কাপ্তাই উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সন্ধ্যার পর অসামাজিক কার্যকলাপ ও মাদকের ভয়াল থাবা

কাপ্তাই প্রতিনিধি:

কাপ্তাই উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সন্ধ্যা নামলেই শুরু হয় অসামাজিক কার্যকলাপ ও মাদকের ভয়াল থাবা। প্রশাসনের অভিযানে বেরিয়ে আসছে নাজানা অনেক তথ্য ।

কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনা মিশন এলাকা ও রাইখালী থেকে উপজেলার বিভিন্ন গোপন আস্তানা, নিরাপদ হিসাবে ব্যবহৃত স্কুল ও কলেজ পরিত্যাক্ত জায়গায় প্রতিনিয়ত মাদক, ইয়াবা, অসামাজিক কার্যকলাপসহ বিভিন্ন অপরাধ স্বর্গরাজ্যে পরিনত হয়েছে।

চলতি (জুন) মাসে উপজেলা প্রশাসন ও কাপ্তাই আইন শৃঙ্খলা বাহিনী গোপন সংবাদের ভিত্তিত্বে  ৮/৯জনকে মাদক সেবন, স্কুল-কলেজের মধ্যে অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়েছে। কাপ্তাইয়ে প্রায় ১৫/২০টি স্পটে প্রতিনিয়ত মাদক সেবন, কেনা বেচা ও অসামাজিক কার্যকলাপ করার অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগে জানাযায় বিভিন্ন চালক পাশ্ববর্তী উপজেলা থেকে বাহক হিসাবে কাপ্তাইয়ের বিভিন্ন পয়েন্টে মাদক পৌছে দিচ্ছে। এবং বিক্রয়কারীরা তা এলাকায় ছড়িয়ে দিয়ে উঠতি বয়সের তরুনের নিকট চরা দামে বিক্রয় করে রাতা-রাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছে পরিনত হচ্ছে। চলতি জুন মাসে উপজেলা প্রশাসন প্রায় ৫/৭জন মাদক সেবনকারীকে বিভিন্ন মেয়াদে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে সাজা প্রদান করেছে।

উপজেলা প্রশাসন গত ২১ জুন চন্দ্রঘোনা বিএম প্রাইমারি স্কুলে গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে বিদ্যালয়ের একটি কক্ষ থেকে মাদক সেবন, ইয়াবা ক্রয়-বিক্রয়, যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট, কনডমসহ বিভিন্ন অসামাজিক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে মালামালসহ নৈশ্য প্রহরী শফিকুল ইসলামকে আটক করে ৬ মাসের সাজা প্রদান করা হয়।

অভিযানকারী উপজেলা প্রশাসন ও কাপ্তাই থানা ইনচার্জ বলেন, আটক যুবকের স্বীকারক্তি মোতাবেক জানাযায় দীর্ঘ এক বছর যাবত বিদ্যালয়ের কক্ষে সন্ধ্যার পর বিভিন্ন অসামাজিক কার্যক্রম মাদক সেবন, ক্রয় বিক্রয় করা হচ্ছে। সর্ব শেষ  গত ২৩ জুন গভীর রাতে কর্নফুলী ডিগ্রি কলেজের ডরমেটরি কক্ষে স্থানীয় যুবক শেখ ফরিদ নামে চট্রগ্রাম থেকে ২জন মহিলাকে ভাড়া করে এনে অসামাজিক কার্যকলাপ করার দায়ে উপজেলা প্রশাসন ও কাপ্তাই থানা পুলিশের হাতে আটক হয়। তাদের ৩ মাস ও একমাস করে সাজা প্রদান করা হয়। সচেতন নাগরিকরা অভিযোগ করেন প্রশাসনের  অন্তরালে এ ধরনের অনেক স্কুল, কলেজের পরিত্যাক্ত জায়গায় সন্ধ্যার পর বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রম চলছে। সঠিক নজরদারি করা হলে এদের থলের বিড়াল বের হয়ে আসবে বলে মন্তব্য করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ রুহুল আমিন বলেন, অপরাধি যেই হোক তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কাপ্তাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)সৈয়দ মোহাম্মদ নুর বলেন, আমরা অপরাধীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সে আছি। যেখানে যে অপরাধের খবর পাচ্ছি অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করছি। এব্যাপারে কোন ছাড় দেওয়া হবেনা।

এদিকে ২৪ জুন কাপ্তাই উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচার বিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে র‌্যালি ও মানববন্ধন করা হয়। এবং মাদক ও অপরাধ থেকে সকলকে দুরে থাকার আহ্বান জানান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন