কক্সবাজারে এক সপ্তাহে ২ খুন, নেপথ্যে আধিপত্য বিস্তার

নিজস্ব প্রতিনিধি, কক্সবাজার:

কক্সবাজার শহরে প্রতিপক্ষের গুলিতে মো. ইসমাঈল (২৬) নামে আরও এক যুবক নিহত হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের পাহাড়তলীর ইসলামপুরে সন্ত্রাসী নুর আহমদ বাহিনীর গুলিতে তার মৃত্যু হয়।

আধিপত্য বিস্তার, দুই সন্ত্রাসী বাহিনীর কোন্দল এবং সরকারি খাস জমিতে মসজিদ নির্মাণকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয়রা।

নিহত ইসমাঈল কক্সবাজার পৌরসভার দক্ষিণ পাহাড়তলী এলাকার লালুর ছেলে ও পেশায় ইলেক্ট্রেশিয়ান। সে অপর সন্ত্রাসী গ্রুপ বাবুল বাহিনীর সদস্য বলেও জানা গেছে।

এক সপ্তাহ আগে বাদশার ঘোনা এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণাকালে জেলা ছাত্রদলের প্রশিক্ষণ সম্পাদক তানভির সন্ত্রাসীদের হাতে খুন হয়। এক সপ্তাহের মাথায় আরও এক খুনের ঘটনায় গোটা কক্সবাজার শহরে ভীতিকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

কক্সবাজার পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আশরাফুল হুদা ছিদ্দিকী জামশেদ বলেন, পাহাড়ে একসময় নুর আহমদ বাহিনীর রামরাজত্ব চলত। ওই বাহিনীতে ছিলো বাবুল ও ইসমাঈল। পরে বাবুল নুর আহমদ বাহিনী থেকে বের হয়ে আলাদা বাহিনী গঠন করে। সেই থেকে এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই বাহিনীর মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছে।

তিনি আরও বলেন, পাহাড়তলীর নাজির হোসেন মিস্ত্রীরঘোনা থেকে বাঁচামিয়ার ঘোনায় যাওয়ার পথের মোড়ে ১২ শতকের একটি খাসজমির প্লট রয়েছে। প্লটটি বিএনপি সরকারের আমলে জেলার ইসলামী আন্দোলনের জনৈক নেতা ঢাকার এক বাসিন্দার কাছে বিক্রি করেন।

কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্লট দখলে নেন যুবলীগের এক নেতা। পরে তার কাছ থেকে দখল করে নেন ‘বার্মাইয়া জব্বার’ নামের এক সন্ত্রাসী। এরপর সেই সন্ত্রাসীর কাছ থেকে দখলে নেন জাকির মোস্তফা। কিন্তু সন্ত্রাসীদের হাতে জাকির মোস্তফা নিহত হওয়ার পর ওই জমি এখন নুর আহমদ ও বাবুলের হাতে।

এদিকে জাকির মোস্তফার পরিবার ও খাস জমি ক্রয়কারী সেখানে একটি মসজিদ নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেন। ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাবুল সেখানে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। পাশাপাশি সেখানে একটি মাদরাসা নির্মাণের কাজও চলছিল। কিন্তু নুর আহমদ চাননি ওই খাসজমি তার হাতছাড়া হোক। এ নিয়ে বাবুল ও নুর আহমদ বাহিনীর মধ্যে প্রায়ই সংঘর্ষ হতো। এরই ধারাবাহিকতায় নুর আহমদ বাহিনীর সদস্যরা মঙ্গলবার রাতে গুলি করে ইসমাঈলকে হত্যা করেছে।

কক্সবাজার সদর থানার ওসি ফরিদ উদ্দিন খন্দকার বলেন, প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে খাস জমিতে মসজিদ নির্মাণকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের গুলিতে এক যুবক নিহত হয়েছে।

এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ইসমাঈল হত্যার কোন আসামি গ্রেফতার হয়নি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন