খাগড়াছড়ির পর্যটন: সম্ভাবনা থাকলেও সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে পূরণ করতে পারছে না পর্যটকদের প্রত্যাশা

Khagrachari Porjotan Picture 26-09-2013
এইচ এম প্রফুল্ল,খাগড়াছড়ি:
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার সর্বত্র ছড়িয়ে রয়েছে নয়নাভিরাম নানান দৃশ্য,বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর বৈচিত্র্যময় জীবনধারা ও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য। এখানকার পাহাড়-পর্বত, নদী-প্রকৃতি ও নৃ-জাতিগোষ্ঠিীর জীবন সংস্কৃতির প্রতি আকৃষ্ট করবে যে কোনো পর্যটককেই। তাইতো এখন খাগড়াছড়িতে পর্যটকদের উপচে পড়া ভীড়। কিন্তু পাহাড়িয়া জনপদ হিসেবে সময় উপযোগী অবকাঠামো-যোগাযোগ এবং ব্যবস্থাপনার অভাবে পূরণ হচ্ছে না, পর্যটকদের প্রত্যাশা। ফলে প্রতিবছর নতুন নতুন পর্যটকের সংখ্যা বাড়লেও কর্তৃপক্ষের নজর নেই, এই খাতে।
খাগড়াছড়ি শহরের অদূরে পাহাড়চূড়ায় আলুটিলা। যার উচ্চতা সমতল থেকে প্রায় ২৬ শ ফুট উপরে। আলুটিলার পার্বত্য চূড়ায় দাঁড়িয়ে ৬ কিলোমিটার দুরের খাগড়াছড়ি শহরের দৃশ্য সত্যিই উপভোগ করার মত। আলুটিলায় রয়েছে রহস্যময় এক সুড়ঙ্গ। প্রায় সাড়ে দেড়’শ ফুট নিচে পাহাড়ের তলদেশে  এ সুড়ঙ্গের দৈর্ঘ্য প্রায় ৩০ ফুট। প্রতিদিন পর্যটকরা এই রহস্যময় সুড়ঙ্গ দেখতে আসেন। অন্ধকার সুড়ঙ্গে  মশাল জ্বালিয়ে প্রবেশ করতে  হয়। দিয়াশলাই সঙ্গে নিতে ভূলবেন না কিন্তু।

শুধু তাই নয়, দীঘিনালার বিশালাকার “তৈদু” জলপ্রপাত, পানছড়ির অরণ্য কুটিরের প্রায় ১’শ ফুট উঁচু বুদ্ধমুর্তি, খাগড়াছড়ি সদরের  হৃদয় মেম্বার পাড়ায় রয়েছে প্রাকৃতিক ঝর্ণা ‘রিছাং ঝর্ণা’ এবং জেলা পরিষদ পার্কের ঝুলন্ত সেতু; যেকোন পর্যটকের মন টানতে যথেষ্ট।
এছাড়া জেলার সীমান্ত শহর রামগড়ে তৎকালীন  বাংলাদেশ রাইফেলস অথাৎ বিজিবি’র ‘ জম্ম স্থান’, কৃত্রিম লেক-ঝুলন্ত সেতু’র পাশাপাশি অসংখ্য নান্দনিক বৌদ্ধ বিহার ঘুরে বেড়ানোর অনন্য এক সুযোগ।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে  খাগড়াছড়িতে আসা পর্যটকদের  থাকার-খাওয়ার রয়েছে পর্যটন মোটেল, শৈল সুবর্না, ইকোছড়ি ও হেরিটেজ পার্ক ছাড়াও রয়েছে সুস্বাদু খাবারের জন্য মান সম্মত হোটেল- রেষ্টুরেন্ট।
খাগড়াছড়ি পর্যটন মোটেলের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা, জানান,খাগড়াছড়িতে পর্যটকের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। কিন্তু সে অনুয়ায়ী সুযোগ-সুবিধা বাড়েনি।

খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার শেখ মো: মিজানুর রহমান জানান, বর্তমানে জেলার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো। পর্যটকদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। পর্যটকদের অবাধ চলাফেরায় যেন সমস্যা না হয়, তাও দেখা হচ্ছে।  
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মোঃ মাসুদ করিম নানা  সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন,প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের হাতছানিতে দেশ-বিদেশের পর্যটকরা আসতে পারেন খাগড়াছড়ি। আলুটিলা, রিছাংঝর্না, তৈদুছড়া ঝরনার মত অসংখ্য পর্যটন স্পট ঘুরে বেড়াতে পারেন তারা।

বছরের অধিকাংশ সময়-ই খাগড়াছড়িতে পযটকদের আনাগোনা থাকলেও শীত মৌসুমেই মুলতঃ বেশী সংখ্যক ভ্রমণ পিপাসুদের উপস্থিতি বাড়ে। এসময় সরকারী-বেসরকারী মোটেল-হোটেলগুলো ব্যস্ত হয়ে উঠে, অতিথিদেও সেবায়।
কিন্তু বছরের পর বছর একই ধরনের অব্যস্থাপনার ফলে পর্যটকরা অনেক সময়-ই বিড়ম্বনার মুখে পড়েন। এই অবস্থায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি পর্যটন স্পটগুলোর উন্নয়নে পদক্ষেপ নেয় তাহলে পাল্টে জেলাবাসীর জীবনমানও।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন