিবেশ সৃষ্টির পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করে’।

 

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন