কড়াকড়ির মধ্য দিয়েই শেষ হলো লক্ষ্মীছড়িতে সড়ক অবরোধ
লক্ষ্মীছড়ি প্রতিনিধি:
খাগড়াছড়ি জেলার লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সুপার জ্যোতি চাকমার মুক্তির দাবিতে সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ অনেকটাই কড়াকড়ি ছিল লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার বিভিন্ন সড়কে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও যানবাহন চলাচল করেছে অনেক কম। লক্ষ্মীছড়ি-মানিকছড়ি সড়কে মোটরসাইকেল চলাচল করেছে থেমে থেমে। দুল্যাতলী ও বর্মাছড়ি সড়কে মোটরসাইকেল চলাচল করেছে একেবারেই কম। মঙ্গলবার সুপার জ্যোতি চাকমা মুক্তি সংগ্রাম কমিটির পক্ষে দুল্যাতলী ইউপি চেয়ারম্যান ত্রিলন চাকমা স্বাক্ষরিত এক প্রেসবার্তায় পুরো জেলায় সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ কর্মসূচী ঘোষণা করে।
বুধবার সকালের দিকে লক্ষ্মীছড়ি-মানিকছড়ি সড়কে মংহলা পাড়া ও সাঁওতাল পাড়া এলাকায় গাছের গুড়ি ফেলে অবরোধের চেষ্টা করলে পুলিশ গিয়ে তা সরিয়ে দেওয়ার পর যান চলাচল শুরু হয়। বুধবার সাপ্তাহিক হাটের দিন হওয়ায় ভোরে কিছু চাঁদের গাড়ি লক্ষ্মীছড়ি বাজারে এলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে বড় যানবাহন চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপস্থিতিও ছিল কম। বাজার পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায় ক্রেতা-বিক্রেতার উপস্থিতি খুবই কম। এদিকে অফিস ও ইউপি কার্যালয়ের দাপ্তরিক কার্যক্রম বর্জন অব্যাহত রয়েছে।
সরকারি দপ্তরগুলোতে উপস্থিতি লক্ষ্যনীয় ছিল না। অতিরিক্ত দায়িত্ব বা ভারপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তারা ছিলেন অনুপস্থিত। সকাল ১১টায় পূর্বনির্ধারিত উন্নয়ন মেলার প্রস্তুতি সভায় বাতিল করে উপজেলা প্রশাসন। লক্ষ্মীছড়ির অতিরিক্ত দায়িত্বে প্রাপ্ত মানিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিনিতা রানী এ বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তিনি না আসার সিদ্ধান্ত নেন বলেও জানা গেছে। তবে তিনি মানিকছড়ি থেকে লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার সার্বিক পরিস্থিতি মনিটরিং করেন।
জানা যায়, ৩টি ইউনিয়ন পরিষদের কোনো দাপ্তরিক কাজ সম্পাদন হয়নি। জরুরী কাজ করতে গিয়ে অনেকেই বাধ্য হয়ে ফিরে আসেন বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়।
অবরোধকে ঘিরে যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনী ছিল তৎপর। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে সার্বক্ষনিক নিরাপত্তা টহল ছিল চোখে পড়ার মতো। লক্ষ্মীছড়ি থানার এসআই নুরুল আলম জানান, কোথাও কোনো অপ্রিতীকর ঘটনা ঘটেনি। যে কোনো ঘটনা শুনার সাথে সাথে আমাদের পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনী ছুটে গেছে।
উল্লেখ্য ১ জানুয়ারি দিবাগত রাত ২টার দিকে লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সুপার জ্যোতি চাকমাকে অস্ত্রসহ যৌথবাহিনী আটক করে। অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠায়। সুপার জ্যোতি চাকমা ইউপিডিএফ’র সমর্থন নিয়ে ৪র্থ উপজেলা নির্বাচনে ২০১৪ সালে ২৭ ফেব্রুয়ারি চেয়ারম্যান নির্বাচত হন।