সংবাদ সম্মেলনে স্ত্রীর অভিযোগ: আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে ভুল তথ্য দিয়ে স্বামী আরমানকে ষড়যন্ত্রমুলক গ্রেপ্তার করা হয়েছে
বিশেষ প্রতিনিধি, কক্সবাজার:
নিরীহ লোকজনকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে চলমান মাদক বিরোধী অভিয়ানকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য প্রকৃত ইয়াবা কারবারীরা ষড়যন্ত্র করছে জানা গেছে।
বুধবার (৮ আগস্ট) বিকালে কক্সবাজারে এক সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আরমানের স্ত্রী আয়েশা আকতার এ অভিযোগ করেন। ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বে পড়ে তাকে কক্সবাজার জেলা কারাগারে য়েতে হয়েছে বলেও সংবাদ সম্মলনে অভিযোগ করা হয়।
টেকনাফে মাদক বিরোধী অভিযানে ব্যক্তিগত সত্রুতা ও স্বার্থ সিদ্ধির জন্য নিরীহ লোকজনকে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠছে। মহল বিশেষ কর্তৃক ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য টেকনাফ শাহ পরীর দ্বীপ জেটিঘাটের ইজারাদার মোহাম্মদ আরমানকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ইয়াবা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে। ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বে পড়ে তার ঠিকানা এখন কক্সবাজার জেলা কারাগার।
তিনি বলেন, তার স্বামীর দীর্ঘদীনের পারিবারিক ও সামাজিক ঐতিহ্যকে ধ্বংস করতে একটি মহল দীর্ঘদিন তার পেছনে লেগে আছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৫ আগস্ট রাতের আধারে বসতভিটার সুপারী বাগান থেকে ইয়াবা উদ্ধারের নামে তার স্বামীকে আটক করা হয়। সম্পূর্ণ মিথ্যা, সাজানো, পরিকল্পিত ও ষড়যন্ত্রমূলক ঘটনায় তার স্বামী বর্তমানে কারাগারে।
কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আয়েশা আকতার দাবি করেন, ইয়াবা মজুদ, ব্যবসা বা পাচারের মতো ঘৃণিত ও রাষ্ট্রবিরোধী কাজের সাথে তার স্বামী বা পরিবারের কেউ জড়িত নয়। মাদকদ্রব্যের সাথে তার স্বামীর দূরতমও সম্পর্ক নেই। তার স্বামীর বিরুদ্ধে দেশের কোন থানা বা আদালতে মামলা তো দূরের কথা সাধারণ ডায়েরীও নেই।
তিনি বলেন, তার স্বামী মোহাম্মদ আরমান দীর্ঘদিন ধরে সাবরাং ইউনিয়নস্থ মেসার্স সীমান্ত মৎস্য ফার্ম ও মেসার্স আফনান ইন্টারন্যাশনাল এর স্বত্তাধিকারী ও মালিক। মৎস্য চাষ ও বিক্রয় এবং গবাদি পশু আমদানি ও রপ্তানী করে সুনামের সাথে ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা করে আসছেন। বিগত ৪ মার্চ কক্সবাজার জেলা পরিষদের জেটিঘাট ইজারা ডাকে সর্বোচ্চ ইজারাদাতা হিসেবে শাহপরীরদ্বীপ জেটিঘাট ইজারা নেন। ঘাট ইজারা নেয়ার বিষয়ে দরদাতাদের বেশ কয়েকজন তার স্বামীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র আরম্ভ করে। নানামুখি মিথ্যা প্রচারণা চালায়। সংবাদকর্মীদের বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে আসছে।
সরকারের বিভিন্ন বিভাগ ও তদন্ত সংস্থা এ পর্যন্ত মাদক ব্যবসায়ীদের অনেক তালিকা করেছে। কোন তালিকায় তার স্বামী মোহাম্মদ আরমানের নাম নেই। তিনি ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত থাকলে প্রশাসনের এতো কড়া নজরদারি ও অভিযানে ধরা পড়তো। সাধারণ মানুষের কাছে অভিযোগ পাওয়া যেত।
তার প্রশ্ন, রাতের অন্ধকারে কেন বসতভিটার সুপারী বাগান থেকে ইয়াবা উদ্ধার অভিযান চালানো হলো? দিনদুপুরে অভিযান চালালে কিভাবে ইয়াবা উদ্ধার করা হচ্ছে-তা স্থানীয়রা দেখতো। অপরাধী শনাক্ত করা সহজ হতো।
তিনি বলেন, সুপারী বাগানসহ প্রায় ৮ কানি বসতভিটার চারদিকে স্থানীয়দের চলাচলের রাস্তা রয়েছে। খোমেলা বসতভিটায় কে বা কারা ইয়াবা ফেলে গেল? তা সম্পূর্ণ রহস্যঘেরা, পরিকল্পিত ও ষড়যন্ত্রমূলক ঘটনা। কিন্তু আমার বসতভিটায় হঠাৎ ‘ইয়াবা পাওয়া গেছে’ বলে আমার স্বামীকে বাড়ী থেকে ডেকে বের করে পুলিশ। এরপর তাকে থানায় নিয়ে এক রাত পরে মামলায় আসামী দেখানো হয়। কোন পাচারকারী পরিকল্পিতভাবে বিস্তির্ণ বসতভিটায় ইয়াবাসমূহ লুকিয়ে রেখে মোহাম্মদ আরমানকে ফাঁসানো হয়েছে দাবি করেন স্ত্রী আয়েশা আকতার। তিনি ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করে তার স্বামীর মুক্তি দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে স্ত্রী ছাড়াও মোহাম্মদ আরমানের বড় ভাই আব্দুল হান্নান, ৩ বছরের মেয়ে আফনান, ১০ মাস বয়সী শিশু মোঃ আইয়ান, স্থানীয় বাসিন্দা মাহমুদুর রহমান, আব্দুল গফুর, এমদাদ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট দিবাগত রাত ৮টার দিকে মোহাম্মদ আরমানকে ১ লাখ ৭০ হাজার ইয়াবাসহ আটক করে টেকনাফ থানা পুলিশ। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে জিআর মামলা নং-৪০৪/১৮ (টেকনাফ) দায়ের করা হয়। মোহাম্মদ আরমান শাহপরীরদ্বীপ উত্তরপাড়ার মৃত নুরুল হক মেম্বারের ছেলে।
ইতোপুর্বে বন্দুকযোদ্ধে নিহত টেকনাফ পৌর কাউন্সিলার একরামের ব্যাপারেও এধরণের অভিযোগ উঠেছিল।