Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

রোহিঙ্গা নারীরা যে কারণে সারা বছর গর্ভবতী থাকেন

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:
 
মিয়ানমারের সেনা ও উগ্র মগদের গণহত্যা, ধর্ষণের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ৬ লাখ মানুষ।প্রাণে বাঁচতে তারা কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের আশ্রয় শিবিরে অবস্থান করছেন। এদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু।
 
এছাড়া আশ্রিত নারীদের বিশাল অংশ হলো অন্তঃসত্ত্বা। আশ্চর্যের বিষয় হলো এসব রোহিঙ্গা নারীরা নাকি সারা বছরই গর্ভবতী থাকেন। এ কথা শুনে হয়তো অনেকেরই চোখ কপালে উঠে যেতে পারে। কিন্তু রোহিঙ্গা নারীদের সঙ্গে কথা বলেও এমন সত্যতা মিলেছে।
 
অন্তঃসত্ত্বা ও নির্যাতিত নারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সেনা ও মগগোষ্ঠীর হাত থেকে সম্ভ্রম বাঁচাতে প্রায় সারা বছরই গর্ভধারণ অব্যাহত রাখেন রোহিঙ্গা নারীরা।
 
অনেকে আবার বলছেন, পারিবারিক স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, বিনোদন ও সেনা নির্যাতনের ভয়, ইত্যাদি কারণে তারা প্রায় সারা বছরই গর্ভবতী থাকেন।  এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কারণ হিসেবে উঠে এসেছে বর্মি সেনাদের নির্যাতনের কথা। বর্মি সেনাদের নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে সারা বছরই নিজের গর্ভধারণে অব্যাহত রাখতেন রোহিঙ্গা নারীরা। এমনটাই দাবি তাদের।
 
সরেজমিন কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং, বালুখালী, থ্যাংখালী, পালংখালী, টেকনাফের নয়াপাড়া ও লেদা ক্যাম্পসহ বিভিন্ন স্বাস্থসেবা কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়া পরিবারগুলোতে অধিকাংশ নারী ও শিশু। এদের মধ্যে বড় একটি অংশ অন্তঃসত্ত্বা নারী। এ ছাড়া স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে মিলছে একই চিত্র।
 
কক্সবাজার জেলা সিভিল সার্জনের তথ্যমতে, গত ২৫ আগস্ট থেকে চলতি মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত অন্তঃসত্ত্বা নারীর সংখ্যা ৭ হাজার ৪৩৫জন। আর নবজাতক জন্ম নিয়েছে ৬৩৩জন। এ ছাড়া নির্যাতিত নারী তেমন কোনো নির্দিষ্ট পরিসংখ্যান করা না গেলেও তাদের সংখ্যা কয়েক হাজার।
 
কক্সবাজারের সহকারী সিভিল সার্জন ডা. মহিউদ্দিন মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, গর্ভধারণ কিংবা অন্তঃসত্ত্বা নারীর সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। চিকিৎসাসেবা নিতে আসা বিভিন্ন অন্তঃসত্ত্বা নারীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সেনা নির্যাতনের ভয়ে নারীরা গর্ভধারণ করতেন। এ ছাড়া পাশাপাশি পারিবারিক স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও বিনোদনের অভাবও রয়েছে।
 
ডা. মহিউদ্দিন আরও জানান, নির্যাতিত নারীদের নিয়ে আমরা তেমন কোনো নির্দিষ্ট পরিসংখ্যান না করলেও কাজের অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়, তাদের সংখ্যা কয়েক হাজার।
 
নির্যাতিত নারীরা জানান, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী আর বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) নির্মম শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছে তাদের ওপর। এ ছাড়া কালাবাহিনীর বৌদ্ধ সদস্যরাও সংঘবদ্ধ হয়ে ক্যাম্পে তুলে নিয়ে যেত রোহিঙ্গা নারীদের। তবে অনেক সময়ই গর্ভবতী নারীদের রেহাই দিত না বর্মি সেনারা। তাই অনেক নারীই সম্ভ্রম বাঁচাতে সন্তান প্রসবের পরই আবারও সন্তান নিতে চেষ্টা করতো। হতভাগ্য রোহিঙ্গা নারীরা না বলা এমন অনেক কথাই বলেছেন।
 
সেনাদের নির্যাতন থেকে বাঁচতে রাখাইনের নাড়ুপাড়া থেকে কুতুপালং ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন ৭ সন্তানের জননী অন্তঃসত্ত্বা আমিনা বেগম। ।তিনি বলেন, বর্মি সেনারা তাদের ওপর জুলুম ও অত্যাচার করেছে।  সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলেই বিভিন্ন বাড়িতে হামলা চালাতো সেনারা। আতঙ্কে থাকতেন নারীরা। নারীদের ধরে ক্যাম্পে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন চালানো হতো। আর এক্ষেত্রে সম্ভ্রম বাঁচানোর একমাত্র পথ ছিল গর্ভধারণ। কারণ অন্তঃসত্ত্বা নারীদের ক্যাম্পে নিতো না সেনারা, বলতেই শাড়ির আঁচল দিয়ে চোখ মোছেন আমিনা বেগম।
 
ওই নারী আরও জানান, কোনো নারীদের রেহাই দিত না সেনারা। সেনাদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি মায়ের বয়সী নারীও। অনেক নারীকে শরীরিক নির্যাতনের পর হত্যা করে নাফ নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছে।
 
নারীদের ওপর যৌন নির্যাতনের কথা ঘৃণাভরে জানালেন পুরুষ সদস্যরাও। রাখাইনের মণ্ডু ছালিপাড়া থেকে কুতুপালং ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়া ১১ সন্তানের জনক সৈয়দ ইসলাম বলেন, সেনাদের নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে ঘন ঘন সন্তান নেন তার স্ত্রী। তার স্ত্রী ছাড়াও সেনাদের হাত থেকে বাঁচতে রাখাইনের প্রায় ঘরেই রয়েছে অন্তঃসত্ত্বা নারী।
 
উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কেন্দ্রের কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, নির্যাতনের শিকার নারীদের তালিকা করা এবং তাদের চিকিৎসা দেয়া কঠিন ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ অনেক নারী লজ্জা ও ভয়ে চিকিৎসা নিতে পারছেন না।
 
 
সূত্র: গ্লোবালভিশন
Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন