কক্সবাজারে সওজ’র জমি দখলে নিল ক্ষমতাসীনরা

দখল

স্টাফ রিপোর্টার:
কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের অর্ধশত বছরের দখলীয় জমি দিনদুপুরে দখল করে নিল কক্সবাজার জেলা পরিষদ প্রশাসক মোস্তাক আহমদ চৌধুরীর নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা। এ সময় সেখানে থাকা বসতবাড়ীর বেশ কিছু মূল্যবান আসবাবপত্র ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে প্রকাশ্যে এ দখল প্রক্রিয়া চলে। তবে দখলকৃত জমি ক্ষমতাসীনরা নিজেদের দাবী করলেও তা অস্বীকার করেছে সড়ক ও জনপথ কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং ক্ষমতাসীনরা পরস্পর মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, মহিলালীগসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের স্থানীয় শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে সরকারী জমি দখলে নেয়া হয়। এ সময় জেলা প্রশাসনের এক নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আহমদ আলী এবং থানার একদল পুলিশও উপস্থিত ছিল বলে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মচারীরা জানান।

কক্সবাজার সড়ক ও জনপদ বিভাগ অফিস সুত্র জানিয়েছে, ১৯৬৪ সালে এল.এ মামলা নং- ৪৭/৬৩/৬৪ মুলে জেলা প্রশাসন থেকে এ জমি অধিগ্রহণ করে সড়ক ও জনপদ বিভাগ। ইতিমধ্যে একটি পক্ষ ওই জমি নিজেদের দাবী করে নিম্ন আদালতে মামলা করলে আদালত ওই মামলা খারিজ করে দেয়। পরে গেল ৬ জানুয়ারী জেলা জজ আদালতে আরেকটি মামলা ঠুকে দেয় একই পক্ষ। এই মামলার রায় তাদের পক্ষে যায়। মূলত জেলা জজ আদালতের দেয়া রায়কে পুঁজি করে শুধুমাত্র একটি মেমো দেখিয়ে সরকারী খাস খতিয়ানের এ জমি দখলে নামে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা।

এ দিকে জেলা জজ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ৫ জুন উচ্চ আদালতে আপিল করে কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগ। মামলা নং-এইস,সি/আর-১৬১/১৪(সল-২)-৪৭৪। মামলাটি এখন বিচারের জন্য অপেক্ষমান। এ সময়েই বিনা নোটিশে লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে সরকারী এ জমি দখল করে নেয়া হয়।

এ বিষয়ে দখলকালে উপস্থিত জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আহমেদ আলীর বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ’আমি কাউকে জমি দখলে সগযোগিতা করতে যাইনি। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় সেখানে গিয়েছিলাম।’  

এ বিষয়ে দখলদার জেলা পরিষদ প্রশাসক মোস্তাক আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘এই জমি ৭০ বছর ধরে অবৈধ দখলে ছিল। জমি উদ্ধারে আদালতে মামলা দায়ের করি। অবশেষে আদালতের নির্দেশে সরকারী প্রশাসনের সহায়তায় জমি দখল করা হয়। এ জন্য প্রশাসন ও সরকারীদলের নেতারাসহ সকলকে ধন্যবাদও জানান তিনি।

সড়ক ওজনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কে. এম নুর-ই আলম বলেন, ‘বিনা নোটিশে বাহুবল ও লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে সরকারী জমি দখল করে নেয়া হয়েছে। সেখানে থাকা আমাদের কর্মচারীদের বাসাবাড়ী ভাঙচুর ও অনেক মূল্যবান জিনিসপত্র লুটপাট করা হয়েছে। আগে আমাদের কোন ধরণের নির্দেশনাও দেয়া হয়নি।’ তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশ থাকলে প্রশাসনের লোকজনই উচ্ছেদ অভিযান করার কথা। কিন্তু দলীয় লোকজন দিয়ে এভাবে সরকারী জমি দখল নতুন বর্বরতা আর বিছুই নয়। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিন বলেন, অভিযানের ব্যাপারে আমি অবগত নই। তবে আদালতের নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা অবনতি হওয়ার আশঙ্কায় ম্যাজিষ্ট্রেট পাঠানো হয়েছিল।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন