আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের পাল্টা-পাল্টি কর্মসূচিকে ঘিরে খাগড়াছড়িতে উত্তেজনা

নিজস্ব প্রতিবেদক, খাগড়াছড়ি:

শ্রমিকলীগের যুগ্ম আহবায়ক সুরুজ মিয়ার উপর হামলার আসামীদের গ্রেফতার ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের রবিবার একই স্থানে একই সময় খাগড়াছড়ি পৌর শাপলা চত্বরে পাল্টা-পাল্টি কর্মসূচী ঘোষণাকে ঘিরে উত্তেজনা চলছে।

কর্মসূচি পালনে দুই পক্ষই নিজ নিজ অবস্থানে অনড় রয়েছে। ফলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘাতের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সংঘাত এড়াতে প্রশাসনও রয়েছে কঠোর অবস্থানে।

খাগড়াছড়ি জেলা শ্রমিকলীগের যুগ্ম আহবায়ক সুরুজ মিয়ার উপর হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপির অনুসারীরা বৃহস্পতিবার কদমতলীস্থ দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে রবিবার সকাল ১০ টায় বিক্ষোভ মিছিল উত্তর পৌর শাপলা চত্বরে সমাবেশ করে প্রধানমন্ত্রীসহ দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের কাছে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে স্বারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করে।

অপর দিকে পৌর মেয়র রফিকুল আলমসহ নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে শুক্রবার বিকালে খাগড়াছড়ি শহরে বিক্ষোভ মিছিল উত্তর পৌর শাপলা চত্বরে সমাবেশ করে। সমাবেশ থেকে আগামীকাল রবিবার সকাল ১০ টায় পৌর শাপলা চত্বরে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এসময় তারা আগামীতে কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপির অনুসারিদের যেকোন কর্মসূচি প্রতিহত করার ঘোষণা দেন।

খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য মংশেপ্রু চৌধুরী অপু বলেন, আমাদের কর্মসূচি পূর্ব ঘোষিত। যেকোন মূল্যে কর্মসূচি পালিত হবে।

অপর দিকে জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক দিদারুল আলম বলেন, আমাদের নেতৃবৃন্দের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে আমরা কর্মসূচি পালনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আলী আহমদ খান জানান, সংঘাত এড়াতে উভয় পক্ষকে বিকাল ৩ টায় জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে ডাকা হয়েছে। যদি উভয় পক্ষ সমঝোতায় না আসে জনগণের জান-মালের নিরাপত্তার খাতিরে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে থাকবে।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার রাতে খাগড়াছড়ি শহরের গঞ্জপাড়ায় সন্ত্রাসীরা জেলা শ্রমিক লীগের যুগ্ম আহবায়ক সুরুজ মিয়াকে কুপিয়ে আহত করে। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নিলে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে প্রেরণ করে।

এদিকে সুরুজ মিয়ার উপর হামলার ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকালে জেলা শ্রমিকলীগের আহবায়ক জানু সিকদার বাদী হয়ে সদর থানায় হত্যা চেষ্টা ও চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেন। মামলায় খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র মো. রফিকুল আলম, তার ছোট ভাই জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক দিদারুল আলম ও জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন ফিরোজসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ করে আরো ১০/১২ জনকে অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামী করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়াকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগ দ্বিধা-বিভক্ত হয়ে পড়ে। এনিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে গত দুই বছরে অন্তত অর্ধশতাধিক বার হামলা-পাল্টা হামলা ও মামলার ঘটনা ঘটে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন