Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

রোহিঙ্গাদের ‘কিয়াত’ নিয়ে কাড়াকাড়ি, জড়িত চার সিন্ডিকেট

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

মিয়ানমারের রাখাইন থেকে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে থাকা ‘কিয়াত’ (মিয়ানমারের মুদ্রা) নিয়ে কাড়াকাড়ি চলছে মুদ্রা পাচারকারী সিন্ডিকেটের মধ্যে। বিপন্ন এই জনগোষ্ঠীর দুর্দশার সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে এই মুনাফালোভীরা। সীমান্ত পেরিয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই এসব সিন্ডিকেট অর্ধেক মূল্যে কিয়াত কিনে নিয়ে হুন্ডি ও ইয়াবাসহ অন্যান্য পণ্য চোরাচালানের মাধ্যমে পাচার করছে। জানা গেছে, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের পর থেকে সীমান্তে মুদ্রা পাচারকারী চক্রের দেড় শতাধিক সদস্য সক্রিয় হয়েছে। আর এসব সদস্যদের নিয়ন্ত্রণ করছে টেকনাফের চারটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। এই কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে সম্প্রতি কয়েকজন মুদ্রা পাচারকারীকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ।

আগস্টের শেষ দিকে মিয়ানমারের রাখাইনে সহিংসতা শুরুর পর লাখ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয়ের জন্য পালিয়ে আসছে বাংলাদেশে। পালিয়ে আসার সময় যে যার মতো করে হাতে থাকা কিয়াতসহ অন্যান্য দামি জিনিসপত্র সঙ্গে নিয়ে আসছে। কিন্তু ওপার থেকে এপারে আসার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় কিছু মুদ্রা পাচারকারী সদস্য নামমাত্র মূল্যে ওই কিয়াতগুলো বাংলাদেশি টাকা দিয়ে কিনে নিচ্ছে।  বিনিময় মূল্যের (এক টাকা সমান ১৬ কিয়াত) তোয়াক্কা না করে এক লাখ কিয়াতের জন্য তিন থেকে চার হাজার টাকা দিচ্ছে সিন্ডিকেটের সদস্যরা। প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা তা নিতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে।  আবার অনেকেই কিয়াত টাকায় পরিবর্তন করিয়ে দেওয়ার কথা বলে নিরুদ্দেশ হয়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টেকনাফের নুরুল আমিন, মোহাম্মদ জাফর, কাদের, উখিয়ার পালংখালীর বার্মাইয়া সিরাজুল ইসলাম চিক্কুইন্যা, জয়নাল আবেদীন, পুইত্যা, শাহাজাহান, ঘিলাতলীর আব্দুর রহমান, উখিয়ার আবুল কালাম, শফিউল্লাহ, পারভেজ, ঘুমধুমের শাহাজালাল, বালুখালীর উমর সিদ্দিক ও গোরা মিয়াসহ সীমান্তে দেড় শতাধিক মুদ্রা পাচারকারী সদস্য সক্রিয়। সীমান্তের চারটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটের হয়ে তারা বিভিন্ন পয়েন্টে কাজ করছে। এই চার সিন্ডিকেটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মো. আইয়ুব ওরফে বাইট্যা আইয়ুব, হায়দার আলী, ইসমাইল ও শাহপরীরদ্বীপের শামশুল ইসলাম শামীম। সীমান্তের পেরিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে কিয়াত হাতিয়ে নেওয়ার পর তারা সিন্ডিকেটের নেতাদের কাছে নিয়ে যাচ্ছে। পরে এসব মুদ্রা হুন্ডি ও ইয়াবা পাচারকারী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মিয়ানমারে পাচার হচ্ছে।

কক্সবাজারের একটি বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত ব্যাংকার মো. শফিউল আলম বলেন, ‘বাংলা এক টাকার সমান মিয়ানমারের ১৪ থেকে ১৬ কিয়াত। অর্থাৎ মিয়ানমারের এক লাখ কিয়াত বাংলাদেশের ১৬ হাজার টাকার সমান। এটি আবার বিভিন্ন সময় উঠানামা করে। তবে মিয়ানমারের মুদ্রা কিয়াত কক্সবাজারের কোনও ব্যাংকে ভাঙতি বা লেনদেন করার সুযোগ নেই। এই কিয়াত যারা কিনে নিচ্ছে তারা হয়তো অসৎ উদ্দেশ্যে নিতে পারে। কারণ এই মুদ্রা মাফিয়া চক্রের সদস্যদের ছাড়া অন্য কারও কোনও কাজে আসবে না।  এসব কিয়াত ইয়াবা, অস্ত্রসহ সীমান্তে বিভিন্ন চোরাচালান কাজে হুন্ডির মাধ্যমে মিয়ানমারে পাচার হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আফরুজুল হক টুটুল বলেন, ‘সীমান্তে রোহিঙ্গাদের অসহায়ত্বের সুযোগে অসংখ্য লোক কিয়াত ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। অতীতে এই রকম ঘটনা সীমান্তে ঘটেছে। সম্প্রতি টেকনাফের উনচিপ্রাং সীমান্ত থেকে মুদ্রা পাচারের সঙ্গে জড়িত তিন সদস্যকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকারও করেছে যে তাদের মতো অনেকেই এই কাজে জড়িত। এরপর থেকে পুলিশ সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়েছে এবং অভিযান অব্যাহত রেখেছেন।’

তবে চেষ্টা করেও কিয়াত পাচারকারী সিন্ডিকেটের মূলহোতা হিসেবে অভিযুক্ত টেকনাফের মো. আইয়ুব ও শাহপরীরদ্বীপের শামশুল আলম শামীমের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন