কুকুরে কামড়ে পানছড়িতে পাঁচ ছাগলের মৃত্যু

পানছড়ি প্রতিনিধি:

কুকুরের কামড়ে জেলার পানছড়িতে পাঁচ ছাগলের মৃত্যু হয়েছে। ৩১মার্চ শনিবার বেলা ১’টার দিকে উপজেলার ৫নং উল্টাছড়ি ইউপির জিয়া নগর এলাকার মেজ টিলা নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে। ছাগলের মালিক বয়োবৃদ্ধ জিয়া নগর গ্রামের হেসেন আলী জানায়, আমি কোন কাজকর্ম করতে পারি না। এই ছাগলগুলোই ছিল আমার একমাত্র সম্বল। আমি এখন দিশেহারা।

উল্টাছড়ি ইউপির ২নং ওয়ার্ড সদস্য মো. আবুল হাশেম ও সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্যা সোলেমা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এলাকায় কুকুরের অত্যাচার বেড়ে গেছে। দল বাঁধা কুকুরের দল মানুষ পেলেও এলোপাতাড়ি হামলা চালায়। হোসেন আলীর মতো দরিদ্র মানুষ এখন পথে বসতে চলেছে।

কুকুর নিধনের ব্যাপারে একটা বিহীত ব্যবস্থা দরকার বলে তাদের দাবি। জানা যায়, কুকুরের অত্যাচারে পুরো পানছড়িবাসী অতিষ্ট। কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে প্রতিনিয়তই বিভিন্ন ফার্মেসিতে চিকিৎসা নিতে ছুটে আসছে বিত্তশালী থেকে শুরু করে নিম্ন বিত্তরা।

সরেজমিনে পানছড়ির বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা দেয়া যায়, যেথায়-সেথায় দল বেঁধে কুকুরের অবাধ বিচরণের চিত্র। কাউকে একা পেলেই এরা হয়ে উঠে হিংস্র। ৩ বছর বয়সী অর্পিতা পাল অর্নি ও ৭৫ বছর বয়সী অর্ণদা পাল কুকুরের কামড়ে আহত হয়ে ব্যয়বহুল ভ্যাকসিনের কোর্স শেষ করেছে। তাছ্ড়াা কুকুরের কামড়ে চিকিৎসা নিতে না পেরে অকালে ঝরেছে ইসলামপুর গ্রামের জয়নাল আবেদীন জনুর ৩য় শ্রেণীতে পড়ুয়া ছেলে মো. নাইমের প্রাণ। গত বছর ইসলামপুর এলাকায় এক কুকুরের কামড়ে আহত হয়েছিল ৯ জন। পরে এলাকাবাসী ঘাতক কুকুরকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে বিরল দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছিল। বর্তমানে কুকুরের অত্যাচার এতই বেড়েছে যে কোমলমতি শিশুরা বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে প্রতিনিয়তই পড়ছে রোষানলে। পানছড়ি বাজারের বিভিন্ন ফার্মেসিতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রায়ই কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত রোগীরা ভ্যাকসিন নিতে আসে।

যা আগের তুলনায় অনেক বেশি। এ ব্যাপারে পানছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা ডা. সনজীব ত্রিপুরা জানায়, কুকুরের কামড়ে মরণব্যাধি জলাতঙ্ক রোগ হয়। যার চিকিৎসা ব্যয়বহুল। কুকুরের কামড়ে ভ্যাকসিন না নিয়ে অপচিকিৎসা করলে মৃত্যু অনিবার্য। তবে পানছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ভ্যাকসিন পাওয়া না গেলেও খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে পাওয়া যায়। পৌরসভা এলাকার মতো উপজেলাগুলোতেও কুকুর নিধনের পদক্ষেপ নেয়া দরকার বলে মনে করেন। পানছড়ির সচেতন মহল ও শিক্ষার্থী অভিভাবক এ ব্যাপারে দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চায়।

 

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন