চকরিয়ায় বাণিজ্যিক মার্কেটে অগ্নিকাণ্ড: গলিপথ বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে ক্রেতারা
চকরিয়া প্রতিনিধি :
চকরিয়া পৌর শহরের বাণিজ্যিক মার্কেটের ভেতরে একটি দোকানের ডেকোরেশনের কাজ করতে গিয়ে ময়লা আবর্জনার স্তুপে ফেলে দেওয়া সিগেরেটের অবশিষ্ট ফিল্টার থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। অগ্নিকাণ্ডে বড় ধরণের কোন ক্ষয়ক্ষতি না হলেও মার্কেটের ভেতরে বিষাক্ত কালো ধোঁয়ার কারণে সাধারণ ক্রেতারা দিশেহারা হয়ে পড়েন। গলিপথ বন্ধ থাকায় ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। ১৯ এপ্রিল সকাল ১১টার দিকে আনোয়ার শপিং কমপ্লেক্স সংলগ্ন মার্কেটে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় কয়েকটি মার্কেট মালিক ও ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, চকরিয়া পৌর শহরে কোন ধরণের নিয়ম-নীতি না মেনে এবং পৌর ইমারত আইন লঙ্গণ করে যত্র-তত্র গড়ে উঠেছে বহু বাণিজ্যিক মার্কেট। নিয়মানুযায়ী সুপ্রস্থ গলিপথ, পার্কিং, সৌচাগার নির্মাণসহ বিভিন্ন বিধি বিধান থাকলেও বাণিজ্যিক দিক বিবেচনায় কতিপয় মহল নিজেরে উদ্যোগে কিংবা ডেভেলাপার কোম্পানী নিয়োগ করে একের পর একে গড়ে তোলছেন বহুতল ভবন-কিংবা বাণিজ্যিক স্থাপনা।
এর মধ্যে পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের মেইড রোড লাগোয়া চিরিংগা ষ্টেশনে আনোয়ার শপিং কমপ্লেক্স, হাজেরা শপিং কমপ্লেক্স, আবদুল মতলব শপিং কমপ্লেক্স, আব্বাস প্লাজা, ইউনুছ প্লাজা, সুপার মার্কেট, নিউ সুপার মার্কেট, ওয়েষ্টার্ণ প্লাজ, আমেনা শপিং সেন্টার,নিউ মার্কেটসহ অসংখ্য বাণিজ্যিক ভবন। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পথচারীরা জানিয়েছেন, মার্কেটের সাধারণ ক্রেতাদের চলাচলের সহজ পথ বন্ধ করে মার্কেট মালিক জনৈক আনোয়ার হোসেন গং তাদের মার্কেট লাগোয়া পাকা দেয়াল নির্মাণ করার ফলে ১৯ এপ্রিল সকালে সিগেরেটের আগুন থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হলে পুরো মার্কেটে অন্ধকারাচ্ছন্ন অবস্থায় সাধারণ মানুষ দিক বেদিক ছুটাছুটি করে এক ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়।
এমনকি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় সড়ক দিয়ে দুটি গলিপথ থাকলেও তা বন্ধ থাকায় মানুষ কোথাও গিয়ে একটু নিঃশ্বাস নেওয়ার সুযোগটিও পায়নি। তারা জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে বড় কোন অগ্নিকান্ড কিংবা অন্যকোন দুর্ঘটনা হলে মার্কেটের ভেতরে অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারাবে। মার্কেটের এক ব্যবসায়ী পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের শমসেরপাড়ার আবুল হাসেমের পুত্র আবদুল গফুর জানিয়েছেন, মার্কেটের ভেতরে বন্ধ করে দেওয়া গলিপথ উন্মুক্ত করে দিতে ইতিপূর্বে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চকরিয়া বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বর্তমানে ওই অভিযোগটি পৌরসভার মেয়র তদন্ত করছেন।
পৌর ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জানিয়েছেন, অভিযুক্ত মার্কেট মালিকদেরকে বন্ধ করে দেওয়া গলিপথ খোলে দিতে একাধিকবার বলেছেন। তা অমান্য করে উল্টো গলি পথের কথা বলে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করছেন।
এ প্রসঙ্গে পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী জানিয়েছেন, মার্কেট মালিকদের নিয়ে তিনবার বৈঠক হয়েছে। তিনি সরেজমিনে গিয়ে খুব দ্রুত সময়ে তা সমাধান করে দেবেন।
চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, মার্কেটের ভেতরে অগ্নিকাণ্ডস্থ পরিদর্শন করতে পুলিশ পাঠিয়েছেন। পৌর মেয়রের কাছে তদন্তাধীন অভিযোগটি সুরহা হয়ে গেলে তিনি সরেজমিনে গিয়ে মার্কেটের গলিপথ খোলে দেবেন।