খাগড়াছড়ি- ২০১৪: বছরজুড়ে পাহাড়ে ঘটেছে বাঙ্গালী নারী ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানি

সালতামামি

মুজিবুর রহমান ভুইয়া :

২০১৪ খ্রিস্টাব্দ পাহাড়ে বসবাসরত বাঙ্গালী নারীদের জন্য একটি কলঙ্কজনক বছর হিসেবে বিবেচিত হবে। এ বছর পাহাড়ী এ জনপদে উপজাতীয় কর্তৃক বাঙ্গালী নারী ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে অহরহ। বিভিন্ন স্থানে উপজাতি কর্তৃক বাঙ্গালী নারী ধর্ষন ও শ্লীলতাহানির ঘটনাগুলো পাক সময়কার বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। কোন ঘটনারই সুষ্ঠু বিচার হয়নি এখনো। কোন এক অদৃশ্য ক্ষমতাবলে এসব অপরাধীরা রয়ে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। ২০১৪ সালটি ছিল নিরীহ বাঙ্গালীদের জন্য উদ্বেগ-উৎকন্ঠার বছর।

এ বছরের শুরুতেই ৪ এপ্রিল পুর্বপ্রনয়ের জের ধরে মাটিরাঙ্গার গাজীনগর বটতলী এলাকার বাঙ্গালি কিশোরী সবিলা আক্তার (২৪)-কে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে উপজাতিয় যুবক কৃঞ্চমাহন ত্রিপুরা (২৭)। বিষয়টি জানাজানির পর স্থানীয়রা পলায়নকৃত কৃঞ্চমাহন ত্রিপুরা ও সবিলা আক্তরকে আটক করে মাটিরাঙ্গা থানায় হস্তান্তর করে।

এর মাত্র কয়েক দিনের মাথায় ৮ এপ্রিল আলকদম জোনের আওতাধীন সেলতিপাড়া এলাকায় পাখী আক্তার (৩৫) নামে বাঙ্গালী গৃহবধুর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে উপজাতি যুবক সামারি মারমা (৩৬)। উক্ত ঘটনায় স্থানীয় বাঙ্গালীদের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে উত্তেজিত বাঙ্গালীরা সামারি মারমাকে মারধর করে। পরে এই ঘটনা এলাকায় পাহাড়ি-বাঙ্গালিদের মাঝে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার সৃষ্টি করে। এ ঘটনা জানার পর সেনাবাহিনীর ঘটনাস্থলে গিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে নিয়োজিত রাখে।

একই বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর সদরখিল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী রুনা আক্তার (৭)-কে ধর্ষনের অভিযোগ উঠেছে একই বিদ্যালয়ের এক উপজাতি ছাত্রের বিরুদ্ধে। ধর্ষণের শিকার ঐ ছাত্রীর ভাষ্যমতে বিদ্যালয়ের ক্লাস শেষে বাড়ি ফেরার পথে উপজাতীয় ছাত্র তাকে বিদ্যালয় ভবনের পিছনে নিয়ে ধর্ষনের চেষ্ঠা করে। পরবর্তীতে শিশুটির মা ও নেপচুন টি স্টেট‘র শ্রমিক কাঞ্চন মালা তাকে চিকিৎসার জন্য মানিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর প্রয়োজনীয় পরীক্ষার জন্য খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতলে প্ররণ করে। এ ব্যাপারে কাঞ্চন মালা বাদী হয়ে মানিকছড়ি থানায় একটি মামলা দায়ের করে।

পরবর্তীতে, মানিকছড়ি উপজেলার ইউএনও, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, স্থানীয় বাটনাতলী ইউপি চেয়াম্যান এবং বিদ্যালয়ের পরিচালক কমিটির সদস্যবৃন্দ ও অভিভাবকদের উপস্থিতিতে ০১ অক্টোবর সদরখিল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্ষণের শিকার শিশুটি কর্তৃক অভিযুক্ত প্রথম শ্রেণির ছাত্র রাজ কুমার চাকমাকে (১২) সনাক্ত করা হয়। পরে পুলিশ কর্তৃক রাজ কুমার চাকমাকে আটক পূর্বক খাগড়াছড়ি জেলে প্রেরণ করা হয়।

দিনের পর দিন পাহাড়ের বিভিন্ন স্থানে উপজাতীয় কর্তৃক বাঙ্গালী নারীরা বর্বরোচিত ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানির শিকার হলেও এ বিষয়ে মুখ খুলেনি কোন নারী সংগঠন এমনকি তথাকথিত কোন বুদ্ধিজীবীমহল। কিন্তু কোন বাঙ্গালী যুবকের দ্বারা কোন পাহাড়ী নারী ধর্ষিত হলে কিছু তথাকথিত বুদ্ধিজীবিমহল মাঠ গরমের চেষ্টা করলেও এতোগুলো ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় তাদের কোন বক্তব্য-বিবৃতি জাতি দেখেনি। পাহাড়ীদের বিপথগামী যুবকদের বয়কটের মাধমে ভবিষ্যতে পাহাড়ী যুবকদের এসব ঘৃন্য কর্মকাণ্ড প্রতিহত করাই হবে নতুন বছরের অঙ্গীকার।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

One Reply to “খাগড়াছড়ি- ২০১৪: বছরজুড়ে পাহাড়ে ঘটেছে বাঙ্গালী নারী ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানি”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন