কুতুবদিয়ায় একমাসে পানিতে ডুবে ১৩ শিশুর মৃত্যু

কুতুবদিয়া প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় কোনভাবেই রোধ হচ্ছেনা পানি ডুবির ঘটনা। গত এক মাসে ১৫টি পানি ডুবির ঘটনা ঘটেছে। গত মে মাস থেকে ৪ জুন পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে পানিতে ডুবে ১৩ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। প্রাণে বেঁচে গেছে ২ শিশু।

হাসপাতাল ও বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, ১লা মে উত্তর ধূরুং নয়া পাড়ায় জুনাইদ(৩), ২ মে দক্ষিণ ধুরুং শাহ আলম সিকদার পাড়ায় মানিক(৫), ৩ মেপূর্ব আলী আকবর ডেইলে অর্ক (৫), ৪ মে লেমশীখালীতে মনি (২), ১ মে দক্ষিণ ধূরুং পেঁচার পাড়ায় নাঈমা, ১৭ মে উত্তর বড়ঘোপে রাকিব (৩), ২৫ মে লেমশীখালী মুন্সি মিয়াজির পাড়ায় একই সাথে তানজিয়া ও নিস্পা নামের ৫ বছরের দু‘শিশু পুকুরে ডুবে মারা যায়। ১৮ মে দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়নে ফাতেমা নামের একটি শিশু পুকুরে ডুবে মারা যায়।

২৭ মে উত্তর ধূরুং মনু সিকদার পাড়ায় নাফছি নামের দেড় বছরের এক শিশু মারা যায় পানিতে ডুবে। ১লা জুন আকবর বলী পাড়ায়  মো. মারুফ(৮) ও ২ জুন বড়ঘোপ মিয়ার পাড়ায় রবিউল হোসেন নামে দেড় বছরের এক শিশু  পুকুরে ডুবে মারা যায়। ৪ জুন বড়ঘোপ বদাইয়া পাড়ায় তাসরুফা নামের এক বছরের শিশু মারা গেছে।

এ ছাড়া গত ৩০ এপ্রিল কৈয়ারবিল বিন্দা পাড়ায় ও ৩১ মে দক্ষিণ ধুরুং পারভীন নামের দু‘টি শিশু পুকুরে ডুবলে পরে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতারে ভর্তি করা হয়।

গত বছর (২০১৭) অন্তত: ৮০ শিশুর মৃত্যু হয়েছে পানিতে ডুবে। শুধু এপ্রিল মাসেই পানি ডুবির ঘটনায় ১০ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। যে কারণে সাধারণত: এপ্রিল-মে মাসে উপজেলায় সবচেয়ে বেশি পানি ডুবির ঘটনা ঘটে থাকে। তবে এবার জুন মাসেও ৪ দিনে ৩ শিশু মারা গেছে পুকুরে ডুবে। কোন ভাবেই প্রতিরোধ করা যাচ্ছেনা পানি ডুবির ঘটনা।

এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। উপজেরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইপিআই টেকনিশিয়ান সৈয়দ কামরুল হাসান বলেন, দ্বীপের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মায়েদের সচেতনার অভাবেই এতো পানি ডুবির ঘটনা। যা ক্রমেই বেড়েই চলেছে। কোন প্রতিকার হচ্ছেনা। জনসচেতনা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি।

দক্ষিণ ধুরুং ইউপি চেয়ারম্যান ছৈয়দ আহমদ চৌধুরী বরেন, পানি ডুবির ঘটনায় মিশু মৃত্যুর হার অন্যান্য জায়গার চেয়ে কুতুবদিয়ায় বেশি। যত্র-তত্র পুকুর বা নালা তৈরি করা ও অভিভাবকদের সচেতনার অভাবেই এটি বৃদ্ধি পাচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকতা ডা. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, পানি ডুবিতে শিশু মৃত্যুর হার বেড়েছে। বাড়ির আঙ্গিনায় পুকুর বা ডোবায় শিশুরা যাতে সহজে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য প্রতিটি পুকুরে ঘেরা বেড়া দেয়া জরুরী। সেই সাথে মা-বাবাদের আরও সতর্ক হওয়াও জরুরী বলে তিনি মনে করেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন