চকরিয়ায় বোনকে উত্যক্তের প্রতিবাদ করায় ভাইকে মারধর
চকরিয়া প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের চকরিয়ায় ছোটবোনকে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে প্রতিনিয়ত উত্যক্ত, কু-প্রস্তাব দেওয়ার প্রতিবাদ করায় ওই ছাত্রীর বড়ভাইকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ব্যাপক পিটিয়েছে দুই বখাটে। এ ঘটনার শিকার ওই ছাত্রীর ভাই বাদী হয়ে দুই বখাটের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে শুক্রবার দুপুরে।
অভিযুক্ত দুই বখাটের নাম রাসেল চন্দ্র সুশীল (২৪)। সে উপজেলার কৈয়ারবিল ইউনিয়নের সুশীল পাড়ার মৃত সাধন চন্দ্র সুশীলের ছেলে। অপরজনের নাম মো. রিয়াদ (২৫)। সে পৌরসভার বাঁশঘাটা এলাকার মোহাম্মদ মধুর ছেলে। দুইজনই চকরিয়া কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিয়ে ইয়াবা ব্যবসা, বখাটেপনাসহ এলাকায় নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড সংঘটিত করে আসছিল।
পৌরসভার ভরামুহুরী গ্রামের স্বপন কান্তি দে’র পুত্র রুবেল কান্তি দে অভিযোগ করেন, তার ছোটবোন লিজা রাণী দে পৌরশহরের বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে প্রতিনিয়ত কু-প্রস্তাব ও উত্যক্ত করে আসছিল দুই বখাটে। চিরিঙ্গাস্থ প্রাইভেট শিক্ষকের কাছ থেকে বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বোনকে রিক্সায় করে ভরামুহুরীস্থ বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় তাদের পিছু নেয় মোটর সাইকেলআরোহী বখাটে রাসেল ও রিয়াদ। একপর্যায়ে লিজাকে বাড়িতে রেখে বের হয়ে এর প্রতিবাদ করলে দুই বখাটে তাকে (রুবেল) জোরপূর্বক মোটর সাইকেলে তুলে বালিকা বিদ্যালয় সড়কের সামনের ওশান সিটি মার্কেটের দোতলায় তুলে একটি কক্ষে নিয়ে যায়। এর পর রুবেলকে আটকে রেখে ব্যাপক মারধর করে। কেড়ে নেয় সাড়ে ১৩ হাজার টাকামূল্যের একটি সামসাং মোবাইল ও নগদ ১১ হাজার ২৫০ টাকা। প্রায় দুইঘন্টা ধরে রুবেলকে মারধর করার পর ছেড়ে দেয়। মারধরের সময় রুবেলের বাম চোখেও আঘাত লাগে। এতে সে অসুস্থ হয়ে পড়লে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়।
রুবেল অভিযোগ করেন, ওই রাতের ঘটনাটি কাউকে বললে তার বোন লিজাকে অপহরণ করারও হুমকি দেয় বখাটে রাসেল ও রিয়াদ। এতে বোনের পড়ালেখার ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন পরিবার সদস্যরা।
রুবেল বলেন, ‘এ ঘটনার পর রাসেল ও রিয়াদ মুঠোফোনেও হুমকি-ধামকি দিচ্ছে থানায় অভিযোগ করায়। এমনকি দুই বখাটেকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া যুবলীগ নেতা তপনসহ স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তিও থানায় দেওয়া অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দিচ্ছেন। এসব বিষয় পুলিশকে অবহিত করেছি।’
চকরিয়া থানার ওসি মো. জহিরুল ইসলাম খান বলেন, ‘স্কুলছাত্রীকে উত্যক্ত ও ভাইকে মারধর করার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে তদন্ত করার জন্য একজন অফিসারকে দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পেলে মামলা নেওয়া হবে।’