ইয়াবাসহ মাদকের ভয়াল থাবায় পথভ্রষ্ট হচ্ছে কাপ্তাইয়ের কিশোর ও যুবকেরা

ইয়াবা

কবির হোসেন:

কাপ্তাই উপজেলার সর্বত্র মাদকদ্রব্য এবং ইয়াবার ছড়াছড়ি। নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে স্কুলপড়ুয়াসহ উঠতি বয়সের যুবকরা। নেশাগ্রস্ত যুবকরা ইয়াবাকে সংক্ষপে (বাবা)বলে ক্রয় করছে। এ বাবার থাবার আক্রমণে পথভ্রষ্ট হচেছ উপজেলার উঠতি বয়সের স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা।

উপজেলার চন্দ্রঘোনা, কলাবাগান, কয়লার ডিপো, পুরাতন সিনেমাহল, কে, আরসি, বারঘোনা, প্রেট্রল পাম্প, রেশমবাগান, কলেজগেইট, বড়ইছড়ি, ওয়াাগ্গা, শিলছড়ি, হাজিরটেক, তারপাহাড়, চিৎমরম, লগগেইট, নৌবাহিনী সড়ক,  রাঙ্গামাটি-কাপ্তাই আগরবাগানসড়ক, শিল্প এলাকা, নতুনবাজার, জেটিঘাট, মদের টিলা, বিউবো পুরাতন বাজার ও ব্রীকফিল্ড এলাকায় ইয়াবা, ফেনসিডিল, মদ, গাঁজা, দারগান, জুতারগামসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্যর নেশায় আক্রান্ত হয়ে পড়ছে যুবকেরা।

বিশ্বস্ত সুত্রে জানা যায়, বেশির ভাগ মাদকনেশা অর্থ্যাৎ ইয়াবা লেচুবাগান এলাকার ফেরিঘাট থেকে কাপ্তাই উপজেলার সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। মাদক ব্যবসায়ীরা এক শ্রেণীর নেশাগ্রস্ত যুবকদের নিরাপদ স্থানে হাতের ইশার এবং মোবাইল ফোনে নিয়ে বিভিন্ন ফ্লিমি কায়দায় বিক্রয় করছে। এর মধ্যে জানা যায়, বিভিন্ন হোটেল, রেস্তোঁরায় এবং বোডিং এ নিরাপদ মনে করে ইয়াবা বিক্রয় করা হচ্ছে।

কাপ্তাই উপজেলার উপরোক্ত স্থানগুলোতে প্রতিনিয়ত এ নেশা বিক্রয় করা হচেছ।এ ছাড়া বেশ কিছু ক্ষুদ্র,ক্ষুদ্র দোকানে চা-পান বিক্রয় নামেও এ ধরনের গাঁজা, ইয়াবা বিক্রয় করার খবর পাওয়া যায়। এ নিয়ে ঘটছে নানা অপ্রীতিকর ঘটনা। কাপ্তাই জেটিঘাট এলাকায় মদ পান করে স্ত্রীকে বেদম পিটিয়ে আহত করার খবর পাওয়া যায়। এছাড়া কাপ্তাই ব্রীক ফিল্ড এলাকায় বিউবোর এক স্টাফ প্রতিনিয়ত বন্ধুদের নিয়ে মদ গাঁজা সেবন করে স্ত্রীকে মারধর ও স্ত্রী নির্যাতনের ব্যাপারে স্থানীয়ভাবে বিচার দেওয়া হয়। এছাড়া জাকির হোসেন স’মিল এলাকায় উঠতি বয়সের তিনজন যুবক মদ সেবন করে মাতলামী করায় স্থানীয় এক ব্যবসায়ী শিক্ষা দেওয়ার জন্য কানধরে উঠবস করে প্রহার করে। স্কুলের তিন ছাত্র মদ্যপান করে বোতল ভরে স্কুলে মদ নিয়ে এলে শিক্ষকরা অভিভাবকদের ডেকে নিয়ে ছাত্রদের শান্তি দেওয়া হয়। বেশ কিছুদিন পূর্বে শিল্প এলাকায় বেশকিছু যুবক এভাবে মাদক এবং ইয়াবাা সেবন করে এলাকার পরিবেশ নষ্ট করে ফেলে।

কাপ্তাই পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বেশ কিছু মাদক সেবনকারীকে হাতে নাতেআটক করলেও স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক নেতা তাঁদের মুচলেকা দিয়ে নিয়ে আসে। এছাড়া বারঘোনিয়া পেট্রোল পাম্প এলাকাসহ সর্বত্র চলছে মাদকের ব্যবসা।

বর্তমানে উঠতি বয়সের যুবকরা মদের চেয়ে ইয়াবার (বাবার) দিকে ঝুঁকে পড়ছে বেশি। একজন মাদক সেবনকারীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, মদ এবং গাঁজা নেশা করলে সহজে গন্ধ বোঝা যায়। আর ইয়াবা (ট্যাবলেট) সেবন করলে সহজে বোঝা যায়না। জানা যায়, বড়ইছড়ি এলাকা হতে পাহাড়ী পথে একটি সিন্ডিকেট দল প্রতিদিন ফ্লিমি কায়দায় বিভিন্ন উপায়ে পাহাড়ী চোলাই মদ চট্রগ্রামের দিকে পাচার করছে। আর এর সাথে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী লোক জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া যায়।

সম্প্রতি, বড়ইছড়ি কুকিমারা এলাকা হতে র‌্যাব-৭ গোপান সংবাদের ভিত্তিতে কয়েক হাজার মন পাহাড়ী চোলাই মদ উদ্ধার করে। এলাকার সচেতন মহল মনে করে প্রশাসনের পক্ষ হতে অতিশয় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এ মাদক ব্যবসায়ীদের সঠিক সন্ধান করে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরী হয়ে পড়েছে।

এ ব্যাপারে কাপ্তাই থানার ওসি হারুন আর রশীদর চৌধুরীর নিকট জানতে চাইলে তিনি এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, পূর্বের চেয়ে অনেক ভাল আছে। তবে কোন মাদকের সন্ধান পাওয়া গেলে আমরা দ্রুত ব্যবস্থাসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি উল্লেখ্য করেন। এছাড়া এ মাদক নিয়ন্ত্রণ করতে হলে পুলিশসহ এলাকার সকল সচেতন নাগরিকদের প্রতিরোধে এগিয়ে আসতে হবে বলে মত প্রকাশ করেন তিনি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন