জরাজীর্ণ ভবনে চলছে পানছড়ি প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়
পানছড়ি প্রতিনিধি :
খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলার প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়টি দীর্ঘ বছর যাবৎ চলছে একটি জরাজীর্ণ ও ঝুকিপূর্ণ ভবনে। পানছড়ি উপজেলা সদরে যাওয়ার পথে পানছড়ি থানা ও পানছড়ি বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঝ বরাবর প্রধান সড়কের পাশেই অবস্থিত প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় ভবনটি। জন চলাচলের রাস্তার পাশে থাকার কারণে দিন-রাত চব্বিশ ঘন্টাই পথচারীদের চোখ যায় ভবনটির দিকে। তাই অনেক বে-রসিক পথচারিরা রসিকতা করে বলে থাকে “জন্ম থেকে জ্বলছে ভবনটি” হয়তো জন্মের পর থেকে সংস্কারের মুখ দেখেনি।
সরেজমিনে ভবনটির ভিতরে ঘুরে দেখা যায় কিছু করুণ দশার চিত্র। ভবনের বাহিরের অংশের চেয়ে ভিতরের অংশ আরো বেশী জরাজীর্ণ। স্যাঁত স্যাঁতে মেঝে, ছাদের অংশ থেকে ঝরে পড়ছে বড় বড় পলেস্টারের টুকরো, সাইডের দেয়ালগুলোতে শ্যাওলা জমে বিবর্ণ, দরজা জানালা লক্কর-ঝক্কর ও ছাদের উপর বাসা বেঁধেছে নানান জাতের পরগাছা। বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি অফিস স্টাফদের মাথার উপরেই পড়ে বলে জানালেন নাম প্রকাশ না করার শর্তে কেউ কেউ।
ক্যাডার অফিসার উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: জওহুর লাল চাকমার সাথে জরাজীর্ণ ভবনটি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি হাস্যেজ্বল মুখে জানান, পথচারীদের ধারণাটাই ঠিক। আসলেই ভবনটি জন্মের পর থেকে কোন সংস্কারের মুখ দেখেনি। তিনি আরো জানান, এই ভবনটি নির্মাণ হয়েছে ১৯৬০ সালের দিকে। বিভিন্ন সময়ে মাসিক সমন্বয় মিটিংয়ে ভবনটি নিয়ে আলোচনা হয়। ২০১২-১৩ অর্থ বছরে এডিবি খাতে সংস্কার ও উন্নত ঘাষ চাষ প্রদর্শনীর নার্সারী প্লট স্থাপনের কথা ছিল এবং টেন্ডারও হয়েছিল। কিন্তু বাজেট না থাকার কারণে এই অতীব গুরুত্বপূর্ণ ভবনটির কাজ হয়নি। অদুর ভবিষ্যতে কখন হবে তাও তিনি জানেন না।
পার্বত্য এলাকাগুলোই হলো প্রাণীর অভয়ারণ্য। এখানকার বেশীর ভাগ মানুষই হাঁস-মুরগী, গরু-ছাগল ও শুকর সহ নানা প্রজাতীর প্রাণী পালন করেই জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। কিন্তু জনগুরুত্বপূর্ণ ভবনটির আজ এই বেহাল দশা। অথচ দীর্ঘ চার বছরেও চালু হয়নি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পানছড়ি বাজার মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আবাসিক হোস্টেল তথা ভুতুড়ে ভবনটি। তাছাড়া কোথাও কোথাও পঁচিশ-ত্রিশ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনকে করেছে দ্বিতল ভবন আর কোথাও দুই-আড়াইশ ছাত্র-ছাত্রীর শ্রেণী কক্ষ নিয়ে বিপাকে শিক্ষকরা। অভিজ্ঞ মহল বলছেন জরাজীর্ণ ও বিশেষ জরুরী স্থাপনাগুলো চিহ্নিত করে উন্নয়নমূলক কাজের আওতায় অগ্রাধিকার দিলেই এলাকার উন্নয়ন ও সৌন্দর্য বর্ধণে সহায়ক ভুমিকা পালন করবে।