ইউএনও বিএম মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে ক্ষুব্ধ মাটিরাঙ্গা ও গুইমারাবাসী

090 copy

গুইমারা প্রতিনিধি:

পার্বত্য খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা ও গুইমারার পিছিয়েপড়া জনগোষ্ঠির জন্য দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসা মাঠ পর্যায়ে সরকারের দক্ষ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিএম মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও কাল্পনিক বলে দাবি করেছেন মাটিরাঙ্গার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও জনপ্রতিনিধিরা।

তারা বলেন, মাটিরাঙ্গা উপজেলায় ইউএনও হিসেবে যোগদানের পর থেকে তিনি সরকারের নানামুখি কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নের পাশাপাশি জনগণের কল্যানে কাজ করে যাচ্ছেন।

বিভিন্ন সময় নিরাত্তাবাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে পাহাড়ীদের নির্যাতন, হত্যা ও ধর্ষনের মতো কাল্পনিক অভিযোগের পর এবার একই কায়দায় মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিএম মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে যাত্রিবাহী বাসে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে জড়িয়ে কাল্পনিক অভিযোগ তুলেছে আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় থাকা একটি স্বার্থন্বেসী মহল।

ইতিমধ্যেই এ মহলটি মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিএম মশিউর রহমানের অর্জনকে ম্লান করে দিতে বিভিন্ন স্থানে কাল্পনিক অভিযোগের ভিত্তিহীন প্রচারনায় নেমেছে। সারাদেশের মধ্যে দুই দুই বারের শ্রেষ্ঠ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে নির্বাচিত মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিএম মশিউর রহমানকে বিতর্কিত করতে মাঠে নেমেছেন মাটিরাঙ্গার আওয়ামী লীগ নেতা সুভাস চাকমা। আওয়ামী লীগের এ নেতা টাকার বিনিময়ে জনৈক সাংবাদিককে দিয়ে একটি ভুইফোর অনলাইন পত্রিকায় মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে হেনস্তাসহ প্রশাসনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাটিরাঙ্গা পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও মাটিরাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি এমএম জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সম্প্রতি মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সুভাষ চাকমা মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিএম মশিউর রহমানের কাছে কিছু অন্যায় আবদার করেন। যা রক্ষা না করায় উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে বিভিন্ন মাধ্যমে এ কাল্পনিক গল্প প্রচার করেন। তিনিই টাকার বিনিময়ে সংবাদ মাধ্যমে তা প্রচার করেন। মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিএম মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ আর ওই সাংবাদিকের প্রকাশিত সংবাদের কোন ভিত্তি নেই বলেও দাবি করেন তিনি।

এ ঘটনায় তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে যারা মিথ্যা অপপ্রচার ছড়িয়ে বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার মিশনে নেমেছে, তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।

অন্যদিকে মাটিরাঙ্গা প্রেসক্লাবের একজন সদস্য হয়েও স্থানীয় কোন সাংবাদিকের সাথে কোন প্রকার আলোচনা না করে টাকার কাছে বিক্রি হয়ে ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ করায় সেই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি। এমন কাল্পনিক সংবাদ প্রকাশের সম্পূর্ণ দায়ভার তার একার বলেও মন্তব্য করেন প্রেসক্লাব সভাপতি এমএম জাহাঙ্গীর আলম।

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি মো. হারুন মিয়া জানান, মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিএম মশিউর রহমান তিনি শুধু একজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাই নন, তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানও বটে। তাকে জড়িয়ে মনগড়া মিথ্যা অপবাদ দেয়া মানে বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ মুক্তিযোদ্ধার সন্তনকে কলঙ্কিত করা। তাকে জড়িয়ে কাল্পনিক গল্প মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা কখনো মেনে নিবেনা। তিনি এ উদ্দেশ্য মূলক এ মিথ্যাচারের সাথে জতিদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানান।

মাটিরাঙ্গা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ইউনিয় পরিষদ চেয়ারম্যান ফোরামের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক সম্পাদক হিরনজয় ত্রিপুরা ইউএনও বিএম মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগকে ভিত্তিহীন দাবি করে বলেছেন, তার মতো একজন কর্মকর্তা মানুষের উপকারই করতে পারে। তিনি বলেন, কাছ থেকে দেখা একজন মানুষের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের ভিত্তি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। এ বিষয়ে স্থানীয় একজন সাংবাদিকের রিপোর্টের প্রসঙ্গ টেনে তিনি এ ধরনের সাংবাদিকতা ছেড়ে জনকল্যাণমুখী সাংবাদিকতা করারও আহ্বান জানান।

মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিএম মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সুবিধাবঞ্চিতদের অপপ্রচার ছাড়া আর কিছুই না এমন দাবি করে মাটিরাঙ্গা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও প্যানেল মেয়র মো. আলাউদ্দিন লিটন এ মিথ্যাচারের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসারও দাবি জানান। মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুবাস চাকমা প্রত্যক্ষভাবে এ ধরনের অপপ্রচারে যুক্ত আছে, এটা আওয়ামী লীগের দলীয় সিদ্ধান্ত কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবশ্যই না। এটা যদি তিনি এমন কাজ করে থাকেন তবে তা ব্যক্তি সুবাস চাকমা করছেন। এর সাথে আওয়ামী লীগের কোন সম্পৃক্ততা নেই।

আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় গুইমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিএম মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সুভাষ চাকমার এমন কাল্পনিক অপপ্রচারে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে মাটিরাঙ্গার সচেতন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। তারা এহেন অপপ্রচারের নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তুলেছে।

গুইমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও গুইমারা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেমং মারমা এ ঘটনাকে নিছক অপপ্রচার দাবি করে বলেন, বিএম মশিউর রহমানের মতো একজন কর্মকর্তা কখনো এমন কাজ করতে পারেনা। এ অপপ্রচারের মাধ্যমে একটি মহল বিশেষ ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে মাত্র। একইভাবে এ অভিযোগকে মনগড়া বলে দাবি করে গুইমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সব মহলে শ্রদ্ধেয় একজন সরকারি কর্মকর্তাকে হেনস্থা করতেই এমন অপপ্রচার। তিনি অপপ্রচারকারীদের আইনের আওতায় আনারও দাবি জানান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন