ইউপিডিএফের সশস্ত্র সদস্যের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে পাহাড়কে অশান্ত করার চেষ্টা

romel

কাজী হাফিজ, রাঙ্গামাটি থেকে:

ইউপিডিএফ’র (ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট) সশস্ত্র গ্রুপের এক সদস্যের মৃত্যুর পর পাহাড়ি জনপদকে অশান্ত করার অপচেষ্টা চলছে। এই ঘটনায় গত কয়েকদিনে রাঙ্গামাটিতে বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর ও সড়ক অবরোধের মতো ঘটনা ঘটেছে।

আজ রবিবারও ইউপিডিএফ’র পক্ষ থেকে সড়ক অবোরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়। কর্মসূচি নিয়ে রাঙ্গামাটি শহরে আতঙ্ক বিরাজ করে। প্রশাসন ছিলো সতর্ক প্রহরায়।

যৌথবাহিনী গোপন সংবাদের ভিত্তিরে গত ৫ এপ্রিল রমেল চাকমা ওরফে সুপেন নামের একজন সশস্ত্র সন্ত্রাসীকে আটক করে। সে ইউপিডিএফ’র একজন সদস্য। ওই সন্ত্রাসী গত ২৩ জানুয়ারি বেতছড়ি এলাকায় ট্রাকে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অংশ নেয়। নিরাপত্তাবাহিনী জানতে পারে রমেল চাকমা অতীতেও বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল। ২৩ জানুয়ারির ঘটনার পর যৌথবাহিনী তাকে ধরার জন্য বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে।

এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ৫ এপ্রিল টিঅ্যান্ডটি বাজার এলাকায় অভিযান চালায়। যৌথবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে রমেল পালানোর চেষ্টাকালে একটি সিএনজি স্কুটারের সঙ্গে ধাক্কা খায় সে। আহত অবস্থায় যৌথবাহিনী তাকে আটক করে নানিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানোর ব্যবস্থা নেয়। এরপর কর্তব্যরত ডাক্তারের পরামর্শে তাকে গত ৬ এপ্রিল চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৯ এপ্রিল সে মারা যায়।

রমেল চাকমা কবে ইউপিডিএফ-এর সশস্ত্র গ্রুপের সদস্য হিসেবে যোগ দেয়, কোথায় কতদিন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে সে সম্পর্কে গতকাল শনিবার এ প্রতিবেদককে বিস্তারিত তথ্য জানায় সম্প্রতি ওই গ্রুপ ছেড়ে আসা একজন সদস্য। স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে আগ্রহী ওই সদস্য গত ২৩ জানুয়ারির নাশকতার ঘটনায় জড়িত থাকার কথাও স্বীকার করেছে। সে জানায় ওই নাশকতার ঘটনায় মোট ১৩ জন অংশ নেয়। এর মধ্যে ১১ জনের হাতেই হালকা ও ভারী অস্ত্র ছিল।

রমেলের এই মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইউপিডিএফ রাঙ্গামাটিকে অশান্ত করার নানা অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ২৬ এপ্রিল ডিসি অফিস ও ২৭ এপ্রিল নানিয়ারচর বাজার বর্জণের ঘোষণা দিয়েছে। গত শনিবার এই নিয়ে রাঙ্গামাটি শহরে উত্তেজনা বিরাজ করে। ২১ এপ্রিল রাঙ্গামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কের কুতুকছড়ি এলাকায় ইউপিডিএফের সন্ত্রাসীরা একটি বাস ভাঙচুর করে। বাসের হেলপার আরমান বর্তমানে রাঙ্গামাটি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই ঘটনায় বাস চালকও আহত হন।

রাঙ্গামাটির এসপি সৈয়দ তারিকুল হাসান এই বিষয়ে বলেন, ইউপিডিএফ কোন নিবন্ধিত সংগঠন নয়। সেহেতু তাদের সদস্যদের তালিকাও আমাদের কাছে নেই। তবে আমরা জেনেছি রমেল চাকমা ওই সংগঠনটির সশস্ত্র সদস্য ছিল। যৌথবাহিনীর অভিযানের সময় সে পালাতে গিয়ে আহত হয় বলে জেনেছি। পরে সে হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় মারা যায়। এই বিষয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। আমরা এখনও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাইনি।

  • সূত্র: কালের কণ্ঠ
Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন