Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

খালেদা জিয়া, জঙ্গীগোষ্ঠী ও বিদেশি উষ্কানীদাতাদের কারণে পাহাড়ে সহিংসতা সৃষ্টি হচ্ছে- হাসানুল হক ইনু

খাগড়াছড়িতে রেডিও স্টেশন ও টেলিভিশন রিলে স্টেশন নির্মাণের দাবী জানালেন বীর বাহাদুর

Rangamati enu pic3

স্টাফ রিপোর্টার:

অনেকে বলেন পার্বত্যাঞ্চলে চুক্তির কারণে পাহাড়ী-বাঙ্গালীদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু কথাটি সত্যি নয়। স্বজাতির মধ্যেও বিরোধ থাকতে পারে। পার্বত্যাঞ্চলে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও বাঙ্গালীদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক বিরোধ লাগাতে জঙ্গী গোষ্ঠীর মদদ রয়েছে। চুক্তি বিরুদ্ধে আছে বেগম খালেদা জিয়া, সাম্প্রদায়িক জঙ্গীবাদী গোষ্ঠী, বিদেশি উষ্কানীদাতা। তাদের কারণে পাহাড়ে সহিংসতা সৃষ্টি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।

বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় রাঙামাটিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তিকে আরও কার্যকর করতে হলে ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী,ক্ষুদ্র জাতিসত্বাদের অধিকারের জন্য একটি আইন এবং তার অধীনে একটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী জাতীয় কমিশন গঠন করা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন। এই আইন ও কমিশন গঠিত হলে এ অঞ্চলে স্থায়ী সমাধান সম্ভব হবে। পাশাপাশি ওই কমিশন পাহাড়ী জনগনের অংশ গ্রহন নিশ্চিত এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বৈশিষ্ট্যকে রক্ষা ও এ আইন দ্বারা রাষ্ট্র পরিচালিত হবে।

তিনি বলেন, ১৯৯৭ সালে শেখ হাসিনা সরকার পার্বত্যাঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে শান্তি চুক্তি করেছিলেন। আর এ চুক্তির মধ্যদিয়ে পাহাড়ের মানুষের মাথার উপর শান্তির ছাতা তুলে ধরেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরে দীর্ঘদিন অতিবাহিত হয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে আপনি কি সেই শান্তি ছাতা খোলা রাখবেন, নাকি সেই শান্তি ছাতা গুটিয়ে ফেলবেন? পার্বত্যাঞ্চলের সাধারণ মানুষদের কথা ভেবে পাহাড়ে শান্তির ছাতা খোলা রাখতে হবে। আর সংলাপের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির সকল বিরোধ নিষ্পত্তি করতে জনসংহতি সমিতির নেতার প্রতি আহবান জানান তিনি।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি, পার্বত্য মন্ত্রনালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী এমপি, খাগড়াছড়ি সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, রাঙামাটি মহিলা সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু, রাঙামাটি ব্রিগেডের রিজিয়ন কমান্ডার মো. সানাউল হক পিএসসি, রাঙামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজরী চৌধূরী প্রমূখ।

তবে এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর আর্ন্তজাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান সন্তু লারমা বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তারা উপস্থিত ছিলেন না। এছাড়া রাঙামাটি আসনের নির্বাচিত সাংসদ উষাতন তালুকদারের নাম অনুষ্ঠান মঞ্চে ঘোষণা করা হলেও তিনি উপস্থিত ছিলেন না।

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু আরও বলেন, শেখ হাসিনা সরকার শান্তি চুক্তির মধ্যদিয়ে শান্তির ছাতা পার্বত্য চট্টগ্রামের উপর তৈরী করে দিয়েছেন। আর সেই শান্তির ছাতার ছায়াতলে পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখেছেন। যে কোন উন্নয়নের জন্য শান্তি দরকার। শান্তি না হলে উন্নয়ন সম্ভব না।

তথ্য মন্ত্রী উদাহরণ দিয়ে বলেন, চেঙ্গীস খানের নাতি বলেছেন ঘোড়ায় চড়ে দেশ দখল করা যায়। কিন্তু শাসন করা যায় না। এলাকা দখল করা যায় কিন্তু এলাকা শাসন করা যায় না। ঠিক তেমনি গায়ের জোরে ক্ষমতা দখল করা যায়। কিন্তু ক্ষমতায় থাকা যায় না। গণতন্ত্র কখনো একের উপর আর একের হস্তক্ষেপ নয়। গণতন্ত্র হচ্ছে নিজেকে নিজে শাসন করার স্বপ্ন। আর সেই গণতন্ত্রের অধিকার বাঙ্গালী ও পাহাড়ীদের রয়েছে। একটি রাষ্ট্রে বিভিন্ন রকম ভাষাভাষী মানুষ থাকে। যার কারণে রাষ্ট্রকে সে মানুষদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হতে হয়। চুক্তির নাম হচ্ছে সংবিধান। সেই সংবিধান হচ্ছে আইন। যে আইনের মাধ্যমে চুক্তিতে স্বাক্ষর করা হয়। মানুষ যে ভাষার, যে জাতিসত্তার হোক না কেন, তাদের সংবিধানের আইন মানতে হবে। বাংলাদেশে একটি সংবিধান আছে যেখানে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির অধিকার ২৩ নং এর (ক) ধারায় সংরক্ষিত আছে।

তিনি আরো বলেন, এই চুক্তিটা কিন্তু রাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি। মাঝখানে যখন শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় ছিলেন না, তখন খালেদা জিয়া ক্ষমতায় ছিলেন। তখন তিনি বলেছেন পার্বত্য চুক্তি বাংলাদেশকে ধ্বংস করে দিবে। এই চুক্তি কিন্তু বাংলাদেশকে ধ্বংস করেনি। খালেদা জিয়ার পরে মঈনুদ্দিন ও ফখরুদ্দিন ক্ষমতায় ছিলেন। তারা কিন্তু চুক্তি বাস্তবায়নে আন্তরিকতা দেখায় নাই। এই চুক্তিতে কেউ হাত দিতে পারবেনা। এই চুক্তি থাকবে। এ চুক্তির ছাতা তলে পার্বত্যাঞ্চলের উন্নয়নের ধারা এগিয়ে যাবে।

বিশেষ অতিথি বক্তব্যে পাবর্ত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি বলেন, অভিমান অভিযোগ করে আমরা অনেক সময় নষ্ট করেছি, আর নয় আসুন সবাই মিলে কাজ করে দেশকে এগিয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন গ্রামে এখনো অনেক মানুষ রেডিও টেলিভিশনের মাধ্যমে খবর শুনে। তাই খাগড়াছড়িতে রেডিও ষ্টেশন ও টেলিভিশনের সম্প্রসারণ কেন্দ্র স্থাপনের দাবী জানান ।

বিশেষ অতিথি বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চোধুরী এমপি বলেন, শান্তি চুক্তি একেবারে বিফলে যায়নি, কেউ যদি বলে থাকে কোন কাজ হয়নি, তাহলে আমি দ্বিমত পোষণ করবো। এ সরকারের সময়ে শান্তি চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করা হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

 এর আগে তথ্যমন্ত্রী ৪০ পাউন্ড ওজনের কেক কেটে, বেলুন ও সাদা পায়রা উড়য়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ৪০বছর পূর্তির উদ্বোধন করেন। এছাড়া সকালের দিকে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুরের নেতৃত্বে রাঙামাটি শহরের নিউমার্কেট এলাকা একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালী প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। এছাড়াও এ উপলক্ষে মাউন্ডেন্ট বাইক প্রতিযোগিতা, আতজবাজি ও ফানুস বাতি উড্ডয়ন এবং মনোজ্ঞ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন