মহেশখালীতে যুবলীগ নেতার দাপটে পাহাড় কর্তন, অভিযানে ট্রাক জব্দ
মহেশখালী প্রতিনিধি:
বড় নেতাদের নাম ভাঙিয়ে কক্সবাজারের মহেশখালীতে প্রভাবশালী যুবলীগ নেতার নেতৃত্বে পাহাড় নিধনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রশাসনের বার বার অভিযানেও বন্ধ হয়নি এ নিধনযজ্ঞ।
রোববার(১৫ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাহাড় কেটে মাটি পরিবহণের কাজে নিয়োজিত একটি ট্রাক জব্দ করা হয়।
এ সময় পাহাড় কাটাসহ সব ধরণের কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। বেশ কয়েকদিন ধরে সরকারি আদেশ উপেক্ষা করে ধারাবাহিক ভাবে এই পাহাড় নিধনযজ্ঞ চালিয়ে আসার অভিযোগ রয়েছে উপজেলা যুবলীগ নেতা ও শাপলাপুর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে।
তিনি উপজেলা যুবলীগের ২১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটির একজন। পরিবেশ বিরোধী এই কাজ করতে আব্দুস সালাম অনেক সময় অনৈতিক ভাবে স্থানীয় এমপির নামও ব্যবহার করে বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে তার এই অনৈতিক কাজের সাথে উপজেলা যুবলীগের কোনো সমর্থন নেই। তারা এমন কাজের বিরোধিতা করেন এবং প্রশাসনের অভিযানের প্রতি যুবলীগের সমর্থন রয়েছে বলে জানিয়েছেন -উপজেলা যুবলীগ। তবে যুবলীগের অপর একটি অংশ তার এই অনৈতিক কাজে সমর্থন যোগাচ্ছে বলেও সূত্রে প্রকাশ।
সূত্র জানায় আব্দুস সালাম মেম্বার সরকারি নিয়ম ও সকল প্রকার আইন অবজ্ঞা করে তার নিজের লোকজন দিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে শাপলাপুরের পাহাড়ি এলাকায় প্রাকৃতিক উঁচু ভূমি কেটে মাটি বিক্রি করে আসছিল। প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো প্রকার অনুমোদন না নিয়ে স্কেবেটার দিয়ে মাটি কেটে অন্য স্থানে নিয়ে যাচ্ছিল।
এমন সময় পুলিশ ওই এলাকায় গিয়ে এমন পরিবেশ বিধ্বংসী কাজ না করার জন্য বারণ করে আসেন। পুলিশ এ সময় মাটি কাটার পক্ষে তার কাছে কোনো প্রকার কাগজপত্র থাকলে তা নিয়ে থানায় আসার পরামর্শ দেন। এমন প্রস্তাবে এই যুবলীগ নেতা কোনো প্রকার সাড়া না দিয়ে নিজের ইচ্ছায় পাহাড় কেটে মাটি বিক্রির ব্যবসা অব্যাহত রাখে বলে জানায় পুলিশ।
এদিকে প্রতিদিন দশটির অধিক ট্রাক পাহাড় কাটা মাটি পরিবহণ করতে গিয়ে কয়েকটি গ্রামীণ সড়ক প্রায় ধ্বংস করে ফেলে। এই অবস্থায় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের নারী সদস্য দিলরুবা খানম প্রশাসনের সাথে আলাপ করে স্থানীয় জনগণকে সাথে নিয়ে এমন কাজের প্রতিবাদ করেন। পরে তাকে মেম্বার আব্দুস সালাম ও তার লোকজন শারীরিক ভাবে হেনস্থা করে এলাকা থেকে সরিয়ে দেয়।
ওই মহিলা মেম্বার জানান-স্থানীয় বাসিন্দারা এই কাজের নিন্দা জানাচ্ছেন। এমন মাটি পরিবহণ করতে গিয়ে একটি সড়ক নষ্ট হয়ে যাওয়ায় একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। একটি কালভাট ও বিদ্যুতের খুঁটি নষ্ট হয়ে যায়। এ নিয়ে তিনি থানা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।