উপজেলা পরিষদ নির্বাচন, প্রস্তুত পেকুয়া

পেকুয়া প্রতিনিধি:

রবিবার তৃতীয় ধাপে সারাদেশের মত পেকুয়ায়ও অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। পেকুয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৪০টি কেন্দ্রে ২৫০টি বুথে মোট ১ লাখ ৬ হাজার ২৮৯ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ৫৫ হাজার ৬শত ৩৩জন। মহিলা ভোটার সংখ্যা ৫০ হাজার ৬শ ৫৬ জন।

শনিবার কেন্দ্রে কেন্দ্রে ব্যলট বক্স, ব্যলট পেপার সহ নির্বাচনে ব্যবহৃত যাবতীয় মালামাল পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। পেকুয়া উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, ইতিমধ্যে ৭ ইউনিয়নের ৪০টি কেন্দ্রের জন্য প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং, পোলিং এজেন্ট, আনসার সহ মোট ৭৯০ জন কর্মকর্তার নিয়োগ চুড়ান্ত করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, পেকুয়া উপজেলা নির্বাচনের দায়িত্বে একজন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ৭জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহ সার্বিক দায়িত্বে এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্বে যারা রয়েছেন তারা হলেন, কক্সবাজার জেলা সহকারী কমিশনার মাখন চন্দ্র সূত্রধর পেকুয়া সদর ইউনিয়নে, বান্দরবানের সহকারী কমিশনার রতন কুমার অধিকারী বারবাকিয়া ইউনিয়নে, খাগড়াছড়ির নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট শ্যামানন্দ কুন্ডু শিলখালী ইউনিয়নে, বান্দরবানের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইন টইটং ইউনিয়নে, রাঙ্গামাটির সহকারী কমিশনার মো: ইসলাম উদ্দিন রাজাখালী ইউনিয়নে, খাগড়াছড়ির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নয়ন কুমার সাহা মগনামা ইউনিয়নে এবং খাগড়াছড়ির সহকারী কমিশনার আশরাফুল আলম রাসেল উজানটিয়া ইউনিয়নে দায়িত্ব পালন করবেন।

এছাড়া ৫ প্লাটুন বিজিবি, ১ প্লাটুন র‌্যাব, ১০ টি পুলিশের মোবাইল টিম নিয়মিত টহল দেবেন জানান পেকুয়া থানার ওসি জাকির হোসেন ভূইয়া। তাছাড়া প্রতিটি কেন্দ্রে দুইজন অস্ত্রধারীসহ ১২জন আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। এদিকে স্থানীয় প্রশাসন উপজেলার টইটং ও মগনামা ইউনিয়নকে ঝুঁকিপুর্ণ ইউনিয়ন বলে চিহ্নিত করেছেন।

পেকুয়া উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার শহিদুল ইসলাম জানান, ভোট সম্পূর্ণ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ব্যলটে হাত দিলে প্রয়োজনে গুলি করার নির্দশনাও রয়েছে।

পেকুয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে ৬ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বি করছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেম (নৌকা), সর্বদলীয় ব্যানারে স্বতন্ত্র প্রার্থী কক্সবাজার জেলা আ’লীগের সদস্য এস.এম গিয়াস উদ্দিন, (আনারস) ও নাগরিক কমিটির ব্যানারে স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম (দোয়াত কলম)।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন উম্মে কুলসুম মিনু (ফুটবল), সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নাজনীন ফারজানা লাভলী (হাঁস) ও হাছিনা বেগম (প্রজাপতি)।

পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন সাজ্জাদুল ইসলাম (টিউবওয়েল), মেহেদী হাসান ফরায়েজী (বই), আজিজুল হক (চশমা), কায়সার উদ্দিন (উড়োজাহাজ), নাছির উদ্দিন বাদশা (মাইক) ও মেহের আলী (তালা)। এদের মধ্যে কে পাচ্ছেন উপজেলার এ মুকুটটি। এমন চিন্তা সাধারণ ভোটারদের।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পেকুয়ায় এবার তিন হেভিওয়েট প্রার্থী ভোট যুদ্ধে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। যদিবা তিন হেভিওয়েট প্রার্থীই আ’লীগেরই। তবে বর্তমান উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আ’লীগের প্রার্থীর প্রতিদ্বন্ধি আ’লীগের ২ বিদ্রোহী প্রার্থী। উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেম দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। নৌকা প্রতিক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনি। বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন কক্সবাজার জেলা আ’লীগের সদস্য এস.এম গিয়াস উদ্দিন। তিনি ভোট করছেন আনারস প্রতিক নিয়ে। অপর প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম। তিনি লড়ছেন দোয়াত কলম প্রতিক নিয়ে। তারা দু’জনই নাগরিক কমিটির মনোনীত ও জনগণের মনোনীত ব্যানারে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। তবে এবার নির্বাচনে নৌকা প্রার্থীর সাথে লড়াই হবে দু’বিদ্রোহী প্রার্থীর মধ্যে। আবুল কাসেম দলীয় প্রতিক নৌকা নিয়ে ভোট করলেও নির্বাচনী মাঠে তার অবস্থান সন্তোষজনক কম।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নিরীহ মানুষ, বিএনপি-জামায়াতের হাজার হাজার নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দিয়ে হয়রানি,জেল জুলুম, মামলা দিয়ে হয়রানির হুমকি দিয়ে টাকা আদায় সহ নানান অভিযোগে চাদর জড়িয়ে আছে তার বিরুদ্ধে। এসবের কারণে ভোটে একটি বড় ধাক্কা লাগতে পারে বলে সচেতনমহল দাবি করছেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন